স্রষ্টার প্রতি - TopicsExpress



          

স্রষ্টার প্রতি বিশ্বাস অন্ধ বিশ্বাস, নাকি নাস্তিকতা অন্ধ বিশ্বাস। এইখানে clear হয়ে নেয়া ভাল যে, স্রষ্টার অস্তিত্ব প্রমাণিত হলে, ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র, ফ্রীডম, গণতন্ত্র প্রভৃতি ধারণাগুলো বুদ্ধিবৃত্তিক বৈধতা হারাবে। অর্থাৎ স্রষ্টা প্রদত্ত জীবনব্যবস্থার বাইরে অন্য সকল জীবনব্যবস্থা বুদ্ধিদীপ্ত মনের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারাবে। প্রথমে, আমরা দেখব যে, Science or Scientific Way দিয়ে স্রষ্টাকে প্রমান করা কতটা যৌক্তিক। বস্তুত, Science শুধুমাত্র ঐসব বিষয় নিয়ে মতামত দিতে পারে, যেইসব বিষয় মাপার বা পর্যবেক্ষণ করার ক্ষমতা তার আছে। উদাহরণস্বরূপ, ১ টা ৫ ফুট লম্বা টেবিল যে ৫ ফুট, এইটা Science তখুনি বলতে পারবে, যখন তার কাছে ফুট এর সংজ্ঞা জানা থাকবে। কিন্তু টেবিলকে মাপতে পারলেও কোন ব্যক্তি এটা বানিয়েছে, বা আদৌ এটা কেউ বানিয়েছে কিনা, কিংবা সে দেখতে কেমন, কি খায়, কি পরে এইসব প্রশ্নের উত্তর Science দিতে পারেনা। Science শুধু বস্তুকে পর্যবেক্ষণ করে তার বৈশিষ্ট্য আমাদেরকে জানাতে পারে। কিন্তু বৈশিষ্ট্যের কারণ জানাতে পারেনা। যেমন ২ টা H ১ টা O এর সাথে মিলে পানি তৈরি করে, কিন্তু কেন পানিই তৈরি করল, আগুন কেন তৈরি করলনা, এই ব্যপারে Science নীরব। সে শুধু বস্তুর গুনাগুণ বা বৈশিষ্ট্য বলতে পারে, ততটুকুই যতটুকু মাপার ক্ষমতা তাকে দেয়া আছে। তাই এই সীমিত Science কে দিয়ে স্রষ্টাকে খুঁজে না পেলেই যে তাকে অস্বীকার করতে হবে, এটা হাস্যকর। দ্বিতীয়ত, অনেকেই Logical Method ব্যবহার করে স্রষ্টার অস্তিত্ব বুঝার জন্য … কিন্তু এর দুর্বলতা হল যে, Logic সবসময় Premise এর উপর ভর করে চলে। Premise যদি ভুল হয় তাহলে, Logic হতে প্রাপ্ত সিদ্ধান্ত ভুল হবে। যেমন ধরুন, কেউ বলল, “কাঠ আগুনে পুড়ে, রফিকের নৌকাটি কাঠের তৈরি, তাই ওটাও আগুনে পুড়বে”......... এই কথাটি মিথ্যা হবে যদি, নৌকাটি পানিতে ডুবানো থাকে। এখন Logic সবসময় যে Premise নিয়ে কাজ করে তা যে Comprehensive হবে তার কোন মানে নেই। অন্য একটা উদাহরণ দেই, “বাঙ্গালীরা দুর্নীতিবাজ, ফারযানা একজন বাঙ্গালী, সুতরাং সেও দুর্নীতিবাজ”...... এই কথাটা সত্যও হতে পারে আবার মিথ্যাও হতে পারে। কোন Guarantee নাই। তাই Logic দিয়ে স্রষ্টাকে প্রমাণ করার প্রমাণ যেমন আছে, অপ্রমাণ করার প্রমাণ ও আছে। Logical method চূড়ান্ত ও সুনিদৃষ্ট কোন সিদ্ধান্ত দেয়না। এইবার আসি চিন্তার ঐ পদ্ধতিতে যা মানবজাতি সার্বজনীনভাবে তার জীবনের সিদ্ধান্ত গ্রহণে ব্যবহার করে থাকে। আর তা হল, Rational Method. এই পদ্ধতিতে মানুষ তার চারপাশের বস্তুসমুহকে তার ইন্দ্রিয় দ্বারা উপলব্ধি করে। সেই বস্তু সম্পর্কে তার কাছে কিছু Previous Information থাকে। সেই Previous Information কে use করে সে কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। সব মানুষই এই পদ্ধতিতে চিন্তা করে থাকে। Scientific Method আর Logical Method কে Rational Method এর শাখা বলা যেতে পারে। মানুষ কিভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহন করে, তার একটা উদাহরণ দেই। যখন আপনার দরজায় কেউ Knock করে, তখন আপনি কিন্তু মাপতে বসেন না যে, কত Frequency তে Sound Wave টা আসল, তারপর হিসাব করেন যে একজন মানুষ কত জোরে বা কত Frequency তে আঘাত করতে পারে, তারপর দরজা খুলেন। না, আমরা কেউই এইভাবে সিদ্ধান্ত নিইনা। বরং দরজায় Knock করলে তা আমরা ইন্দ্রিয় (শ্রবণ) দ্বারা উপলব্ধি করি, আমাদের মস্তিষ্কে এর ব্যপারে Previous Information আছে যে, Knock করা মানে কেউ এসেছে, এবং তখন আমরা দরজা খুলার সিদ্ধান্ত নিই। তার মানে দাঁড়াল যে, Rational Method এ সিদ্ধান্ত নিতে যে কয়টা জিনিষ লাগে, তা হল ১. বাস্তবতা ২. ইন্দ্রিয় দ্বারা বাস্তবতাকে উপলব্ধি করা ৩. বাস্তবতা সম্পর্কে Previous Information 4. Previous Information এর সাথে link করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ অর্থাৎ Sound mind এর ভূমিকা। হুমমমমমমমম, মনের মধ্যে নিশ্চয়ই প্রশ্ন জেগেছে, স্রষ্টার কোন বাস্তবতা আমাদের সামনে নেই যে আমরা তাকে ইন্দ্রিয় দ্বারা উপলব্ধি করব, তাহলে স্রষ্টার অস্তিত্ব এই পদ্ধতিতে বুঝব কিভাবে??............... আপনার দরজায় নক করলে আপনি দরজার বাইরে কারো অস্তিত্ব বুঝতে পারেন, কিন্তু যিনি নক করছে, তিনি কি পুরুষ না মহিলা, ফর্সা নাকি কালো তা কিন্তু বুঝার উপায় নেই। কিন্তু তার অস্তিত্ব বুঝা যায়। আমাদের সামনে স্রষ্টার বাস্তবতা না থাকলেও সমস্যা নেই। আমাদের চারপাশে যে বস্তুসমুহ আছে, যাদেরকে আমরা ইন্দ্রিয় দ্বারা উপলব্ধি করতে পারি, চলুন সেগুলোকে Rational Study করে দেখি। আমরা আমাদের আশপাশের প্রকৃতিকে পর্যবেক্ষণ করব, এবং দেখব আদৌ কোন স্রষ্টার প্রয়োজন আছে কিনা। এখানে মনে রাখতে হবে এই পদ্ধতিতে আমরা দেখব মহাবিশ্বের স্রষ্টা আছে কিনা, কিন্তু তিনি দেখতে কেমন, কিভাবে কাজ করেন তা Rationally জানা সম্ভব নয়, কারণ উনি আমাদের ইন্দ্রিয়ের বাইরে, তাকে জানতে হলে একটা পদ্ধতিই আছে, আর তা হল উনি যদি নিজে থেকে আমাদেরকে জানান (পরে আলোচনা করা হবে)। আমাদের চারপাশের প্রত্যেকটি বস্তুর মধ্যেই ২ টি বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। এরা প্রত্যেকেই সীমাবদ্ধ এবং নির্ভরশীল। যেমন, গাছ আকার আকৃতি, দ্বারা সীমাবদ্ধ এবং নিজেকে টিকিয়ে রাখার জন্য সূর্য, পানি এগুলর উপর নির্ভরশীল। মানুষ নানা দিক দিয়ে সীমাবদ্ধ এবং নির্ভরশীল। আলো তরঙ্গদৈর্ঘ্য, গতি দ্বারা সীমাবদ্ধ, নির্ভরশীল উৎস কিংবা রুপান্তর প্রক্রিয়ার উপর। প্রত্যেকটি বস্তু নিজেকে টিকিয়ে রাখার জন্য অন্য কিছুর উপর নির্ভরশীল। এবং এরা কেউই নিজেরা নিজেদের অস্তিত্তের জন্য দায়ী নয়। যদি নিজেরা নিজেদেরকে অস্তিত্তে আনত তাহলে সীমাবদ্ধতা আর দুর্বলতার উর্ধে থাকত। যদি ধরে নেই যে, নির্ভরশীলতায় একে অপরের উপর নির্ভরশীল এবং কোন স্রষ্টার দরকার নেই, তাহলে আদিকাল থেকে চলে আসা ঘটনা বা বস্তুসমুহের স্বরুপ দাঁড়ায়, .....v....w....x…..y এইটা অসম্ভব, কারণ কোন শুরু না থাকলে, v, w, x, y এদের কারো অস্তিত্তে আসা সম্ভব নয়। একটা উদাহরণ দেই। আপনি একটা ক্রিকেট দলের ১০ নাম্বার ব্যাটসম্যান। আপনি কয়জনের পর নামবেন? ৯ জনের পর। আপনি কোন দলের ১০০ তম ব্যাটসম্যান হলে নামবেন ৯৯ জনের পর। আপনার দলে যদি অসীম সংখ্যক ব্যাটসম্যান থাকে, তাহলে আপনি কবে নামবেন? কখনই নামবেন না, কারন আপনার পূর্বে অসীম সংখ্যক ব্যাটসম্যান আছে (অর্থাৎ শুরুও নাই, শেষ ও নাই)... আপনার আগেরজনের পূর্বেও অসীম সংখ্যক, তার আগের জনের পূর্বেও অসীম সংখ্যক............ সুতরাং কোন ব্যাটসম্যানই নামতে পারবেনা, কারণ প্রত্যেকের পূর্বেই আছে অসীম সংখ্যক...... অর্থাৎ কোন শুরু যদি না থাকে তাহলে কেউই exist করেনা। অসীম এই শব্দটা শুধু mathematical ব্যপারে use করা হয়, বাস্তবতায় কোন কিছুই অসীম নয় (আমাদের চেনা বাস্তবতায়)। সুতরাং একটা শুরু আছে...আরেকটা উদাহরণ দেই, আপনাকে যদি বলি ১০ থেকে শুরু করে ৯৯ পর্যন্ত আসেন, আপনি গুণতে পারবেন, কিন্তু যদি বলা হয়, অসীম থেকে শুরু করে ৯৯ পর্যন্ত গুনেন, It’s impossible ….. আপনি শুরুই করতে পারবেন না এবং ৯৯ তেও আসতে পারবেন না। ৯৯ তে আসতে হলে শুরু আপনাকে করতেই হবে। সুতরাং মহাবিশ্বের শুরু আছে, এবং সে নিজে নিজে তা শুরু করেনি।
Posted on: Fri, 09 Jan 2015 03:18:07 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015