আমার ল্যাপটপ ছিনতাই ও - TopicsExpress



          

আমার ল্যাপটপ ছিনতাই ও কিছু উচিৎ শিক্ষা !! (ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত) কিছু কাজ ছিলো বন্ধুর সাথে। ওর সাথেও আগে থেকে কথা ছিলো ওর বাসায় যাবো। ওকে বললাম আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে আয়, সন্ধ্যার ক্লাস নিয়ে খাওয়া দাওয়া করে একসাথে বাসায় যাই (বুয়ার রান্না খাবার থেকে রক্ষা !!)। কিন্তু এতে যা হলো, তা হচ্ছে আমাদের বাসায় ফেরাটা বেশ দেরি হয়ে গেলো। আমরা যখন ফিরছি রাত তখন ৯:৩০। গরমের দিন ছিলো ভাবলাম দুই বন্ধু রিকশা ভ্রমন করি। যাচ্ছিলাম রোকেয়া স্মরনী দিয়ে, সাথে ছিলো আমার বন্ধু আর আমার অতি প্রিয় ল্যাপটপ। রিক্সাখানা বঙ্গবন্ধু কনভেনশন সেন্টারের আশেপাশে এসেছে তখন আমার হাতে মৃদু ধাক্বা লাগলো, প্রথম চিন্তা আসলো, হয়তো কেউ পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় ধাক্কা লেগেছে। ৫ সেকেন্ড পরে বুঝতে পারলাম, পাশ দিয়ে যাওয়া মোটরসাইকেল আরোহী দুইজন আমার ল্যাপটপ খানা ছিনতাই করিলেন। পরবর্তী ৫ সেকেন্ড মাথা হ্যাঙ্গ থাকার পর চিন্তা করলাম কি করা যায়। কিন্তু ততক্ষনে সাহসী ও করিৎকর্মা (!!) দুই ছিনতাইকারী অনেকটা দূরে চলে গেছে। এথেকে আমার উচিৎ শিক্ষা যা হয়েছে তাহলো: ১. কোনভাবেই রোকেয়া স্মরনী দিয়ে রাতে রিক্সা বা সিএনজি নিয়ে যাওয়া নিরাপদ নয় (দয়া করে কোন রাস্তা নিরাপদ জিজ্ঞাস করিয়েন না)। ২. সাথে ব্যাগ থাকলে তা শক্ত করে ধরে থাকতে হবে যাতে চলন্ত গাড়ী থেকে কেড়ে নিতে না পারে। এব্যাপারে বিস্তারিত বলিবো। এবার আসি হারিয়ে যাওয়ার পর উচিৎ শিক্ষা প্রসঙ্গে । অত্যন্তু দু:ভাগ্য ক্রমে, আমার ব্যাকআপ ড্রাইভটাও তখন আমার ল্যাপটপ ব্যাগেই ছিলো । ফলে আমার প্রায় সব ডাটাই হারিয়ে গেছে । চোর পালালে বন্ধু বাড়ের মতো মনে হলো, এরপর যখন নতুন ব্যাকআপ ড্রাইভ কিনবো তা কখনো ল্যাপটপের সাথে একসাথে রাখবো না । একটা যদি রাখি আগঁরতলা তবে আরেকটা রাখবো খাটের তলা । তবে যেহেতু অনেক দিন ধরেই অনলাইনে ব্যাকআপ রাখতাম তাই অনেক ডাটাই রিকভার করতে পেরেছি । আমি ব্যক্তিগত ভাবে ড্রপবক্স ব্যাবহার করি । তবে বাজারে গুগুলের ড্রাইভসহ আরো আনেকগুলো ভালো বিকল্প আছে । আমার ডাটা রিকভারীতে আমার মেইল এটাচমেন্ট ও গুগুল ডকসের ও ব্যাপক ভুমিকা ছিলো । আসলে যখন কোন ল্যাপটপের মতো ডিজিটাল ডিভাইস হারায় বা ছিনতাই হয় তা মূলত তিন ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে । ১. আর্থিক ক্ষতি ২. ডাটার ক্ষতি ৩. পাইভেসি রিক্স বা ক্ষতি বাকি দুই ক্ষতি যখন কিছুটা পুসিয়ে নিয়েছি, তখন মাথায় আসলো, আমার ল্যাপটপে তো অনেক কনফেডেনশিয়াল রিসার্চ ডাটা ছিলো, ব্রাইজারে আমার সব ইমেইল আর ফেসবুকের পাসওয়ার্ড সেভ করা । এখন আমার কি হবে ???????? কি করা যায় চিন্তা করছি । মনে হলো প্রথমেই সবগুলো ইমেইল সাইটে গিয়ে নিজের পাসওয়ার্ড চেন্জ করি । ফেসবুকের পাসওয়ার্ড ও চেন্জ করলাম । এখন কিছুটা নিশ্চিন্ত । অন্তত আমার মেইল বা ফেসবুক কেউ অ্যাক্সেস করতে পারবে না । তবে বড় একটা শিক্ষা হলো; এখন আমি ব্রাউজারে পাসওয়ার্ড সেভ করে রাখলেও তা মাস্টার পাসওয়ার্ড দিয়ে আটকিয়ে রাখি । অনেকে বলে ব্রাউজারে পাসওয়ার্ড সেভ করা নিরাপদ নায়। কথাটা সত্যও, কিন্তু আমার মতো অলস মানুষকে এ পরামর্শ দিয়ে কোন কাজ হবে না । প্রতিবার লগিনে নতুন করে ইউজারনেম পাসওয়ার্ড দেয়া, এ কম্ম আমারে দিয়ে হবে না :( যখন মোটামুটি নি:শ্চিন্ত হলাম যে আমি এখন নিরাপদ । তখন মনে হলো, হায় আল্লাহ, আমার স্মার্ট ও আধুনিক ছিনতাইকারী যদি আমার হার্ডডিক্সখানা খুলে অন্য কোন সিস্টেমে লাগায় । পরক্ষনেই মনে হলো লাভ নাই চান্দু । আমারা ড্রাইভ তো এনক্রিপটেড (online-tech-tips/computer-tips/how-to-encrypt-your-comput...) সুতরাং ড্রাইভখানা অন্য কোন সিস্টেমে লাগালেও আমার ডাটা রিট্রিভ করা তার পক্ষে সম্ভব হবে না । যাক এখন চিন্তা করছিলাম । ক্ষতি যা হওয়ার তাতো হয়েছেই । পুলিশকে গিয়ে বলি । গেলাম পুলিশের কাছে, পরামর্শ দিলো জিডি করতে । জিডিতে লিখছিলাম, “.... আমার ল্যাপটপ খানা ছিনিয়ে নেয়” । তখন পুলিশ অফিসার আমাকে থামিয়ে দিলো, বললো এভাবে হবে না । লিখতে হবে, “ রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম, তখন হাটাৎ করে আমার ল্যাপটপখানা হারিয়ে যায় । কিন্তু পরবর্তিতে অনেক খোজাখোজি করেও তা আর খুজে পাইনি । ” (মনে মনে বলি, হাসুম না কান্দুম) । অন্য কিছু লিখলে নাকি কেস করতে হবে আর কেসের তো হাজারো ফ্যাকরা । যাই হোক, পুলিশ অফিসারকে ধন্যবাদ, কারন তিনি আমার কাছ থেকে কোন বকশিন আদায় করেন নি । এক সেমিনারে কথা হচ্ছিলো, বিটিআরসির সার্ট টিমের পরিচিত একজনের সাথে, তিনি উপদেশ দিলেন কেস করার । তাহলে তিনি সব আইএসপিকে আমার ম্যাক অ্যাড্রেস দিয়ে খুজতে বলতে পারবেন সেক্ষেত্রে । ফলে আমার ম্যাক নিয়ে কেই অনলাইনে আসলে তাকে লোকেট করা সম্ভব । তবে সেক্ষেত্রে আমার কাছে ল্যাপটপ কেনার সব ডকুমেন্ট থাকতে হবে, ল্যাপটপ খানা যে আমার তা প্রমান করার জন্য । কিন্তু আমার ল্যাপটপ খানা দেশের বাইরে থাকার সময় অনলাইনে কিনেছিলাম, সে সংশ্লিস্ট কাগজ পত্র আমার কাছে ছিলো না । তবে প্রতিজ্ঞা করলাম, নতুন ল্যাপটপ কেনার সময়, সব ডকুমেন্ট ও ম্যাক অ্যাড্রেস লিখে তা সেন্দুকে (!!) লুকিয়ে রাখতে হবে । যাই হোক, ল্যাপটপ হারিয়ে (!!) অনেক অভিজ্ঞতা হলো । শেষ করি একটা সুখবর দিয়ে, আমার এই দু:ঘটনাটা ফেসবুকে শেয়ার করেছিলাম । এটা আমার আরেক বন্ধু দেখেছিলো । যথারীতি ঐ রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় বড় ভাইরা তার ঝুলি ধরেও টান দিয়েছিলো । কিন্তু সে আমার অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে তার ব্যাগ খানা শক্ত করে ধরেছিলো । ফলে কিছুক্ষন ট্যাগ অফ ওয়ার চলেও ব্যাগখানা তারা নিতে পারে নাই । ঘটনা ঘটার পরপরই বন্ধু আমাকে ফোন দিয়ে বিশাল ধন্যবাদ জানালো । আমি মনে মনে বললাম জয় বাবা ফেসবুক ।
Posted on: Mon, 23 Sep 2013 16:00:13 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015