নতুন স্বাদের পেয়ারার - TopicsExpress



          

নতুন স্বাদের পেয়ারার চা আবু নোমান ফারুক আহম্মেদ ............................................................... কেবল চা-পাতা থেকেই পানীয় চা তৈরি হবে এমন কোনো কথা নেই। এখন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে গেছে অনেক কিছু। বাজারে এসেছে অনেক ধরনের চা যেমন_ দারুচিনি চা, পেয়ারা চা, আনারস চা, ঋষি চা, হারবাল চা, গ্রিন চা, তুলসী চা প্রভৃতি। এসব চায়ের যেমন রয়েছে হারবাল গুণ তেমনি রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন স্বাদ ও গন্ধ। বৈচিত্র্যের নেশায় মানুষ পরিবর্তন করছে তার খাদ্যরুচি, উপভোগ করছে ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের চা। চীনের প্রাচীনকালের সম্রাটদের কাছে এক বিশেষ ধরনের চা ছিল খুবই জনপ্রিয়। তাদের ধারণা ছিল, এ চা পানে বিভিন্ন প্রকার রোগ থেকে মুক্ত থেকে দীর্ঘায়ু লাভ করা যায়। এর নাম গুয়াভা হোয়াইট টি। বিরল এ চা এখনো বিশ্বের দামি চা-গুলোর অন্যতম। সাধারণত পেয়ারার পাতা বের হওয়ার আগেই কুঁড়িটি সংগ্রহ করে প্রক্রিয়াজাত করা হয়। এর উৎপাদন খুব কম হলেও চাহিদা ব্যাপক। যথাযথ স্বাদ ও গন্ধ পাওয়ার জন্য ১৭৫-১৮৫গ্দ ফারেনহাইট তাপমাত্রায় পানি গরম করে ৩০-৬০ সেকেন্ড টি ব্যাগটি গরম পানিতে ডুবিয়ে রাখতে হয়। এরপর পরিবেশন করা হয়। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা যায়, এ চায়ে অধিক মাত্রায় শক্তিশালী পলিফেনল বিদ্যমান, যা মানুষের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ও শরীরকে সুস্থ রাখে। এ ছাড়া এ চায়ে ১০ গুণ বেশি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যমান যা রক্তনালি সংকোচনের জন্য দায়ী এনজাইম উৎপাদন প্রতিরোধ করে। ফলে এটি উচ্চ রক্তচাপ কমায় এবং হৃদক্রিয়া স্বাভাবিক রাখে। পেয়ারাপাতার সক্রিয় ফেনোলিক উপাদানগুলোর মধ্যে রয়েছে ফিরুলিক এসিড, গ্যালিক এসিড, কুয়ারসিটিন নামক যৌগ; যেগুলো ডায়াবেটিসসহ কার্ডিওভাসকুলার রোগের বিরুদ্ধে খুবই কার্যকর। একই সঙ্গে এসব যৌগ পাইরোক্সিল নামক ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিকেল রক্ত থেকে পরিষ্কার করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গুয়াভা টির হারবাল গুণ ১. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। ২. রক্তের কোলেস্টেরল কমায়। ৩. রক্তের সুগার লেভেল হ্রাস করে। ৪. শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমায় ও দেহের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। ৫. এতে বিদ্যমান পটাসিয়াম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। ৬. হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া স্বাভাবিক রাখে। ৭. পরিপাকতন্ত্রের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। ৮. কিডনিকে সক্রিয় রাখে। ৯. রক্তের ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিকেল দূর করে। ১০. এতে বিদ্যমান লাইকোপেন পাকস্থলী, ফুসফুস ও অন্ত্রের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো পেয়ারাপাতার চা বা গুয়াভা টি উৎপাদিত হচ্ছে বাংলাদেশে। খুব ব্যাপক আকারে না হলেও দেশে উৎপাদিত বিশেষ একটি জাতের পেয়ারাপাতার চা প্যাকেটজাত আকারে শিগগিরই বাজারে আসছে। নাটোরের ঝাউতলা এলাকার মডার্ন হর্টিকালচার সেন্টারের মালিক এম কামরুজ্জামান প্রথম থাই পেয়ারার চাষ শুরু করেন তার খামারে। ওই পেয়ারাপাতা থেকে পরীক্ষামূলকভাবে চা তৈরি করে সফল হন তিনি। শুধু তাই নয়, চায়ের মান বিদেশি গুয়াভা টির চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। ইতোমধ্যে গুয়াভা টি বাজারজাতকরণের যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েছে মডার্ন হর্টিকালচার সেন্টার। বিদেশ থেকে আনা হয়েছে প্যাকেজিং মেশিন। খুব শিগগিরই আকর্ষণীয় মোড়কে বাজারে আসছে দেশি গুয়াভা টি। উল্লেখ্য, বিশ্বে সস্নিমিং টি ও ডায়াবেটিস টি হিসেবে পেয়ারাপাতার চা ব্যাপক সমাদৃত।
Posted on: Sun, 28 Dec 2014 06:06:51 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015