ইচ্ছে করলেই এখন আর পঁচিশ পয়সা দিয়ে লজেন্স কিনতে পারি না, পারি না এক টাকা দিয়ে বারোটা হজমি (ছাই) কিনতে। খুব ইচ্ছে করে ইকোনো কলম দিয়ে লিখে কলমটা সাদা শার্টের পকেটে রাখি। কলমটা পকেটে কালি ছেড়ে দিক। নাহ! তা আর হয়ে উঠে না। ইচ্ছে করে খাতার উপর রুলার ধরে লিখি, যাতে লাইনগুলো বাঁকা না হয়। না, রুলারের দরকার হয় না। চোখ বন্ধ করে লেখলেও এখন আর লাইন বাঁকা হয় না। সেইস্কুল, সেই আঙ্গিনা, সবই ঠিক আছে। শুধু বাঁশের বেড়াটা নেই। বাঁশের বেড়া থেকে টিনশেড হয়েছে। তারপর, তারপর দুতলা বিল্ডিং। ক্লাস ওয়ানের ছেলে মেয়েরা এখন আর ফ্লোরে বসে ক্লাস করে না। যদিও আগের ষাট জনের স্থলে এখন তিনশো জনের ক্লাস এটা। এখনও ছেলেমেয়েরা টিফিন পিরিয়ডে আঁচার খায়, যদিও সেই আঁচার বিক্রেতা গাফফার আলি অনেক আগেই চলে গেছে। এখন হয়তো আঁচার বিক্রি করে অন্য কোন আলি, মিয়া কিংবা অন্য কেউ। এখনও ছেলেমেয়েদের কাঁধে স্কুলব্যাগ আছে, ব্যাগে বই আছে, ব্যাগের বাইরের একপাশে বোতলে পানি আছে, হাতে রঙ্গিন ছাতা আছে। নেই রং বেরংয়ের পোশাক। এখন সবার ইউনিফর্ম পড়া বাধ্যতামুলক। ইচ্ছে করে…খুব ইচ্ছে করে জাম্বুরা দিয়ে ফুটবল খেলি, ক্লাসরুমে বসার জায়গা নিয়ে ঝগড়া করি, ইচ্ছে জাগে মাথায় যথেষ্ঠ তেল দিয়ে বাম পাশে চুলে সিথি তুলে দিক মা। ইচ্ছে করে শিক্ষকের ধমক খাই, আট আনা দামী রঙ্গিন আইসক্রিম খাই, জাম খেয়ে শার্টে দাগ লাগাই, বর্ষার দিনে পা পিছলে পড়ে পুরো দেহাবয়বে কাঁদা লাগাই , ইচ্ছে করে মাত্র দুই টাকা পেয়ে খুশিতে নাচতে থাকি, লাল জামা পেয়ে বন্ধুদের সবাইকে ডেকে ডেকে দেখাই। ইচ্ছে করে স্কুলের হোমওয়ার্ক নিয়ে টেনশন করি, স্কুল বন্ধ ঘোষণা হওয়ার পর খুশিতে চিৎকার দিয়ে উঠি, সহপাঠিদের সাথে অকারণেই মারামারি করি, মাঝদুপুরে প্রচন্ড রৌদে দৌড়াদৌড়ি করি! কিন্তু… ইচ্ছেগুলো কখনোই পূরণ হবার নয়। এই স্বপ্নগুলো যে হারিয়ে গেছে অনেক আগেই! . . . . #JIBON
Posted on: Tue, 02 Jul 2013 10:18:06 +0000
Trending Topics
Recently Viewed Topics
© 2015