শচীন টেন্ডুলকারকে খোলা - TopicsExpress



          

শচীন টেন্ডুলকারকে খোলা চিঠি ! Dear Sachin, ঘড়িতে তখন ঠিক ১২টা ২৫।উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেষ ব্যাটসম্যান।ওয়েস্ট ইন্ডিজ আরো একবার ইংনিস পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে। সামির বলে উড়ে গেলো, ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেষ ব্যাটসম্যানের স্ট্যাম্প।ক্যামেরার লেন্স তাক করলো আপনার দিকে।শেষ উইকেট পড়ার সাথে সাথে আনন্দে লাফিয়ে উঠলেন।গ্যালারী তখন শচীন শচীন গর্জনে যেন কাঁপছে।এ এক আবেগের মহা সমুদ্র, এ এক আবেগের মহা বিস্ফোরন।এই বিস্ফোরনে ঘায়েল কোটি কোটি শচীন ভক্ত।আপনি নিজেও কি নন? আস্তে আস্তে হেঁটে আসলেন প্যাভিলিয়নের দিকে।ধোনি তার বাহিনি নিয়ে গার্ড অব অনার দিতে প্রস্তুত।বিরাট কোহলিকে দেখলাম আপনাকে কাঁধে নেবার জন্য প্রস্তুত।কিন্তুআপনার এসবে খেয়াল নেই।স্মৃতি হিসেবে রেখে দেবার জন্য ক্রিজ থেকে একটি ষ্ট্যাম তুলে নিলেন।২২ গজি পিচের এক মুঠো ধুলে মাখলেন বুকে।ক্রিকেট পিচের দিকে আবেগী দৃষ্টিতে তাকালেন।আবেগে থরথর করে কেঁপে উঠলো ঠোট।হয়তো বললেন ভালো থাকিস ক্রিকেট মাঠ, ভালো থাকিস ক্রিকেট বল, ভালো থাকিস ক্রিকেট ব্যাট, ভালো থাকিস মাঠের ঘাসফুল।আমি চলে যাচ্ছি।২৪ বছরের এই সম্পর্কের কথা ভূলবোনা, তোরাও আমাকে ভূলিস না । তারপর মাঠ থেকে দ্রুত বেরিয়ে যাবার চেষ্টা করলেন।মাথার টুপি দিয়ে চোখ দুটো ঢেকে রাখলেন।দু চোখে তখন শ্রাবনের অঝর ধারা ঝরছে।সেই অশ্রু হয়তো কাউকে দেখাতে চাচ্ছিলেন না। তখন যেন আপনি ঠিক পাক্কা অভিনেতা উত্তম কুমার।বুক ক্ষয়ে যাচ্ছিলো আবেগের বিস্ফোরনে, অথচ অভিনয় করে মুখে কৃত্রিম হাসিটি ঝুলিয়ে রাখলেন।কিন্তু পারলেন কোথায়? দীর্ঘ ২৪ টি বছর যে চোখে আবেগ কে দাস বানিয়ে রেখে বাঘা বাঘা সব বোলারদের পিটিয়ে চোখের জল-নাকের জল এক করে দিয়েছেন, বিদায়ী টেস্টে সেই চোখ বিদ্রোহ করলো, আবেগের দুয়ার খুলে গেলো নিমিষেই।টিভি পর্দায় স্পষ্ট দেখলাম শচীন চোখ মুচছেন।ক্রিকেট বিধাতাও কি কাঁদছেন? ক্রিকেটের সেরা সন্তানটি যে আজ চলে গেলো! আমার চোখ দুটিও ভরে উঠলো জলে। টিভিতে তখন আপনার পুত্র অর্জুন টেন্ডুলকারের মুখ ভেসে উঠল।১৪ বছর বয়সী ছেলেটি তখন চোখ ভর্তি জল নিয়ে বোকা বোকা হাসিতে হাততালি দিয়ে বিশ্বজয়ী বাবাকে স্বাগত জানাচ্ছে।দৃঢ় প্রতিগ্গ চোয়ালে হয়তো বলছে আমার হলো শুরু বাবা, তোমার হলো শেষ । আপনার কন্যা ১৬ বছর বয়সী সারা টেন্ডুলকারকে দেখলাম মা-অঞ্জলি টেন্ডুলকারের গালে আবেগী চুমু খাচ্ছেন।আপনার রত্নগর্ভা মা রজনী টেন্ডুলকার একদম নিশ্চুপ। ভ্রাতা অজিত টেন্ডুলকার ও একদম চুপ।গভীর শোক মানুষকে অনেক সময় চুপ বানিয়ে দেয়। স্বর্গীয় পিতা নিশ্চয়ই তখন স্বর্গলোক থেকে আপনার বিদায় দেখছিলেন আর আশীর্বাদ করে বলেছেন ওয়েল ডান মাই সান, ওয়েল ডান।আই এম প্রাউড অব ইউ । একবার কার লেখায় জানি পড়েছিলাম বিদায়টা এমন হওয়া উচিত যেন, যিনি বিদায় নিচ্ছেন তিনি হাসবেন আর বাকি সবাই তার বিদায়ে কাঁদবে ।আজ আপনার বিদায়টাও তেমনি হলো।সারা বিশ্বের কোটি কোটি ভক্ত কাঁদছে আর আপনি হাসছেন।মাইক্রোফোনে কি অসাধারন ভঙিমায় বলে গেলেন মা ই আমার জীবনের সব।বড় ভাই অজিত ঠিক ভাবে গাইড না করলে,আজকের শচীন হতে পারতাম না ।স্ত্রী অঞ্জলী কে বললেন, আমি জীবনে যতো জনের সাথে জুটি গড়েছি তার ভিতর তুমি ই সেরা । কথা বলার সময় যখন বারবার পানির বোতলে চুমুক লাগাচ্ছিলেন, তখনেই বুঝেছিলাম আবেগ এসে বারবার আপনার কন্ঠ রোধ করে দিচ্ছিলো।আপনার কথা শুনে বুঝলাম কোচ রমাকান্ত আচারেকর কোনদিন প্রশংসা করে ওয়েল ডান না বলায় আপনার আক্ষেপ ছিলো।আমি নিশ্চিত তিনি যদি কথা বলার শক্তি না হারিয়ে ফেলতেন প্রিয় শিষ্যের এই বিদায়ী বেলায় তিনিও বলতেন ওয়েলডান শচীন, ওয়েলডান মাই বয়।স্টেডিয়ামে ঝোলানে সেই প্লেকার্ডটার মতো আমিও বলি Dear Sachin You took retire from cricket but not from our heart. Legends never retire.. :( :(
Posted on: Sat, 16 Nov 2013 19:48:56 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015