থাবা বাবার জানাজার - TopicsExpress



          

থাবা বাবার জানাজার ইমামকে হত্যার হুমকি দেয়ার কারনে আমাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল ২৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যাবেলায়। আমি তখন চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নং গেইটে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের ক্লাবে সন্ধ্যা ৭ টার খবর দেখছিলাম। আমাকে চট্রগ্রামের হাটহাজারী সার্কেলের এ এস পি এ এফ এম নিজাম উদ্দীনের নেতৃত্বে গ্রেফতার করা হয়। হাটহাজারী থানার এক এস আই ১৭ ফেব্রুয়ারি কালের কন্ঠ পত্রিকার ১ কপি নিয়ে এসে আমাকে ১৭ ফেব্রুয়ারি কালের কন্ঠ পত্রিকার ১ম পৃষ্ঠায় আমার ছবিটা দেখিয়ে জিজ্ঞাস করে তুমিই কি সেই ছেলে যে রাজীবের জানাজার ইমাম কে হত্যার হুমকি দিয়েছিলে? তোমার নাম কি ফারাবী ? আমি তখন বললাম হ্যাঁ আমিই ফারাবী। আমিই রাজীবের জানাজার ইমাম কে হত্যার হুমকি দিয়েছিলাম। এরপর সাথে সাথে উনি আমার হাতটা ধরে আমাকে হাটহাজারী থানার পুলিশের গাড়িতে উঠাল। খুব দ্রুত উনারা চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস পরিত্যাগ করল। তারপর আমার মোবাইলটা ঐ এস এই সাথে সাথে নিয়ে নিল। আর গাড়ির ভিতর ঐ এস এই চিল্লায় চিল্লায় আমাকে বলতাছে এখন তুমি ঠ্যালা বুঝবা। তুমি কেন রাজীবের জানাজার ইমাম কে হত্যার হুমকি দিতে গেলা ? আমি তখন ঐ এস আই কে অনুরোধ করলাম আমি কি বাসায় একটু ফোন করে আমার মা কে জানাতে পারব ? ঐ পুলিশের এস এই আমাকে বলল তোমার মা ইতিমধ্যেই টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে এই খবর জেনে গেছে। তারপর আমকে হাটহাজারী থানার ওসির কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। হাটহাজারী থানার ওসি আমাকে দেখে সাথে সাথে বলল কি ক্যাচাল লাগাইছ তুমি ? সারা দেশ থেকে আমার কাছে ফোন আসছে। টিভি চ্যানেলে তোমার গ্রেফতার নিয়ে ব্রেকিং নিউজ দেখাচ্ছে। তুমি কি রাজীবের হত্যা সম্পর্কে কিছু জান ? আমি তখন ওসি কে বললাম আমি রাজীব কে দীর্ঘদিন ধরে অনলাইনে চিনি। দীর্ঘদিন ধরে রাজীব/থাবা বাবার সাথে আমার বিভিন্ন ফেইসবুক গ্রুপ ও ব্লগে অনেক তর্কবিতর্ক হয়েছে। কিন্তু থাবা বাবার সাথে আমার কখনই কোন দেখা সাক্ষাৎ হয় নি। তখন উনি আমাকে বলল তোমার ব্যাপারটা আর আমার হাতে নাই। তোমাকে এখন চট্রগ্রাম শহরের ২ নং গেইটে চট্রগ্রাম জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। এরপর আমার চোখ বাধা হল, আমার ২ হাতেও হ্যান্ডক্যাপ পড়ানো হল। যেহেতু আমাকে নিয়ে তখন বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে ব্রেকিং নিউস দেখানো হচ্ছিল তাই চট্রগ্রামের হাটহাজারী সার্কেলের এ এস পি এ এফ এম নিজাম উদ্দীন ভাবছে আমি নিশ্চয়ই বড় কোন চক্রের সাথে জড়িত। এক উপজাতি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী শাব ইন্সপেক্টরের দায়িত্ব পরে আমাকে হাটহাজারী থানা থেকে চট্রগ্রাম শহরে নিয়ে যাওয়া। উপজাতিরা তো এমনেই বাঙ্গালীদের উপর খ্যাপা। তাই বুঝতেই পারছেন ঐ উপজাতি ইনস্পেকটর আমার সাথে আর কতটুকু ভাল ব্যাবহার করবে। আমাকে চোখ বেধে প্রথমে ঐ পুলিশের গাড়িতে উঠানো হয়, আমি ভাবছিলাম যে আমাকে তারা গাড়ির সিটে বসতে দিবে, কিন্তু তা না করে তারা আমাকে ধরে গাড়ির সীটের পাশে নিচে গাড়ির মেঝেতে শুইতে বলল, এরপর আমি গাড়ির মেঝেতে শুইলাম, পুলিশ কনস্টেবলদের পায়ের বুট আমার শরীরে লাগছিল। আমি একটু উঠে বসতে চাইলেও তারা আমাকে একটুও বসতে দেয় নাকি। আমার চোখ গুলি খুব শক্ত ভাবে বাধ ছিল। এত শক্ত ভাবে আমার চোখ গুলি বাধা হয়ছিল যে আমার চোখ ব্যাথা করতে শুরু করেছিল। আমি অনেকবার ঐ উপজাতি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী সাব ইন্সপেক্টর কে অনুরোধ করেছিলাম যে আমার চোখ গুলি খুলে দিতে কিন্তু গৌতম বুদ্ধের ঐ অনুসারী আমার চোখ গুলি আর খুলে দেয় নাই। গাড়ির মেঝেতে শুয়ে থাকা অবস্থায় পুলিশ কনস্টেবলদের পায়ের বুট যখন আমার শরীরে লাগছিল তখন নিজেকে আমার কোন মনুষ্য প্রজাতির সদস্য মনে হয়নি। আমি নিজেকে তখন কুকুর বিড়াল ভাবছিলাম। হাটহাজারি থানা থেকে চট্রগ্রাম শহরে যেতে প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় লাগে। এই পুরা দেড় ঘণ্টা সময় ঐ পুলিশ কনস্টেবলগুলি তাদের পায়ের বুট আমার শরীরের উপর রেখেছিল। একটা মানুষ কিভাবে আরেক জনের শরীরের উপর তার পায়ের বুট রাখতে পারে এটা ভাবতে এখনো আমার অবাক লাগে। রাজীব হত্যা কান্ডে অভিযুক্ত নর্থ সাউথের ৫ জন ছাত্র আর আমি একসাথেই ঢাকার মিন্টু রোডের ডিবি অফিসে ছিলাম। আমাদের এই ৬ জনের উপর যে অমানবিক আচরন গুলি করা হয়েছিল তা তো আর ১ দিনে বলা যাবে না। আমি ধীরে ধীরে আপনাদের কে তা জানাব। পুনশচঃ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী যেই উপজাতি এস আই আমাকে হাটহাজারী থানা থেকে চট্রগ্রাম শহরে নিয়ে এসেছিল ও আমার গায়ে উনার বুট রেখেছিল উনি জুলাই মাসে ছুটি নিয়ে উনার দেশের বাড়ি খাগড়াছড়িতে বেড়াতে যাওয়ার পর একটি বিষাক্ত সাপের কামড়ে মৃত্যুবরন করেছেন। উনার নাম ছিল এস আই ইতু চাকমা।
Posted on: Mon, 11 Nov 2013 15:26:44 +0000

Recently Viewed Topics




© 2015