অন্যরকম ভালবাসার সত্যি - TopicsExpress



          

অন্যরকম ভালবাসার সত্যি কথাঃ 2013 সাল । মাসটা ভুলেই গেছি । তারিখটাও । আজ এস.এস.সি পরীক্ষার রেজাল্ট । গতরাত থেকেই বুকটা দুরুদুরু করছে দিগন্তের (ছদ্মনাম) । দিগন্ত । ময়মনসিংহ জিলা স্কুলের ছাত্র । দুপুর 2 টা বাজে । ও স্কুলে গেল রেজাল্ট দেখতে । এ+ এর লিস্টে নিজের নামটা দেখে একটু যেন স্বস্তি পেল । বাবা মা কে জানালো সে ।বাবা মা ও একটু স্বস্তি পেল ওর । বিকাল 5 টা । মার্কশীট ভিউ করে দেখলো যে সামাজিক বিজ্ঞানের জন্য তথাকথিত গোল্ডেন ও পায় নি । বাবা মায়ের বকুনিতো আছেই তার ওপর আছে নিজের মানতে না পারা একটা ব্যাথা । । আজকে এস.এস.সি এর রেজাল্ট । বুকটা দুরু দুরু করছে জান্নাতের । জান্নাত ! ময়মনসিংহ বিদ্যাময়ীর ছাত্রী । দুপুর 2 টা । ও কলেজে গেল । এ+ এর লিস্টে নিজের নামটা দেখতে পেল না ও । রেজাল্টটা অনাকাঙ্খিত । বাবার খুব আদরের মেয়ে হবার জন্য ওকে কেও কিছু বলেনি । . ডিসেম্বর মাস 2013 । 2 তারিখ । ফেসবুকে দিগন্ত নিজের পুরাতন আইডিটা আর চালাবে না । নতুন একটা আইডি খুললো । নাম দিলো #Oggy পরিচিত বন্ধুদের এড করলে । একটা রিকোয়েস্ট চলে যায় #Tabassum_Jannat আইডি তে যথারীতি সবাই রাতেই রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করে । Oggy নক দেয় Jannat কে । - হাই আফু - জ্বী খালুজান । চলতে থাকে মজার মজার সব কথাবার্তা । ওরা খুব ভালো ফ্রেন্ড হয়ে ওঠে । প্রতিদিন 15/24 ঘন্টা কথা হয় ফেসবুকে । একদিন জান্নাতের আইডিতে প্রবলেম হলে দিগন্ত ওর মেইল দিয়ে জান্নাতকে আইডি খুলে দেয় আর ফোন নাম্বারটাও দেয় বাট জান্নাতের নাম্বারটা চায় না ও । 18 ডিসেম্বর 2013 আজ দিগন্তের বার্থ ডে ।প্রথম উইশটা জান্নাত করলো । দিনটা খুব ভাল গেল ওর । রাত এগারটা উনষাট মিনিটে শেষ উইশটাও করলো জান্নাত । তারপর 1 টার দিকে ঘুমিয়ে গেল ওরা 19 ডিসেম্বর 2013 দিগন্তের মোবাইলেঃ New text msg frm 018....... ওপেন করলো দিগন্তঃ I .....Love ..............U (Jannat) দিগন্ত কিছু বুঝতে পারলো না । ও কখনো জান্নাতকে দেখেও নি । ও রিপ্লে দিলঃ 1st site of attraction jannat. amar kotha aj vlo lagche bt kal lagbe na.take it easy জান্নাতের কাছ থেকে ও 7 দিনের টাইম চাইলো । চলতে থাকলো 7 দিন । এই দিনগুলোতে যেন দিগন্ত বুঝতে পারলো জান্নাত ওর জন্য অনেকট পাগল । 2 জানুয়ারি 2014 দিগন্ত আজ জান্নাতকে উত্তরটা জানাবে । জান্নাত ওকে বলেছে যে যত দিন যাবে ভালবাসা আরো বাড়বে,বাড়বে আর বাড়বে । দিগন্তঃ i love u jannat জান্নাত যেন খুশিতে আত্মহারা । আজ ও ওর ভালবাসাটাকে পেয়েছে । জান্নাতঃ Ami jodi dkhte valo na hoi? দিগন্তঃ Vlobshata moner. cheharar na jannat. ami tomar photo nibo na. Direct dkhbo. জান্নাতঃ love u . Dekha hobe agamikal bikal 4 tay english privet (gulkibari) er shamne 4 জানুয়ারি জান্নাতের বাবা সব জানতে পেরে যায় । ছিনিয়ে নেয় ওর মোবাইলটা । খুব কেঁদেছিল জান্নাত । 5 জানুয়ারি 2014 স্যারের বাসা থেকে বের হয়ে বোরখা পরা জান্নাত । বাবার বাইকে উঠছে । ওকে দেখেই চিনে ফেলেছে দিগন্ত ।ভালবাসাকে নাকি যেকরেই হোক চেনা যায় । কি মায়াভরা মুখটা । দেখলে মনটা একট ঝটকায় ভালো হয়ে যায় । জান্নাত ওকে আজ দেখতে পায় নি । তাই দিগন্ত একটু মনমরা । 7 জানুয়ারি 2014 আজ স্যারের বাসা থেকে বেরিয়েই দিগন্তকে চিনতে পেরেছে জান্নাত । ওরা আজ খুব হ্যাপি । বাইকে করে চলে গেল জান্নাত আর খুশিতে লাফাতে লাফাতে বাড়ি ফিরলো দিগন্ত । চলতে থাকে দিন । জান্নাত কলেজে গিয়ে বান্ধবির ফোন দিয়ে যোগাযোগ রাখে দিগন্তের সাথে । ভালবাসা গভীর হয় হঠাৎ সব জেনে যায় জান্নাতের বাবা । ছেদ পরে ভালবাসায় । তবুও ভালবাসা বাড়তে থাকে প্রাইভেট টিউটরের মাধ্যমে বিচার পাঠায় জান্নাতের বাবা দিগন্তের বাবার কাছে 17 জানুয়ারি 2014 রাতে বিচার পেয়ে দিগন্তের বাবা চ্যালা কাঠ দিয়ে মেরে দিগন্তের নাক মুখের যাচ্ছেতাই করে ফেলে ।বড় ভাইয়ের প্রহারেও ঐদিন রক্তে ভোরে উঠেছিল দিগন্তের মুখ । প্রতিজ্ঞা করলো ও ।ভালবাসা আরো শক্ত হলো । এবার দিগন্তকে জান্নাতের বাবা গুন্ডা দিয়ে ভয় দেখাতে থাকে । তবুও থেমে যায় না ও কারন এর মাঝে জান্নাত ওকে বলেছে যে ওর ভালবাসা দিগন্তর ।শুধুই দিগন্তের । ফের্র্রুয়ারি,মার্চ,এপ্রিল কেটে যায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ।ভালবাসাটা আগুনে পুড়ে আরো গভীর হয় 11 মে 2014 দিগন্তের ফোনে একটা কল এলো । - দিগন্ত! পরশু পার্কে দেখা করবো ।Love u - জান্নাত!!! লাভ ইউ । আমি আসবো দিন ঘন্টা মিনিট সেকেন্ড যেন আর কাটে না ওদের 13 মে 2014 পার্কে গেছে দিগন্ত । ও খুব ছটফট করছিল । ফোন করলো জান্নাতের বান্ধবি রিয়া কে । - হ্যালো দিগন্ত!? - জান্নাত এসেছে? - হ্যালো? আমি বলছি । হিমু আড্ডার এইদিকে আয় - আছিতো? কোথা......তোকে খুব সুন্দর লাগছে রে ! দেখা হলো ওদের । পার্কের একটা ব্যান্ঞ্চে বসে আছে ওরা । দিগন্ত জান্নাতের হাতটা ধরলো । আর জান্নাত ওর কাঁধে মাথাটা রাখলো ভবিষ্যতের স্বপ্ন বুনতে শুর করে ওরা । - জান্নাত!! আজ 13 তারিখ ।কি লাকি বল! - সত্যি খুব লাকি!! তোকে খুব ভালবাসি রে - আমিও রে জান্নাত!! - আমার হাতটা ধরে রাখবিতো? - এত শক্ত করে ধরবো যে তুই ব্যাথা পেলেও ছাড়বো না - তুই যে কি একটা!! পাগল - হ্যাপি লাকি 13 । আজ লাকি 13 - তের তারিখটা খুব ভাল দিগন্ত!! লাভ ইউ - লাভ ইউ ঠু । বলতে গেলে আজ আকাশে চাঁদ কেন নাই তা আমি জানি । - কেন? - চাঁদতো আমার পাশে - তুই সত্যিই পাগল চলতে থাকে লাকি 13 । বিদায়ের পালা । জান্নাতকে রিক্সায় তুলে দেয় দিগন্ত । বারবার ফিরে চায় জান্নাত । কষ্ট পায় দিগন্ত রাতে, - জান্নাত পরশু জিলা স্কুলের সামনে । প্লিজ - ওকে আসবো 17 মে 2014 ঝুম বৃস্টিতে পার্কের একট টিনের চালের নিচে দাড়ালো ওরা । বৃষ্টি থামার পর একটা রেস্টুরেন্টে গেল ওরা - জান্নাত?তোকে কেও নিয়ে গেলে?? - আরে পাগল ! আমি শুধু তোর । এগুলা কি বলিস? - স্বপ্ন দেখছি - স্বপ্ন ট্রু হয় না পাগল । দিগন্তকে বুঝালো জান্নাত । হাত ধরে টাউন হল পর্যন্ত জান্নাতের বান্ধবীদের কাছে ওকে দিয়ে আসছে দিগন্ত । বার বার পেছন ফিরছে ওরা । ভালবাসা এরকম কষ্টই দেয় ।রাতে বুকের বামপাশে জান্নাতের নিক নেমের ফার্স্ট লেটারটা লিখলো দিগন্ত ব্লেড দিয়ে 21 মে 2014 দিগন্ত পদার্থবিজ্ঞান ল্যাবে । ফোন বেজে উঠলো - হ্যালো? - দুপুর 1 টায় পার্কে ।জরুরি কথা আছে - ওকে । লাভ ইউ । দুপূর 1:23 পার্ক - দিগন্ত!আড়ালে আয় - বল! টেনশন বাড়তেছে জান্নাত হঠাৎ দিগন্তকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদছে - আরে? জান্নাত!! কি রে? আরে বলবিতো কি হয়েছে?? - বাবা সব জেনে গেছে রে! আমার বিয়ে ঠিক করে ফেলছে । পরশু দেখতে আসবে । জান্নাতকে ছেড়ে দিল দিগন্ত । হাসলো নিজের ভাগ্যের ওপর - দিগন্ত!!চল পালিয়ে যাই! প্লিজ । i cant live widout u - I love u! কি করবো!! কই যাবো! কি খাব? থাকবো কই!! মরেই যাবো - এগুলো বলবি না । জান্নাতকে দিগন্ত ওর বুকে লেখা জান্নাতের নামটা দেখালো - তুই এখানে থাকবি জান্নাত - এগুলে কেন করছিস? - বাড়ি যা ! দেখি কি করতে পারি কষ্টের শেষ বিদায় হলো ওদের । এরপর আর জান্নাতকে বাড়ি থেকে বের হতে দেয়া হয়নি দিগন্ত অনেক চেষ্টা করেছিল বিয়ে ভাঙতে ।বাট পারেনি । ওর মা ওকে কসম দিয়েছিল বলেই পারেনি ওদিকে জান্নাত আত্মহত্যার চেষ্টা করে । তা দেখে ওর মা অসুস্থ হয়ে যায় । আর মা কে ভালোরাখতে জান্নাতকে বসতে হয় বিয়ের পিড়িতে দিগন্ত! ও পাগলের মত কান্নাকাটি করে ।নিজের ক্ষতি করে । পরে মায়ের কথা ভেবে নিজের মুখে একটা মিথ্যা হাসি লাগায় ও আজ আর ওদের যোগাযোগ নেই । দিগন্ত আজও লুকিয়ে কাদে । বিক্ষত হয় ।আজ জান্নাতকে খুব মনে পড়ছে ওর জান্নাতও ভাল নেই । তবুও ভালো থাকার অভিনয় করে । দিগন্ত এরপর কয়েকটা মেয়ের সাথে কথা বলে । রিলেশনে যেতে চাইছিল । যদি জান্নাতকে ভুলে যাওয়া যায়!! কিন্তু তা আর হয় নি । আজ ও বুঝেছে যে জান্নাতকে ও ভুলতে পারবে না ।পারবে না তাই অন্ধকারকে সাথে করে এগিয়ে যাচ্ছে ও জান্নাতের খবর পাওয়া যায় নি । ( লেখাটা কোন কাল্পনিক গল্প মনে হতে পারে । কিন্তু এটা একটা সত্যি ঘটনা । আমি কি করে জানলাম!! কারন এই ছদ্মনামের দিগন্ত চরিত্রটা আর কেও না ।আমি নিজে । আজও জান্নাতকেই ভালবাসি । খুজি ওকে । হারিয়ে যাই অন্ধকারে ।লেখাটায় যে টাইমগুলো উল্লেখ করা সব মনে আছে । আজও ভুলিনি । ভুলবো না । ভুলতে চাই না )
Posted on: Fri, 26 Dec 2014 13:29:00 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015