কেন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলো? কেন সেদিন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছিলো? কারা সেটি করেছিলো? কারা প্রকাশ্যে ছিলো? কারা ছিলো নেপথ্যে? এগুলোর তদন্ত হলেই থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসবে। কারা সেদিন বিএনপিকে বলেছিলো আওয়ামী লীগকে ছাড়া নির্বাচন করতে হবে। আর আওয়ামী লীগকে বলেছিলো একটির পর একটি দাবি দিতে হবে। আমরা ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক করতে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করলে কে সেনাবাহিনীকে ইনএকটিভ করে আওয়ামী লীগকে আবার মাঠে নামিয়েছিল। লগি- বৈঠার কর্মসূচি কীভাবে হয়েছিলো? লগি- বৈঠার কর্মসূচির সময় সংঘাত, হত্যাকান্ড শুরুর পূর্ব মুহূর্তে কেন সেদিন পুলিশকে সরিয়ে নেয়া হলো? কারা সে দিন এ কাজগুলো করেছিলো? প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্যে কারা নিয়োজিত ছিলো এইগুলো তদন্ত করলেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব (???) বলেছিলেন জেদের ভাত কুত্তা দিয়ে খাওয়াবো। ২০০৬ সালের ২১ নভেম্বর আমাদের আমলে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পক্ষ থেকে ঢাকা সেনা নিবাসের সেনাকুঞ্জে প্রতিবছরের মতো যে সংবর্ধনার আয়োজন করা হয় সেখানে এই প্রথম দুই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মাঝখানে দশটি চেয়ার বসিয়ে কৃত্রিম দূরত্ব সৃষ্টি করা হয়। প্রেসিডেন্ট ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। সেনাপ্রধান এভাবে বসার ব্যবস্থা করেছিলেন বলে পরে জানা যায়। প্রেসিডেন্ট সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়কও। আমরা প্রেসিডেন্টের সাথে ওই অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। আমাদের পক্ষ থেকে সেনা বাহিনীর কর্মকর্তারা এ আয়োজন সম্পর্কে জিজ্ঞেস না করেই একটি পরিকল্পনা থেকে এভাবে দুই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বসার ব্যবস্থা করেছিলো। এমন কি প্রেসিডেন্ট ছাড়া তারা যাদেরকে মনে করেছিলো কেবল তাদেরকেই ওখানে ঢুকতে দেয়া হয়েছিলো। আশ্চর্যজনক হচ্ছে সাবেক দুই প্রধানমন্ত্রীকে প্রবেশ ও প্রস্থানে তারা এমনভাবে দিক দেখিয়েছিলেন যাতে কারো সাথে কারো দেখা না হয়। তাদের দুজনের সহযোগীদের সেখানে ঢুকতে দেয়া হয়নি। এমন কি প্রেসিডেন্টের সার্বক্ষণিক প্রয়োজন জানা সত্ত্বেও প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা বা মন্ত্রী হিসাবে আমাকে সেখানে যেতে ব্যারিকেড দেয়া হয়েছে। যেখানে সাংবিধানিকভাবে আমার নির্দেশ মানতে তারা বাধ্য, সেখানে আমাকে ঢুকতে না দেয়ার একটি কারণ ছিলো যাতে দুই নেত্রীকে এক জায়গায় না আনা হয়। দু’জনের সাথে আমার ব্যক্তিগত সুসম্পর্কের কারণে তাদের মধ্যে দেখা সাক্ষাত হয়ে যেতে পারে এ ছিলো বিশেষ ব্যক্তির আশংকা। ওই ব্যক্তিটি সেনা কর্মকর্তাদের সাথে আলাপকালে আমার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন যে, একজন সিভিলিয়ান দেশ চালায়। অবশ্য তাকে অনেকে বলেছিলেন সংবিধান অনুযায়ী সিভিলিয়ানেরই দেশ চালানোর কথা। ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পর আমাকে সেনা কর্মকর্তারাই এ কথা জানিয়েছেন। - মোখলেস চৌধুরী (সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ইয়াজউদ্দিন আহমেদের সাবেক উপদেষ্টা, বিশিষ্ট সাংবাদিক, বাংলাদেশের বৈদেশিক সাংবাদিক সংস্থা ওকাব-এর সাবেক প্রেসিডেন্ট ১/১১-এর অন্যতম সাক্ষী।)
Posted on: Fri, 02 Aug 2013 12:10:21 +0000