সোবহান সাহেব পান - TopicsExpress



          

সোবহান সাহেব পান চিবাচ্ছেন। যখন তার মেজাজ অত্যাধিক মাত্রাই গরম থাকে তখন তিনি পান মুখে দেন। আয়েশ করে পান খেতে থাকেন। পান খাওয়া শেষ হলে দেখে যায় তার মাথা শান্ত হয়ে গেছে। মনে এক রকম প্রফুল্লতা অনুভব করেন। এই নিয়ে তিনি দ্বিতীয় বার পান মুখে দিলেন। আগে কখনো এমন হয়নি। প্রথম বার মন মেজাজ ভালো হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু এইবার হয়নি। তিনি দ্বিতীয় পান টিই আয়েশ করে খাওয়ার চেষ্টা করছেন। তার মেজাজ ঠান্ডা করতে হবে না হলে লংকা কান্ড বেধে যাবে আজ মেজাজ খারাপের বিষয়টা খুব জটিল। তার ছেলে আসিফ বিয়ে করে ঘরে বউ নিয়ে এসেছে। মেয়ে নাকি আসিফের বান্ধবী ছিলো। কিন্তু প্রথম থেকে শোবহান সাহেবের সন্দেহ হয়েছিলো। তিনি তার মিসেস শায়লা বেগমকে বলেছিলেন অথচ শায়লা বেগম পাত্তা দেয়নি। তিনি বলেছিলেন তারা শুধুই ফ্রেন্ড। শায়লা বেগম প্রেশারের রোগী। ছেলের কান্ড দেখে তার প্রেশার বেড়ে গেছে। সেটা দেখে টেনশন হচ্ছে না তার টেনশন হচ্ছে তার বাম চোখটি নিয়ে। বাম চোখ লাফানো শুরু করেছে। বাম চোখ লাফানো অশুভ লক্ষন। সোবহান সাহেবের পান খাওয়া শেষ। তার মাথা এখন যথেষ্ট শান্ত। তিনি শান্ত মাথায় ডিসিশান নিয়ে ফেলেছেন। তার ছেলে আর ছেলের বউকে ঘর থেকে বেড় করে দিবেন। সাথে শায়লা বেগমকে বলবেন ব্যাগ গুছাতে। সকাল হলে তাকে সোবহান সাহেবের শ্বশুর বাড়ি রেখে আসবেন। যে সন্তানের শাসন করতে জানে না তার এই বাড়িতে থাকার কোনো অধিকার নেই সোবহান সাহেব ড্রইং রুমের সোফায় বসে আছেন। তার সামনে তার ছেলের বউ দাড়িয়ে আছে। তিনি তার দিকে একবার তাকিয়ে মাথা নিচু করে রইলেন। মেয়েটি সুন্দর। ঠিক তার মেয়ের মতো। তার মেয়ে বেচে নেই থাকলে ডেকে এনে দুজনকে দার করিয়ে মিলাতেন। মেয়েটির চেহারায় মায়া মায়া ভাব আছে। তার ধারনা তিনি আরেকবার মেয়েটির দিকে তাকালে তার মায়ায় পরে যাবেন - আসিফ - জ্বি বাবা - তুমি দাড়িয়ে আছো কেনো? - কি করবো বাবা? - এই মেয়েকে নিয়ে এখন ঘর থেকে বেড় হয়ে যাও। সোবহান সাহেবের খারাপ লাগছে। আসিফকে বেড় হতে বলাই মেয়েটি কাঁদছে। মেয়েটিকে কাঁদতে দেখায় তার কষ্ট হচ্ছে - এই মেয়ে তুমি কাদছো কেনো? - বাবা আমাদের ভুল হয়েছে আমাদের মাফ করে দিন। - নো মাফ - বাবা এখন বের করে দিলে আমরা কই যাবো - আগে ভাবোনি? - বাবা আমাদের ভুল হয়েছে। আমি বাসায় গেলে বাবা রাখবে না। - সেটা আগে বুঝার উচিত ছিলো। - বাবা আমি তো আপনার মেয়ের মতো। প্লিজ বাবা। সোবহান সাহেব আর পারলেন না মেয়েটির দিকে তাকালেন। - তুমি আমার মেয়ের মতো? - জ্বি - তুমি ভালো চা বানাতে পারবে? - পারবো - সরষে ইলিশ রাঁধতে পারো? - শিখিয়ে দিলে পারবো। - ঠিক আছে, আগে চা বানাও, তার পর সরষে ইলিশ বানানো ট্রেনিং নিবে দুই দিন। এর পর ভালো রাঁধতে না পারলে ডিরেক্ট বাপের বাড়ি। নো কম্প্রোমাইজ। - জ্বি বাবা। শায়লা বেগম তার নতুন বউমাকে ভিতরের রুমে নিয়ে গেলেন। সোবহান সাহেব ডিসিশন পাল্টালেন। ছেলের বউকে বের করবেন না। তার কেনো জানি মনে হচ্ছে এই মেয়েকে বের করলে সে তার পায়ে ধরে গড়াগড়ি খাবে। তার মেয়ে তার পায়ে ধরবে বিশ্রি বেপার। সোবহান সাহেব ঠিক করেছেন তার ছেলের বউ ভালো সরষে ইলিশ রাঁধতে না পারলেও তাকে রেখে দিবেন। মেয়ে আর ছেলের বউ একই। বের করলে তিনি নিজেই কষ্ট পাবেন। তিনি আরেকটি পান মুখে দিলেন। আগেরটি ভালো করে খাওয়া হয়নি। এটি আয়েশ করে খাবেন লিখা : আশরাফ মামুন
Posted on: Fri, 15 Nov 2013 13:42:45 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015