মুরসি কী করতে পারতেন? - TopicsExpress



          

মুরসি কী করতে পারতেন? সেনা সমর্থিত সেক্যুলারদের ডাকে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে পারতেন? না। মিশরের সব জনগণ তারপক্ষেও যদি না থাকে তবুও তিনি ভয় পেয়ে ক্ষমতা ছাড়তে পারতেন না। ইসলামের রাজনৈতিকতা হলো লড়াইয়ের ময়দানে পিঠ দেখানো যাবে না। মৃত্যু পর্যন্ত লড়তে হবে। তিনি যে লড়েছেন তার বড় প্রমাণ হলো তিনি সেনাবাহিনীর ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম প্রত্যাখ্যান করেছেন। নির্ভয়ে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করে গেছেন। শেষ পর্যন্ত ফেরাউনপন্থী সেনাপ্রধানের নেতৃত্বে অবৈধ অভ্যুত্থান হয়েছে। এই অপরিণামদর্শী অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে ইখওয়ানুল মুসলিমিন বিক্ষোভ দেখাতে পারে, কিন্তু যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারে না। অনেকেই ভুলে যায় যে ইখওয়ান মিশরের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রধানতম নেতার ভূমিকা পালন করেছিল। কিন্তু দলটি সন্ত্রাসবাদী বা জঙ্গী দল নয়। আলকায়েদা বা তালেবানের মতো। এর বড় কারণ হলো বিদেশীদের বিরুদ্ধে স্বশস্ত্রতা অবলম্বন করা গেলেও দেশীয় প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে স্বশস্ত্রতা করা যায় না। যেমন বাংলাদেশের জামায়াতও কখনোই নিজ দেশের মানুষের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরতে পারেনি ও পারবে না। তারা অবশ্যই সহিংসতা করতে পারে, কারণ সহিংসতা একটি গণতান্ত্রিক ব্যাপার। বাংলাদেশে মওলানা ভাসানী ও শেখ মুজিবের উত্থান ঘটেছিল সহিংসতার মাধ্যমে। কাজেই আপাতত সেনাবাহিনীর বন্দুকের নলই মিশরে বিজয়ী হয়েছে। খেয়াল করুন এ বিজয় আপাতত। কেন? আমাদের মনে রাখতে হবে মিশরে নির্বাচন দিতে হবে। দালাল মনসুরকে দিয়ে দশক-যুগ পার করা যাবে, কিন্তু ইতিহাসকে নয়। আর মিশরের গণতন্ত্র উৎখাতের নায়ক ওবামা ভালো করেই জানেন যে তিনি যে খেলায় জড়িয়েছেন তার পরিণাম কখনোই ভালো হবে না। কিভাবে হবে, পুঁজিতন্ত্রের টিকে থাকার একটাই পন্থা-গণতন্ত্র। সেই গণতন্ত্র তো তাদের দিতে হবে। না দিলে আরবে পুঁজিতন্ত্র টিকবে না। সেখানে অবশ্যই স্বশস্ত্রতার উত্থান ঘটবে। যার শেষ গন্তব্য তো সৌদি আরব আর ইসরাইলই। দুই মার্কিন ঘাটিতে ক্ষমতার পুনর্বিন্যাস হবে। কাজেই ওবামাকে মিশরে নির্বাচন দিতে হবে। এখন প্রশ্ন হলো ইখওয়ান ও মুরসি যেই খেলাটা শুরু করেছেন, তাকে মোকাবেলা ছাড়া নির্বাচন করা কি সম্ভব হবে। মুরসিরা ভালো মতই লড়েছেন। জনগণ তাদের সাথে আছে। ফের নির্বাচন হলে তারাই ক্ষমতায় আসবে। তাই তারা আপোষও করেননি, হটকারিতারও আশ্রয় নেননি। এখন ফের নির্বাচনে বজ্জাত এলবারাদি ও দালাল মিশরীয় তরুণরা যদি বিজয়ী না হয় তবে কী হবে? আমাদের মনে রাখতে হবে মিশরের সামনে যা করণকর্তব্য ছিল, মুরসি তা করেননি। মিশর নতুন ক্ষমতা গঠন করতে হলে সেনাবাহিনীকে পুনর্গঠন করার কোনো বিকল্প নেই। এর জন্য যেই সব সেনা সদস্য ফেরাউনি শাসনামলে হত্যা ও ধর্ষণে জড়িত ছিল তাদের সবাইকে মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। যারা নির্যাতনে জড়িত ছিল তাদের সবাইকে আজীবন জেলে পুরে রাখতে হবে। একই ধরনের অপরাধে জড়িত পুলিশ, গোয়েন্দা ও অন্য সরকারি কর্মকর্তাদের বেলায়ও একই পদক্ষেপ নিতে হবে। এ ব্যাপারে কোনো আপোষ করা চলে না। মনে রাখতে হবে বিচার এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে আগের ক্ষমতার প্রতি অনুগত কেউই বিচারক থাকতে পারেন না। সবাইকেই বরখাস্ত করতে হবে। এবং যারা বেআইনী বিচারে জড়িত ছিল তাদের গ্রেফতার করতে হবে। আমরা দেখেছি মুরসি এসব করেননি। ইখওয়ান হয়তো ভেবেছিল এসব করা ছাড়াই তারা নতুন ক্ষমতা গঠন করতে পারবে। কিন্তু নতুন ক্ষমতা গঠিত হয়নি। পুরনো ক্ষমতাই আগের চেয়েও বেশি জোরদার হয়ে ফিরে এসেছে। কাজেই এখন মিশরের আসল আন্দোলনটা হতে হবে এমন গণতন্ত্রের জন্য যেখানে সেনাবাহিনী, বিচার বিভাগ ও সেক্যুলার এলিটদের কোনো কর্তৃত্ব থাকবে না। এই আন্দোলনকে অবশ্যই সহিংস হতে হবে। যারা সেনাবাহিনীর সাথে আঁতাত করে বিপ্লবের নামে চক্রান্ত করেছে, তাদেরকে অবশ্যই রাস্তায় ধরে ধরে পেটাতে হবে। এবং ক্ষমতা দখলকারী সেনাবাহিনীকে রাস্তাঘাটে এমন কোনঠাসা করে ফেলতে হবে যেন তারা সেনা অভ্যুত্থানের হানিমুন উদযাপনের সুযোগ না পায়। হ্যা, এই সহিংসতা নিয়ে দোষারূপের রাজনীতি চলবে। কিন্তু জনগণের ভোটে নির্বাচিত হওয়ার রাজনীতি যখন বলপ্রয়োগ করে ওরা উৎখাত করেছে তখন ডেমোক্রেসিকে অবশ্যই পাল্টা বলপ্রয়োগের মধ্যেই যেতে হবে। Khomenee Ehsan
Posted on: Thu, 04 Jul 2013 14:46:21 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015