হুমায়ুন আহমেদের - TopicsExpress



          

হুমায়ুন আহমেদের জন্মদিনে যেভাবে একদল লোক সমালোচনার ঝাঁপি মেলে দিয়েছেন তাতে বোঝা যায় হুমায়ুন কলম হাতে নিয়ে বিশাল একটা পাপ করেছেন। মনে হয় কোনদিন না এরা আবার জেনারেশনকে উচ্ছন্নে নেবার জন্য হুমায়ুনের মরণোত্তর ফাঁসি চেয়ে বসেন। যারা সরাসরি আক্রমণ করতে পারছেন না তারাও ইনিয়ে বিনিয়ে খোঁচা দিতে ছাড়ছেন না। একজন মৃত লেখকের উপর এমন সংঘবদ্ধ আক্রমণ আসলেই উল্লেখ করার মত। অনেকে বলবেন হুমায়ুনের লেখা একেবারে হালকা, সময়ের অপচয়, শিক্ষণীয় কিছু নাই, এই নাই, সেই নাই। ওকে, কথার খাতিরে ধরে নিলাম আসলেই নাই। একবিন্দুও নাই। ছোটবেলায় হাম্পটি ডাম্পটি, টুইঙ্কল টুইঙ্কল লিটল স্টারের মত ছড়া পড়তাম ওগুলোরও কিন্তু আপাতদৃষ্টিতে কোন উপযোগিতা নাই। ওগুলো এখনো ভুলতে পারিনা কেউ। আরেকটু বয়স হলে সবাই আলিফ লায়লা, সিনবাদ, রবিনহুড এগুলো দেখতাম। ওগুলো হয়ত টাকাকড়ি কামাতে কাজে লাগেনি, কোন রোগীর জীবনও বাঁচায়নি। কিন্তু তারপরও কেউ কি আছি যে ওগুলোর স্মৃতি মুছে ফেলতে চাইবো? ওইসব মূল্যহীন জিনিসও এখন আমাদের কাছে অমূল্য স্মৃতি। অস্কার ওয়াইল্ডের একটা কথা আছে, অল আর্ট ইজ টোটালি ইউজলেস। শিল্পকে যখন কেউ উপযোগীতা দিয়ে বিচার করতে যাবে তখন সে আর্টের অমূল্য দিকটা মিস করে যাবে। হুমায়ুনের বই পড়ে যে কিশোর কিশোরীরা একটা ঘোরলাগা আনন্দের মাঝে ডুবে ছিল ওই মূহুর্তের আনন্দগুলো আপনি কি দিয়ে পরিমাপ করবেন? কিছুদিন আগে বিশ্বের সেরা তরুণ ১০০ উদ্যোক্তাদের একজন সাবিরুল ইসলামের স্পিচ শুনতে গিয়েছিলাম। ওখানে সে একটা প্রশ্ন করে, সব তরুণকে কেন ডাক্তারই হতে হবে? আমার এখন প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করে, সবাইকে কেন তারাশঙ্কর, মানিক, রবীন্দ্র, আজাদের মত হতে হবে? সমস্যাটা কোথায় জানেন? সমস্যা হল ১.আমরা অধিকাংশ বাঙ্গালিরা অন্যের অধিকারে নাক গলানোর অভ্যাস ছাড়তে পারিনা। সেটা আমরা যে মতাদর্শেরই হই না কেন, আর যতই আধুনিক হইনা কেন। তাই হুমায়ুন হাতে কলম তুলে নিয়ে বিশাল অপরাধী। ২. আমরা সবাইকে ডাক্তার বানাতে চাই। আর লেখক হলে সবাইকে হুমায়ুন আজাদ, তারাশঙ্কর, মানিক বানাতে চাই। ঐতিহ্যগত সমস্যা। এটা থেকে বেরুনো কঠিন। ওকে ভাই, ধরে নিলাম হুমায়ুনের বই পড়ে যেসব বাচ্চাকাচ্চারা সময় কাটিয়েছে তাঁরা নাহয় সবাই দুনিয়া উদ্ধার করে ফেলেনি। তাঁদের অনেকে সাধারণ অতি সাধারণ রয়ে গেছে। আচ্ছা ভাই, যারা হুমায়ুনের বদলে তারাশঙ্কর, মানিক, রবীন্দ্র, আজাদ যারা পড়েছেন তারাও সবাই কি এমন দুনিয়াটা উদ্ধার করে ফেলেছেন? হুমায়ুন আহমেদ বইয়ের দোকান থেকে মানিক তারাশঙ্করকে সরিয়ে দিয়েছেন তাই হুমায়ুন দোষী? না। ব্যাপারটা এমন নয়। মানিক তারাশঙ্কর ২০০০ সালে এসে বাজার হারিয়েছেন। বেশি দিন বাকি নেই, পঞ্চাশ বছর পর রবীন্দ্রনাথের লেখাও দুর্বোধ্য ঠেকবে। তাঁর বাজারও আরো কমবে। একসময় হুমায়ুনও হারাবেন। এটাই বাস্তবতা। কিন্তু হুমায়ুন তাই বলে আপনার আমার মত বোকা নন, তিনি বলেই গেছেন তিনি লিখেন এই সময়ের জন্য। সব সময় টিকে থাকবে এমন কিছু লিখা তাঁর উদ্দেশ্য না। সেটা কি কেউ পেরেছে কখনো? আমি হুমায়ুনের বিশেষ কোন ভক্ত নই। তাঁর অনেক বই ভালো লাগেনি। কিন্তু তাই বলে হুমায়ুন আমার দৃষ্টিতে কোন অপরাধী নয়, তাঁর পাঠক মাত্রই আজাইরা ফালতু ছেলে-মেয়ে নয়। ঈর্ষাপ্রসুত দুর্গন্ধ না ছড়ালে ভালো হয়। এসবে মৃত ব্যক্তির কিছু যায় আসেনা। আপনারা তাঁর টিকিটিরও নাগাল পাবেন না। তবে সমস্যা না। সমালোচনা, ঈর্ষা এগুলো আসলে হুমায়ুনের প্রভাবকেই স্বীকার করে নেয়া।
Posted on: Wed, 13 Nov 2013 13:26:23 +0000

Trending Topics



ss="sttext" style="margin-left:0px; min-height:30px;"> Hey everyone! I am sick and tired of freelancing and Im looking
NASA Fail Compilation: https://youtube/watch?v=msY3xc8pVLE NASA
“To forgive is to set a prisoner free and discover that the

Recently Viewed Topics




© 2015