দৃশ্যপট ১ ফিলিস্তিনের - TopicsExpress



          

দৃশ্যপট ১ ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা।ছয় বছরের শিশু আবদুল্লাহ রক্তমাখা একটি ম্যাগাজিন হাতে নিয়ে পাথরের মূর্তির মত নিশ্চল বসে আছে। তার ঘোর এখনো কাটছে না। প্রিয় বন্ধু আরাফাতের লাশ এম্বুলেন্সে করে এইমাত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গতকালই আরাফাতের পরিবার তাদের ঘরে আশ্রয় নিয়েছিল।স্কুল থেকে পাওয়া এই ম্যাগাজিনটিতে বিভিন্ন দেশের বাচ্চাদের অবসর সময়, তাদের খেলাধুলা, বিনোদন ইত্যাদি সবিস্তরে বর্ণিত হয়েছে। কানাডার একটি থিম পার্কে বাচ্চারা চোখে থ্রি ডি গ্লাস পরে সিম্যুলেটেড “সামুরাই এক্স” দেখছে।ছবিটি দেখিয়ে গতকাল সে বলছিল-“আব্দুল্লাহ, বল তো আমরা কখন এরকম একটি থিম পার্কে যাব??আমার মনে হয় কী জান, আমরা খুব তাড়াতাড়ি আমাদের দেশটাকে স্বাধীন করে ফেলব, তখন এখানে আমাদের নিজেদের একটি থিম পার্ক হবে, আমরা সেখানে ইচ্ছামত ঢিশুম ঢিশুম করে সামুরাই এক্স দেখব” বলেই সে চোখ বন্ধ করে হাতটাকে ঘুরিয়ে বাতাসে একটা ঘুসি মারল, যেন পুরো ব্যাপারটাকে সে চোখের সামনে দেখছে। আরাফাতের মা মনে দুঃখের হাসি হাসলেন, রমযানে ইফতারের পানিই পাই না আবার থিম পার্ক!! ইসরায়েল গাজায় তিনটি পানি সরবরাহের লাইন বন্ধ করে দিয়েছে।পানিবিহীন, খাদ্যবিহীন, অস্ত্রবিহীন মানুষগুলোর সাথে “যুদ্ধবিমান ভোঁ ভোঁ, যারে পা তারে ছোঁ” ইসরায়েলের একটি প্রিয় খেলা। আজ সকালে মানুষের চিৎকার শুনে আরাফাত দৌড়ে বাইরে গেল, সেই যে গেল আর এল না, গোলার আঘাতে মাথাটা ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল, মগজ পরে রইল রাস্তায়। মা-বাবা তাদের অবিসংবাদিত নেতা ইয়াসির আরাফাতের নামানুসারে ছেলের নাম রেখেছিলেন আরাফাত।ছেলেও প্রিয় নেতার পদাঙ্ক অনুসরণ করল।হাতের মুঠোয় ধরা ছিল ম্যগাজিনটা।কচি হাতের নিষ্পাপ রক্ত লেগে আছে তাতে। আব্দুল্লাহ লক্ষ্য করল তার মুষ্ঠি শক্ত হয়ে আসছে।রাগ হচ্ছে তার, ভয়ংকর ভয়ংকর রাগ, যে রাগ পৃথিবীর টেকটোনিক প্লেটগুলোকে নাড়িয়ে দেবার মত যথেষ্ঠ!!!! “The only verdict is vengeance, a vendetta held as a votive, not in vain, for the value and veracity of such shall one day vindicate the vigilant and the virtuous.” (V FOR VENDETTA) দৃশ্যপট ২ সাইফের মাথায় কালো কাপড় বাঁধা। সীমান্ত এলাকা থেকে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী তাকে ধরে নিয়েছে। সে গিয়েছিল তার হবু বধূর জন্য বিয়ের পোশাক কিনতে। এবার ঈদের পরেই বিয়ে ঠিক হয়ে আছে। যে দোকানে কাপড় কিনতে এসেছিল সেটি ট্যাংকের গোলার আঘাতে উড়ে গেছে।অচেতন অবস্থায় সাইফকে ধরে আনা হয়েছে। দুই হাত পেছন থেকে বাঁধা। চোখের সামনে অন্ধকার, কি হচ্ছে না হচ্ছে তার কিছুই সে বুঝছেনা।এমন সময় এক ইসরায়েলি সেনা মুখের কালো কাপড় সরিয়ে দিল। হঠাৎ আলোতে চোখ অসহ্য হয়ে আসে।দুই জন ইসরায়েলি সেনা, একজনের হাতে রাইফেল, অন্যজনের হাতে পয়েন্ট টু টু বোরের রিভলবার। তারা খুব হাসছে যেন খুব একটা মজার ব্যাপার ঘটেছে। সাইফ বলল – -তোমরা দুই জন, আমি একা নিরস্ত্র, হাত বাঁধা, তবু তোমরা এত কাপুরুষ হাতে আবার অস্ত্র রেখেছ!! ধরে এনেছ কেন?? আমি কি তোমাদের আ্যটাক করেছি? -অ্যাটাক করলেই যে ধরে আনতে হবে এ কথা তোকে কে বলেছে? তোকে এনেছি মজা করার জন্য। -কিসের মজা? -আমাদের শিসু ধরেছে, আশেপাশে কোন টয়লেট নেই, তোর মুখে শিসু করব। -চোপ কর জানোয়ারের দল!! সাইফকে রাইফেলের বাঁট দিয়ে মাথায় আঘাত করা হল, তীব্র যণত্রনায় সাইফ অচেতন হয়ে পড়তে লাগল, এরইমধ্যে জিপার খোলার শব্দ পাওয়া গেল। জ্ঞান হারানোর আগ মুহূর্তে সাইফের বুশরার কথা মনে পড়ল। বেচারি বোধহয় তার কথা ভাবছে………। দৃশ্যপট ৩ বুশরাদের পরিবারে খবর এসেছে সাইফকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, কোথায় আছে কেউ জানে না। বুশরার বুকটা হাহাকার করে উঠে। জাতিসংঘ পরিচালিত একটা রিফিউজি স্কুলে সেই দশ বছর বয়স থেকে সাইফের সাথে তার পরিচয়।কৈশোরে একদিন আরবী প্রাচীন কবিতার একটি বই তার হাতে দেখে সাইফ প্রথম বলেছিল “আমি কি তোমার বইটা একটু নিতে পারি?” সলজ্জ হেসে বুশরা বইটি তাকে দেয়।গোল গোল চোখের ছেলেটি আরবী প্রাচীন কবিতা খুবই পছন্দ করত, আবৃত্তিও করত অসাধারণ, সেই থেকে মুগ্ধতার শুরু, যা থেকে মুক্তি মেলেনি, মন মুক্তি চায়ও নি। কৈশো্রের সেই ভালোলাগা যৌবনে এসে ভালোবাসায় পরিণত হয়। সবশেষে দুই পরিবারের সম্মতিতে ঠিক হয় তাদের বিয়ে। কিন্তু এখন কি হবে?? সাইফকে এখন কোথায় খুঁজবে?? কেমন আছে সে? পশুগুলো কি তাকে খুব কষ্ট দিচ্ছে?তীব্র যণত্রনায় কাতর হয়ে সাইফ কি ভাবছে তাকে? ভালোবাসার মানুষ্ কে কি এভাবে হারাতে হবে? জীবনভর কি শুধু এই দুঃসহ স্মৃতি নিয়েই বাঁচতে হবে তাকে?? ও আমার প্রাণ বন্ধুয়ার তুলনা নাই, বলি রে তোরে--- দেশ বিদেশে থাক কোকিল চিননি তারে?? সে আমার হৃদয়ের ধন, সে ছাড়া অসহায় হইয়া ঝরে দু নয়ন, কোকিল যারে চাহে মন।। ওই যে বসন্ত ফাগুন, কোকিলার কুহু সুরে বুকে ধরে ঘুণ, বন্ধু হইল নিদারুণ। আসিবে বলিয়ে গেল ফিরে এলনা।। কোকিল, আমার উপায় বল, প্রাণ বন্ধুয়ার খবর জানলে আমায় নিয়া চল, আমি যার নামের পাগল………। (শাহ আব্দুল করিম) দৃশ্যপট ৪ সৌদি বাদশাহ আব্দুল আজিজ তার ইয়ামামার রাজপ্রাসাদে ডিনার করছেন। টেবিলে ২২পদের খাবার আইটেম। তিনি আপন মনে খাচ্ছেন, খাদ্যের সুখ দুনিয়ার সবচেয়ে বড় সুখ।বাদশাহর ব্যক্তিগত সচিব দেখা করতে আসলেন।তিনি দাঁড়িয়ে রইলেন, বাদশাহ কোন কথা না বলে খেয়েই যাচ্ছেন, এবার তিনি দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য গলা খাকাড়ি দিলেন, বাদশাহ নির্বিকার। ক্ষমতাবানরা ক্ষমতা দেখাতে ভালোবাসেন, কাউকে দাঁড় করিয়ে রাখার মধ্যে ক্ষমতার একটি উপভোগ্য প্রকাশ আছে। খাওয়া শেষ হলে বাদশাহ বললেন, -খাওয়ার সময় কথা বলা আমার পছন্দ নয়, তা এত রাতে তুমি কি মনে করে? -মহামান্য বাদশাহ! ফিলিস্তিনের বর্তমান অবস্থা খুবই সঙ্কটাপূর্ণ…… -তা আমি কি করতে পারি?(!) -আরব লীগ চাচ্ছে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে। -নিক না, নিলে তো ভালই। -আরব লীগের প্রধানরা চাচ্ছেন সৌদি আরবের বাদশাহ হিসেবে আপনি সর্বপ্রথম ইসরায়েলের গণহত্যার বিরুদ্ধে নিন্দা জানিয়ে অফিসিয়ালি বক্তব্য দিবেন এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে এ ব্যপারে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের আহবান জানাবেন। -গাধার বাচ্চারা নিজেরা কিছু করতে পারে না, কিছু হলেই আমার দরকার পড়ে। আরে বাবা, বক্তব্য একটা দিতে হবে দে না, এখানে আবার আমাকে টেনে আনার দরকার কী? সবকিছুতেই তুরুপের প্রথম তাসটা আমাকে খেলতে হবে কেন??? এমন সময় সৌদি বাণিজ্য মণত্রীও এলেন।তিনিও জরুরী ব্যাপারে কথা বলতে এসেছেন।বাদশাহ গর্জে উঠলেন, -তোমাদের হয়েছেটা কি? সিরিয়াল ধরে আসছ আর প্যাটপ্যাটাচ্ছ? এই প্রাসাদ কি তোমাদের অবকাশ যাপন কেন্দ্র? রাত হয়ে গেল, আমাকে তাড়াতাড়ি শুতে হবে, সেহরি খেতে আবার উঠতে হবে না?? -মহামান্য বাদশাহ! ইউ.এস.এ গভর্নমেন্ট এর একটি প্রতিনিধি দল কাল জেদ্দায় আসছে।আমাদের সাথে তাদের ৫০,০০০ টন তেল বিনিময়ের যে চুক্তিটি হওয়ার কথা ছিল সেটিই এ সফরের মূল উদ্দেশ্য। -আলহামদুলিল্লাহ! ভালো সংবাদ, শুধু এটি বলার জন্যই তুমি এসেছ? -জ্বী না, আপনি কি আরব লীগের পক্ষে ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিতে মনস্থির করেছেন? যদি করে থাকেন, তাহলে এ ব্যাপারে আপনাকে ভেবে দেখতে অনুরোধ করছি। কারন আগামীকাল মার্কিন প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমাদের গুরুত্তপূর্ণ বাণিজ্যিকচুক্তি স্বাক্ষরিত হতে যাচ্ছে, এ অবস্থায় আপনার এরুপ সিদ্ধান্ত এ ব্যাপারে বিরুপ প্রভাব ফেলবে বলে আমার ধারণা। -তুমি ঠিকই বলেছ, একজন বিচক্ষণ ব্যক্তিকে আমার বাণিজ্যমণত্রী হিসেবে পেলাম। তারপর সচিবকে বললেন, -আরব লীগের প্রধানকে বল যে তাকেই কাজটা করতে হবে, নইলে প্রধান হয়েছে কেন? শুয়ে বসে দিন কাটানোর জন্য? আমি পারব না, আমাকে দেশের স্বার্থ দেখতে হবে, দেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ।(!) -কিন্তু মহামান্য বাদশাহ! ফিলিস্তিনি অসহায় ভাইদের সাহায্য করাও কি কর্তব্য নয়? একদিন কী আমরা জবাবদিহিতার………… -তুমি শুনেছ আমি কি বলেছি? বাদশাহর কথা নড়চড় হয় না। Now Get Lost!!! “মরলে পাব বেহেশতখানা, তা শুনে আর মন মানে না- লালন কয়, বাকির লোভে নগদ পাওনা কে ছাড়ে এই ভুবনে??” দৃশ্যপট ৫ জাতিসংঘের সদর দপ্তর। বান কি মুনের কার্যালয়। চিন্তিত মুখে বসে আছেন পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্তপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের সর্বশ্রেষ্ঠ পুতুল মহাসচিব।তার সেক্রেটারী বলল, স্যার কী লিখব বললেন না যে? -কি আর লিখবা? লেখার তো তেমন কিছু দেখতেছিনা। নিরাপত্তা পরিষদের সবাই তো মুখে সুপার গ্লু দিয়া রাখছে। এদিকে আমেরিকারও কোন সবুজ সংকেত নাই, আমি বুড়া মানুষ, একলা কি করমু কও। সবাই খালি আমার মুখের দিকে চাইয়া থাহে।। -একেবারে খাঁটি কথা বলেছেন স্যার। আপনি অশীতিপর বৃদ্ধ। নিজেই নিজের দায়িত্ব নিতে হিমশিম খেয়ে যান!!! পুরো পৃথিবীর দায়িত্ব কিভাবে নিবেন বলুন?? -তুমি আমার মনের কথাডা বুঝলা বাজান। যা হোক, অফিসিয়াল বিবৃতিতে লিখবা যে “জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন ইসরায়েলের একতরফা হামলার নিন্দা জানিয়েছেন, তিনি এ হামলাকে মানবতাবিরোধী উল্লেখ করে অবিলম্বে হামলা বন্ধের জন্য ইসরায়েলের নিকট আহবান জানিয়েছেন” নিন্দা আর আহবান জানানোই হল মহাসচিব পদমর্যাদার একজনের একমাত্র কাজ! আর তিনি সে গুরুদায়িত্বটি পালন করে যাচ্ছেন বছরের পর বছর…………। দৃশ্যপট ৬ ওয়াশিংটনের ওভাল অফিস। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সরাসরি ফোন করলেন বেনিয়ামিন নেতানিয়েহুকে। -আপনি এসব কি শুরু করেছেন? -কি শুরু করেছি মানে? আপনি বুঝেন না? কচি খোকা?? -ফালতু কথা ছাড়ুন, এ মুহূর্তে এ ধরণের অন্যায় হামলা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তিপ্রক্রিয়া ব্যহত করবে, তাছাড়া এভাবে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যনীতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। -শান্তি প্রক্রিয়া? হাসালেন আমায় মি. ওবামা! আপনার পূর্বসূরীরা কি শান্তির কথা মাথায় রেখে আমাদের এখানে বসিয়েছিল? মনে হয় না, তাছাড়া আপনি প্রায়ই আমার কাজে নাক গলান দেখছি। গতবার পশ্চিম তীরে ইহুদী বসতি স্থাপনে আপনি বাঁধা দিয়েছিলেন।এখন আবার ন্যাকামো করছেন।আমার দরকার ভূমি। হারামীর বাচ্চা ফিলিস্তিনীদের যদি সবকয়টাকেও মারতে হয় আমি দ্বি্ধা করব না। আর ইসরায়েলের স্বার্থের সাথে আপনাদেরটাও জড়িয়ে আছে, আশা করি সে কথা ভুলে যান নি। শুনুন মি. ওবামা, আপনাকে একটা কথা বলি, You America wanted a monster, you definitely got it!!!! দানব টেলিফোন রাখল।দানবের সাথে গোয়েন্দাসংস্থা ‘মোসাদ’এর ডিরেক্টর তামির পারডো দেখা করতে এল। দানব প্রশ্ন করল, -কি অবস্থা যুদ্ধের? উইকেট কয়টা পড়ল? -১০৫টা! -মাত্র? তোমাদের সমস্যাটা কি? দিনকে দিন তোমাদের বোলিং স্পিড কমে আসছে, সর্বাধুনিক যুদ্ধবিমান, ট্যাংক নিয়ে যেখানে তোমাদের দুর্দান্ত বোলিং অ্যাকশনে ৭/৮ দিনে ৭০০-৮০০ উইকেট পড়ার কথা, সেখানে তুমি ১০৫উইকেটের রম্যগল্প করতে এসেছ? যাও বোলিং স্পিড বাড়াও, আমি স্কোরবোর্ডে উইকেটের গ্রাফ উর্ধমুখী সরলরেখা হিসেবে দেখতে চাই।। “বাঘ সবসময় বাঘের বাচ্চার জন্ম দেয়, সাপ জন্ম দেয় সাপের বাচ্চার, কিন্তু মানুষ পৃথিবীর একমাত্র প্রাণী যে মানব হয়েও কখনো কখনো দানবের জন্ম দেয়” (হূমায়ুন আহমেদ) “YOU LOST THAT RIGHT, TO HOLD THAT CROWN, I BUILT YOU UP AND YOU LET ME DOWN SO WHEN YOU FALL, I’LL TAKE MY TURN, FAN THE FLAMES AS YOUR BLAZES BURN.” দৃশ্যপট ৭ পেন্টাগনের ‘জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফস’ এর চেয়ারম্যান জেনারেল মার্টিন ডিম্পসে বিবৃতি দিলেন, বারাক ওবামার সম্মতিতেই এই বিবৃতি। ওবামাও বুঝলেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সিনেটরদের ইলেকটোরাল যে ভোটগুলো পেয়ে তিনি নির্বাচিত হয়েছিলেন সেখানে ইসরায়েলের মদদপুষ্ট শক্তিশালী ইহুদীলবি রয়েছে। এদেরকে চটানো ঠিক হবে না। জেনারেল ডিম্পসের বিবৃতিটি হল এরকম – “ফিলিস্তিনের বর্তমান অবস্থা আমেরিকা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। তবে আত্ম্ররক্ষার্থে ইসরায়েলের এই হামলা যুক্তিসঙ্গত” আত্মরক্ষা?? কিসের আত্মরক্ষা?? কি থেকে আত্মরক্ষা?? ইসরায়েলি ট্যাংকের সামনে অসহায় ফিলিস্তিনিদের পাথর মারা থেকে আত্মরক্ষা?? আহা! সত্যি সেলুকাস!! কি বিচিত্র এ পৃথিবী!! “সভ্য দুনিয়ার মানুষেরা, ওই যে দেখো বেদনায় নীল হয়ে যাওয়া ফিলিস্তিনিরা, তোমাদের কত উপাখ্যান, আনন্দ-হাসি আর ওরা দেখ নিজভূমে পরবাসী” দৃশ্যপট ৮ জার্মানীতে অনুষ্ঠিতব্য আসন্ন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বইমেলা “ফ্রাঙ্কফুট বইমেলা” তে এবার প্রকাশিত হতে যাচ্ছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রচিত বই “৩০ দিনে অসভ্য, বর্বর জনগোষ্ঠী নিধন পদ্ধতি” বিফলে মূল্য ফেরত।বইটি প্রকাশ করেছে The Devil’s Publication- Tel Abiv. এছাড়াও মোসাদের ডিরেক্টর তামির পারডো রচিত বই “আমার গোয়েন্দাজীবনঃ গণহত্যাকে যুদ্ধ বলে চালানোর ১০১টা উপায়, ১টা মিসিং” বইটি প্রকাশ করেছে The Cheater’s Publication. দৃশ্যপট ৯ গাজা সীমান্তের ওপারে ইসরায়েল অধীকৃত ভূখণ্ডে পাহাড়ের উপর জড়ো হয়েছে কিছু ইসরায়েলি তরুণ-তরুণী আর মধ্যবয়সী লোকজন।পাহাড়ের ওপর থেকে তারা গাজার উপর বোমাবর্ষণের দৃশ্য উপভোগ করছে! হিলটপ ভিউ সবসময়ই চিত্তাকর্ষক! এতদিন শুধু মুভিতে যুদ্ধের দৃশ্য দেখে আসছে। এই প্রথমবারের মত সামনাসামনি কোন যুদ্ধ দেখতে পারছে তাই তাদের আনন্দের সীমা নেই! জিহোভাকে(Jews God) অসংখ্য ধন্যবাদ! এক তরুণ বলল “Yo Boyzz! Cheers Up! See how the pigs are dying by our army men! We are proud of them! Let’s make it more enjoyable. Sound Please! Let’s Dance, Ladies and Gentlemen!” ওরা সাউন্ডবক্স নিয়ে এসেছিল, ফিলিস্তিনিদের মৃত্যুতে উৎসব করবে বলে! গান শুরু হল, পার্টি ড্যান্সের জন্য খ্যাত “Vangaboys” এর গান – “Oh baby! Move it, Move it! Oh baby! Shake it, Shake it!” সভ্য জগতের লেডিস এণ্ড জেন্টলম্যানরা(!) আনন্দে ব্যস্ত, আর নিচে পাহাড়ের পাদদেশে অসভ্য মানুষদের লাশ পড়তে লাগল। সভ্যতার পারদও লাফিয়ে লাফিয়ে উপরে উঠতে আরম্ভ করল। মানবতা, মানবাধিকার, মনুষ্যত্ব নামক বস্তুগুলো ওই অসভ্যদের বুকের ভিতরেই চাপা আর্তনাদ করে মাথা কুটে মরতে লাগল………। “এ দুর্ভাগ্য দেশ হতে হে মঙ্গলময়, দূর করে দাও তুমি সর্বতুচ্ছ ভয়, লোকভয়, রাজভয়, মৃত্যুভয় আর দীনপ্রাণ দুর্বলের এ পাষাণভার! এই চিরপেষণ যণত্রণা, ধূলিতলে এ নিত্য অবনতি, দন্ডে পলে পলে এই আত্নঅবমান, অন্তরে বাহিরে এই দাসত্বের রজ্জু, ত্রস্ত নতশীরে সহস্রের পদপ্রান্ততলে, বারম্বার মনুষ্যমর্যাদাগর্ব চিরপরিহার। এ বৃহৎ লজ্জারাশি, চরণ আঘাতে চূর্ণ করি দূর কর, মঙ্গল প্রভাতে মস্তক তুলিতে দাও অনন্ত আকাশে, উদার আলোক মাঝে, উন্মুক্ত বাতাসে” (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) (দৃশ্যপটগুলো কাল্পনিক, শুধু শেষটি বাদে, এটি বাস্তব, গানের ব্যপারটায় কল্পনার আবহ আছে, আমি নিজে এটি টিভিতে দেখেছি। এত অবাক, এত দুঃখিত, এত রাগ আমি জীবনে খুব বেশী হই নি………) ১৩ জুলাই, ২০১৪ ইং।
Posted on: Sun, 13 Jul 2014 18:25:04 +0000

Recently Viewed Topics




© 2015