অনার্স শেষ করে ঢাকায় - TopicsExpress



          

অনার্স শেষ করে ঢাকায় এসেছে সাদাফ উদ্দেশ্য আরো উচ্চ শিক্ষা অর্জন করবে। ঢাকায় সে তার আপুর বাসায় উঠেছে। ছোট একটা ভাগ্নেও আছে তাই মামা ভাগ্নের ভালোয় সময় কাটে। হটাৎ একদিন সে খেয়াল করলো তার আপুদের বাসার বিপরীত দিকের ব্যালকনিতে একটি মেয়ে দাড়িয়ে আছে। কালো ফ্রেমের চশমাতে মেয়েটাকে অনেক সুন্দর মানিয়েছে। তারপর থেকে মেয়েটাকে প্রায়ই দেখতো। আর দেখতে দেখতে যা হওয়ার তাই হলো মেয়েটাকে তার অনেক ভালো লেগে গেলো। কিন্তু মেয়েটা তাকে তেমন কোনো পাত্তা দিতোনা। সে যখনই বারান্দায় আসতো মেয়েটা তাকে দেখলে সাথে সাথে ব্যালকনির দরজা বন্ধ করে চলে যেতো। এতে সাদাফের প্রথম প্রথম খারাপ লাগলেও মেয়েটার প্রতি দুর্বলতার কারনে প্রায়ই বারান্দায় গিয়ে দাড়িয়ে থাকতো। একদিন বিকালে ছাদে উঠে সাদাফ দেখলো পাশের বাসার মেয়েটিও ছাদে উঠেছে। তখনি সে মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলো আজকে সে একটা এসপার-ওসপার করে ছাড়বে। তাই সে মেয়েটিকে তাদের ছাদ থেকে ডাকল এসকিউজ মি? জী বলুন। ( রাগত স্বরে) কেমন আছেন? ভালো। ইয়ে মানে আপনাকে আমার কিছু বলার ছিলো? যা বলার তাড়াতাড়ি বলুন। আসলে আপনাকে আমার খুব ভালো লাগে। তাই ........ কথাটা শেষ করার আগেই মেয়েটি চেঁচিয়ে উঠে বললো “ নিজের চেহারা দেখেছেন কখনো আয়নায়। কি নিয়ে আমাকে পছন্দ করেন? লজ্জা লাগেনা মেয়েদের এমন করে ডিস্টার্ব করতে। কালো হ্যাংলা গেঁয়ো ভূত একটা। সাদাফ কোনো কথা না বলে নিচের দিকে তাকিয়ে রইলো। তারপর মেয়েটির কথা শেষ হওয়ার পর কিছু না বলে ছাদের থেকে নেমে এলো। এরপর তার মনটা খুব খারাপ হয়ে রইলো। তাই রাতে তার রুমের লাইট বন্ধ করে তার গীটারটা নিয়ে গান গাইতে বসলো। সাদাফ অন্যতম বড় গুন হচ্ছে সে খুব ভালো গান গাইতে আর গীটার বাজাতে পারে। অনেক রাত পর্যন্ত সে গীটারের তালে তালে গান গাওয়ার সময় অভ্যাসমতো ব্যালকনির দিকে তাকিয়ে দেখলো পাশের বাসার চশমা পরা মেয়েটা তার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আর তন্ময় হয়ে তার গান শুনছে। সাদাফ বিকালে মেয়েটার কাছে অপমানিতো হওয়ার পর প্রতিজ্ঞা করেছিলো সে আর ঐ মেয়েটার দিকে তাকাবেনা। তাই সে তাড়াতাড়ি গান গাওয়া বন্ধ করে শুয়ে পড়লো। ইতিমধ্যে সাদাফ CA করার জন্য একটি ফার্ম এ Admission হয় এবং পরদিন থেকে সে ফার্মে আসা যাওয়া শুরু করে। এরপর থেকে মাঝে মাঝে রাতে ফার্ম থেকে আসতো দেখতো মেয়েটা ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আছে কিন্তু সাদাফ তখন তাড়াতাড়ি তার রুমের লাইট অফ করে দিতো। এভাবে তার দিন কেটে যেতো। একদিন শুক্রবার বিকালে সে ছাদে উঠে গুনগুন করে গান গাইতেছিলো। হটাৎ সে খেয়াল করলো মেয়েটি পাশের ছাদ থেকে তার দিকে তাকিয়ে আছে। মেয়েটিকে দেখে সাদাফ দ্রুত ছাদ থেকে নেমে যেতে চাইলো। কিন্তু মেয়েটি তাকে পিছন থেকে ডাক দিলো : এসকিউজ মি শুনছেন ? জী আমাকে বলছেন? যেহেতু ছাদে কাউকে দেখা যাচ্ছেনা তাই আপনাকেই বলছি। জী বলুন। আচ্ছা আপনি আমাকে দেখলে এমন করেন কেনো ? কেমন করি ? এইতো আমাকে দেখলে গান গাইতে বসলে গান বন্ধ করে দেন, বারান্দায় দেখলে বাসায় চলে যান। সব সময় আমাকে এড়িয়ে চলেন। আসলে আমি আপনাকে ডিস্টার্ব করতে চাইনা আর আমি এটাও চাইনা আপনি আমার এই কালো খ্যাঁত মার্কা চেহারা দেখে আপনার মন খারাপ করুন। সরি ঐ দিন মনটা ভালো ছিলোনা তাই আপনাকে যা তা বলেছি। প্লিজ কিছু মনে করবেননা। আচ্ছা আপনিতো অনেক সুন্দর গীটার বাজাতে আর ভালো গাইতে পারেন। বলতে পারেন আমিতো এখন আপনার পুরোপুরি ফ্যান হয়ে গেলাম। আচ্ছা আপনি কি করেন? জী আমি CA করছি। ওয়াও অনেক ভালো। আচ্ছা আমরা দুইজন কি বন্ধু হতে পারি? আসলে আমি কোথাও যেনো শুনেছিলাম একটা ছেলে আর মেয়ের ভিতরে কোনো বন্ধুত্ব হয়না হলে হতে পারে দুইজনের মধ্যে প্রেম বা ভালোবাসা। আর আপনার সাথে বন্ধুত্ব বা প্রেম করার কোনো ইচ্ছাই আমার নেই। ভালো থাকবেন। কথাটা বলে মেয়েটাকে কোনো কথার সুযোগ না দিয়ে সাদাফ হন হন করে চলে আসলো আর কেনো জানি নিজের এই স্বার্থপরের মতো আচরনের জন্য খুব খুশি হলো। ( সত্য ঘটনার অবলম্বনে) part 1 by Hp Farhad alam
Posted on: Wed, 24 Sep 2014 12:57:58 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015