কুমার তীরের আলমডাঙ্গা... - - TopicsExpress



          

কুমার তীরের আলমডাঙ্গা... - মোঃ আফিল উদ্দিন, প্রাক্তন শিক্ষক, আলমডাঙ্গা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়। August 14, 2014 at 3:51am সংগ্রহ: স্নিগ্ধ প্লাবন উপক্রমণিকাঃ অবিভক্ত বাংলার প্রেসিডেন্সী বিভাগের অন্যতম নদীয়া জেলার একটি থানা ছিল আলমডাঙ্গা। ১৯৪৭ সালের ১৪ই আগস্ট দেশ বিভাগে এই থানা কুষ্টিয়া জেলাভূক্ত হয়। ১৯৮২ সালের ১৫ই ডিসেম্বর আলমডাঙ্গা উন্নীত থানার মর্যাদা লাভ করে। অতঃপর সরকারী সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে সকল উন্নীত থানাউপজেলা নামে ভূষিত হয়। সেই সুবাদে আলমডাঙ্গা থানাও উপজেলা নাম ধারণ করে। ১৯৮৪ সালের২৬শে ফেব্রুয়ারী চুয়াডাঙ্গা জেলার অন্তর্ভূক্ত হয়। সম্প্রতি এটি আবার আলমডাঙ্গা উপজেলা নামে পুনরাখ্যায়িত হয়েছে। সীমাঃ উত্তরে মিরপুর উপজেলা, পূর্বে হরিণাকুন্ডু উপজেলা, দক্ষিণে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা ও পশ্চিমে গাংনী উপজেলা। আয়তনঃ ২১১টি গ্রাম, ১৫টি ইউনিয়ন, ০১টি পৌরসভানিয়ে গঠিত আলমডাঙ্গা উপজেলার আয়তন ৩৬৫ বর্গ কি.মি.। জনসংখ্যাঃ ২০১১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী আলমডাঙ্গা উপজেলার লোকসংখা ৩,৪৫,৯২২ জন। তন্মধ্যে পুরুষ ১,৭২,৯৩২ জন ও মহিলা ১,৭২,৯৯০ জন। বেশির ভাগ অধিবাসী ইসলাম ধর্মাবলম্বী। বাকী অধিবাসী হিন্দুসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বী। পেশাগত ভাবে অধিবাসীদের মধ্যে কৃষিজীবি, চাকুরিজীবী, ব্যবসায়ী, কুমার, ছুতার, জেলে, তাঁতী ইত্যাদি। নামকরণঃ আলমডাঙ্গা নামকরণকে কেন্দ্র করে একটিবহুল প্রচলিত কিংবদন্তী এ অঞ্চলের আবাল-বৃদ্ধ-বণিতার মুখে মুখে শোনা যায়। এক বান-ভাসীবৃদ্ধা নান্দায় চড়ে আলমডাঙ্গার কূলে ভিড়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছেড়ে বলে উঠে, “আলাম ডাঙ্গায়”। সেই থেকে নাকি আলমডাঙ্গা নামের উৎপত্তি। শুধু হাস্যরসাত্মক গল্প বলে এই কিংবদন্তীটি উড়িয়ে দেওয়া ঠিক হবে না। আলমডাঙ্গা একটি বাস্তব জনপদ। আর এ জনপদকে ঘিরেই কিংবদন্তীটি প্রচলিত।তাই “কিংবদন্তীর দেশে” গ্রন্থের লেখক সুবোধ ঘোষের ভাষায় বলি, “কিংবদন্তীগুলো হলো অর্ধেক ইতিহাস আর অর্ধেক কল্পনা।” উপর্যুক্ত কিংবদন্তী থেকে একটি সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায় যে, অতীতে বেগবতী কুমার ও পাংগাশী (বর্তমান নাম মরানদী) নদীর অগাধ জলরাশি আকীর্ণ আলমডাঙ্গার ভূমি ছিল ডাংগা বা উঁচু। আলমডাঙ্গা সহ কয়েকটি স্থানীয় জনপদের নামকরণের সার্থকতা প্রতিপন্ন করতে যেয়ে Kushtia District census report-1961 এ বলা হয়েছে “The receding and shrinking rivers of the district had left numerous water logged areas known as beels. Most of them are horseshoe shaped. Some of them are very shallow and are cultivated in dry seasons. The low and high lands of the district are named by suffixing “daha” and “danga”. So we get the names like Alamdanga, Chuadanga and Poradaha, Shelaidaha signifying high and low lands.” –অর্থাৎ,নদীর গতির পরিবর্তনের এবং সংকোচনের ফলে এ জেলায় অসংখ্য বিল নামের পানিবদ্ধ এলাকার সৃষ্টিহয়েছে। এদের বেশীরভাগই অশ্বক্ষুরাকৃতির। কতকগুলো অগভীর বিলে শুকনা মৌসুমে চাষ হয়। এখানেউঁচু জমিকে “ডাঙ্গা” এবং নীচু জমিকে “দহ” বলা হয়। সুতরাং আলমডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গা এবং পোড়াদহ, শিলাইদহ নাম এই তাৎপর্য বহন করে যে স্থানগুলো যথাক্রমে উঁচু ও নীচু জমিতে অবস্থিত। আলমডাঙ্গা প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী স্মরণিকা(১৯৮৪ খ্রীঃ) হামিদুল হক মুন্সী প্রণীত “চুয়াডাঙ্গা জেলার ইতিহাস” এবং আলমডাঙ্গা রাজস্ব অফিসের থানা সংযুক্তি প্রতিবেদনে জনৈক আলম ফকিরের নামানুসারে আলমডাঙ্গা নামের উৎপত্তিরকথা উল্লেখিত আছে। কুষ্টিয়ার প্রাক্তন জেলা প্রশাসক জনাব তাজুল হকের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রকাশিত স্বনির্ভর কর্মসূচী উদ্দীপ্ত “নবারুণ” ম্যাগাজিনে আলমডাঙ্গার ইতিহাস নিবন্ধে খোঃ নাসিরউদ্দিন মঞ্জু আলমডাঙ্গা নামকরণের উপর যে বক্তব্য রেখেছেন তার মর্মকথা এই যে, সুদূর অতীতে এ স্থানের জনহীন নিবিড় ঘন জঙ্গলে আলম নামের এক কামিলিয়াত ফকির আস্তানা স্থাপনকরেন। পরে জনবসতি গড়ে উঠলে উক্ত ফকিরের নামানুসারে এ জনপদের নাম হয় আলমডাঙ্গা। উপরোক্ত বর্ণনাগুলো বিশ্লেষণ করলে এ কথা সহজেই প্রতীয়মান হয় যে, কুমার ও পাঙ্গাশী নদীর বিপুল জলরাশি পরিবেষ্টিত আলমডাঙ্গার ভূমি ডাঙ্গাবা উঁচু ছিল। এই ডাঙ্গা শব্দের পূর্বে ফকির আলমের নাম যুক্ত হয়ে এ স্থান আলমডাঙ্গা নাম ধারণ করে। প্রাকৃতিক অবস্থাঃ অত্র উপজেলার গ্রামাঞ্চলের মাঠ-ঘাট, খাল-বিল,হাওর-বাওর ইত্যাদির অবস্থিতি ও গঠন লক্ষ্য করে সহজেই অনুমান করা যায় যে, প্রাচীনকালেএই অঞ্চলের বিস্তীর্ণ ভূ-ভাগ অসংখ্য নদ-নদী বেষ্টিত ছিল। নদী গতি পথ পরিবর্তন করার সময় যে সব পুরাতন খাত ফেলে যায় তা কোল, ডামোশ, জোলা, ডাঙশ, দহ ইত্যাদি নামে অখ্যায়িত। এ অঞ্চলের বহু মাঠ ও বিল খাল আজও এই ধরনের বিশেষণে উল্লেখিত হয়ে থাকে। কুমার, মাথাভাঙ্গা,নবগঙ্গা, ভাটুই প্রভৃতি নদ-নদীর ভাঙ্গা গড়ায় গড়ে উঠেছে এ উপজেলার মাঠ, প্রান্তর, গ্রামতাতে কোন সন্দেহ নেই। সম্ভবতঃ এমনি এক খাতের মধ্যে গড়ে উঠা আলমডাঙ্গা উপজেলার “ডামোশ”গ্রামটি তারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। জলবায়ুঃ আলমডাঙ্গা উপজেলার জলবায়ুসমভাবাপন্ন। শীতে ও গ্রীস্মের উষ্ণতার তারতম্য ১৫ ডিগ্রী থেকে ২০ ডিগ্রী ফারেনহাইটেরমধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। বর্ষাকালে বৃষ্টিপাতের সাধারণ গড় ৫০ থেকে ৬০। মেমাস থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত বর্ষাকাল ধরা হয়। শীতকালে আবহাওয়া প্রায় শুষ্ক থাকে।শীতকালে বৃষ্টি হলেও ৫/৬ ইঞ্চির বেশী হয় না। তাই এ উপজেলাকে পুরোপুরি নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়ারঅন্তর্গত বলে গণ্য করা যেতে পারে। ইতিহাসের সন্ধানেঃ আলমডাঙ্গা উপজেলার দলিল ভিত্তিক প্রাচীন ইতিহাস আজও আবিস্কৃত হয়নি। তবে কোন কোন অঞ্চলের পুরাকীর্তি কিংবা তার ভগ্নাবশেষ এবং কিংবদন্তী যা অনুমান করা যায় ঐতিহ্যগত দিক দিয়ে তার মুল্যও খুব উপক্ষেনীয় নয়। শোনা যায় মৃত ভাটুই নদীর তীরে অবস্থিত ঘোলদাড়ী মহম্মদ ঘোরীর আমলে প্রতিষ্ঠিত একটি প্রাচীন গ্রাম। তারই দাড়ির খ্যাতি বিজড়িত হয়ে “ঘোরীরদাড়ি” থেকে গ্রামটির নাম হয় ঘোলদাড়ী। এখানে জনবসতিশূন্য মাঠের প্রান্তরে প্রাচীন স্থাপত্য শিল্পের মহিমামন্ডিত বহু শতাব্দীকালের ঘোলদাড়ী জামে মসজিদ আজো বিদ্যমান। কথিত আছে মহম্মদ ঘোরীর আমলে এই মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হয়। অতঃপর ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পাণীর আমলে ভাটুই নদীর কূলে স্থাপিত হয় নীলকর সাহেবদের নীলকুঠি। বর্তমানে সে কুঠিঘোলদাড়ী মৌজার তহশীল অফিসে রূপান্তরিত হয়েছে। খাসকররা ইউনিয়নের তিওরবিলা গ্রামের বাদশাহী মসজিদ নামে খ্যাত প্রাচীন মসজিদটি এ অঞ্চলের পুরাকীর্তির এক মূল্যবান নিদর্শন। বাংলা১১৬৮ সালে ধর্মপ্রাণ প্রজাহিতৈষিণী নাটোরের জমিদার রাণী ভবানী মসজিদটি সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ২৫ একর জমি ওয়াকফ করেন। ডাউকি ইউনিয়নের বাদেমাজু গ্রামে তিন গম্বুজ বিশিস্ট জামে মসজিদ শতাব্দীকালের পুরাকীর্তির আর একটি নিদর্শন। তবে এটি কোন নবাব বাদশাহর তৈরী নয়।কিংবদন্তীর সূত্র ধরে জানা যায় প্রায় পৌনে দুইশত বছর পূর্বে বাদেমাজু গ্রামের সম্ভ্রান্ত বিশ্বাস গোষ্ঠীর এক কন্যার বিয়ে স্থির হয় ঘোলদাড়ী গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের পুত্রের সঙ্গে। কিন্তু বিশ্বাস পরিবারের চৌহদ্দিতে কোন পাকা মসজিদ না থাকায় সে বিয়ে ভেঙে যায়।অতঃপর চ্যালেঞ্জ দিয়ে সেই বছরেই ঘোলদাড়ী মসজিদের অনুকরণে নির্মিত হয় বাদেমাজু জামে মসজিদ। এ মসজিদের নির্মাণ কাল বাংলা ১২১২ সাল। ইউনিয়নের বিনোদপুর গ্রামের নীলকুঠির ভিটা আজো নজরে পড়ে। বর্তমান শতাব্দীর পঞ্চাশ দশকেও সেটি জমিদার আমলা নিবাসী সাহা বাবুদের কাছারী বাড়ী নামে খ্যাত ছিল। অদূরে ছিল সুউচ্চ গম্বুজ বিশিষ্ট গীর্জা ঘর। সেটি আজ নিশ্চিহ্ন।তারই অদূরে বড়পীর হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রঃ) সাহেবের দরগা। অতীতে প্রতি বৃহস্পতিবারে এখানে মেলা বসতো। এসব কথা মুরুব্বীদের কাছে রূপকথার মত শুনতে হয়। জামজামি ইউনিয়নের কুমার নদীর তীরে ঘোষবিলা গ্রামে ছিল মরমী সাধু কুবির ঠাকুরের আখড়া। সেখানে সাধু কুবিরের স্মরণে প্রতি বছর চৈত্র সংক্রান্তিতে মেলা বসতো্ সে স্মৃতিও আজ রূপকথার মতো হয়ে আছে। ঘোষবিলায় আছে বড়ে দেওয়ানের মাজার। সাধকপুরুষ বড়ে দেওয়ানকে কেন্দ্র করে অনেক ঐতিহাসিক ও অধ্যাত্মিক কাহিনী লোকমুখে প্রচলিতআছে। ফরিদপুর গ্রামের বাউল সাধক রনগাজী বিশ্বাসকে নিয়েও ছড়িয়ে আছে অনেক গল্প কাহিনী। শোনা যায় রনগাজী বিশ্বাস একদিন তাঁরই তৈরী বৃক্ষরাজী সুশোভিত গোলবাগানের মধ্যবর্তী বকুল তলায় ভক্ত পরিবেষ্টিত অবস্থায় চাদর মুড়ি গিয়ে শোবার পর গায়েব হয়ে যান। সেই থেকে স্থানটি বাউল সাধকের পুণ্যতীর্থে পরিণত হয়েছে। প্রতি বছর সেখানে মত শত বাউলের সমাবেশ ঘটে এবং বাউল গীতি অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে রনগাজী বিশ্বাসের আত্মারপ্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন হয়। বেহাল শাহ্ ছিলেন তাঁরই উত্তরসূরী লালনভক্ত বাউল কবি। তিনি এই গোলবাগানে বসে অসংখ্য গান রচনা ও সুর সংযোজনা করে খ্যাতির শীর্ষে উঠেন। বৃটিশ বেনিয়া নীলকর সাহেবদের অত্যাচার ও নির্যাতনের কারুণ স্মৃতি বুকে নিয়ে দাঁড়িয়ে সুবিশাল আলমডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন। এটি ছিল নীলকর সাহেবদের প্রশাসনিক ভবন। অপর একটি নীল-কুঠির ধ্বংসস্তুপ দেখতে পাওয়া যায় নতিডাঙ্গা গ্রামে। এ ছাড়া আলমডাঙ্গা উপজেলা মাঠ-ঘাট, প্রান্তরে অতীত ইতিহাসের আরো কতো না স্মৃতি বিজড়িত চিহ্ন বিলীন হয়ে আছে কে জানে। হয়তো আর কোনদিন তাইতিহাসের পাতায় স্থান পাবে না। শিল্পঃ এ উপজেলায় কোন বৃহৎ শিল্প কারখানা নেই। প্রাতিষ্ঠানিকশিল্প খামারও এখানে অনুপস্থিত। পেশাভিত্তিক কুটির শিল্পের আওতায় তাঁত শিল্পের বিশেষএকটা স্থান আছে। আর আছে কামার, কুমার, ছুতার, কর্মকার, জেলে, রুইদাস, কোল ইত্যাদি।মিষ্টান্ন তৈরীতে মোড়ভাঙ্গার নাম বিশেষভাবে খ্যাত। সাহিত্য-সংস্কৃতিঃ সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রে আলমডাঙ্গা উপজেলার অবদান অখ্যাত নয়। এ উপজেলার বেলগাছি গ্রামে ১৮৪২ সালে জন্মেছিলেন কবি ও সঙ্গীতকার নৃসিংহ প্রসাদ বসু। তিনি ‘নদীয়ার নিমাই’, ‘শ্রীকৃষ্ণ’, ‘হে আমার গৌরাঙ্গ’, ‘দারুবৃক্ষ’প্রভৃতি ধর্মবিষয়ক কাব্য রচনা করে খ্যাতি অর্জন করেন। ১৯২২ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।লোক কবিদের শীর্ষে রয়েছেন বাউল শিরমণি ফরিদপুরের বেহাল শাহ্ ও জাহাপুরের খোদাবক্স শাহ্।বেহাল শাহ্ ১৩০১ সনে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি অসংখ্য বাউল ও জারীগান রচনা করেন। এ সমস্ত গান আজও এ উপজেলার মাঠে-ঘাটে ধ্বনিত হয়। এ স্বনামধন্য কবি ১৮ই ভাদ্র, ১৩৮৭ সন মোতাবেক ১৯৮১ ইং সালের ৫ই সেপ্টেম্বর নিজ গ্রামে মারা যান। অপর বাউল সাধক খোদাবক্স শাহের জন্ম১৩৩৪ সনের ৩০শে চেত্র। তিনি ছিলেন ঢাকা শিল্পকলা একাডেমীর লালনগীতি বিভাগের প্রভাষক।দেশের প্রখ্যাত সংগীতজ্ঞ সুধীন দাসের সাথে যৌথ উদ্যোগে লালন গীতির স্বরলিপির একটি পুস্তকরচনা করেন। লালনগীতির ক্ষেত্রে অনবদ্য অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ দেশ বিদেশে তিনি বিভিন্ন উপাধিতে ভূষিত হন। এই মহান শিল্পী ১৯৯০ সালের ১৫ই জানুয়ারী নিজ গ্রাম জাহাপুরে মৃত্যুবরণ করেন। ১৯৯০ সালে তাকে মরোণোত্তর একুশে পদক প্রদান করা হয়। সাহিত্য, সঙ্গীত ও নাট্য চর্চার জন্য এ উপজেলায় রয়েছে বেশ কয়েকটি পাঠাগার, সাহিত্য, সঙ্গীত ও নাট্য সংঘ। এ সমস্ত সংঘ এলাকাবাসীকে বিভিন্ন উপলক্ষ্যে মনোজ্ঞ অনুষ্ঠান উপহার দিয়ে থাকে। বিশিষ্ট স্থানঃ উপজেলার প্রধান শহর আলমডাঙ্গা, কুমার নদীকে অবলম্বন করেই গড়ে ওঠে এর ব্যবসায়িক জনপদ। কিন্তু সে কুমার আজ জি,কে প্রজেক্টের প্রতিবন্ধকতায় ছিন্নভিন্ন। সেচ সেবায় এখন তাকে পরিকল্পনার দাসত্বে নিয়ন্ত্রিত হতে হয়। বাণিজ্যিক মালামাল সরবরাহে আলমডাঙ্গার পশ্চাদ ভূমি রূপে গড়ে ওঠে জামজামির বাজার, খাসকররা, আইলহাস বাজার,হাটবোয়ালিয়া বাজার। উপজেলার অপর স্টেশনের কারণে গড়ে ওঠে মুন্সিগঞ্জ শহর। চুয়াডাঙ্গাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে গোকুলখালী, আসমানখালী বাজার। মুক্তিযুদ্ধঃ মুক্তিযুদ্ধে আলমডাঙ্গা উপজেলার অবদান অনবদ্য। ৪ শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা সশস্ত্র প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। সম্মুখ সমরে শহীদ হন টগর, নান্নু, আশু, আনসার আরো অনেকে। ডাঃ বজলুল হক পাক সেনার হাতে শহীদ হয়ে এদের সঙ্গে করেই শেষ শয্যা রচনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসের পশ্চিশে শহীদ স্মৃতিসৌধে।এই স্থানটিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করার পূর্বে সেই ডাক্তার সাহেবের বিদেহী আত্মার একান্ত স্বপ্ন সাধনায় গড়ে তোলা দারুছ ছালাম এ ঘুরে আসার আবেদন জানাই। আবেদন জানাই, আলমডাঙ্গা ত্রিমোহনীতে নবনির্মিত স্বাধীনতা স্তম্ভ,রেলব্রীজের উত্তর-পশ্চিম পাশে অবস্থিত বধ্যভূমি ও আলমডাঙ্গা শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে। উপসংহারঃ সংরক্ষণের অভাবে আলমডাঙ্গার অনেক মূল্যবান ইতিহাস অতীতের অতল গহ্বরে হারিয়ে গেছে। যেটুকু আছে তা সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।আলমডাঙ্গার লেখকদের এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে।
Posted on: Thu, 14 Aug 2014 06:52:59 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015