‘বস, আপনার রক্তের গ্রুপ - TopicsExpress



          

‘বস, আপনার রক্তের গ্রুপ কি’ “সি- পজিটিভ” ‘ও আল্লাহ... এটা কুন গ্রুপ?’ “এটা, আজ থেকে বাংলাদেশী আম জনতার গ্রুপ” ... মাত্র ৯ মাসেই স্বাধীন করে ফেলেছি ... কিন্তু, ৪৩ বছরেও গুছাতে পারিনি দেশটা আমাদের সবচেয়ে কমন রক্তের গ্রুপ হলো B-positive; ৪৩ বছর থেকে কিন্তু এই ‘বি-পিজিটভ’ এটিটিউড নিয়েই আমরা অপেক্ষা করছি দেশটা গুছানোর ... আগাচ্ছেই না কিন্তু কেনও আগাচ্ছে না? সমস্যাটা কোথায়? সমস্যাটা আমাদের মাঝেই… আমি নিজে SEE +ve না হলে; আশেপাশের ভালো কোনকিছুই, আমার চোখে আটকাবে না গতসপ্তাহে দেখলাম একটা জরিপে, ‘আমরা বিশ্বের ২য় বসবাস অযোগ্য দেশ’ হিসেবে সিলেক্টেড হয়েছি... সেদিন বিকালেই দেখলাম, আরেকটা জরিপে Bangladesh, 4th fastest emerging economy in the world হিসেবে সিলেক্টেড হয়েছে এখন উত্তর দেন তো, আপনার হোমপেইজে কোন নিউজটা বেশী শেয়ার হয়েছে? নেগেটিভ নিউজটাই তো, নাকি? ... আমার হোম পেইজেও তাই আমরা যে ইন্ডিয়াকে সমসময় গালি দেই, ইন্ডিয়ার কিছু গুন বলি; সেখানে লোকাল কোনও সমস্যা হলে তাদের সব হিন্দি চ্যানেল ধুমায়ে সেই ইস্যু নিয়ে লেগে পরে... কিন্তু তাদের ইংলিশ চ্যানেলগুলো, খুব ভেবে চিন্তে সেটা কভার করে কেনও করে? কারণ, তারা জানে তাদের দেশকে কিভাবে বিশ্বে ব্র্যান্ডিং করতে হয় আমাদের একটা ইংলিশ পেপার খুলে দেখুন, তারা যেনও বাংলা পত্রিকাগুলোর কথাগুলো জাস্ট ইংলিশে ট্রান্সলেট করে দিয়ে দিয়েছে ইংলিশ পেপার কি তাহলে শুধু ইংলিশ পড়তে পারা মানুষদের নিউজ পড়ানোর জন্যই??... তাদের আর কোনও স্ট্রেটেজি নেই!! ... দেশ আগাবে কিভাবে? আমরা নিজেকে খুব পজিটিভ দাবী করি... কিন্তু আমি-আপনি শেষ কবে দেশের পজিটিভ দিকগুলো নিয়ে লিখেছি বা কথা বলেছি? মার্কেটিং এর গুরু ফিলিপ কটলার যখন প্রথম বাংলাদেশে আসেন, তখন উনার সাথে আমার ৫ মিনিট কথা বলার সৌভাগ্য হয়েছিলো। তার, এয়ারপোর্ট থেকে নেমে হোটেল আসতে সময় লাগে গিয়েছিলো ৩ ঘন্টা হোটেলে তার সাথে দেখা হতেই তাকে বললাম, “সরি আমাদের হরিবল ট্রাফিকের কারণে আপনার আসতে দেরি হলো” তিনি উত্তর দিলেন; ‘তোমাদের দেশ যে এভাবে আগাচ্ছে আমার ধারনাই ছিলো না... কতো গাড়ি রাস্তায়... কতো মানুষ রাস্তায়... এবং সবাই কাজে বের হয়েছে... কেউ কিন্তু পিকনিকে বের হয়নি... কেউ বাসায় বসে নেই... সবাই রাস্তায়, কাজে বের হয়েছে ... ট্রাফিক তো থাকবেই... এতো প্রোডাক্টিভ জাতি তোমরা? আই এম ইম্প্রেসড’ ... আমি-আপনি এভাবে ভেবেছি কোনদিন? দেশ আগাবে কিভাবে? আমরা আশেপাশে পজিটিভ নিউজ তো খুঁজছিই না... বরং, পজিটিভগুলোকে নেগেটিভ করে ফেলছি কয়েকদিন আগে ইউনাইটেড হাসপাতালের একটা ঘটনা নিয়ে তোলপাড় লেগে গেলো আমি যদি ইউনাইটেডের মালিক হতাম, আমি তো এতদিনে একটা প্রেস কনফারেন্স করে আপনাদের ধুয়ে ফেলতাম আপনি আমার দোকানে can-COKE কোক খেতে এসেছেন... কোক খাওয়া শেষ করে বলবেন টাকা নেই, ৫০ টাকা কম নেন আর আমি সেটা মানব? টাকা নাই তো এসেছিস কেন আমার দোকানে? পাশের দোকানে যেয়ে ৫০ টাকা কমে bottle-COKE খেতেন ... আর আমি ৫০ টাকা কমে কেনও কোক দিচ্ছি না এটা শুনে আশেপাশে থেকে মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ে বলবে, “আপনার বুকে লোম নাই মিয়া? আপনি এতো নির্দয়?” আমি ব্যবসা করতে নেমেছি ভাই... আমারটা নন প্রোফিট অর্গানাইজেশান না... সেইম ঘটনাটা ইন্ডিয়া বা সিঙ্গাপুরের কোনও হাসপাতালে হতো... কি করতেন? পুলিশ এসে মানবতার কানের নিচের চুল ধরে, টেনে নিয়ে যেত আর আমার যদি মানবতা দেখাতেই হয়, তাহলে আমি দেখাবো আমার পাশের দোকানে যে প্রতিদিন পানি খায়, তাকে যেয়ে... আর সেটা করলেও, আমি তো আপনাকে দেখিয়ে করবো না... যেখানে হাদিস শরিফেই বলা আছে “এমনভাবে দান করবে; যাতে ডান হাত দিয়ে দান করলে, বাম হাত না টের পায়’’ সেখানে, আপনাকে জানানো তো অনেকক দূরের বিষয় আমার মাথায় ঢুকে আছে, “কর্পোরেট মানেই ব্লাড সাকার”; আপনার ধারনা আছে জাপান কিভাবে উন্নত হয়েছে? উন্নতি করেছে... কোনও রাজনীতিবিদের কারণে না... করেছে, একমাত্র কর্পোরেটদের কারণে। সে দেশের সাধারন জনগন, এক এক জন বড় বড় কর্পোরেটদের গড মানে আমাদের দেশেরও এখন পর্যন্ত যততুকুই উন্নতি হয়েছে, তা কিন্তু হয়েছে এই কর্পোরেটদের কারনেই... সরি টু সে, হাসিনা খালেদার ২ আনা ক্রেডিট নেই এতে হাসপাতাল ইস্যু নিয়ে যেহেতু কথা শুরু করলাম, এটা নিয়েই বলি... এই স্কয়ার বা ইউনাইটেড টাইপ প্রাইভেট হাসপাতালগুলো আসার আগে, বাংলাদেশে মেডিকেল সার্ভিসের কোনও বেঞ্চ মার্ক কিন্তু ছিলো না... তারা এসে বেঞ্চ মার্ক ক্রিয়েট করেছে ... এবং এতে লাভ হয়েছে কি? লাভ হয়েছে আমাদের সাধারন জনগনের, যারা দেখতে পারছি এই বেঞ্চমার্কের কারনেই আজকে পাবলিক হাসপাতালের সার্ভিসগুলোও ধীরে ধীরে লাইনে আসছে ... আমি-আপনি এভাবে ভেবেছি কোনদিন? দেশ আগাবে কিভাবে? আপনি যে কোনও প্রাইভেট সেক্টরের কথা ভাবেন... একই ভাবে হিসেব মিলে যাবে প্রাইভেট ব্যাংক আসার আগে দেশের পাবলিক ব্যাংকগুলোর কি অবস্থা ছিলও ভুলে গেছেন? সেসময় আমি নিজেই তো প্রাইজ বন্ড ভাঙ্গাতে যেয়ে মুখচোখা করে কতো বান্দাকে যে লাইন থেকে গুতায়ে বের করে দিয়েছি আর আজ কিভাবে প্রাইভেট ব্যাংকগুলো এসে, ব্যাংকিং সার্ভিসের বেঞ্চমার্ক উঠিয়েছে এবং এর ফলে কিভাবে পাবলিক ব্যাংকগুলোও ধীরে ধীরে লাইনে আসছে... তা আমরা দেখছি না? প্রাইভেট সেক্টরগুলো কেনও এসেছে বলেন তো? সিচুয়েশানের কারনেই এসেছে ... পাবলিক সেক্টর ফেইল করেছে দেখেই এসেছে বাংলাদেশে আজকে ‘প্রাইভেট সিকিউরিটি’ একটা জমজমাট ব্যবসা। এভাবে ভেবেছেন যে, যদি বাংলাদেশের পুলিশ ঠিক থাকত, তাহলে কোনদিন এই দেশে প্রাইভেট সিকিউরিটির ব্যবসা জমত? অবশ্যই না... “পাবলিক সেক্টরে একটা ভয়েডের কারণে... সৃষ্টি হয়েছে প্রাইভেট সেক্টর... আর এই সেক্টরটাই আবার ঠিক করে দিচ্ছে পাবলিক সেক্টরের ভয়েডটা” ... মজার ব্যাপার না? আজ পুলিশ বাহিনী ধীরে ধীরে উন্নত হচ্ছে ... কেন? ওই যে প্রাইভেট সিকিউরিটি সেক্টর এসে একটা বেঞ্চমার্ক ক্রিয়েট করে ফেলেছে... দেখিয়ে দিয়েছে; এভাবে সিকিউরিটি সার্ভিস দিতে হয়... এভাবে এস্করট সার্ভিস দিতে হয়... এভাবে হাসি মুখে কথা বলতে হয় সিম্পল... আজ থেকে ৫ বছর আগেও তো আমরা লাইন ধরে বাসে উঠতাম না। আমি নিজেও যে কতবার জানালা দিয়ে উঠেছি তার হিসেব নেই। কিন্তু এখন, সবাই কিন্তু ঠিকই পাবলিক বাসেও লাইন ধরে উঠে কেন বলেন তো? উত্তর কিন্তু সেই একই বাংলাদেশ রেলওয়ের সার্ভিস কবে থেকে উঠা শুরু হবে? ... বাংলাদেশের বিমানের সার্ভিস একটু হলেও কিন্তু উঠেছে, উঠছে ... কেনও? উত্তর কিন্তু সেই একই ... আমি-আপনি এভাবে ভেবেছি কোনদিন?? বা ভেবে, যে এভাবে ভাবতে শিখেনি তাকে বুঝিয়েছি? তো দেশ আগাবে কিভাবে? ভেবেছিলাম সব পত্রিকার সম্পাদক বরাবর একটা খোলা চিঠি লিখব; “আপনারা মানুষের কন্সেপশন ক্লিয়ার করেন প্লিজ ... আমাদের একটা বিরাট জেনারেশন, মিস কন্সেপশন নিয়ে বেড়ে উঠছে... তাই প্লিজ আজেবাজে জিনিস বাদ দিয়ে, কাজের জিনিস নিয়ে লিখেন” পরে ভাবলাম, ‘ওল্ড ডগ কেন নেভার লার্ন নিউ ট্রিক্স’ যা করতে হবে, আপনাকে-আমাকেই করতে হবে ভাঙা রাস্তায়, একজন গাড়ির ড্রাইভার কিভাবে গাড়ি চালায় দেখেছেন? স্টিয়ারিং ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে একবার সে এদিকে যায় তো একবার সে ওদিকে যায়... এরকম সে করে কারণ সে সামনে গর্ত দেখতে পাচ্ছে... তাই সে গর্তগুলোকে এভয়েড করে চলছে এরকম ভাঙা রাস্তায়, পর পর দুটা বা তার বেশী গাড়ি কি করে দেখেছেন? দেখবেন যে দ্বিতীয় গাড়ির ড্রাইভারটা, প্রথম গাড়ির পিছে পিছে ঠিক প্রথম গাড়ির মতই একেঁ বেকেঁ যাচ্ছে কারণ, সে সামনের গাড়ির কারণে গর্ত দেখতে পারছে না... আর তাই, প্রথম গাড়ি যা করছে, সরল বিশ্বাসে সে তাই করছে এই লাইনের পরের গাড়িগুলোও ঠিক একই কাজ করছে আমি দ্বিতীয়গাড়ির চালক, সরল বিশ্বাসে প্রথমজনকে ফলো করছি... একটু পরে বুঝতে পারলাম, প্রথম ড্রাইভার অতটা এক্সপার্ট না... সে ছোট গর্ত এভয়েড করতে যেয়ে আরও বড় গর্তের উপর দিয়ে যাচ্ছে আমি যদি এখন তাকে ফলো না করে, আমি নিজের মতো ড্রাইভ করা শুরু করি... পুরা ট্রেন্ডটাই কিন্তু আমি ভেঙ্গে দিলাম মজার ব্যাপার... তখন থেকে; আমার পিছে লেগে থাকা গাড়িগুলো কিন্তু এখন আমাকে ফলো করা শুরু করবে... আমার মতো মুস্রামুস্রি শুরু করে দিবে ... দিলাম ট্রেন্ডটা ভেঙ্গে তাই আসুন... শুরু করি দেই ... ইচ্ছে করলে, হ্যাস ট্যাগ দিয়ে Positive_Bangladesh বা, BangladeshRISING বা, THEBangladesh এরকম কিছু একটা... বা, আপনার পছন্দ মতো কিছু একটা ঠিক করে নিয়ে, লেখা শুরু করতে পারেন যেন আপনার ফ্রেন্ড লিস্টের কেউ চাইলে সহজেই খুঁজে নিতে পারে আজকের দিনের পজিটিভ বাংলাদেশ নিয়ে লেখাগুলি ... ধৈর্য নিয়ে পড়ার জন্য ধন্যবাদ শেষ করি একটা গল্প দিয়ে; আমার এক বন্ধুর মোটরসাইকেল চুরি হলো চার ঘণ্টা পরে সেটা আবার পাওয়াও গেলো বেচারা চোর, ৩ ঘণ্টা জ্যামে বসে থেকে, বিরক্ত হয়ে মোটরসাইকেল ফেলে, পালিয়েছে দেখলেন তো; If you always focus on the negative you will never see the positive
Posted on: Sun, 24 Aug 2014 06:10:58 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015