১৫০০০ কোটি টাকার - TopicsExpress



          

১৫০০০ কোটি টাকার অস্ত্র-সরঞ্জাম ক্রয়’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের ব্যাপারে ২ সেপ্টেম্বর একটি বক্তব্য পাঠিয়েছে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ। বক্তব্যটি হুবহু ছাপা হলো। এতে বলা হয়, সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়ন একটি চলমান প্রক্রিয়া। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদেশে ১৯৭৪ সালে প্রণীত প্রতিরক্ষা নির্দেশনার আলোকে সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়ন ও সামরিক সরঞ্জামাদি ক্রয়ের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকারের সময় ফোর্সেস গোল ২০৩০ প্রণয়ন করা হয়, যা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়নের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে সশস্ত্র বাহিনীর সাংগঠনিক ঘাটতি পূরণ ও কাঙ্ক্ষিত সামর্থ্য অর্জনের লক্ষ্যে বরাদ্দকৃত বাজেট হতে প্রতিবছর পর্যায়ক্রমে অস্ত্র ও সরঞ্জামাদি ক্রয় করা হয়েছে, যা বর্তমান সরকারের সঠিক সিদ্ধান্ত ও দিকনির্দেশনার প্রতিফলন। সেনাবাহিনীতে ব্যবহূত অতি পুরাতন মান্ধাতা আমলের অস্ত্র ও সরঞ্জামাদি আধুনিক অস্ত্র ও সরঞ্জাম দ্বারা প্রতিস্থাপন করার যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, যেমন সেকেলে ট্যাঙ্কবিধ্বংসী Recoilles Rifle (RR) এবং রকেট লঞ্চার (RL) প্রতিস্থাপন করে উন্নত প্রযুক্তির Anti Tank Guided Weapon-Short Range (ATGW-SR) এবং Anti Tank Weapon (ATW) সেনাবাহিনীতে সংযোজনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এ ছাড়া সাঁজোয়া বহরের আধুনিকায়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৪র্থ প্রজন্মের ট্যাঙ্ক (MBT-2000) এবং আর্টিলারি বহরের জন্য স্বচালিত (Self Propelled) গান সংযোজনের প্রক্রিয়া চলমান। অনুরূপভাবে শত্রুর অবস্থান, শত্রু বিমান ও অস্ত্র নিরূপণ এবং চিহ্নিতকরণের লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের র্যাডার সংযোজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একইভাবে বিমানবাহিনীর বহরে ব্যবহূত সেকেলে এবং অকেজো জেট ট্রেইনার ও বিমানসমূহ পর্যায়ক্রমে প্রতিস্থাপন এবং যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে নতুনভাবে আধুনিক বিমান সংযোজনের পদক্ষেপ গৃহীত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় কার্যকরী প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা অর্জনের লক্ষ্যে বিমানবাহিনীতে ১৬টি নতুন Supersonic এফ-৭ বিজি১ যুদ্ধবিমান সংযোজন করা হয়েছে। এই সরঞ্জামাদি সংগ্রহ ও সংযোজনের মাধ্যমে বাহিনীসমূহের সামর্থ্য/ সক্ষমতা বহিঃশত্রুর মোকাবিলায় সময়োপযোগী হবে বলে প্রতীয়মান। এখানে আরও উল্লেখ্য যে, বিশ্বব্যাংকের তথ্য মোতাবেক জিডিপির শতকরা হারের বিবেচনায় বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বাজেটের শতকরা হার প্রতিবেশী অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম। বহিঃশক্তির হাত থেকে দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা রক্ষা, অভ্যন্তরীণ অরাষ্ট্রীয় অপশক্তির মোকাবিলা এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি রক্ষাকরণে বর্ণিত সরঞ্জামাদি ক্রয় একটি অপরিহার্য ও স্বাভাবিক ঘটনা। প্রথম আলো পত্রিকায় সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর ক্রয়-সংক্রান্ত যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, তার আর্থিক পরিমাণ এবং বর্ণিত সরঞ্জামাদির নাম ও পরিমাণ অনেক ক্ষেত্রেই সঠিক নয়। ‘সামরিক খাতের কেনাকাটা নিয়ে কোনো তথ্য জনগণের কাছে প্রকাশ করা হয় না’ মর্মে পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপনের সময় অন্যান্য খাতের বরাদ্দের সাথে প্রতিরক্ষা খাতের বরাদ্দও জনগণের জ্ঞাতার্থে পেশ করা হয়ে থাকে। সশস্ত্র বাহিনীতে সংযোজিত অস্ত্র ও সরঞ্জামাদি প্রতিবছর সামরিক প্রদর্শনী ও জাতীয় প্যারেডে জনসম্মুখে প্রদর্শন করা হয়। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সামরিক সরঞ্জামাদি ক্রয় সুস্পষ্ট ক্রয় নীতিমালার আলোকে পরিচালিত হয়। এই ক্রয়ের পদ্ধতি অন্যান্য যেকোনো সংস্থার ক্রয় পদ্ধতির চেয়ে অধিকতর স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিমূলক। এসব ক্রয়ে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, বাহিনী সদর, ডিজিডিপি, পরিদর্শনালয়সমূহ ছাড়াও অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিয়োগকৃত সিজিডিএফ এবং বাহিনীসমূহের অর্থ নিয়ন্ত্রক ইত্যাদি প্রান্তে যথেষ্ট পরীক্ষা- নিরীক্ষা, যাচাই-বাছাই এবং পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয় বলে কোনোরূপ সন্দেহের কিংবা অস্বচ্ছতার অবকাশ নেই। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ২৫ অনুচ্ছেদে আন্তর্জাতিক শান্তি, নিরাপত্তা ও সংহতির উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকারের অবদান-সংক্রান্ত রূপরেখা ও নির্দেশনা রয়েছে। তারই আলোকে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী জাতিসংঘের অনুরোধে বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রে শান্তিরক্ষা বাহিনী প্রেরণ করে থাকে। জাতিসংঘ মিশনে বর্তমানে অংশগ্রহণকারী দেশসমূহের মধ্যে বাংলাদেশের নিয়োগকৃত জনবল সর্বোচ্চ। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীতে নিয়োগকারী সময়ে অনুযায়ী সামরিক সরঞ্জামাদিও সরবরাহ করার দায়িত্ব সৈন্য প্রেরণকারী দেশের। ক্রয়কৃত সামরিক সরঞ্জামাদির সিংহভাগ যেমন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জন্য এপিসি, লাইট আরমার্ড ভেহিক্যাল, বিভিন্ন ক্যালিবারের অস্ত্র ও গোলাবারুদ; নৌবাহিনীর জন্য ফ্রিগেট, মিসাইল, পেট্রোল ক্রাফটসহ আনুষঙ্গিক যুদ্ধ সরঞ্জামাদি এবং বিমানবাহিনীর জন্য পরিবহন বিমান ও হেলিকপ্টারসহ আনুষঙ্গিক যুদ্ধ সরঞ্জামাদি এবং উল্লেখযোগ্য পরিমাণ যানবাহন ও যন্ত্রাদি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে মোতায়েন আছে। জাতিসংঘে মোতায়েনকৃত বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সরঞ্জামাদির বিপরীতে গত ২০০৯ সাল হতে জুন ২০১৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘ থেকে প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা প্রাপ্ত হয়েছে। জাতিসংঘ হতে প্রাপ্ত এই অর্থ জাতীয় অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। সামগ্রিকভাবে দেখা যায় যে, সশস্ত্র বাহিনীর সরঞ্জামাদি ক্রয়ের জন্য যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়, তার উল্লেখযোগ্য অংশ জাতিসংঘ থেকে মোতায়েনকৃত সরঞ্জামাদির অনুকূলে ভাড়া হিসেবে সরকারি কোষাগারে ফ আসে। অর্থনৈতিক অর্জন ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শান্তিরক্ষা বাহিনী মোতায়েনের ফলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। বহিঃশত্রুর হাত থেকে দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা রক্ষা ছাড়াও বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, দুর্যোগ মোকাবিলা, ত্রাণ সরবরাহসহ বেসামরিক প্রশাসনকে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা প্রদান করে থাকে। এ গুরুদায়িত্ব পালনের জন্য সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন সরঞ্জামাদি যেমন, হেলিকপ্টার, পরিবহন বিমান, সরবরাহকারী জাহাজ, পেট্রোল বোট, ভাসমান সেতু, পানি শোধনকারী প্লান্ট, যানবাহন ইত্যাদি ব্যাপকভাবে ব্যবহূত হয়ে থাকে। সম্প্রতি মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তি হওয়ায় বাংলাদেশ বিশাল সমুদ্রসীমার মালিকানা প্রাপ্ত হয়েছে। আগামী ২০১৪ সাল নাগাদ ভারতের সঙ্গেও সমুদ্র সীমানা বিরোধ নিষ্পত্তির সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমান বাস্তবতায় বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার সম্পদ রক্ষা, চোরাচালান প্রতিরোধে সমুদ্র এলাকার ওপর সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ একটি দুরূহ ব্যাপার। সমুদ্র সম্পদ রক্ষায় এবং চোরাচালান প্রতিরোধে নৌবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যেই নৌবাহিনী আধুনিকায়নের প্রক্রিয়া চলমান রাখা এখন অপরিহার্য। এরই ধারাবাহিকতায় নৌবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিগত সাড়ে চার বছরে নৌবাহিনীতে হেলিকপ্টার, মেরিটাইম পেট্রোল এয়ার ক্রাফট, ফ্রিগেট, অফসোর সার্ভে জাহাজ এবং পেট্রোল ভেসেল সংযোজন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, একই সঙ্গে অতি পুরাতন ও মান্ধাতা আমলের জাহাজসমূহ নৌবহরে ব্যবহার অনুপযোগী (ডি-কমিশন) করা হয়েছে। এসব পুরাতন জাহাজের প্রতিস্থাপনের অংশ হিসেবে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ড থেকে একটি অত্যাধুনিক Cutter (ফ্রিগেট) সংগ্রহ করা হয়েছে, যার শুধুমাত্র কিছু মিলিটারি ইকুইপমেন্ট ও ট্রেনিংয়ের জন্য নামমাত্র মূল্য পরিশোধের মাধ্যমে উক্ত জাহাজটি আগামী নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বহরে যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া দেশীয় প্রযুক্তির উৎকর্ষতা, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং সর্বোপরি মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের লক্ষ্যে দেশীয় শিপইয়ার্ডে যুদ্ধজাহাজ তৈরি করে নৌবাহিনী দেশকে স্বনির্ভরতার পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। নৌবাহিনীতে সাবমেরিন সংযোজন বর্তমান সরকারের একটি প্রতিশ্রুতি এবং সে লক্ষ্যে সাবমেরিন সংগ্রহের প্রচেষ্টা চলছে। তবে প্রতিবেদনে প্রকাশিত দুটি সাবমেরিনের মূল্য ১০০ কোটি ডলার, যা সম্পূর্ণভাবে কল্পনাপ্রসূত এবং বাস্তবতা বিবর্জিত। সম্প্রতি রাশিয়ার সঙ্গে স্টেট ক্রেডিট লোনের আওতায় যে চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে, তা সামগ্রিক প্রতিরক্ষা বাজেটের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত এবং লোনের অন্তর্ভুক্ত সামরিক সরঞ্জামাদির মূল্য ধাপে ধাপে বাৎসরিক প্রতিরক্ষা বাজেট হতে পরিশোধ করা হবে। উক্ত চুক্তি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের (প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়) যথোপযুক্ত মতামতের ভিত্তিতে সম্পন্ন করা হয়। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার প্রতীক। এই বাহিনী সম্পর্কে সংবাদপত্রে কোনো তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সকলকে আরও অধিক সংবেদনশীলতা ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে সংবাদ পরিবেশন করা উচিত। যে ধরনের সংবাদ পরিবেশনের ফলে দেশপ্রেমিক সশস্ত্র বাহিনী সম্পর্কে জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টিসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, তা প্রকাশ করার ক্ষেত্রে আরও যত্নশীল হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো। এই হল আমাদের army ar Abosta. :/ :/
Posted on: Wed, 04 Sep 2013 15:20:49 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015