ভয়ানক পরীক্ষার - TopicsExpress



          

ভয়ানক পরীক্ষার খাতা রাস্তায় বেরিয়ে পড়লাম। আজ একটা টিউশন আছে কিন্তু যেতে ইচ্ছা করছে না। এই নিয়ে এই মাসে ৪ দিন বাদ দিলাম। মাত্র মাসের ১৫ দিন হল। এম্নিতেই পড়াই সপ্তাহে ৫ দিন। তার মাঝে আর ৪ দিন বাদ দিয়ে ফেলেছি। অর্ধমাস চলছে। আগেও এরকম করেছি। তবে এরা আমাকে ছাড়েও না। অন্য কোন টিচার ও অবশ্যএতদিন এই মেয়েকে পড়াবে না। নিতান্ত টাকার দরকার বলেই............ । টিউশনির একটা ঘন্টা টর্চারের মত লাগে। এমন ছাত্রী পড়াতে গেলে যে কেউ নাযেহাল হয়ে যাবে। সেদিনকার ঘটনা বলি, ৩ ঘন্টা ধরে একটা পারাগ্রাফ মুখস্ত করালাম পরীক্ষার আগের দিন। ভাল কথা। আর কিছু না পারুন পারাগ্রাফ, লেটার লিখে গ্রামারে ৩/৪ মার্ক যদি সৌভাগ্য জোরে পেয়ে যায় অন্তত পাস মার্ক টা যদি ওঠে। পরীক্ষা শেষে রেসাল্ট দেখলাম। খাতা খুললাম। বাহ বাহ। খাতার সৌন্দর্য দেখে যে কেউ মুগ্ধ হয়ে যাবে। উপরে কিছু captcha image দেখলাম। বলাই বাহুল্য এই মেয়েকে যেকন ওয়েবসাইট এর captcha image ডিসাইন করতে দেওয়া উচিত। তো প্রায় ৫/৬ মিনিট নিরলস পরিশ্রম করে বুঝলাম সেখানে নাম, রোল তারিখ লেখা। বিষয় টা অনেক কষ্টে বুঝলাম সমাজ। তো খাতার সৌন্দর্যে আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। অন্যান্য খাতা কালো দাগে পুর্ন কিন্তু ইনার খাতা সম্পুর্ন পরিস্কার । সাদা। কোথাও এতটুকু কলমের দাগ নেই। যেনো এই মাত্র সার্ফএক্সেল দিয়ে ধুয়ে আনা হয়েছে। তবে সার্ফ এক্সেল এ ভেজাল ছিল তাই মাঝের দু একটা পৃষ্ঠায় সৃজনশীলের (ক) দাগের উত্তর দেখতে পেলাম। যদিয় প্রত্যেকটির পাশেই (০) নামের বডিগার্ড রয়েছে। তো এরপর পরের খাতাটা খুলে বহু চেষ্টার পর বুঝলাম এটা ইংরেজি খাতা যাক এটা নিয়ে আমি খুব আশাবাদী। পরীক্ষার আগে এত চেষ্টা করেছি। নাহ। এই খাতাটা এত সুন্দর না। প্রথমেই পারাগ্রাফ দিয়ে শুরু করা। দেড় পৃষ্ঠা ভরে লিখা। মনটা খুশি হয়ে গেল। নাম্বার এর দিকে তাকাতেই দুটো কোয়েল পাখির ডিমের মত সাইজের দুটো গোল বস্তু অঙ্কিত দেখতে পেলাম। দেড় পৃষ্ঠা লিখে দুটো কোয়েল পাখির ডিম অর্জন করার ক্ষমতা রাখে যে পারাগ্রাফ তা পড়ে দেখার কৌতুহল দমন করতে পারলাম না। Uses and abuses of Internet Internet very useful. I not buy sms bundles because chat friends with internet. I am internet in my compiutar and mobail fon. I have 2 interner page. I post them. I update status internet. internet is abuse also. It sends spam. If 5/6 person blocks me internet my internet id disables. আর একটু পড়লে হয়ত আমার জন্য আম্বুলেন্স ডাকতে হত। চমৎকার ইংরেজী দেখে আমার নিজের ই ইউসেজ অ্যান্ড অ্যাবিউসেস অফ টিউশনি লিখতে ইচ্ছা হচ্ছিল। তবে এইটুকু পড়ে নতুন একটা জিনিস শিখলাম। ইন্টারনেট মানে শুধুই ফেসবুক। আর খাতা খোলার ইচ্ছা না থাকলেও কর্তব্য বশত খুলতে হল। নেক্সট বাংলা। প্রথম পৃষ্ঠায় চোখে পড়ল উইলিয়াম শেক্সপিয়ার এর পরিচিতি দাও। (লেখক পরিচিতি) উত্তরঃ উইলিয়াম শেক্সপিয়ার একজন বড় মাপের লেখক ছিলেন। বাংলা সাহিত্যে তার অবদান অনেক। তিনি বাংলাদেশের জাতীয় লেখক হবেন যদি এভাবেই গল্প লিখে যান। তার প্রতিভার জন্য তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক, জগত্ত্বারীনি স্বর্নপদক লাভ করেছেন। ........................ এবার সত্যি ই মাথা বেথা করতে লাগল। এসব দেখার চেয়ে টিউশনি ছেড়ে দিয়ে ভিক্ষা করাও শ্রেয় মনে হল। এসব পড়লে মেন্টাল হস্পিটালের ফীস দিতে আমার আরো বেশি খরচ হবে। তবে মেয়েটিকে বাহবা দিলাম। বাংলা পরিক্ষা বাংলার পুরস্কারগুলো মনে রেখেছে। সবাই বাঙ্গালী।৭০০ কোটি বাঙ্গালী। বাহ বাহ । উঠে দৌড় দিব কিনা ভাবছি। বিজ্ঞান খাতা খুলতে রীতিমত ভয়েই অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার উপক্রম হল। (ক) মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম কি? উঃ Man (ক) বৈজ্ঞানিক নাম বা দ্বিপদ নামকরন বলতে কী বোঝ? উঃ বেশিরভাগ বিজ্ঞানী ছিলেন অবাঙ্গালী। ইংরেজ শাসনামলেই বৈজ্ঞানিক নামের উদ্ভব। তারা বাংলা উচ্চারন করতে পারতেন না। তাই তারা নিজেদের সুবিধার জন্য ইংরেজীকে বৈজ্ঞানিক ভাষা বানিয়ে দিলেন। আর সবকিছুর ইংরেজীকে বৈজ্ঞানিক নাম বলে আখ্যা দিলেন। যেমন মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম : Man . এখন অজ্ঞান হইনি দেখে নিজের সহ্যশক্তির জন্য গর্ববোধ করলাম। গনিত বিষয়ে চোখ দিয়ে ঢোক গিলে ছাত্রীর দিকে তাকিয়ে বললাম খুলব? - স্যার দেখেন। আজকে পড়াইএন না। দেখে যান এর চেয়ে জঙ্গলে বসে রাত ৩ টার সময় হরর মুভি দেখলেও অনেক কম ভয় পেতাম। প্রথম প্রশ্ন ঃ একটি পেন্সিলের দাম ৫ টাকা , খাতার দাম ১৪ টাকা। (ক) চক্রবৃদ্ধি মুলধনের সুত্র লিখ উঃ _____________________________________________ (খ) তুমি ব্যাঙ্ক এ ১০০০০ টাকা জমা রাখলে। মুনাফার হার ১০ % হলে ৩ বছর পর চক্রবৃদ্ধি মুলধন যত হবে , ৪ টি খাতা , ১০ টি পেন্সিল কিনে তত টাকা দোকানীকে দিলে তোমার পাওনা কত? উঃ আমার কাছে জীবনেও ১০০০০ টাকা আসা সম্ভব নয়। তাই অবশ্যই সেটি জাল নোট ছিল। তাই আমি ধরা খাব আর আমার পাওনা হবে জেলের ভাত। এবার আর বসে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। এরপর খাতা দেখলে নিশ্চই এই শিক্ষার্থীকে খুন করার দায়ে আমার পাওনা হত ফাসি। তাই যথাদ্রুত খাতা ফেলে এক দৌড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে রাস্তায় দৌড় দিলাম। পেছনে মনে হল কে ডাকছে, “ স্যার স্যার কই যাচ্ছেন?” কিছু কিছু ডাক যে সত্যি অগ্রাহ্য করতে হয় তা আজ হাড়ে হাড়ে টের পেলাম। লিখা :- নিঃসঙ্গ প্রেমিক সুদীপ্ত #কাঠপেন্সিল
Posted on: Sat, 29 Nov 2014 14:06:25 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015