From: Shakil Mahtab, Bogra Polytechnic Institute, - TopicsExpress



          

From: Shakil Mahtab, Bogra Polytechnic Institute, Bogra ডিপ্লোমা প্রকৌশলদের উচ্চ শিক্ষা এই বিষয়টি নিয়ে লিখার প্রয়োজন বোধ করলাম শিক্ষাবিদ ও বিশ্লেষকদের নির্লিপ্ততা থেকে। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোডের্র নিয়মানুসারে এস এস সি , এস এস সি (ভোকেশনাল), এইচ এস সি বা সমমানের শিক্ষার্থীরা চার বছর মেয়াদের ডিপ্লোমা প্রকৌশল শিক্ষা ক্ষেত্র পলিটেকনিক গুলোতে পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি হবার সুযোগ পান। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও একই পদ্ধতিতে পলিটেকনিক গুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তি করে। বাংলাদেশ ব্যতীত ভারত সহ উন্নত বিশ্বের সকল দেশে ডিপ্লোমা প্রকৌশল তিন বছরের কোর্সে পড়ানো হয়। এক বছর বেশি হওয়ার পরও স্বকৃতিতে বৃহৎ পার্থক্য দেখা যায়। ভারতে যেখানে তিন বছর মেয়াদের ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা ব্যাচেলর অব টেকনোলজি বা ব্যাচেলর অব ইজ্ঞিনিয়ারিং এ এক বছর (দুই সেমিস্টার ) এক্মমশন(পূর্বের পঠিত স্বীকৃতি) পেয়ে দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নের সুযোগ পায়। সেখানে আমাদের দেশের সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় গুলো আগামী শিক্ষা বর্ষে কোন বর্ষ হতে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের স্নাতক প্রকৌশল শিক্ষার সুযোগ দিবেন তার কোন নীতিমালা এখন পর্যন্ত প্রকাশ করা হয়নি । এক্মমশন নির্ভর করে মূলত পূর্বে পঠিত বিষয়ের কোর্স কারিকুলামের উপর। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের চারবছর মেয়াদি সিলেবাস যে আন্তর্জাতিক মানের তাতে কোন সন্দেহই নেই। কারণ অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মত দেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে যখন আমাদের দেশের উচ্চশিক্ষা পিয়াসু ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা আবেদন করেন তারা প্রথম বছরের পঠিত বিষয়ের ক্রেডিট ছাড় পান । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বগুড়া পলিটেকনিকের মাইনিং এন্ড মাইন সার্ভে বিভাগ থেকে ২০১০ সনে ডিপ্লোমা প্রকৌশলী সমাপনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এক শিক্ষার্থী জানান -‘আমার পঠিত বিভাগটি বাংলাদেশে নতুন , আমি পাশ করার পর অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে ব্যাচেলর অব মাইনিং ইজ্ঞিনিয়ারিং এ দশটি কোর্স এ মোট দুইশত ক্রেডিট সমন্বয় পেয়েছি’’। বিশ্বের প্রথম সারির মাইনিং স্কুল হিসাবে প্রসিদ্ধ কার্টিন ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে তার স্টুডেন্ট নং-১৫৬৫২৬৩২। আমাদের দেশের ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের প্রাপ্য মূল্যায়ন না দিয়ে তাদের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয় ।এ বপারে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা জানায়- বর্তমান চাকরীর বাজারে ডিপ্লোমা প্রকৌশলী অথবা বিএসসি একই পদের জন্য চাওয়া হলেও সরকারী ,বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট অনুষদে কোন ক্রেডিট সমন্বয় ছাড়াই পড়তে হয়। এখানেই তারা চরম বৈষম্যের স্বীকার হন। উদাহরণে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা জানায়- ভারতে বিএসসি ইন ইলেকট্রনিক কে ডিপ্লোমা ইন ইলেক্ট্রনিক এর সমান মূল্যায়ন করে এবং উভয়ই ব্যাচেলর অব ইজ্ঞিনিয়ারিং এ এক বছর (দুই সেমিস্টার ) এক্মমশন পেয়ে দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নের সুযোগ পায়। বলার মত কথা হল ইউরোপের দেশ গুলিতে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় গুলি টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে পরিচিত এবং সেখানে ৪৫ থেকে ৬৫ শতাংশ টেকনিক্যাল বা কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত। অন্য দিকে আমাদের দেশের পরিসংখ্যান হলও ২ থেকে ৩ শতাংশ এবং প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় গুলো টেকনিক্যাল বা কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিতর জন্য নয়। ইউরোপে আমেরিকা ও উন্নত-দেশ গুলিতে পলিটেকনিকে পিএচডি বা গবেষণা প শিক্ষা দেয়া হলেও আমাদের দেশের পলিটেকনিক হতে পাশ করা শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা অর্জনের ক্ষেত্রে নিজেদের দেশেই উপেক্ষিতি হচ্ছে, তারা মূল্যায়িত হয় উচ্চ মাধ্যমিক বা এইচ এস সি সমমানে। এটি অসম ও মানবতা বিরোধী মূল্যায়ন । বর্তমানে প্রতি বছর ৩০ হাজার শিক্ষার্থীরা পলিটেকনিক থেকে পাশ করে বের হয় ,তাদের স্কুলিং ১৪ বছর হলেও স্নাতক পর্যায়ে পড়াশোনা করতে হলে তাকে ১২ বছর অর্থাৎ উচ্চ মাধ্যমিক বা এইচ এস সি সমমানে মূল্যায়ন করে বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে ভর্তি হতে হয়।তাহলে কেন তাকে এপ্লাইড ম্যাথ , ইজ্ঞিনিয়ারিং ফিজিক্স ,কেমিস্ট্রি এবং সং টেকনোলজির বিষয়ে পড়ানো হল? ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত প্রি- ইজ্ঞিনিয়ারিং এবং ইজ্ঞিনিয়ারিং বিষয় গুলি যদি অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মত দেশের নামকরা টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে মূল্যায়িত হয় তাহলে নিজ দেশে কেন উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা অর্থহীন ভাবে জীবনের দুটি বছর নষ্ট করবেন। কেন এভাবে প্রতিবছর ৬০-৭০ হাজার শিক্ষার্থীর জীবন থেকে দুইটি বছর অর্থহীন হবে।আমাদের দেশের নব্য শিক্ষিতরা ডিপ্লোমা প্রকৌশল শিক্ষাকে টেকনিক্যাল বা কারিগরি শিক্ষা মনে করলেও ব্যাচেলর অব ইজ্ঞিনিয়ারিং শিক্ষাকে একাডেমিক শিক্ষা বলতেই বেশি অভ্যস্ত। কিন্তু সীমানার ওপার ভারতেই ডিপ্লোমা প্রকৌশল শিক্ষা এবং ব্যাচেলর অব ইজ্ঞিনিয়ারিং উভয় শিক্ষাকে প্রায়োগিক শিক্ষা হিসাবে বিবেচনা করা হয়। আমাদের দেশের শিক্ষাবিদরা ও সংশ্লিষ্টরা শুধু বলছেন সরকারের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার অভাব। আগামী ২০১১ শিক্ষাবর্ষে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা সকল প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেতে যাচ্ছে – তাদের বিশ্ববিদ্যালয় সমূহে কিভাবে ভর্তি করা হবে , ভর্তি পরীক্ষা একত্রে না আলাদা হবে , পরীক্ষা পদ্ধতি কেমন হবে , ক্রেডিট সমন্বয় হবে কিনা, হলে কতটুকু হবে, না হলে কেন হবে না, ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের জন্য কোন কোটা থাকবে কিনা বা কি হওয়া উচিৎ তা নিয়ে কোন শিক্ষাবিদ ও সংশ্লিষ্টদের চিন্তার বহিঃপ্রকাশ না হওয়াই কারিগরি শিক্ষাকে অবজ্ঞার শামিল। তবে আলোর মুখ দেখতে শুরু করা ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের উচ্চশিক্ষার বিষয়টির সাথে এই শিক্ষার সঠিক মূল্যায়নটিও জরুরি । ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের যদি কোনরকম ক্রেডিট সমন্বয় ছাড়াই প্রথম বর্ষে ভর্তি হতে হয় তা হবে তরুণ সমাজের কাছে ডিপ্লোমা প্রকৌশল শিক্ষার তথা টেকনিক্যাল বা কারিগরি শিক্ষার চরম অবমূল্যায়ন হবে এবং এই শিক্ষা গ্রহণে মেধাবীরা অনাগ্রহী হবে। সাথে সাথে বহির্বিশ্বে আমাদের ডিপ্লোমা প্রকৌশল বর্তমান সময়ের চেয়েও অধিকতর অবহেলিত হবে। শিক্ষাবিদ ও সংশ্লিষ্টদের কারিগরি শিক্ষার উন্নয়নে আরও বেশি চিন্তা ও বিশ্লেষণের বহিঃপ্রকাশই এই শিক্ষার প্রচার ও মান উন্নয়নে অধিক কার্যকর হবে বলে সকলের ধারনা এবং এই শিক্ষার অবমূল্যায়নেও তারাই প্রশ্নবিদ্ধ হবেন। দেশকে বয়ে চলতে হবে মেধা-শূন্য কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিতদের নিয়ে। তখন আমাদেরকে ২৪/০৩/২০১১ তারিখে ইন্সটিটিউট অব ইজ্ঞিনিয়ার্স বাংলাদেশের (আইবেট) ২৮তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়ার ‘‘ শিল্পসমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই’’ এই কথার বিকল্প খুঁজতে হবে শীঘ্রই। -Shakil Mahtab, Bogra Polytechnic Institute, Bogra
Posted on: Tue, 28 Jan 2014 07:40:13 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015