হামাসের কার্যকলাপ ও - TopicsExpress



          

হামাসের কার্যকলাপ ও তাদের সফলতা নিয়ে একটা দীর্ঘ পোস্ট লেখার ইচ্ছা ছিলো। কিন্তু এক ভাই অত্যন্ত সুন্দরভাবে হামাস সম্পর্কে বিস্তারিত লিখেছে। আমার আর কষ্টটা করতে হয়নি। সবার জ্ঞাতার্থে লেখাটা এখানে কপি করে দিচ্ছি-------- বিশ্বজুড়ে ইসলামী আন্দোলন – হামাস ও ফিলিস্তিন Shyikh Mahdi পবিত্র আল আকসা মসজিদের পূন্যভূমি এবং অসংখ্য নবী-রাসূলগণের স্মৃতিবিজড়িত জেরুসালেম ও ফিলিস্তিনের দখলদারী জায়নবাদী ইসরাইলী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নিরন্তর সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়া এক চেতনার নাম “হামাস”। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্র ও আগ্রাসনের মুখে নিজেদের আন্দোলনকে সমুন্নত রেখে নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সমগ্র পৃথিবীর মুক্তিকামী মানুষের মাঝে আলোড়ন তুলেছে এই ইসলামী আন্দোলন। হামাস শব্দটির অর্থ আশা, বা উদ্দীপনা। এটি মূলত حركة المقاومة الاسلامية হারাকাত আল-মুকাওয়ামা আল-ইসলামিয়া, “ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন” এর একটি আদ্যক্ষর। ইজ্জদ্দীন আল কাসাম নামে হামাসের একটি সামরিক শাখাও রয়েছে। দীর্ঘ সংগ্রামের পর জানুয়ারী ২০০৬ সালে ফিলিস্তিনি সংসদীয় নির্বাচনে বিস্ময়করভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পায় হামাস। ফিলিস্তিনের মোট ১৩২টি আসনের মধ্যে ৭৪টি আসনে জয়লাভ করে ইসমাইল হানিয়া’র নেতৃত্বে সরকার গঠন করে দলটি। তবে ইসরায়েলের প্রত্যক্ষ মদদে মাহমুদ আব্বাসের ফাতাহ পার্টির সাথে রক্তক্ষয়ী এক সংঘর্ষের পর থেকে (জুন, ২০০৭) হামাস ফিলিস্তিন অঞ্চলের গাজা ভূখন্ড পরিচালনা করছে। সেই ব্যাটল অফ গাজার পর থেকেই গাজা ভূখন্ডের উপর আরোপিত হয় অবরোধ ও নিষেধাজ্ঞা। ১৯৬৭ সালের আরব ইসরাইল যুদ্ধের পর আরব বিশ্ব, ইসরাইল এবং ফিলিস্তিনের মজলুমের মানুষদের মধ্যে একটি স্পষ্ট সীমারেখা নির্দিষ্ট হয়ে যায়। গাজা এবং পশ্চিম তীরে ইসলামি এই প্রতিরোধ আন্দোলন এর প্রকাশ্য আত্মপ্রকাশ ঘটে ১৯৮৭ সালে, প্রথম ইন্তিফাদা’র মাধ্যমে। হামাস এর প্রতিষ্ঠাতা হলেন শেখ আহমেদ ইয়াসিন, যিনি মূলত ছিলেন তৎকালীন ইখওয়ানুল মুসলিমীনের ফিলিস্তিন শাখার নেতা। ইয়াসিন ছিলেন পঙ্গু কিন্তু তবুও যুবক বয়স থেকেই তিনি ছিলেন গাজার নেতা। ১৯৭৮ সালে ৪৯ বছর বয়সী শেখ আহমেদ ইয়াসিন ফিলিস্তিনিদের সাহায্যের জন্য আল মুজাম্মা আল ইসলামি নামে একটি ইসলামি সংগঠন গড়ে তুলতে অধিকৃত ইসরায়েলী কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন৷ ইসরায়েল তা মন্জুর করে, কেননা তাদের লক্ষ্য ছিল গাজায় ফিলিস্তিনি মুক্তি সংস্থা পিএলও এর একক প্রতিনিধিত্বের গুরুত্ব হ্রাস করা। কিন্তু সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায় তাই ১৯৮৭ সালে হামাস দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণ করে এবং বিদ্রোহ ঘোষণা করে। ১৯৮৮ সালে গৃহীত হয় “হামাস চার্টার” যার লক্ষ্য হলো অধিকৃত ফিলিস্তিন থেকে দখলদারিত্বের অবসান ঘটানো। সংগঠন সংগঠন হিসেবে হামাস মূলত তিনটি শাখার সমষ্টি ~ রাজনৈতিক শাখা, সমাজকল্যাণমূলক শাখা এবং সামরিক শাখা। মজলিশে শূরা হামাসের প্রতিনিধিদের মিলনস্থল, যার মাধ্যমে হামাস সমগ্র ফিলিস্তিনে তার কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। তবে হামাসের নীতিনির্ধারণী পরিষদ হলো পনেরো সদস্যের “পলিটিক্যাল ব্যুরো”। বর্তমানে হামাসের প্রধাণ হলেন খালেদ মিশাল; আর গাজা অঞ্চলে প্রধাণমন্ত্রী হিসেবে রয়েছেন ডঃ ইসমাইল হানিয়া। ২০০৪ সালে পিএলও নেতা ইয়াসির আরাফাতের মৃত্যুর পর হামাস ও ফাতাহ’র মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয় এবং সেটা চরম আকার ধারণ করে ২০০৬ এর নির্বাচনের পর। ২০০৬ সালের জানুয়ারী মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে হামাস বিশালভাবে জয়লাভ করে অতি অপ্রত্যাশিতভাবে। শোচনীয়ভাবে পরাজিত করে তার চির প্রতিদ্বন্দ্বী ফাতাহ গোষ্ঠীকে। প্রথমবারের মত নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে জয়লাভ করার দুই মাস পরে মন্ত্রীসভা গঠন করে ইসমাইল হানিয়ার নেতৃত্বে। কিছুদিনের মধ্যেই ফাতাহ এর সঙ্গে উত্তেজনা চরমে উঠে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ইসরায়েলের কূটনৈতিক এবং অর্থনৈতিক বয়কটের কারণে। হামাস এর নেতৃত্বাধীন এই সরকারকে পশ্চিম কখনও স্বীকৃতি দেয় নি। প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এর ফাতাহ গোষ্ঠীর সঙ্গে হামাসের উত্তেজনা এক পর্যায়ে এমন অবস্থায় পৌঁছে যে, শেষ পর্যন্ত হানিয়া পদত্যাগে বাধ্য হন৷ এই পরিস্থিতিতে ২০০৭ সালের পনেরোই জুন হামাস গাজা এর নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে ফাতাহ সমর্থকদের বিতাড়িত করে। এর তিন মাস পর ইসরায়েল গাজা ভূ-খন্ডকে হিংসাত্মক এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে৷ শুরু হয়ে যায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সংঘর্ষ। এক সময় দুই পক্ষের মাঝে অস্ত্র-বিরতি ঘটে৷ কিন্তু তার মেয়াদ শেষ হওয়ার সাথে সাথেই আবারো ইসরায়েলও হামাস এর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়৷ যার পরিণতিতে গাজায় চলছে বর্তমানে সর্বাত্মক যুদ্ধ৷। তবে ২০০৭ সালে হামাস ফাতাহ সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীকে পরাজিত করে গাজার দখল নিয়ে নেবার পর থেকে গাজা শাসন করছে হামাস। সামাজিক কর্মকাণ্ড মাত্র ৩৬০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এক চিলতে এলাকা গাজার জনসংখ্যা প্রায় আঠারো লক্ষ, যেখানে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে প্রায় ৫০০০ মানুষ বাস করে। (আমাদের ঢাকা শহরের আয়তনও কিন্তু ৩৬০ বর্গকিলোমিটার !) মিশরের সাথে ১১ কিঃমিঃ, ইসরায়েলের সাথে ৫২ কিঃমিঃ সীমানা আর সামনে রয়েছে অবারিত ভূমধ্যসাগর, যেটিও ইসরায়েলী নৌবাহিনী দ্বারা অবরুদ্ধ। এছাড়া, গাজার প্রায় ১৮ লক্ষ মানুষের মধ্যে প্রায় ১০ লক্ষ মানুষই জাতিসংঘের তালিকাভুক্ত উদ্বাস্তু। এমন একটি ভূখন্ডে প্রায় আট বছরব্যাপী অবরোধের মধ্যে থেকেও সরকার পরিচালনা করছে হামাস। ঘর ভাঙ্গা অসহায় এইসকল মানুষের পাশে দাঁড়ায় হামাস। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ইসরায়েলী বিমান হামলা কোন ঘর বিদ্ধস্ত হলে ১৫ মিনিটের মধ্যেই সরকারী সেবাদানকারী মানুষেরা (উদ্ধারকর্মী, অ্যাম্বুলেন্স এবং পুলিশ) চলে আসেন তাদের সাহায্যার্থে। পশ্চিম দেশগুলো ফিলিস্তিনি ইসলামি আন্দোলনকে গণ্য করে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে। পশ্চিমা শক্তিগুলো দাবি করে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিতে হবে হামাসকে এবং অতীতের কয়েকটি শান্তি চুক্তি মেনে নিতে হবে। স্বভাবতই হামাস তা প্রত্যাখ্যান করেছে। তবে, হামাস গোষ্ঠীর প্রতি রয়েছে ফিলিস্তিনিদের ব্যাপক সমর্থন, কারণ হামাস কট্রর ইসরায়েল বিরোধী এবং একই সঙ্গে জনহিতকর ও সামাজিক কর্মসূচির জন্যও হামাস ফিলিস্তিনিদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। ইসরায়েলি বিশেষজ্ঞদের গবেষণায় উঠে এসেছে, হামাসের কার্যক্রমের ৯০% হলো সামাজিক, শিক্ষা বিস্তার, সংস্কৃতি ও জনকল্যাণমূলক কাজ, এবং এই সামাজিক কাজের মধ্যে দাতব্য চিকিৎসা, মসজিদ স্থাপন, স্কুল ও শিশুশিক্ষা অর্থায়ন, খেলাধূলার জন্য ক্লাব প্রতিষ্ঠা অন্যতম। শত অবরোধের মধ্যেও বার্ষিক ৭০-৯০ মিলিয়ন ডলারের একটি বাজেট দিতে সক্ষম হয় হামাস, যার প্রায় ৮৫% অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয় সামাজিক ও জনকল্যাণমূলক কাজে। প্রতিরক্ষা এবং সামরিক খাতে বরাদ্দ যায় মাত্র ১৫% (রেফারেন্সঃ কিংডম অফ গড (২০০৭), লেখক রুভন পাস)। সুড়ঙ্গগুলোই গাজার লাইফ লাইনঃ বহির্বিশ্ব থেকে হামাসের জন্য খাদ্য-অর্থ-ঔষধ সহ নানারকমের নিত্যপ্র্যোজনীয় জিনিস আসে এইসব সুড়ংগ দিয়ে। এছাড়া ইসরাইলী আগ্রাসনে শহীদ হওয়া ফিলিস্তিনীদের পরিবারের ভরণ পোষণের জন্য এককালীন ও নিয়মিত অর্থ সাহায্য দিয়ে থাকে হামাস (যার পরিমান ৫০০ থেকে ৫০০০ ডলার হয়ে থাকে)। এছাড়া ধ্বংস হয়ে যাওয়া বাড়ি ঘর, স্কুল বা মসজিদ পুনঃনির্মাণে সহায়তা দিয়ে থাকে হামাস। যদিও হামাস মূলত একটি ইসলামী আন্দোলন হিসেবে কাজ করে, কিন্তু জোরপূর্বক কাউকে ইসলামী অনুশাসন মানতে বাধ্য করবার কোন নজির এখানে নেই। হামাস সরকারের দাওয়াহ মন্ত্রনালয়ের অধীনে ‘ফাদিলা’ বা ‘Virtue Committee’ নামে কিছু নাগরিক কমিটি আছে, যারা বিভিন্নভাবে জনসাধারণকে ইসলামী অনুশাসন মেনে চলতে আহবান জানায়, অনুরোধ করে। কিন্তু স্কুলছাত্রীদের জোর করে হিজাব পরানোর একটি উদ্যোগ হামাস সরকারের শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের তৎপরতায় বন্ধ করা হয়। এছাড়াও জোর করে নিজেদের এলাকায় আঞ্চলিকভাবে শরীয়াহ আইন কায়েম করার প্রচেষ্টাকেও নস্যাৎ করে দেয় হামাস। (রেফারেন্স) শিক্ষাঃ টানা আট বছর অবরোধ এবং নানা ঝড়ঝাপটা সহ্য করেও গাজা উপত্যকায় শিক্ষার আলো জ্বালিয়ে রেখেছে হামাস। ২০১২ সালের হিসাব মতে, গাজা উপত্যকায় শিক্ষার হার প্রায় ৯৯%। সেখানে পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এছাড়া প্রায় চার লক্ষাধিক ছাত্রছাত্রীর জন্য ৬৮৩ টি স্কুল রয়েছে যার মধ্যে ৩৮৩ টি স্কুল সরকার অর্থাৎ হামাস পরিচালনা করে। স্বাস্থ্য সেবাঃ স্বাস্থ্যসেবায় হামাস নিজেকে নিয়ে গিয়েছে এক অনন্য অবস্থানে। অব্যাহত অবরোধে থাকবার কারণে খাদ্যের মান কমে যাওয়ায় গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের মধ্যে শৈশবকালীন অপুষ্টির হার মারাত্নক হারে বেশি। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে ইসরায়েলী আগ্রাসনে আহত মানুষজনের চিকিৎসা প্রয়োজন তো রয়েছেই। হামাস পরিচালিত হাসপাতালে কম খরচে বা বিনা খরচে সুচিকিৎসা দেয়া হয়। মৃত্যু উপত্যকা গাজায় বর্তমান জন্মহার প্রায় ৪%। এছাড়াও শিশুদের জন্য অসংখ্য নার্সারি, কিন্ডারগার্টেন স্কুল বা মক্তব প্রতিষ্ঠা করেছে হামাস যার মাধ্যমে তাদের এক বেলা খাবারও সরবরাহ করা হয়। বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা বা দাতা দেশ থেকে আসা সাহায্য ও আর্থিক অনুদান ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও যথেষ্ট দক্ষতা ও স্বচ্ছতার পরিচয় দিয়েছে হামাস; অপরপক্ষে ফাতাহ গোষ্ঠী এই দিকে আকন্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জ। হামাসের এই সামাজিক কার্যক্রমের জনপ্রয়তা শুধু গাজা স্ট্রিপেই নয়, বরং ফাতাহ শাসিত পশ্চিম তীর এমনকি আশেপাশের অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোতেও অনেক বেশি জনপ্রিয়। মিডিয়াঃ ২০০৬ সাল থেকে হামাস চালু করেছে স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল ‘আল আকসা টিভি’। হামাসের মিডিয়া গুরু ফাতহি হাম্মাদের মিডিয়া হাউজ ‘আর-রিবাত কমিউনিকেশন্স’ এর নেতৃত্বে আরও রয়েছে নিজস্ব রেডিও স্টেশন ‘ভয়েস অফ আল আকসা’ এবং সংবাদ পত্রিকা ‘দ্য মেসেজ’। অনলাইন জগতে টুইটার এবং ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক গণমাধ্যমগুলোতে রয়েছে হামাসের সরব উপস্থিতি। এছাড়া লন্ডন থেকে আল ফাতিহ নামে শিশু-কিশোরদের জন্যেও একটি পাক্ষিক পত্রিকা নিয়মিত বের করা হয়। সামরিক শাখাঃ সম্ভবত হামাসকে সবচেয়ে বেশি বিতর্কিত করা হয় তার সামরিক শাখা ইজ্জদ্দিন আল ক্কাসাম ব্রিগেডের কার্যকলাপের মাধ্যমে, যাকে সংক্ষেপে আল ক্কাসাম ব্রিগেড বলা হয়। এটি ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়, এবং তখন থেকেই ইসরায়েলকে সামরিকভাবে তটস্থ করে রেখেছে তারা। সীমিত সাধ্যের মধ্যেও লিমিটেড টেকনোলজী আর অর্থায়নে ক্কাসাম রকেট দিয়েই ইসরায়েলি বিলিয়ন ডলার ব্যয়ের আয়রন ডোম অ্যান্টিমিসাইল সিস্টেমকে চ্যালেঞ্জ করেছে। ইসরায়েলের প্যাট্রিয়ট মিসাইল এবং এফ-১৬ এর মোকাবেলায় ক্কাসাম ব্রিগেডের ব্যবহার করা অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে স্বল্প মাত্রার আল বানা, আল বাতার এবং আল ইয়াসিন রকেট, এছাড়াও ট্যাংক বিধ্বংসী গোলাসহ কিছু হালকা যুদ্ধাস্ত্র। সম্প্রতি ভূমধ্যসাগরের তলদেশ দিয়ে ইসরায়েলে পৌছে এক দুঃসাহসিক কমান্ডো অভিযানের চেষ্টা চালায় হামাস যোদ্ধারা। ইরানের পর মুসলিম দেশ হিসেবে সাফল্যজনকভাবে ড্রোন তৈরি করতেও সক্ষম হয়েছে হামাস, যা তেলাবিবের আকাশ পর্যন্ত পৌছে গিয়েছে। তবে হামাস যোদ্ধারা গ্রাউন্ড কমব্যাটে যথেষ্ট প্রশিক্ষিত। প্রবাসী হামাস নেতা খালিদ মিশালকে হত্যার একাধিক প্রচেষ্টা চালিয়েছিলো ইসরায়েলী গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ এবং সিনবেথ, তবে হামাসের অপারেটিভদের সাহস এবং দৃঢ়তায় তারা সফল হতে পারে নি। তবে যাই হোক না কেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ মদদপুষ্ট ইসরায়েলের সামরিক শক্তির তুলনায় এর মাত্রা আসলে কতটুকু? ২০০১ সাল থেকে ২০১০ পর্যন্ত হামাসের ছোড়া রকেট হামলায় ১০ বছরে মারা গিয়েছেন মোট ১৫ জন ইসরাইলী নাগরিক। এরপরে ২০১০ সালে হামাস বেসামরিক মানুষজনের ওপর রকেট হামলার জন্য প্রকাশ্যে দুঃখ প্রকাশও করেছে। (রেফারেন্স)। এরপরেও এই ‘নির্বিচার’ রকেট হামলার ঘটনাকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করেছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা। মুদ্রার অপর পিঠ সবারই জানা, তবুও স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, শুধু তিন জন ইসরায়েলী যুবককে হত্যার ‘সন্দেহে’ গত কয়েকদিন ধরা চলা অপারেশন প্রোটেক্টিভ এজ এর মারণযজ্ঞে নিহত হয়েছেন প্রায় ২২০ জন ফিলিস্তিনী মানুষ, যা মধ্যে চার দিন বয়সী শিশুও রয়েছে। দ্বীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সীমাহীন আত্নত্যাগ, সততা – দক্ষতা ও নিপীড়িত মানুষের মধ্যে থেকে তাদের পাশে দাড়ানোর পাশাপাশি তাদের জন্য আমরণ লড়াইয়ের অদম্য মানসিকতাই হামাসকে দাঁড় করিয়েছে এক অনন্য অবস্থানে; শুধু ফিলিস্তিনীদের হৃদয়ে নয় বরং সারা বিশ্বের মজলুম সংগ্রামী মানুষের মধ্যে। সাম্প্রতিক একটি জনমত জরিপে দেখা গেছে, ৫২% ফিলিস্তিনী মানুষ তাদের সমর্থন জানিয়েছে হামাসের পক্ষে, অপরদিকে ফাতাহ’র জনসমর্থন মাত্র ১৩%। ছাড়া PEW এর একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, জর্ডানের প্রায় ৬০% মুসলিম এবং লেবানন ও মিসরের প্রায় ৫০% মানুষ হামাসের প্রতি তাদের সমর্থন ব্যক্ত করেছে। (রেফারেন্স) তাহলে…………………… জঙ্গী না স্বাধীনতাকামী যোদ্ধা, কি নামে ডাকবেন তাদের ??? সিদ্ধান্ত আপনার।
Posted on: Mon, 21 Jul 2014 07:57:50 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015