বেকার জীবনের সব চেয়ে বড় - TopicsExpress



          

বেকার জীবনের সব চেয়ে বড় অসুবিধা হলো ছবি সত্যায়িত , সনদ পত্র সত্যায়িত করা । সরকারী গেজেটেড অফিসারদের কাছে গেলে এমন ভাবে তাকায় যেন সত্যায়িত করতে এসে ভুল করেছি । মহা অন্যায়ের একটি কাজ । আরে তোরাও তো একদিন বেকার ছিলি তোরাও তো কারও না কারো কাছ থেকে সত্যায়িত করে চাকরীতে জয়েন করেছিস । আজ গেছিলাম সরকারী হেলথ অফিসে । সত্যায়িত করার অনেক জায়গা থাকলেও আজ গেছিলাম হেলথ অফিস দেখতে + সত্যায়িত করতে । অফিসের বাইরে লেখা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার । বেলা ১২ টার দিকে রুগীদের ভীর কম থাকবে তাই ঐ সময়টাতেই হানা দিলাম । রোগী আর রোগী । দেখে মনে হয় সবাই নিম্ন আয়ের মানুষ জন এবং সবাই মহিলা । ছোট ছোট বাচ্চা কাচ্চা । দুইজন করে ডাক্তারের রুমে যাচ্ছে আর দুই মিনিট পর বের হয়ে আসছে । সবার হাতে একটি করে পেসক্রিমশন । ম্যাক্সিমাম পেসক্রিপশনে হয় গ্যাসের টাবলেট, হিসটাসিন , ফ্লাজিল , ট্রেট্রাসাইক্লিন , প্যারাসিটামল । হেলথ অফিসের ওষুধ বলতে এই । আমি প্রতিবারই ভাবছি এবার ঢুকবো কিন্তু বৃদ্ধা মহিলারা দাড়িয়ে থাকতে পারছে না । কেউ আবার খুনখুন বুড়ি । আমি একজন ইয়াং ছেলে এই বৃদ্ধাদের টপকে কি ভাবে ভীতরে ঢুকবো ???? তা সম্ভব ??? আমার দেরি হোক সমস্যা নেই , বেকার মানুষ সারাদিন বসে থাকার প্রয়োজন হলেও বসে থাকতে পারবো । হঠাৎ একটা কালো কালারের খুব দামি একটি প্রাইভেট কার এসে দাড়ালো হাসপাতালের সামনে । মাঝ বয়সী এক মহিলা নামলো গাড়ি থেকে । দেখেই বোঝা যায় হায়ার সোসাইটির মানুষ । হাসপাতালে এত গরিব মানুষ দেখে তিনি ভ্রু কুচকে কেমন করে যেন তাকিয়ে একটু দেখলেন । যেমনটা আমরা করি সিটি কর্পোরেশনের ডাস্ট বিনের পাশে গেলে । যে ডাক্তার ম্যাডাম রুগি দেখছিলেন তার রুমেই ঢুকলেন তিনি । তাকে দেখেই ডাক্তার ম্যাডাম চেয়ার ছেড়ে উঠেই বললেন আরে চুমকি ????????? তুই আমার অফিসে ?????????? ব্যস শুরু হয়ে গেলো খাজুরে আলাপ । কোল্ড ড্রিক্স যাচ্ছে , কেক যাচ্ছে , কফি যাচ্ছে ডাক্তার ম্যাডামের রুমে । আধা ঘন্টা যাবৎ কোন রুগী দেখছেন না তিনি , তিনি এখন বান্ধবীর সাথে গল্প গুজবে মশগুল । এদিকে রোগির সংখ্যা বাড়ছে তো বাড়ছেই । বাড়ছে হাসপাতালে ভীর । আমার তো রাগে দাঁত কিটকিট করছে । মনে হচ্ছে ম্যাডামরে গিয়ে শুধাই ম্যাম আপনাকে সরকার গল্প মারানোর জন্য এই হাসপাতালে পাঠাই নি । কিংবা বেতন আপনার বান্ধবীর সাথে গল্প করার জন্য দেয় না । আমাদের মত ইনসানদের ঘামে ভেজা করের টাকায় আপনাদের পোষা হয় । আমি হাসপাতালের সামনে পায়চারী করছি আর ভাবছি । আচ্ছা আল্লাহ আমাকে ইবাদত করতে বলছেন । পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার কথা বলছেন , আমি নামাজে দাড়ালাম , নামাজে দাড়িয়ে আমার পাশের নামাজে দাড়ানো ব্যাক্তির সাথে গল্প গুজব করি তবে কি আল্লাহ পাপ দিবেন নাকি পুন্য দিবেন ???? নিশ্চয় পাপ হবে । আমাদের দেশের সরকারও তো এই মহিলা ডাক্তারকে টাকা দিচ্ছেন প্রতিটা মিনিট সরকারের জন্য ব্যয় করতে । দেশের গরীবদের সেবা করতে । যতক্ষণ অফিস করবেন । রোগীদের হইচই আর বাচ্চাদের আর্তচিৎকারে হাসপাতালের পরিবেশ পরিবর্তন হয়ে গেছে । রোগী দেখা শুরু হলো পাশাপাশি বান্ধবীর সাথে গল্প । রোগী ডাক্তারের সামনে বসে , তার অসুবিধা বর্ননা করে । ডাক্তার তার বান্ধবীর সাথে গল্প বলে । রোগীর বর্ননা শেষ , পেসক্রিপশন লেখা শেষ । আমি রুমে ঢুকলাম দুইটা সার্টিফিকেট সত্যায়িত করাতে । উনি বললেন মূল কপি আছে ??? দেখালাম , উনি সত্যায়িত করে দিলেন । এবং আমার উপর দুনিয়ার বিরক্তি প্রকাশ করলেন । আমাকে বললেন আপনাদের জ্বালাতনে আমরা অতিষ্ঠ । আমি বললাম তাহলে কার কাছ থেকে সত্যায়িত করাবো ??? উনি বললেন তার আমি কি জানি ??? আগামীতে আর ঝামেলা করবেন না । আমি সত্যায়িত করে ,সীলপ্যাড মেরে ম্যাডামের রুমে আবার ঢুকলাম । দেন বললাম ছোট মুখে বড় কথা বলি একটা । হাসপাতালে আত্নীয় স্বজনদের নিয়ে আড্ডা নেওয়ার জায়গা নয় । আর আমরা তো শুধু সত্যায়িত করতে আসি , সরকরী গম কিংবা ত্রানের মাল নিতে আসি না । কিংবা কোন কোম্পানীর ওষুধ বিক্রির জন্য আসি না । বলেই আমি ঝড়ের মত বের হয়ে আসলাম পোষ্ট: Farhad F H Farhad
Posted on: Sun, 01 Sep 2013 08:21:24 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015