BNP Online Activist প্রসঙ্গঃ - TopicsExpress



          

BNP Online Activist প্রসঙ্গঃ জিয়ার অরফানেজ ও চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা, রাষ্ট্রপক্ষের সর্ষের ভেতর ভূত খোঁজার চেষ্টা ( লেখাটা একটু বড় কিন্তু সময় করে পড়ে নিয়েন ও শেয়ার করার অনুরোধ রইল ) =============== =============== =========================== জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুটি মামলা বর্তমান সময়ে দেশের আলোচিত মামলা। দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিশ্ব মিডিয়ার মুখও এদিকে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা “আত্মসাতের” অভিযোগ এনে বেগম জিয়া ও তারেক রহমানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই ঢাকার রমনা থানায় আরও একটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অপরদিকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে “অবৈধভাবে” ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার অর্থ “লেনদেনের” অভিযোগ এনে বেগম খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট ঢাকার তেজগাঁও থানায় একটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার অভিযোগে বলা হয়, ১৯৯১-৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সোনালী ব্যাংকের রমনা শাখায় খালেদা জিয়ার পক্ষে ‘প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিল’ নামে একটি সঞ্চয়ী হিসাব খোলা হয়। যার চলতি হিসাব নম্বর ৫৪১৬। ওই এ্যাকাউন্টে ১৯৯১ সালের ৯ জুন এক সৌদি দাতার পাঠানো ইউনাইটেড সৌদি কর্মাশিয়াল ব্যাংকের ডিডি নম্বর ১৫৩৩৬৭৯৭০ মূলে ১২ লাখ ৫৫ হাজার ইউএস ডলার যার মূল্য ততকালীন বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ে বাংলাদেশি টাকায় ৪ কোটি ৪৪ লাখ ৮১ হাজার ২১৬ টাকা অনুদান হিসেবে জমা হয়। ১৯৯১ সালের ৯ই জুন থেকে ৫ই সেপ্টেম্বর ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়া সোনালী ব্যাংকের উক্ত একাউন্টে জমাকৃত এই অর্থ কোনো এতিমখানায় প্রদান করেননি। এই সময়ের মধ্যে তারেক রহমান সমাজ সেবার ব্রত নিয়ে আরাফাত রহমান ও মমিনুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে Trust Act, 1882 এর ধারা ৬ এর বিধান অনুযায়ী জিয়া অর্ফানেজ ট্রাস্ট গঠন করেন। যদিও এই ট্রাস্ট গঠনের প্রক্রিয়ায় আরাফাত রহমানের কোন সাক্ষর না থাকায় তাকে এ মামলায় আসামী করা হয়নি। ১৯৯৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর গুলশান সাব রেজিস্ট্রি অফিস থেকে ট্রাস্টের নাম নিবন্ধন করা হয়। যার ঠিকানা হিসেবে সেনানিবাসের ৩ শহিদ মঈনুল রোডের বাড়ির ঠিকানা ব্যবহার করা হয়। এ সময় তারেক রহমানকে দি অথর বা দি সেটেলর অব দি ট্রাস্ট (ট্রাস্ট সৃষ্টিকারী) নিয়োগ করা হয় এবং মমিনুর রহমান এই ট্রাস্টের ট্রাস্টী হন। স্বভাবত এতিমখানার জন্য নিজস্ব ভবন ও পরবর্তীতে তা পরিবর্ধনের লক্ষে জায়গার প্রয়োজন হয়। এ উদ্দেশ্যে বগুড়ায় একটি এতিমখানা স্থাপনের জন্য ১৯৯৩ সালের ১৩ নভেম্বর সোনালী ব্যাংকের রমনা শাখার তৎকালীন হিসাব নম্বর ৫৪১৬ এর (খালেদা জিয়ার পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিল) অনুদানের টাকা একই ব্যাংকের গুলশানের নিউনর্থ সার্কেল শাখায় এসটিডি হিসাব নম্বর-৭ মূলে যথাযথ আইন অনুসারে বর্তমান হিসাব নম্বর ৭১০৫৪১৬৪ এ ২ কোটি ৩৩ লাখ ৩৩ হাজার ৫০০ টাকা অনুদান হিসেবে দেয়া হয়। ১৯৯৩ সালের ৪ ডিসেম্বর (চেক নম্বর ৪৮৮২৪০১) ৪ লাখ টাকা তুলে বগুড়া জেলার গাবতলী থানার দাড়াইল মৌজায় ১৭টি দলিল মূলে ২ দশমিক ৭৯ একর জমি ক্রয় করা হয়। যা বিধি সম্মত একটি প্রক্রিয়া। এরপর ১৯৯৩ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত অনুদানের বাকি টাকা অন্য কোনো স্থাপনা বা দুস্থদের কল্যাণে অর্থ ব্যয় না করায় ওই হিসাবে ২০০৬ সালের ১১ এপ্রিল পর্যন্ত সুদসহ জমা পড়ে ৩ কোটি ৩৭ লাখ ৯ হাজার ৭৫৭ টাকা। বলে রাখা ভালো, ট্রাষ্ট আইনের বিধি মোতাবেক কোনো দাতব্য প্রতিষ্ঠান অন্য যে কোন সমাজ উন্নয়ন মূলক যে কোনো কর্মকান্ড বা প্রতিষ্ঠানকে যে কোন পরিমান অর্থ সরবরাহ বা দান করতে পারে অর্থাৎ স্থাবর ও অস্থাবর উভয় সম্পত্তিই ট্রাস্টের মাধ্যমে হস্তান্তর করা যায়। ট্রাস্টের সেটেলর তারেক রহমান এবং স্ট্রাস্টী মমিনুর রহমানের যৌথ স্বাক্ষরে ২০০৬ সালের ১২ এপ্রিল, ১৫ জুন এবং ৪ জুলাই পর্যন্ত বিভিন্ন চেকের মাধ্যমে সর্বমোট ৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা প্রাইম ব্যাংকের গুলশান শাখায় এফডিআর খোলার জন্য হস্তান্তর করা হয়। যাতে করে টাকাগুলো অলস পরে না থাকে এবং এর মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক চাকা বেগবান হয় ও এতিম- দুস্থদের টাকা ব্যাংক কর্তৃক সর্বোচ্চ সুবিধাটুকু পাওয়া যায়।অভিযোগ অনুযায়ী, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের ৫০ লক্ষ টাকা কাজী সলিমুল হকের নামে ২০০৬ সালের ১২ এপ্রিল জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের একাউন্ট থেকে ট্রান্সফার করা হয়। অভিযোগে আরো বলা হয়, এই শাখায় কাজী সলিমুল হকের নামে পরবর্তীতে ২ কোটি টাকার আরো দু’টি এফডিআর খোলা হয়। যা তিনি নিজ নামেই ট্রান্সফার করেন। এছাড়া ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদের ছেলে সৈয়দ আহমেদের নামে একটি ১ কোটি টাকা এবং দুজনের যৌথ নামে আরেকটি ১ কোটি টাকার এফডিআর খোলেন কাজী সলিমুল হক। এদের মধ্যে সৈয়দ আহমেদ এখন মৃত। এই দুই এফডিআর থেকে গিয়াস উদ্দিন আহমেদের এফডিআরে ট্রান্সফার হয়। এর কিছুদিন পরই গিয়াস উদ্দিন আহমেদ তার এফডিআরের এক কোটি টাকা ভেঙে ৫০ লাখ টাকার ২টি এফডিআর করেন। এরপর আবার সেই এফডিআর ভেঙ্গে শরফুদ্দিনের একাউন্টে ৬টি পে-অর্ডারের মাধ্যমে টাকা ট্রান্সফার করেন। ট্রাস্টের কাজে শরফুদ্দিন আহমেদ ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা তুলেন। আর এই ২,১০,৭১,৬৪৩ টাকাই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার ভ্যালু। অথচ ট্রাস্ট আইনে স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকারের সম্পত্তিই ট্রাস্টের (সেটেলর অব দি ট্রাস্ট ও স্ট্রাস্টী) মাধ্যমে অন্যকোনো পক্ষকে হস্তান্তর করা যায়। এখানে আরো একটি বিষয় উল্লেখযোগ্য যে, ট্রাস্ট আইনের বিধি মোতাবেক ট্রাস্টীকে কারো নিয়ন্ত্রণের মধ্যে কাজ করতে হয় না। আরো উল্লেখ্য যে, যখন কোন ট্রাস্ট কোনো বিশেষ মানুষের বা বিশেষ শ্রেণীর কল্যাণের জন্য সৃষ্টি করা হয় তখন যদি ট্রাস্ট কর্তৃক ট্রাস্টের শর্তাবলী কিংবা ট্রাস্ট আইনের ব্যতয় ঘটানো হয় তাহলে বেনেফিশারি অর্থাৎ ঐ বিশেষ শ্রেণী এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারে। এ ক্ষেত্রে সরকার বা অন্য কোনো পক্ষ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে না! অর্থাৎ দুদক কিংবা রাষ্ট্র পক্ষ যে ২,১০,৭১,৬৪৩ টাকা “আত্মসাৎ” এর অভিযোগ এনেছে এই অভিযোগ আনার এখতিয়ার দুদক কিংবা রাষ্ট্রপক্ষের নেয়। এই এখতিয়ার আছে শুধুমাত্র বেনেফিশারি তথা যাদের উদ্দেশ্যে এই ট্রাস্ট গঠন করা হয়েছে। অভিযোগ দায়েরের রাষ্ট্রপক্ষের এখতিয়ারের কথা বাদ দিলাম। এই অভিযোগ যে ভিত্তিহীন তা সহজেই অনুমেয়। একটু ভালো করে লক্ষ করলেই এই অভিযোগে কতটা বানোয়াট তা প্রতীয়মান হয়। এমনকি দুদকের যে কর্মকর্তা বাদী হয়ে এই অভিযোগ আনয়ন করেছেন তার যে ট্রাস্ট আইন সম্পর্কে কোনো জ্ঞানই নেই সেটা এখানে সু- স্পষ্ট। এছাড়া এখানে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে যে, ২০০৬ এর ১২ এপ্রিল পর্যন্ত জমাকৃত মোট টাকার পরিমান সুদে-আসলে ৩ কোটি ৩৭ লক্ষ ৯ হাজার ৭৫৭ টাকা। তাদের গোজামিলের অভিযোগ অনুযায়ী এফডিয়ার করা হয় একটি ৫০ লক্ষ টাকার, একটি ২ কোটি টাকার এবং দুইটি ১ কোটি টাকার সহ সর্বমোট ৪ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। যেখানে সুদে আসলে মোট টাকার পরিমান ৩ কোটি ৩৭ লক্ষ ৯ হাজার ৭৫৭ টাকা! বাকি ১ কোটি ১২ লক্ষ ৯০ হাজার ২৪৩ টাকা কোথা থেকে এলো? যেখানে এই টাকা ব্যতিত অন্য কোন টাকা আসেনি! আবার শেষে ঠিকই দেখানো হয়েছে ৩ কোটি ৩০ লখ টাকা বেহাত হয়েছে! এছাড়া জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে “অবৈধভাবে” ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা অর্থ লেনদেনের “অভিযোগ” আনা হয় বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে। এই মামলার অভিযোগে বলা হয়, বেগম খালেদা জিয়া ‘জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’ এর নামে ২০০৫ সালে ঢাকার কাকরাইলে সুরাইয়া খানমের কাছ থেকে ৪২ কাঠা জমি ক্রয়ের সময় জমির মূল্য দেখিয়েছিলেন ৬ কোটি ২৫ লক্ষ ৭ হাজার টাকা। কিন্তু জমির মূল্য পরিশোধের সময় জমির মালিক সুরাইয়া খানমকে প্রদান করা হয়েছিলো ৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। অর্থাৎ জমির মূল্যের চাইতে জমির মালিককে ১ কোটি ২৪ লক্ষ ৯৩ হাজার টাকা বেশি প্রদান করা হয়েছে। যার কোনো উৎস বেগম জিয়া নাকি দেখাতে পারেন নি। যার কারণে এটাই নাকি অবৈধ লেনদেন!এটা খুবই সাধারণ ব্যাপার যে, আমরা যখন জমি ক্রয়- বিক্রয় করি তখন সাব বিক্রয় কবলা দলিলে বিক্রয়কৃত বা ক্রয়কৃত জায়গার মূল্যটা মৌজা মূল্য হিসেবে উল্লেখ করি। যাতে জমি রেজিস্ট্রির সময় খরচ কমানো যায়। কিন্তু যার কাছ থেকে জমি কেনা হয় তাকে ঠিকই বাজার মূল্যটা পরিশোধ করতে হয়। আর খুবই সাধারণ এই ব্যাপারটা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন দুদক! সোনালী ব্যাংকের রমনা শাখায় খালেদা জিয়ার পক্ষে যে চলতি হিসাব নাম্বার ৫৪১৬ বরাবর প্রায় ৪ কোটি ৪৪ লাখ ৮১ হাজার বাংলাদেশি টাকা অনুদান হিসেবে এসেছিলো সেখান থেকে একই ব্যাংকের গুলশানের নিউনর্থ সার্কেল শাখায় এসটিডি হিসাব নম্বর-৭ মূলে যথাযথ আইন অনুসারে হিসাব নম্বর ৭১০৫৪১৬৪ এ ২ কোটি ৩৩ লাখ ৩৩ হাজার ৫০০ টাকা অনুদান হিসেবে দেয়া হয়। এরপর উক্ত টাকা থেকে বাকী থাকে ২ কোটি ১১ লক্ষ ৪৭ হাজার ৭১৬ টাকা যা সোনালী ব্যাংকের রমনা শাখার একাউন্টে জমা থাকে। ২০০৫ সাল পর্যন্ত এই ২,১১,৪৭,৭১৬ টাকা সুদে- আসলে দাঁড়ায় প্রায় ৩ কোটি ১৫ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকা। কাকরাইলের যে সুরাইয়া খানমের নিকট জমি ক্রয়ের সময় ৭ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা পরিশোধ করা তখন জমির ক্রয়কৃত এই মূল্যের মধ্যে সোনালী ব্যাংকের রমনা শাখার একাউন্ট থেকে ঐ ৩,১৫,৪৩,০০০ টাকা পরিশোধ করা হয়। আর এই টাকাটায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার ভ্যালু। অনুদানের টাকা থেকে দাতব্য উদ্দেশ্যে খরচ করলে সেখানে অবৈধতা কী আছে সেটা দুদক তথা রাষ্ট্রপক্ষই ভালো বলতে পারবে! অথচ সেই অনুদানের টাকার চাইতে বাড়তি টাকা ব্যয়ে খালেদা জিয়া দাতব্য উদ্দেশ্যে যে ৪২ কাঠা জমি ক্রয় করেছেন তা ট্রাস্ট আইনের doctrine of cy-pres অনুসারে বৈধ। এছাড়া দুদক যেভাবে এই মামলা দায়ের করেছে তাতে দুদক বা সরকারের কোনো এখতিয়ার নেই। চ্যারিটেবল বা দাতব্য ট্রাস্টের ক্ষেত্রে সরকার ঐ সময়ে মামলা করতে পারে যখন দাতব্য ট্রাস্টের ক্ষেত্রে অনুসরণীয় আইনগুলির ব্যতয় ঘটে। The Religious Endowments Act 1863, The Charitable and Religious Trust Act 1920, The Charitable Endowments Act 1890 এবং The Mussalman Wakf Validating Act 1913 প্রভৃতি আইনগুলোর ব্যতয় ঘটলে তখনই সরকার বা আদালত নিজেই ঐ ট্রাস্টের বিরুদ্ধে কার্যকরি পদক্ষেপ নিতে পারে। অন্যথায় নয়। ট্রাস্ট আইনে একটি ম্যাক্সিম বহুলভাবে স্বীকৃত। He who comes into equity must come with clean hands. কিন্তু দুদক যে গোজামিল অভিযোগ এনেছে মামলা দুটিতে তা কতটুকু পরিস্কার তা বিবেক সম্পন্ন একজন মানুষ খেয়াল করলেই বুঝতে পারবে। তথ্য সংগ্রহে -- যেড ফোর্স সাইবার ট্রুপার্স
Posted on: Wed, 10 Dec 2014 02:23:42 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015