Report on Daily Manab Zamin on 24th of June 2013. সিলেট সিটি নির্বাচন এবং মিসবাহ সিরাজ: সিলেটের নির্বাচনী ময়দানে জয়ের মুখ দেখেননি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। ইউনিয়ন, পৌর এবং উপনির্বাচনের পর এবার মর্যাদাপূর্ণ সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কাজ করেও জয় ঘরে তুলতে পারেননি তিনি। এ অবস্থায় সিলেটের রাজনীতিতে মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। এদিকে সিলেট সিটি নির্বাচনের পর থেকে মিডিয়ার মুখোমুখি হচ্ছেন না মিসবাহ সিরাজ। নির্বাচনের শুরু থেকে এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ ছিলেন কামরানের পাশেই। তবে, তিনি পাশে থাকলেও কাজ করেননি। এ বিষয়টি শুরু থেকেই দৃশ্যমান হলেও কামরানকে বিশ্বাস করানো যায়নি। কামরান বলেছিলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগের কামরান। আর কামরানের পাশে আওয়ামী লীগ থাকবেই।’ কিন্তু মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ কামরানের সঙ্গে থাকলেও নির্বাচনে মিসবাহ’র নিজস্ব বলয় ছিল পুরোপুরি নিশ্চুপ। তারা প্রতিদিন দিনের বেলা কোন একসময় নগরীর বিভিন্ন এলাকায় লিফলেট বিতরণের ছবি তুলে নির্বাচনী মাঠ থেকে হারিয়ে যেতেন। আর রাতে কামরানের নির্বাচনী কার্যালয়ে তাদের সরব থাকতে দেখা যেতো। এর বাইরে গোটা নগরীতে কামরানের সমর্থনে মিসবাহ সিরাজের অংশের কোন তৎপরতা ছিল না। ভোটের ফলাফলে দেখা গেছে, ১৪ দলের মেয়র প্রার্থী মিসবাহ সিরাজের ভোটকেন্দ্রেই হেরেছেন বিশাল ব্যবধানে। মঈনুদ্দিন মহিলা কলেজ ভোটকেন্দ্রে কামরানের হারের পর স্পষ্ট হয়েছে মিসবাহ’র অবস্থান। মিসবাহ সিরাজ মেয়র প্রার্থী কামরানের নির্বাচনের প্রধান সমন্বয়কারীর দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু নির্বাচনের মাঠে আওয়ামী লীগের সমন্বয়হীনতার চূড়ান্ত অভাব লক্ষ্য করা গেছে। এ কারণে তৃণমূলের নেতারা ভোটের আগে বারবার ২৭ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগকে নিয়ে বৈঠক করার কথা বললেও তাদের নিয়ে কেউ বসেননি। ঘরে ঘরে নির্বাচনী প্রচারণা ছিল না। ভোটব্যাংকে আগলে রাখার মতো কোন পরিকল্পনা ছিল না। এমনকি নির্বাচনের দিনের পরিকল্পনা কেউ গ্রহণ করেননি। এ জন্য ১২৮টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে প্রায় ৬০টি ভোটকেন্দ্রে কামরানের কোন নির্বাচনী এজেন্টই ছিলেন না। নির্বাচনের দিন কামরান নিজেও জানিয়েছেন, তিনি নিজেও ৫ থেকে ৬টি কেন্দ্রে তার নির্বাচনী এজেন্ট পাননি। আর যেসব কেন্দ্রে এজেন্ট পাওয়া গেছে তারা অনেকে নিজ উদ্যোগে এসেছেন। শুধু মিসবাহ উদ্দিন সিরাজই নন তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনী মাঠে থাকা কামরানকে বিচলিত করে তোলে নগরীর টিলাগড়ের এমপি গ্রুপ সমর্থিত ছাত্রলীগের কর্মীরা। ওই সময় কাউন্সিলর প্রার্থী আজাদ সমর্থিতদের সঙ্গে এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরীর গ্রুপের কর্মীরা বন্দুকযুদ্ধে লিপ্ত হয়। আজাদ গ্রুপ কামরানের অনুগত থাকায় শফিকুর রহমান সময়কে কাজে লাগিয়ে প্রথমেই কামরানকে কাবু করার প্রচেষ্টা চালান। আর ওই সময়ে ছাত্রলীগের কর্মীদের অস্ত্রের মহড়া এবারের নির্বাচনে প্রভাব ফেলেছে। যদিও পরে কৌশলে বিষয়টি মিটমাট করা হয়েছিল। এ ঘটনার পর কামরান ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের সঙ্গে বৈঠক করে তার ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়েছিলেন এবং শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে তার পক্ষে কাজ করার আহ্বান জানান। কামরানের কথায় সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী এমপি ও তাদের সমর্থকরা মাঠে দৃশ্যমান থাকলেও মাঠ দখলে সক্রিয় হয়ে উঠেননি।
Posted on: Fri, 28 Jun 2013 08:34:22 +0000