আবু সাঈদ জিয়াউদ্দিন - TopicsExpress



          

আবু সাঈদ জিয়াউদ্দিন একটা প্রশ্ন করার ইচ্ছা অনেক দিনের - কোরআনে হাফেজ হওয়ার পর একজন মানুষের জীবিকার জন্যে আয়ের উৎস কি হবে? তাকে হয় কোন মসজিদে ইমামতির চাকুরী নিতে হবে অথবা তাকে আরেকটা মাদ্রাসায় যোগ দিতে হবে। এই দুই জায়গার আয়ের উৎস দান সাদকা। বিপুল পরিমান মানুষকে পরনির্ভরশীল করে সমাজে পাঠিয়ে দিতেই এই কওমী মাদ্রাসাগুলো কাজ করছে। এই পরনির্ভরশীল মানুষের পক্ষে কি একজন দুরাচার মানুষের সামনে বসে সত্য ভাষন দেওয়া সম্ভব?মোটেও না। এরা তাই সমাজের অনেক দুরাচার দেখেও চুপ করে থাকে অথবা মেনে নেয় - কারন তাদের রুটিরুজীর জন্যে সমাজের দুরাচারদের কাছেই হাত পাততে হয়। কেন একজন হাফেজ বাস ড্রাইভার হতে পারবে না? কেন একজন হাফেজ প্রকৌশলী হতে পারবেন না? কেন একজন বাস হাফেজ ডাক্তার হতে পারবেন না? যদি একজন হাফেজ বাস ড্রাইভার হন বা একজন প্রকৌশলী বা একজন সরকারী কর্মকর্তা তবে কি তারা অনেক বেশী উন্নত মানের সেবা দেবেন না? এরা হবেন সমাজের দৃষ্টান্ত - কারন এরা পার্থিব আইনের চেয়ে বেশী ভয় পাবেন আল্লাহর আইনকে - সুতরাং তাদের কাছে থেকে দূর্নীতি আশা করা ভুল হবে। বাবু নগরীরা কি নিজেদের স্বার্থে সমাজের একটা চ্যানেল নিয়ণ্ত্রন করছেন না, যেখানে দারিদ্র্যতার কারনে আশ্রয় নিতে আসে বাচ্চাদের পররির্ভরশীল এবং পংগু করে সমাজে ছেড়ে দেন - এরা কি একজন শিশুর শিক্ষার অধিকারকে খর্ব করছেন না? রাজনীতিতে ধর্মের অপব্যব্যবহারে সুযোগে দিনের পর দিনে কওমী মাদ্রাসার বিষয়টি অধরা থেকেই যাচ্ছে। বিশেষ করে বিএনপি জামাত তাদের নিজের স্বার্থে কওমী শিক্ষাকে সংস্কারের বিষয়টি বিবেচনা করবে না - অন্যদিকে আওয়ামীলীগের জন্যে সেখানে হাত দেওয়া মানে হেফাযত ধরনের আন্দোলনের মুখোমুখি হওয়া। এক দিকে রাজনীতি যারা কওমী মাদ্রাসাগুলো ব্যবহার করছেন তাদের ছেলেমেয়ে কখনই সেখানে যায় না - এমনকি দেশেও থাকে না। অন্যদিকে মানুষ ছোয়াবের আশায় প্রচুর দান-সাদকা করায় কওমী মাদ্রাসাগুলো আর্থিকভাবে বেশ শক্তিশালী থাকে - যাতে সেখানকার প্রভাবশালী শিক্ষকরা বেশ আয়েসী জীবনযাপন করতে পারে - তাদের নিজেদের সন্তানদেরও সেখানে প্রতিষ্ঠিত করে। এই ভাবে সেখানে একটা পারিবারিক চক্র গড়ে উঠেছে। ফলে তারা নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় সরকারকে হুমকীও দিতে পারছে। বাবুনগরীরা রাষ্ট্র এবং বিত্তবানদের উদাসীনতার সুযোগে এতিমদের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে তাদের মাদ্রাসাগুলো ভরে ফেলছে - অন্যদিকে মানুষ ছোয়াবের আশায় মাদ্রাসাগুলোতে আর্থিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। একসময় হয়তো দারিদ্রতার হার কমলে এই মাদ্রাসামুখী মিছিল বন্ধ হবে অথবা সরকার এবং বিত্তবানরা দায়িত্ব নিয়ে এতিমঅসহায়দের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিলে হয়তো এই চক্র ভাংবে নতুবা এই চক্র চালু থাকবে আর লাভবান হবে একদল মানুষ। বাংলাদেশে ডজনখানেক শিক্ষা পদ্ধতিতে যে ডজনখানেক ধরনের মানুষ সমাজে এসে একীভুত হচ্ছে - তারা একজন আরেকজনের কাছে মুলত ফরেনপার্টিকেল - কে কি বলে অন্যরা বুঝে না - ফলে পরষ্পরের প্রতি বিদ্বেষ তৈরী হয়। যার ফলে মাদ্রাসা থেকে বের হওয়া টুপি-পাঞ্জাবী পড়া ছেলেটাকে দেখলে জিন্স-টিশার্ট পড়া ছেলেটা মনে করে জঙগী আর অন্যদিকে মনে করে নাস্তিক। একটা সমাজে এই পরষ্পর বিরোধী মনোভাবে ফলেই শাহবাগের বিচারের দাবীতে জড়ো হওয়া তরুন-তরুনীদের উচ্চাসকে এরা নাস্তিকতা হিসাবে দেখেছে - আর ধর্মকে রক্ষার মহান দায়িত্ব হিসাবে এরা হেফাযতের ডাকে ঢাকায় এসেছে। এই কাজটা যারা করেছে তারা যুবসমাজকে খুব সহজেই পরষ্পরের মুখোমুখী দাড় করিয়ে দিয়েছে। তাই বাংলাদেশের ভবিষ্যতে জন্যে ইংরেজী, কওমী, ক্যাডেট ইত্যাদি ১২ রকমের শিক্ষার থেকে বের হয়ে একটা সাধারন শিক্ষা চালু করা জরুরী। রাজনৈতিক সুবিধাবাদের অপরিনামদর্শী লাভের চেয়ে একটা শিক্ষা ব্যবস্থা ( ১২ লেভেল পর্যণ্ত) যেখানে সবাই নিজের পছন্দ মতো বিষয়গুলো পড়তে পারবে এবং যেখানে বিজ্ঞান, ভাষা এবং গনিতকে বাধ্যতামুলক করা হবে।
Posted on: Mon, 28 Oct 2013 01:59:03 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015