[যারা লেখাটি পড়বেন, আশা - TopicsExpress



          

[যারা লেখাটি পড়বেন, আশা করছি তারা ধৈর্য্য ধরে পুরো লেখাটি পড়বেন।] গোলাম আযমের মামলার ২৪৩ পৃষ্ঠার রায় পড়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমাদের ট্রাইব্যুনালের মাননীয় বিচারকরা এই ধরনের স্ববিরোধিতাপূর্ণ রায় কীভাবে দিলেন তাই এখন ভাবছি। কোথায় তাহলে ঘাটতি! রায়ে দণ্ড ঘোষণা করতে গিয়ে ৩৯০ অনুচ্ছেদে ট্রাইব্যুনাল বললেন- Now a pertinent question is before us to decide what punishment can be awarded to the accused which shall meet the ends of justice reflecting the requirement of law as well as aspiration of the victims’ families of the country. অর্থাৎ ট্রাইব্যুনালের মতে, অভিযুক্তের সাজা এমন হওয়া উচিত যা ন্যায়বিচার নিশ্চিতের পাশাপাশি এই দেশের ভিকটিম পরিবারগুলোর আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করবে। এরপর ৩৯১ নম্বর অনুচ্ছেদে The International Criminal Tribunal for the former Yugoslavia (ICTY) এর Blaskic case এর প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হলো। In Blaskic case, the Tribunal observed that if the elements of military commanders or civil superiors are fulfilled, the superiors are liable to be awarded heavier sentences even than that of the actual perpetrators. In the context of trial relating to international crimes, we are of the opinion that the plea of old age or belated prosecution does not diminish the guilt of the accused. অর্থাৎ ব্লাসকিক মামলায় ট্রাইব্যুনালের পর্যবেক্ষণ হলো- যদি মিলিটারি কমান্ডার কিংবা সিভিল সুপিরিয়র হওয়ার উপাদানগুলো পূর্ণ হয় তাহলে সেই উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে প্রকৃত অপরাধীর তুলনায় গুরুতর শাস্তি প্রদান করতে হবে। এরপরেই ট্রাইব্যুনালের মতামত – আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচারের প্রেক্ষিতে বার্ধক্যের অজুহাত (plea of old age) কিংবা বিলম্বিত বিচার অভিযুক্তের অপরাধ কমায় না। লক্ষ্য করুন আদালত ৩৯১ অনুচ্ছেদে শেষ লাইনে ঠিক এভাবে বলেছে – ‘In the context of trial relating to international crimes, we are of the opinion that the plea of old age or belated prosecution does not diminish the guilt of the accused.’ কিন্তু দুঃখজনকভাবে পরের অনুচ্ছেদগুলোতেই আদালত স্ববিরোধিতার প্রকাশ ঘটিয়েছে। ৩৯২ অনুচ্ছেদে ট্রাইব্যুনাল বলেছে- Having considered the attending facts, legal position and the gravity and magnitude of the offences committed by the accused, we unanimously hold that he deserves the highest punishment i.e. capital punishment as provided under section 20(2) of the ICT Act of 1973. But in the same breath, we cannot overlook the mitigating circumstances which have come up before us for its due consideration. অর্থাৎ প্রাপ্ত তথ্য, আইনী অবস্থা এবং অভিযুক্তের কৃত অপরাধের গুরুত্ব ও মাত্রা বিবেচনা করে বিচারকরা সর্বসম্মতিক্রমে একমত হয়েছেন যে, ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইনের ২০(২) ধারা অনুযায়ী গোলাম আযমের সর্বোচ্চ শাস্তি অর্থাৎ ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট হওয়া উচিত। পরের লাইনেই বিচারকরা বলেছেন- But in the same breath, we cannot overlook the mitigating circumstances which have come up before us for its due consideration. অর্থাৎ- পাশাপাশি ট্রাইব্যুনালের সামনে উত্থাপিত ‘mitigating circumstances’ বিবেচনা করতে হবে। অপরাধ আইনে ‘mitigating circumstances’ বলতে বোঝায়- conditions or happenings which do not excuse or justify criminal conduct, but are considered out of mercy or fairness in deciding the degree of the offense the prosecutor charges or influencing reduction of the penalty upon conviction. মিটিগেটিং সারকামটেন্সেস এর কথা বলে ট্রাইব্যুনাল ৩৯৩ নম্বর অনুচ্ছেদে গোলাম আযমের ৯১ বছর বয়সের কথা তুলেছেন। ৩৯৪ নম্বর অনুচ্ছেদের শেষে আদালত অভিমত প্রকাশ করলেন এভাবে- Having regards to the above facts and circumstances, we are of agreed view that the ends of justice would be met if mitigating sentence is inflicted upon the accused. অর্থাৎ তথ্যপ্রমান ও পরিস্থিতি বিবেচনা করে আদালত ঐক্যমতে পৌছেছে যে, অভিযুক্তকে প্রশমিত দণ্ড প্রদান করলেও ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে। তারপর গোলাম আযমকে মৃত্যুদণ্ড না দিয়ে বয়সের অজুহাতে ৯০ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। আসুন এবার ট্রাইব্যুনালের স্ববিরোধিতাগুলো দেখি- ১. ট্রাইব্যুনালের মতে, অভিযুক্তের সাজা এমন হওয়া উচিত যা ন্যায়বিচার নিশ্চিতের পাশাপাশি এই দেশের ভিকটিম পরিবারগুলোর আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করবে। (অনুচ্ছেদ ৩৯০)। কিন্তু প্রশমিত দণ্ড প্রদানের সময় ট্রাইব্যুনাল একবারও ভিকটিম পরিবারগুলোর আকাঙ্ক্ষাকে বিবেচনায় নেয়নি। ২. ট্রাইব্যুনাল ব্লাসকিক মামলার রেফারেন্স দিয়েছে, যেখানে বলা আছে- যদি মিলিটারি কমান্ডার কিংবা সিভিল সুপিরিয়র হওয়ার উপাদানগুলো পূর্ণ হয় তাহলে সেই উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে প্রকৃত অপরাধীর তুলনায় গুরুতর শাস্তি প্রদান করতে হবে। এই একই ট্রাইব্যুনাল সাঈদীকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেছে। তাহলে সাঈদীর উর্ধ্বতন নেতা গোলাম আযমের শাস্তি কেন গুরুতর না হয়ে লঘুতর হলো? ৩. ট্রাইব্যুনাল মত দিয়েছে - আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচারের প্রেক্ষিতে বার্ধক্যের অজুহাত (plea of old age) কিংবা বিলম্বিত বিচার অভিযুক্তের অপরাধ কমায় না। (অনুচ্ছেদ ৩৯১)। তাহলে গোলাম আযমের দণ্ড প্রদানের ক্ষেত্রে বার্ধক্যের অজুহাতকে কেন বিবেচনায় নেওয়া হলো? ৪. প্রশমিত দণ্ড দেওয়ার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনাল বয়স বিবেচনা করেছে। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী প্রশমিত দণ্ড দেওয়ার সময় অপরাধীর মনস্তত্ব বিবেচনা করা হয়। অপরাধী তার কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত কিনা তাও বিবেচনায় নেওয়া হয়। গোলাম আযম তার কৃতকর্মের জন্য কখনোই অনুতপ্ত হয়নি। তাহলে ‘মিটিগেটিং সারকামটেন্সেস’ রুল কীসের নিরিখে গোলাম আযমের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হলো? নিশ্চিতভাবে এই প্রশ্নগুলোর একটিরও সঠিক জবাব ট্রাইব্যুনালের কাজে নেই। গোলাম আযমের অপরাধের ভিকটিম পুরো বাংলাদেশ। ভিকটিম হিসাবে আমরা ন্যায়বিচার পেলাম না। - Akramul Hoque Samim
Posted on: Tue, 16 Jul 2013 07:26:45 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015