নতুন বছরের প্রথম দিনেই ডিজিটাল প্রতারণার শিকার হলাম....! একটা নোটবুক বিক্রির এড দিয়েছিলাম বিক্রয় ডট কমে। ফোন আসলো, ভাই আমি নোটবুকটা কিনব দাম কিছু কম হবেনা? >> না ভাই ফিক্সড প্রাইস। > ওকে, আপনি একটা বিকাশের দোকানে যান আমি টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছি। টাকা হাতে পেয়ে আপনি ল্যাপটপটা কুরিয়ারে দিয়ে দিয়েন। >> বলেন কি, আপনি কোন বিশ্বাসে টাকা পাঠাবেন? আমি যদি ল্যাপটপ না দিই? > সমস্যা নেই, আমি জানি আপনি দিবেন। >> আপনি কি আমাকে চেনেন? > ভাই, দুনিয়ায় ভালো মানুষের পরিমানই বেশি। (আমি গলে গেলাম। গলে আতর হয়ে গেলাম। মনের ভেতর সুবাস ছড়াচ্ছিলতো, তাই গলে পানি না হয়ে আতর হয়েছি ) >>আপনার বাসা কোথায়? > মিরপুর >> আমি বাড্ডায় থাকি। চলে আসেন। ইলেক্ট্রনিক্স জিনিস। দেখে শুনে নিয়ে যান। > ভাই আমি ব্যস্ত মানুষ। আমার হাতে সময় নাই। আপনি দোকানে যান। গিয়ে দোকানদারের পার্সোনাল নাম্বারটা আমাকে দেন। >> আমার নিজেরইতো পার্সোনাল বিকাশ নাম্বার আছে। ওটাতে দেন। > না দোকানেরটাই লাগবে। বুঝিনা বাপু। মনে হয় টেকনিক্যালী কোন ব্যাপার স্যাপার আছে। হয়তো আমি ল্যাপটপ না পাঠালে আমাকে ধরার কোন ব্যাবস্থা। গেলাম একটা দোকানে। বললাম ১৫ হাজার টাকা আসবে। দিতে পারবেন? বলল ৭ হাজার ক্যাশ দিতে পারবো। বললাম, ওকে ৭ হাজার ক্যাশ দেন বাকীটা আমার নাম্বারে সেন্ড করেন। মনে মনে ভাবছি, টাকাটা পেয়ে নেই। কয়েকটা কথা শুনিয়ে দেব... ওই মিয়া তোমার মতো ভোম্বল এই দুনিয়ায় এখনো আছে নাকি। আমি ভালা মানুষ দেইখ্যা ল্যাপটপ পাঠাই দিলাম। অন্য কেউ হলে দিতো না। একটু চালাক হও। নইলে বাপের কস্ট করা টাকাগুলো খোয়াতে হবে। টুংটাং টুংটাং করে টাকা এলো। ১৫ হাজারের সাথে বিকাশ চার্জও পাঠিয়ে দিয়েছে। কিরে, মানুষ এতো ভালো হয় ক্যান! ফোন আসলো, ভাই টাকা পেয়েছেন? হ্যাঁ পেয়েছি। আপরার ঠিকানাটা বলেন। আমি ল্যাপটপ কুরিয়ার করছি। আপনি টাকা নিয়ে দোকান থেকে বের হোন। আমি আধা ঘন্টা পর ঠিকানা পাঠিয়ে দিচ্ছি। কি অদ্ভুত ভালো মানুষ। টাকা পাঠানোর প্রতি কতো আগ্রহী, অথচ ল্যাপটপ নেয়ার প্রতি কোন আগ্রহ নেই। দোকানদার গুনে গুনে আমাকে সাত হাজার দিলো। আর বাকীটা যখনই আমার নাম্বারে পাঠাতে যাবে, বলে ইনসাফিসিয়ান্ট ব্যালেন্স। কিরে! আগে ছিলো চার হাজার। এখন এলো ১৫ হাজার। মোট ১৯ হাজার। কিন্তু ৮ হাজার পাঠাতে গেলে ইনসাফিসিয়ান্ট ব্যালেন্স বলে কেন? বুঝলাম ডিজিটাল প্রতারণা। কোন ভাবে নেট থেকে সিস্টেম করে বিকাশের মতো হুবহু নাম্বার থেকে এসএমএস পাঠিয়েছে। বেশিরভাগ দোকানদারই ব্যালেন্স চেক না করে শুধু এসএমএস দেখে গ্রাহককে টাকা দিয়ে দেয়। ভাগ্যিস দোকানদারের মোবাইলে পর্যাপ্ত ব্যালেন্স ছিলোনা। নয়তো এই গরীব লোকটার ১৫ হাজার খোয়া যেতো। আর আমার চেহারাটা মাশাল্লাহ নাদুস নুদুস আপেল কুলের মতো না হয়ে যদি গাঁজাখোরের মতো হতো, তবে আমাকে এতক্ষনে গণধোলাই খেয়ে হাসপাতালে থাকতে হতো। (কিছুক্ষন আগের ঘটনা। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কেউ এই প্রতারককে ধরতে চাইলে আমি ফোন নাম্বার এবং অন্যান্য সহযোগিতা করে ধরিয়ে দিতে পারি।) --- এসএম নাহিদুর রহমান post by: উপদেশ l Advise
Posted on: Thu, 01 Jan 2015 12:01:02 +0000