পাওলো মালদিনির সাথে তার - TopicsExpress



          

পাওলো মালদিনির সাথে তার দৈরথ্ব চিরকালের। লেফটব্যাক দিয়ে এতো তাড়াতাড়ি আক্রমন তুলতেন যে বিশ্লেষকরা তার নামের পাশে দিয়েছিলো বুলেট ম্যানের তকমা। আর বানানা শট সে তো ইতিহাস………… ঘন্টায় ১৬৯ কিলোমিটার বেগের ফ্রিকক আজো চোখে লেগে আছে হাজারো ফুটবল ভক্তদের। কখোনো দৌড়ে গিয়ে উঠে যেতেন উইং এ আবার কখোনো গুটিয়ে নিতেন নিজেকে সবই শুধুমাত্র দলের জন্য। আর এমন ছন্দময়ী লুকোচুরি খেলায় নাকাল প্রতিপক্ষ । এক মার্সেলো ছাড়া তার উদাহরণ দেয়া কঠিন। এতোটা এটাকিং মাইন্ড নিয়ে খেলতেন যে চোখের পলকে আক্রমনে ঝড় বইয়ে দিতেন বার্নাব্যু এরিনায়। আর থ্রোয়িং?.? ইগল পাখির মত ছো মেরে লং থ্রো দিয়ে ঘাড় মটকাতেন প্রতিপক্ষর। সব-ই যেনো হতো অক্ষির অগোচোরে। প্রতিপক্ষ বুঝতেই পারতোনা। কী ধরে ফেলেছেন?.? হ্যাঁ বলছিলাম ব্রাজলিয়ান লিজেন্ড রাবার্তো কার্লোসের কথা। পুরো নাম রাবার্তো কার্লোস দা সিলভা রোচা। । জাতীয় দল কিংবা ক্লাব পর্যায় সব দিকেই সাফল্য কে বশ করেছেন তিনি । আর অক্লান্ত পরিশ্রমে অনুকুলে নিয়েছেন ফুটবল দেবতাকে । ফুটবল যাদের আবেগে সেই ব্রাজিলের গার্সায় জন্ম হয় ফুটবল ইতিহাসের পাতায় অগ্রিম অমর হয়ে যাওয়া এই কিংবদন্তীর। সালটা তখন ১৯৭৩ তারিখ ১০ এপ্রিল । ছোটো বেলা থেকেই যখন ছেলের ধ্যান জ্ঞানে ফুটবল তখন পরিবারের না শব্দের প্রশ্ন আসে কোথা হতে?.? স্থানীয় পর্যায়ে পাড়ার ফুটবলে তার দুরন্ত স্কীল চোখে পড়ে ব্রাজিলের ছোট্টো ক্লাব উনাস সাও জোসের। সেখানে ২ বছর ফুটবল দক্ষতায় পরিপক্ক হয়ে উঠলেন পুরো আনায় আনায়। সাল ১৯৯১। এর পরের বছরেই চমকের একরাশ দেখে ফুটবল বিশ্ব। ব্রাজিল জাতীয় দলে অভিষেক ঘটে রাবার্তো কার্লোসের। অবিশ্বাস্য চোখ ধাঁধানো পারফেন্সে ফুটবল বিশ্লেষকেরা মজে কার্লোসে। কিন্তু হিসেব মিলছিলোনা একপর্যায়ে কিছুতেই কার্লোস কে ছাড়তে রাজী নয় উনাস সাও জোসে কিন্তু কার্লোস এর জন্য টানা হেচড়ায় চলে গেলো ব্রাজিলিয়ান সম্ভ্রান্ত ক্লাব পালেইর্মস। অবশেষে ১৯৯৩ সালে তাকে দলে ভেড়ালো তারা । পালেইর্মস হয়ে একের পর এক ট্রফি জয়ে মগ্ধ রাবার্তো কার্লোস কোম্পানেতো ব্রাজিল, তুরিনো সাও পাউলো সব কিছুতেই অদম্য পালেইর্মস অদম্য রাবার্তো কার্লোস। কিন্তু অদম্য কার্লোস কে লুকাতে পারলোনা পালেইর্মস তার প্রতিভা ততক্ষন দক্ষিন আমেরিকার গন্ডি পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়ে ইউরোপের নামীদামী সব ক্লাব গুলোকে। আর ইউরোপের জন্য ফরেইন ভান্ডার ব্রাজিল সব সময় অনুকুলে । পালেইর্মস কে চোখ রাঙানি দেয় ইটালিয়ান জায়ান্ট ইন্টার মিলান। ব্যস ……… কার্লোস কে ২ সিজনের বেশি ধরে রাখতে পারলোনা পালেইর্মস। অন্যদিকে কার্লোস তখন দুর্দান্ত পারফরমেন্স রাজ্য ক্ষুধার্ত রাজায় পরিনত । মানুষের মনের রাজ্য জয় তার নেশায় উপনিত। ইন্টার ন্যাজিওনালে যাওয়ার আগে থেকেই কার্লোসের প্রতিভার ব্যাবহার করতে চাইছিলো স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদ কিন্তু ইন্টার মিলানে বিড সেই আশায় গুরে বালি পরে অলহোয়াটসরা। কিন্তু নাছোড়বান্দা গ্যালাক্টিকোজরা তাকে দলে ভেড়াতে উঠে পড়ে লাগে । অন্যদিকে রিয়ালের আগ্রহের পালে হাওয়া দেয় কার্লোসের পারফরমেন্স কিন্তু ইন্টার মিলানে সফল হওয়ার আগেই তাকে নিজেদের ডেরায় ভেড়ায় রিয়াল মাদ্রিদ। তারপর শুধু ইতিহাস………… শুরুতে মাদ্রিদিস্তাদের মনে শংকা একটু জেদি ব্যাপার হয়ে গেলোনা?.? পারবেন তো কার্লোস?.? কিন্তু কার্লোস যে ব্রাজিলিয়ান, দমে যাওয়ার পাত্র ব্রাজিলিয়ান ছেলেরা কখোনোই নয়। লা-লিগা জয় করলো রিয়াল মাদ্রিদ ইএসএম বেস্ট ইলেভেনে ডেব্যু সিজনেই ঠাই করলেন ৩ নাম্বার জার্সি পড়া রাবার্তো কার্লোস। সাল ১৯৯৭ ফ্রান্স বনাম ব্রাজিল ঐতিহাসিক বানানা শট ব্রাজিল কে লিড দিলেন লিজেন্ড কার্লোস হতবাক স্বয়ং ধারাভাষ্যকার………! লা-লিগা ফিফা কনফেডারেশন সুপার কোপা কোপা আমেরিকা উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ একবছরে ৫ টা ট্রফি জয় করে অনন্য উচ্চতায় কার্লোস। তিনি তখন ধরা ছোয়ার বাইরে। আর ২০০১-০২ চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল ভলি?.? সে তো আনপ্রেডিক্টেবল, শ্বাসরুদ্ধকর এসিস্টে চ্যাম্পিয়নস লিগ রিয়ালের ঘরে উল্লাসে হ্যাম্পটন পার্ক উচ্ছসিত লাখো মাদ্রিদিস্তারা সেদিন আনন্দের মিছিলে সিবেলে স্কয়ারে। ফলস্বরুপ উয়েফা বেস্ট ডিফেন্ডারের এওয়ার্ড ঝলক দিচ্ছিলো কার্লোসের হাত জোড়ায়। অন্যদিকে একসাথে চ্যাম্পিয়নস লিগ, বিশ্বকাপ জয় করে তিনি তখন অমর। ৩০ বছর বয়সেই জায়গা করে নিলেন ফিফা-১০০ তালিকায়। আবারো ইএসএম বর্ষসেরা একাদশে লিজেন্ড কার্লোস। এই নিয়ে টানা ৭ বার রিয়ালের ভাইস ক্যাপ্টেন নির্বাচিত হলেন কার্লোস। ভালোই চলছিলো কার্লোসের দিন। সাল ২০০৭ চ্যাম্পিয়নস লিগের খেলা প্রতিপক্ষ বায়ার্ন মিউনিখ। কার্লোসের সামান্য ভুলে ২-১ এ হেরে বিদায় রিয়াল মাদ্রিদের। সমালোচোনার ঝড় কার্লোসের দিকে। কার্লোসে আস্থা হারালো মাদ্রিদিস্তারা গড়ামুই রিয়াল টিম ম্যানেজমেন্ট। কার্লোসে মর্ম বুঝলোনা তারা দুঃসময়ের কান্ডারির মাদ্রিদিস্তা জীবনাবসান ক্লাব ছাড়লেন লিজেন্ড কার্লোস। মাদ্রিদ ছাড়ার আগে ৫২৭ ম্যাচে তার ৬৯ গোল প্রমান করে তিনি কতোটা এটাকিং মাইন্ডেড ছিলেন। এরপর টার্কিশ ক্লাব ফেনেরবাসে হয়ে মাঠ মাতালেন কার্লোস। বয়স হয়েছে কিন্তু নাহ…… তখনো ফুরিয়ে যাননি কার্লোস ২০০৮সালে জয় করলেন গোল্ডেন ফুট এওয়ার্ড। ১৫ বছর পা ফিরলেন নিজ দেশ ব্রাজিলে করিন্থিয়ান্স এর জার্সি গায়ে। সেখানে দুইসিজন খেলার পর কার্লোস কে সাইন করিয়ে চমক দেয় রুশ ক্লাব আনঝি মাখাচকালা। নাহ এবার আর পারছেননা অবসর তো একদিন না একদিন নিতেই হবে তাই ২০১২ সালে লাখো কার্লোস ভক্ত দের কাদিয়ে ইতি টানেন বর্নাঢ্য এক ফুটবল ক্যারিয়ারের। বর্তমানে তিনি তুরস্কের ক্লাব সিভাসপরের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন এই জীবন্ত কিংবদন্তি। রাবার্তো কার্লোসের যত অর্জন---- ক্লাব পর্যায়ে কার্লোসঃ Palmeiras CampeonatoBrasileiro Série A (2):1993, 1994CampeonatoPaulista (2): 1993 ,1994Torneio Rio-SãoPaulo (1): 1993 Real MadridLa Liga (4): 1997 ,2001, 2003, 2007Supercopa deEspaña (3): 1997 ,2001, 2003UEFA ChampionsLeague (3): 1998 ,2000, 2002Intercontinental Cup(2): 1998 , 2002UEFA Super Cup(1): 2002 FenerbahçeTurkish Super Cup(2): 2007 , 2009 জাতীয় পর্যায়ে কার্লোসঃ BrazilFIFA World Cup :2002Copa América :1997 , 1999FIFA ConfederationsCup : 1997CONMEBOL MenPre-OlympicTournament : 1996Umbro Cup : 1995Lunar New YearCup : 2005 ব্যক্তিগতঃ FIFA World Player ofthe Year : 1997 (SilverAward)FIFA World Cup All-Star Team (2): 1998,2002UEFA Defender ofthe Year (2): 2002,2003UEFA Team of theYear (2): 2002, 2003ESM Team of theYear (7): 1996–97,1997– 98, 1999–00,2000–01, 2001–02,2002–03, 2003– 04Golden Foot: 2008FIFA 100 পরিশেষ এ বলবো তিনি ক্যারিয়ার থেকে অবসর নিলেও মানুষের মন থেকে কখোনোই অবসর নিবেন না ফুটবল যতদিনবেঁচে থাকবে ততোদিন বেঁচে থাকবেন লুইস ফিগো, ততোদিনবেঁচে থাকবে কার্লোসের অর্জন। তিনি চিরকাল অমর হয়ে থাকবেন মাদ্রিদিস্তাদের মনে । রেস্পেক্ট কার্লোস স্যালুট কার্লোস....... #_Ricardo__LIMON
Posted on: Wed, 15 Oct 2014 05:19:35 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015