ছেলেটি ঢাকা - TopicsExpress



          

ছেলেটি ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে পরীক্ষা দেয়ার পর যখন দেখলো চান্স হয়নি তখন সে খুবই ভেঙ্গে পড়লো ।আর এর ২ দিন পরই হঠাৎ করে ছেলেটির বাবা মারা গেলেন ।ছেলেটির বাবা মৃত্যুর পূর্বে ছেলেটিকে তার মাথায় হাত রেখে প্রমিস করালেন যে তার পরিবারকে যেনো ছেলেটি দেখে ।ছেলেটি সেদিন শুধু নিরবে মাথা নেড়েছিলো ।ছেলেটির বাবা আরোও ২-৩ জায়গার ফর্ম কেটে রেখেছিলেন ।কিন্তু পড়তে বসলেই কেনো যেনো ছেলেটি পড়তে পারতোনা । এই শোক কাটিয়ে উঠতে উঠতে ছেলেটি এমন একটা খবর শুনলো যা তার জীবনটাকে পুরো পাল্টে দিলো ।ঢাবির সেকেন্ড টাইম অফ ।ছেলেটি সৃষ্টিকর্তার উপর পুরোপুরি ভরসা হারালো না ।কিন্তু আস্তে আস্তে একে একে সব বিশ্ববিদ্যালয়ই সেকেন্ড টাইম অফ করে দিলো ।ছেলেটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়তে পরীক্ষা দিতে চাইলো ।কিন্তু ভর্তি ফর্ম জমা দেয়ার দিন টাকা গুলো হারিয়ে আর পরীক্ষা দেয়া হলোনা । ছেলেটির বাবার জমানো শেষ কিছু টাকাও এখন প্রায় শেষের দিকে ।ছেলেটি পরিবারের হাল ধরতে চেয়ে টিউশনি করতে নামলো ।একজন সদ্য ইন্টার পাশ ছেলের কাছে টিউশনি পাওয়া খুব সহজ নয় । পেলোও না সে । ছেলেটি ব্যার্থ হয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে লাগলো সারাদিন ।খুব ভোরে বাসা থেকে বেরোতো এবং খুব রাত করে বাসায় ফিরতো ।ছেলেটি কোন নেশা করতোনা কিন্তু রাত জাগার কারনে তার চোখের নিচে কালি জমে চোখ সবসময় লাল হয়ে থাকতো ।ছেলেটি পার্কের বেঞ্চিতে শুয়ে বসে সময় কাটাতো ।আর প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে পড়ুয়া বন্ধুদের দেখতো আর দীর্ঘশ্বাস ফেলতো ।ছেলেটি বাসার খোজ খবর তেমন জানতোনা ,একদিন বাসায় গিয়ে জানতে পারলো ছেলেটির মা এখন বাড়ি গিয়ে গিয়ে কাপড় বিক্রি করে । যেই মা একসময় বড়ো বড়ো মার্কেটে গিয়ে সবার জন্য কাপড়চোপড় কিনতো তার এই দশা ছেলেটি মেনে নিতে পারলোনা ।তার কাছে নিজেকে পরজীবী বোঝা মনে হতে লাগলো । লজ্জা শরমের ভয়ে ছেলেটি আর পারলোনা অন্য কাজ করতে ।ছেলেটির সৃষ্টিকর্তার উপর বড়ো অভিমান জন্মালো ।অন্যমনস্ক হয়ে রাস্তায় হাটতে হাটতে গাড়ি এক্সিডেন্টে ছেলেটির জীবন পথের মধ্যেই শেষ হয়ে গেলো। ঘটনাটার পরিনতি এরকমও হতে পারতো - ছেলেটির বাবা মারা যাওয়ার পর ছেলেটি হতাশ আর শোকে থেকে হয়ে বেশ কিছুদিন পড়াশোনা করতে পারলোনা ।এরপর একদিন হঠাৎ তার বাবার কাছে দেয়া ওয়াদার কথা মনে পড়লো ।তার যেভাবেই হোক বাবাকে দেয়া কথাগুলো তাকে রাখতেই হবে ।সে সারাদিন পড়াশোনা করতে লাগলো ।তার মা অনেক কষ্ট করে ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে পরিবার চালাতো ।ছেলেটি মাকে শুধু আশ্বাস দিতো যে একটা বছর শুধু একটা বছর ॥ সেকেন্ড টাইম পরীক্ষা দেয়ার পর দেখা গেলো গইউনিটে ছেলেটি ১৩৩ তম হয় । নিজের খুশিমতোই সে ফিন্যান্স নেয় ।আর কিছুদিন পরই টিউশনি শুরু করে ।তার কাছে টিউশনি আসতে লাগলো তুমুল ভাবে ।দেখা গেলো প্রতি মাসেই ছেলেটির টিউশনির টাকায় তার পরিবার খুব ভালোভাবেই চলতে পারতো।আস্তে আস্তে সকল দেনা পাওনাও মিটিয়ে দিলো ।পড়াশোনা শেষে ছেলেটি একটা ভালো জব পেলো । এরপর……… গল্পটার এরপর না-ই থাক ।তবে যতোটুকু দিলাম তার পরিনতি হ্যাপি ইন্ডিংয়ে গিয়েই পৌছনোর সম্ভাবনা বেশি । এই দুটি প্রেক্ষাপট দ্বারা আমি বোঝাতে চেয়েছি ঢাবির ভিসির একটি অন্যায় সিদ্ধান্ত একটি সাজানো গোছানো জীবনকে তছনছও করে দিতে পারে ।আর এখানে প্রশ্ন একটি জীবনের না ।অনেক অনেক জীবনের । Writer : নির্ভীক পথিক ( we are 2nd timers )
Posted on: Wed, 19 Nov 2014 10:10:02 +0000

Trending Topics




© 2015