প্রতি রাতে একটি মেয়ে - TopicsExpress



          

প্রতি রাতে একটি মেয়ে জানালার পাশে বসে একাকী চাদের আলো উপভোগ করে,নাম তার রুপা। নাম যেমন রুপা, দেখতে ও ঠিক রুপার মত ঝলঝল করে।যেমন ঠোট তেমন তার চোখ। চোখে কাজল পরে, নাকি এমনিতেই কাজল কালো চোখ,বুঝা যায় না! এই চোখে চোখ পড়লে আর ফেরাতে ইচ্ছে করে না। একদিন তো বলেই ফেললো জীবনে মেয়ে দেখেন নি! মেয়ে দেখেছি তোমার মত পরী দেখি নি!আর সেই চোখ, যেই চোখ আমাকে আটকে ধরে রাখে। যেমন নম্র তেমন ভদ্র। প্রথম প্রথম আমার সামনে দিয়ে হেটে যেতে লজ্জাবোধ করত,আর ওর ও বুঝতে বাকি নেই যে এই ফাযিল ছেলেটা ওকে ফলো করে। প্রথমে একটা মেয়ে একটা ছেলেকে হইতো এমনি ভাবে, ছেলেটা মনে হয় ফালতু তাই হা করে তাকিয়ে থাকে।বাট একটা মেয়েকে ভাল লাগা দোষের কিছু না। প্রতিদিন নিয়মিত ক্লাস কোচিং এর বাহিরে এই মেয়ে আর ঘর থেকে বের হয় না।অনিক সব কিছু খবর নিয়ে এই মেয়ের পিছু ধরেছে। বাট কেমন করে বলবে ওকে, যে রুপা কে অনেক ভাল লেগেছে।অলরেডী এই মেয়ের কারনে ওর ঘুম খাওয়া দাওয়া ঠিক মত হচ্ছে না।আর প্রতিদিন নিলজ্জের মত কিছু বলার আশায় ওর পথে দাড়িয়ে থাকতে কেমন সংকোচ বোধ করছে। বাট শালার বন্ধু গুলো আসলেই মনের মত বন্ধু বটে।বললাম যে এতদিন ওর পথো দাড়িয়ে থাকি ও কি বুঝে না! শালার বন্ধুদের উপদেশ শুধু দাড়িয়ে থাকা না, ভালবাসি এ কথা আমার মুখ থেকে ওর কানে ঢুকাতে হবে। এ কথা শুনার সাথে সাথে আমার heartbeat বেড়ে গেল।এত বড় সাহস আমার হবে বলে মনে হয় না। ::কিরে তোর চোখে পানি কেন? আসলে ভয়ে যে চোখে পানি চলে আসে তা আগে জানতাম না। সালা হারামী গুলো আমার এই অবস্থা দেখে মিটমিট করে হাসছে।আমি কোন কথা না বলে সেখান থেকে কেটে পড়লাম। রুপার এক বান্ধবীর কাছে জানতে পারলাম ও ফোন use করে না।নাম্বার হলে ইজি ভাবে কথা গুলো ওকে বলতে পারতাম। তোতলিয়ে হলে ও মনের ভাব প্রকাশ করে দিতাম।অন্ততপক্ষে কাছ থেকে বলার থেকে তো বেচে যেতাম। (ছেলেমেয়ে গুলো এত ভয় বুকে নিয়ে ভালবাসার সাহস করে কেমন করে!) আজ ও দাড়িয়ে আছি রুপা কে এক নজর দেখব বলে,বাট সেদিন রুপা ক্লাসে আসে নি। সে রাতটা আমার প্রচন্ড কষ্টে কেটেছে,এই এক এমন কষ্ট বুকের ভিতর ছিনছিন করে ব্যাথা,এই ব্যথা কাওকে দেখানো যায় না বুঝানো যায় না।শুধু নিজেই সহ্য করা যায়। একটি মেয়েকে এই ভাবে এত গভীর ভাবে এক তরফা ভালবাসা টা অনিকের ভুল হয়েছে,আর অনিক এখন তাই ভাবছে।মুক্তি পেতে চাচ্ছে এই কষ্টের নীল সমুদ্র থেকে। পরদিন অনিক খুব ভোরে রুপাদের বাসার সামনে হাজির।রুপা ক্লাসের জন্য বের হতেই!! ::এই যে শুনছেন! ::জ্বী আমাকে বলছেন! ::আপনি কাল ক্লাসে আসেন নি কেন! কেমন মেয়ে কথা না শুনার ভান করে সামনে হেটে চলে যাচ্ছে। অনিকের পচন্ড রাগ উঠছে, এই মেয়ের জন্য কাল সারারাত ঘুমাতে পারে নি,মনের অজান্তে চোখ থেকে পানি ঝরেছে। আর ও কিনা কোন পাত্তায় দিচ্ছে না। ইচ্ছে করছে ওর দু বাহু ধরে চিৎকার করে বলতে শুন মেয়ে, তোমাকে আমি ভালবাসি, তোমার জন্য কষ্টে আমার বুকটা জজর্রিত হয়ে গেছে।আমার প্রতিদিন কাটে বিষন্নতায়।আর এর নাম যদি হয় ভালবাসা তাহলে আমি তোমাকে ভালবেসে ফেলেছি। কিছু দূর যাওয়ার পর রুপা হঠাৎ পিছন ফিরে তাকালো।হইতো অনিকের মনের কথা গুলো ওর বুকের ভিতর ভেজে উঠেছে। রুপার চোখে ধরা পড়েছে অনিকের ভেজা ঝাপসা চোখ গুলো,তারপরে ও কিছু না বলে সেদিনের মত চলে গেল। বাহিরে ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে,রুপা বারান্দায় দাড়িয়ে বৃষ্টি দেখছে,আর হাত বাড়িয়ে বৃষ্টিকে হাতের মুঠোয় বন্দি করার চেষ্টা করছে,আর জলকলি খেলছে। হঠাৎ রুপা অনুভব করল কাউকে সে মনে মনে ভাবছে,বিষন্নতারছাপ তার মনের এক কোণে ভর করছে,বাট সেটা কাকে ঘিরে!! সে তো কাউকে ভালবাসবে না,সে একাকিত্ব জীবন পার করতে চায়। তার লাইফে সে কাউকে entry করতে দিবে না। ভালবাসায় অনেক কষ্ট, আর এই কষ্টের স্বাধ সে গ্রহন করতে চায় না। কথা গুলো ভাবতে ভাবতে রুপা কাচের জানালায় আনমনে লিখল অনিক! হুমম অনিক,যে ছেলেটি রুপার মনে কষ্টের প্রতিচ্ছবি একে দিয়েছে,ভাবনায় একে দিয়েছে তার নাম,আর রুপা মনের অজান্তে ঠিক সেই ছেলেটির নাম লিখে বসেছে। মনটা কেমন উদাস লাগছে,কিচ্ছু ভাল লাগছে না। বাহিরে আবার দৃষ্টিপাত করতেই রুপার চোখে অনিকের চেহারা ভেসে উঠলো,স্বপ্ন নয় সত্যিই এই ছেলে তার বাসার সামনে ঝাউ গাছের নিচে দাড়িয়ে বৃষ্টিতে ভিজছে,আর রুপার চোখের দিকে এক পলকে তাকিয়ে আছে। ছেলেটার চোখ গুলো লাল হয়ে আছে,কোনটা কান্না আর কোনটা বৃষ্টি রুপা যেন বুঝতেই পারছে না। রুপার চোখ গুলো ঝাপসা হয়ে এক ফোটা জল ঝরে পরলো,আর লজ্জা মাখা হাসিতে অনিকের দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসিতে যেন বলে দিচ্ছে যাও পাগল ছেলে,আমি তো তোমারি আমার জন্য পাগলামী করতে হবে না। আর অনিক জানান দিচ্ছে ভালবাসা শুধু তোমার আমার,তোমাই ছেড়ে বল যাব কোথাই। এই ভালবাসা শুধু খনিকের নয়,বরং তোমার হাতটি ধরে মৃত্যুর পথ পযর্ন্ত পাড়ি জমাবো। আমার ভালবাসার প্রথম প্রকাশ তোমার চোখে দেখেছি,কখনো তোমাই হারাতে দিব না। তোমার হাতটি এই শক্ত করে ধরেছি আর কখনো ছাড়বো না। বৃষ্টির শেষ মুহুত্ব, আকাশে রংধনু ছড়িয়ে পড়েছে,ঠিক যেন দুটি রিদয়ের মিষ্টি ভালবাসার মত,এক ঝলক ভালবাসা নিয়ে দুজন দু দিকে ফিরে গেল। দেখা হবে আবার!!! অদ্ভুত সব কিছু এই ভালবাসায় বিদ্যমান,ভালবাসা শুধুই ভালবাসা,আর ভালবাসায় কোন অভিনয়, কোন ছলনার, অবকাশ নেই। RONY MAROA
Posted on: Tue, 30 Dec 2014 16:54:29 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015