ইসরাইল আবারও জঘন্য - TopicsExpress



          

ইসরাইল আবারও জঘন্য আক্রমণ শুরু করেছে - এটা সত্যি। কি করলে এই আক্রমণ বন্ধ হবে বা সবাই ফেসবুকে বসে প্রতিবাদ করলে কোন লাভ হবে কিনা তা জানিনা। কিন্তু তারপরেও চেষ্টা করতে দোষ নেই। যে যেভাবে সঠিক মনে করে নিজ জায়গা থেকে প্রতিবাদ সাহায্য যা করা যায় করে যাওয়া উচিৎ। তবে ফিলিস্তিনের নাম দিয়ে প্রচুর ফেক গ্রাফিকাল ছবি ইন্টারনেটে ছড়াচ্ছে, তাদের বড় একটা অংশ সিরিয়া বা ইরাক বা অন্য কোন যুদ্ধের ছবি। একটা ফেক ছবি দিয়ে আন্দোলন পিটিশন প্রতিবাদ করলে আখেরে লাভ এর বদলে লোকসানই হবে। যারা যারা ফিলিস্তিন এর পাশে দাঁড়াচ্ছেন, সিরিয়ার বা ইরাকের ছবি নিয়ে দাঁড়ায়েন না। চোখ বন্ধ করে শেয়ার লাইক না মেরে একটু কষ্ট করে ভেরিফাই করে নিন। গুগল সার্চ দিয়ে (google/imghp) প্রাইমারী চেক করে নেয়া যায় ছবির উৎস কোথায়। অন্তত বিশজন ফেসবুক ফ্রেন্ডকে দেখলাম এরকম ছবি শেয়ার করতে। কয়েকটা শুদ্ধ করার চেষ্টা করি এই নোটে। এরকম গ্রাফিকাল ছবি দেখতে দেখতে আমি নিজে ক্লান্ত, বিধ্বস্ত। ছবিগুলোকে যথাসম্ভব আকার ছোট করে দিয়ে কিছু ছবির উৎস ও ঘটনা বলি। আগে বলি কিভাবে ইসরায়েল এর অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে পারেন। এইখানে সহ আরও অনেক জায়গাতে পিটিশন খোলা হয়েছে। change.org/petitions/send-rescue-team-in-palestine-we-need-to-save-children-women-civilians-in-palestine-make-them-refugee-in-developed-developing-countries?share_id=skyyhTzpaU&utm_campaign=share_button_chat&utm_medium=facebook&utm_source=share_petition সেই পিটিশনে সাইন করে প্রতিবাদ করতে পারেন, সেই সাথে পিটিশন এর উদ্যোগতাকে অনুরোধ করুন, পিটিশন কাভারের ছবিটা বদলাতে। সিরিয়ার ছবি দিয়ে ইসরায়েল এর প্রতিবাদ করতে গেলে বড়সড় গলদ রয়ে যাবে। শিশুর মৃত্যু ভয়ঙ্কর। একসাথে এত শিশুর মৃত্যু ভয়ঙ্কর থেকেও অনেক বেশী কিছু। সঙ্গত কারণেই এই ছবিটি ফিলিস্তিন-ইসরায়েল এর নাম দিয়ে সবচেয়ে বেশী ছড়াচ্ছে। এই ছবি ফিলিস্তিন এর নয়, সিরিয়ার। এই শিশুগুলার মৃত্যু হয়েছে সেটা সত্যি। তবে নীচের আর্টিকেল অনুসারে (যা ২০১৩ সালে প্রকাশিত) সেটা সিরিয়ার মুসলিমদের হাতেই হয়েছে, ইসরায়েল নয়। তথ্যসূত্র - syrianrevolutiondigest/2013/05/bare-naked-truth.html সত্যি সত্যি এটা সিরিয়ার ঘটনা কিনা পুরো নিশ্চিত হতে হলে আরও একটু সার্চ এবং গবেষণা করতে হবে। তবে ২০১৩ সালে অনেক জায়গাতেই সিরিয়ার কথা বলে প্রকাশিত এবং সম্প্রতি ইসরায়েল হামলার সাথে এটা কোনভাবেই সংযুক্ত না। এটা ২০১৩ সালের ইরাকের ছবি। তথ্যসূত্র - globalresearch.ca/war-is-peace-it-makes-us-rich-and-safe-or-so-says-the-mainstream-media/5379762 এই শিশুটির মৃত্যু গাজায়। তবে ২০১২ সালে। মৃত্যুর কারণ সময়মত ইসরায়েল অথোরিটি এর কাছ থেকে বেটার মেডিক্যাল কেয়ার এর অনুমতি না পাওয়া। তথ্যসূত্র - prisonerofjoy.blogspot/2011/08/zionist-israel-slaughterer-of-12-month.html এটাও বেশ ছড়াচ্ছে। ইসরায়েল এর সৈন্য ফিলিস্তিন শিশুর বুকে পা রাখা। আবার এটা সিরিয়ার যুদ্ধের ছবি বলেও অনেক জায়গাতে প্রচারণা পেয়েছে। মূলত ২০১২ সালের ফেক ছবি। ঠিক ফেক নয়, ষ্টেজ ড্রামা করে এটা বানানো হয়েছে। পুরো আকারের ছবি এই দেখলেই বোঝা যাবে। বিস্তারিত এখানে - elderofziyon.blogspot/2012/02/fake-photo-of-soldier-stepping-on-girl.html#.U8AA5fldXow এটা পেলাম বেশ কয়েকজনের নিউজফিডে। আবারও সিরিয়ার ছবি। সিরিয়ান বিদ্রোহীদের তোলা এই ছবি our youngest hostage নামে পরিচিত। শিশুটি সম্ভবত মুসলিম নয়, খ্রিস্টান। আবার এই ছবিটি ফেক এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে প্রোপ্যাগান্ডা বলে মনে করেন অনেকে। তবে সত্য মিথ্যা যাই হোক, এটি ফিলিস্তিন এর ছবি নয়। তথ্যসূত্র - dailymail.co.uk/news/article-2609711/Syria-burning-Assad-orders-ELECTION-critics-say-simply-rig.html এরকম আরও গোটা বিশেক উদাহরণ দিতে পারি। মুল বক্তব্য - সিরিয়ার বা ইরাকের মৃত শিশুর ছবি লাইক শেয়ার দিলে ফিলিস্তিনের কতটুকু উপকার হবে জানিনা। অপকার হবার সম্ভাবনাই বেশী। কারণ আপনি সত্যকে মিথ্যার সাথে মিলিয়ে ফেলে সত্যকে আরও হালকা করে দিচ্ছেন। সত্যের সাথে মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে সত্যের গুরুত্ব বাড়াতে গিয়ে আরও কমিয়ে ফেলছেন। কেন করছেন? কারণ সহজ। আপনি অলস। বিশ্বকাপ দেখার ফাকেফাকে ফিলিস্তিন নিয়ে একটু আহা উঁহু করার সাথে দুই একটা মৃত শিশুর ছবি শেয়ার দিলে অনেকের অপরাধবোধ কমে। কিন্তু চূড়ান্ত রকমের অলস না হয়ে একটু কষ্ট করে ভেরিফাই করে নিন আপনি যা শেয়ার দিচ্ছেন সেটা সত্যের সাথে মিথ্যা মেশানো হচ্ছে কিনা। গুগল সার্চ দিয়ে (google/imghp) ছবিগুলো ভেরিফাই করুন। ফিলিস্তিন এর সাথে অন্যায় যে হচ্ছে সেটা ভীষণ রকমের সত্য। সেই সত্যকে অন্য মিথ্যা দিয়ে জাস্টিফাই করতে হবে কেন? মৃত শিশুর ছবি শেয়ার দিতে চান একটু কষ্ট করে খুঁজে দেখুন। মাত্র দুইদিনেই অনেকগুলো শিশুর মৃত্যু হয়েছে ইসরায়েল এর হামলাতে। মৃত শিশু কেন সিরিয়া থেকে ধার করতে হবে? সিরিয়ার গুলো ইহুদীরা মারেনি, মুসলমানরা মেরেছে। শেয়ার করতে হয় সঠিক মৃত শিশুকে শেয়ার করুন। সেইসাথে হারামজাদা মধ্যপ্রাচ্য কেন কাদের মোল্লার জন্য কেঁদে বুক ভাসিয়ে দেয় আর ইসরায়েলের ঘটনা শুনে কান চুলকায় আর সিরিয়ার কথা শুনে হাই তুলে সেটাও একটু জানার চেষ্টা করুন। -------- কার্টিসি (চরম উদাস)
Posted on: Sat, 12 Jul 2014 08:23:18 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015