মুহাম্মদ কেন সওদাকে বিয়ে - TopicsExpress



          

মুহাম্মদ কেন সওদাকে বিয়ে করেছিলে মুসলিম সমাজের ধর্মগুরুগণ ও মুহাম্মদের জীবন-চরিত রচিয়তাগণ মুহাম্মদকে নারীর ত্রাণকর্তা বলে দাবি করেন । তাঁদের আরো দাবি হলো মুহাম্মদের মতো নারীবাদী ব্যক্তিত্ব আজ পর্যন্ত কেউ জন্মগ্রহণ করে নি এবং ভবিষ্যতেও করবে না । সেই মুহাম্মদই কিন্তু অসংখ্য বিয়ে করেছিলেন । যাঁরা এটা জানেন তাঁদের [ধর্মান্ধ মুসলিমরা ছাড়া] কাছে এই দাবি কখনই সত্যি ও বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হয় না । মুহাম্মদ সম্পর্কে উক্ত মূল্যায়ন তাই মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য করে গড়ে তুলতে দাবি করা হয় যে মুহাম্মদ নিজের স্বার্থে বহুবিবাহ করেন নি । প্রথম স্ত্রী খাদিজার মৃত্যুর পর তাঁকে ইসলাম ও নারীদের স্বার্থ রক্ষা করার জন্যেই তাঁকে বহুবিবাহ বিয়ে করতে হয়েছিলো । তাঁরা বলেন যে মুহাম্মদের নারীর প্রতি আকর্ষণ যে মুহাম্মদকে বিশেষ দুর্বল বা প্রভাবিত করতে পারে নি এবং যৌনতার কারণে তিনি বহুবিবাহ করেন নি তাঁর বড়ো প্রমাণ হলো খাদিজার জীবদ্দশায় তাঁর দ্বিতীয় বিয়ে না করা । এ সব কথায় মুসলমান সমাজ প্রভাবিত তো হয়ই, প্রভাবিত হয় অমুসলিম সমাজের অসংখ্য মানুষও । ইসলামের ইতিহাস ও মুহাম্মদের জীবন-চরিত সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে এ রকম দাবি মানুষের কাছে সত্যি ও বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হয় । যাঁকে মানুষ ঈশ্বরের দূত বলে জানেন ও মানেন তাঁকে তো তাঁরা একজন কামহীন, লালসাহীন, পরোপকারী ও মহৎ চরিত্রের মানুষ বলে ভাববেন ও বিশ্বাস করবেনই । কিন্তু যেটা নির্মম বাস্তব ও সত্যি ঘটনা তাহলো এই দাবি বা যুক্তিগুলি মোটেই সঠিক নয় । ইসলাম বা অন্য কারো প্রয়জনে নয়, মুহাম্মদ অসংখ্য বিয়ে করেছিলেন তাঁর নিজের স্বার্থেই । মুহাম্মদের জীবনী খোলা মনে পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করলে তাঁর এমন একটা ছবি চোখের সামনে ভেসে ওঠে যা মানুষের কল্পনারও অতীত । কেন তিনি অসংখ্য বিয়ে করেছিলেন তার সঠিক কারণ অনুধাবন করার জন্যে জানা দরকার তাঁর দাম্পত্য জীবনের ইতিহাস এবং তাঁর প্রত্যেকটি বিয়ের প্রেক্ষাপট । মুহাম্মদের দ্বিতীয় বিয়ে হয়েছিলো সওদার । তিনি কেনো বহুবিবাহ করেছিলেন তাঁর অনেকটাই স্পষ্ট বোঝা যায় তাঁদের বিয়ের প্রেক্ষাপট ও দাম্পত্য জীবনের ইতিহাস থেকে । খাদিজার মৃত্যুর কয়েকদিন পরেই মুহাম্মদ সওদাকে বিয়ে করেন । কোরেশ বংশের লুয়াই গোত্রের জামায়া বিন কাসেম বিন আবদে সামস ছিলেন সওদার পিতা এবং খাজরাজ বংশের নাজ্জার গোত্রের শামুস বিনতে কায়েস ছিলেন তাঁর মা । সওদাদের ধর্ম পরিচয় নিয়ে মতভেদ আছে । একটি মহল মনে করে তাঁরা ছিলেন পৌত্তলিক । তবে বিশ্বাসযোগ্য ও যুক্তিগ্রাহ্য মতটি হলো তাঁরা ছিলেন খৃষ্টধর্মাবলম্বী । সওদাকে নিয়ে অন্যান্য নানা প্রশ্নেও প্রচুর মতভেদ দেখতে পাওয়া যায় । মতভেদ তাঁর বয়স নিয়ে, মুহাম্মদের সঙ্গে বিয়ের আগে তিনি সধবা ছিলেন নাকি বিধবা ছিলেন মতভেদ তা নিয়েও । আবার মুহাম্মদই তাঁকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, নাকি সওদার পিতা মুহাম্মদকে অনুরোধ করেছিলেন তাঁকে বিয়ে করার জন্যে তা নিয়েও রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন মত । এই মতভেদ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সৃষ্ট । আধুনিক যুগে যাঁরা মুহাম্মদের জীবনচরিত রচনা করেছেন, বিশেষ করে তাঁদের মধ্যে যাঁরা মুসলিম তাঁরা মুহাম্মদকে সঠিকভাবে উপস্থাপিত করা অপেক্ষা তাঁর ভাবমূর্তি নির্মাণ করার প্রয়াস করেছেনই অধিক এবং সজাগ ও সতর্ক থেকেছেন যাতে তাঁর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ না হয় এতোটুকু । ফলে প্রয়োজনে বহু ক্ষেত্রেই হয় তাঁরা বহু কিছু আড়াল করেছেন, না হয় তথ্যবিকৃতি করেছেন খেয়ালখুশি মতো । সওদার ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম ঘটে নি, মুহাম্মদের ভাবমূর্তি নির্মাণ করতে গিয়ে বলির পাঁঠা বানানো হয়েছে সওদাকে । সওদাকে নিয়ে যে সব তথ্যাদি পাওয়া যায় তার মধ্যে যেগুলি সর্বাধিক বিশ্বাসযোগ্য, গ্রহণযোগ্য ও যুক্তিগ্রাহ্য সেগুলি প্রথমে আলোচনা করা যাক । সওদা ছিলেন সধবা, তাঁর বিয়ে হয়েছিলো সাকরান [ভিন্ন মতে সাফরা বিন আমর]-এর সঙ্গে । মক্কায় যাঁরা প্রথম দিকেই মুহাম্মদের শিষ্য হয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে সওদা ও তাঁর স্বামীও ছিলেন । পাছে এই পর্বের শিষ্যরা ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে এই ভয়ে মুহাম্মদ তাঁর শিষ্যদের আবিসিনিয়া [অধুনা ইথিওপিয়া] পাঠিয়ে দেন । সেখানে অবস্থান কালে খৃষ্টানদের সংস্পর্শে থেকে সাকরানের ইসলামের প্রতি বিশ্বাস নষ্ট হয়ে যায় । তাঁর মনের মধ্যে এরূপ বিশ্বাস জন্মে যে মুহাম্মদ যা বলেছেন তা সবই মিথ্যে ও মনগড়া । ফলে তিনি ইসলাম ধর্ম পরিত্যাগ করে পুনরায় খৃষ্টান ধর্ম গ্রহণ করেন । সওদা কিন্ত সাকরানের সঙ্গে সহমত হয়ে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করতে রাজী হন নি । তিনি তাঁর স্বামীকে পরিত্যাগ করে মক্কায় ফিরে এসে সমস্ত ঘটনা বিশদে মুহাম্মদের কাছে বর্ণনা করেন । এদিকে সওদা মক্কায় ফিরে আসার মাত্র কয়েক দিন আগেই খাদিজার জীবনাসান ঘটে গিয়েছিলো । খাদিজা তাঁর গর্ভের দুটি কন্যা সন্তানকে – উম্মে কুলসুম ও ফাতেমা – রেখে মারা গিয়েছিলেন । মুহাম্মদ তখন স্বভাবতই তাঁর শিশু কন্যা দুটির প্রতিপালন করা এবং তাঁর নিজের জন্যে একজন নারীর তীব্র প্রয়োজন অনুভব করছিলেন । নারী ছাড়া এক মুহূর্ত সময় কাটানো তাঁর পক্ষে প্রায় দুঃসহ হয়ে উঠছিলো । এটা যে সত্যি ঘটনা তার প্রমাণ পাওয়া যায় খাদিজার মৃত্যুর পর তাঁর একের পর এক বিয়ে করার ঘটনায় । ফলে সওদার স্বামী সাকরানের ইসলাম ত্যাগ করা ও খৃষ্টান ধর্মে ফিরে যাওয়ার ঘটনা তাঁর কাছে বরং শাপে বর হয়েই দেখা দিয়েছিলো । আর সওদা বিবাহিতা হলেও তাঁর বয়স তো মোটেই খুব বেশী ছিলো না । তিনি তখন ত্রিশ বছরের যুবতী । তখন তাঁর বয়স যে ত্রিশ বৎসর ছিলো তার স্বীকারোক্তি পাওয়া যায় ধর্মিনিষ্ঠ মুসলিম লেখকদের কারো কারো লেখাতেও । বাংলাদেশের ইসলাম দরদী লেখক সৈয়দ আলী আহসান হলেন সে রকম একজন যিনি সওদার বয়স তিরিশ বলে উল্লেখ করেছেন । [ দ্রঃ মহানবী (সঃ) এঁর বিবাহ, মহম্মদ সাদাত আলী, পৃ – ৩৫, প্রকাশনা - মল্লিক ব্রাদার্স, কলকাতা ] সুতরাং এরূপ ধারণা প্রকট হয়ে ওঠা স্বাভাবিক যে মুহাম্মদ মনে মনে যে ধরণের একজন নারীর জন্যে ব্যাকুল হয়ে উঠেছিলেন সওদা ছিলেন ঠিক সে রকমই একজন নারী । কিন্তু তখন মুহাম্মদের পক্ষে একটাই বাধা ছিলো সওদাকে বিয়ে করার, তা হলো, তিনি ছিলেন সধবা, কারণ তাঁর স্বামী ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করলেও তাঁকে তালাক [ইস্তফা] দেন নি । এই বাধা কাটাতে অবশ্য আল্লাহর তৎপর হয়ে ওঠে এবং বলে যে কোনো মুসলমান যদি স্বধর্ম পরিত্যাগ করে অন্য ধর্ম গ্রহণ করে তবে আপনা হতেই তার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যাবে । সুতরাং আর কোনো সমস্যা বা বাধা থাকলো না, আল্লাহ স্বয়ং বাধা দূর করে দিলে মুহাম্মদ সওদাকে বিয়ে করে ঘরে তুলে নেন । ইসলামি শাস্ত্রে আছে বিধবা বা তালাক প্রাপ্তা নারীকে পুনরায় বিয়ে করার আগে একটা নির্দিষ্ট সময় [ইদ্দত কাল] পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় । মুহাম্মদ ততদিন অপেক্ষা করেন নি তো বটেই, উপরন্তু খাদিজার মৃত্যুর মাত্র কয়েক দিন পর গভীর শোকের আবহের মধ্যেই সওদাকে বিয়ে করে ঘরে তুলে নিয়েছিলেন । এই ঘটনা মুসলিমদের কাছে বড়োই অস্বস্তিকর ও বিব্রতকর । যাঁরা খাদিজার সঙ্গে দীর্ঘ পঁচিশ বছরের দাম্পত্য জীবনে মুহাম্মদের দ্বিতীয় বিয়ে না করার ঘটনাকে মুহাম্মদের চরিত্রের এক মহান ও উজ্জ্বল দিক বলে ভীষণ গর্ব করে থাকেন তাঁদের কাছে খাদিজার মৃত্যুর রেশ কাটতে না কাটতেই একজন যুবতী ও সধবা নারীকে বিয়ে করার ঘটনাটি স্বস্তিদায়ক বা আনন্দদায়ক হওয়া সম্ভব নয় । তাই তাঁরা এই ঘটনায় বিব্রত ও লজ্জিত না হয়ে পারেন না । ফলে তাঁদের মুহাম্মদের চরিত্র তথা ভাবমূর্তি মেরামত করার ও নতুন করে নির্মাণ করার অনিবার্য হয়ে ওঠে । আর এটা করার জন্যে স্বভাবতঃই তাঁদের প্রকৃত সত্য ঘটনাকে চাপা দেওয়া ও তথ্য বিকৃত করা গত্যন্তর থাকে না । কীভাবে কোন কোন জায়গায় তাঁরা খেয়ালখুশী মতো তথ্য বিকৃত করেছেন তা নয়ে আলোচনার পূর্বে ইরানের এ যুগের প্রখ্যাত ঐতিহাসিক আনোয়ার হেকমত কী বলেছেন তা দেখা যাক – “She was the former wife of one of the believers who had migrated to Abyssinia [Ethiopia] with her husband on Muhammad’s order. Her husband, after associating with Christians in that country, comparing his creed with Christianity, abandoned Islam and became a Christian. After his conversion, Sauda left him in Abyssinia and returned in Mecca. In accordance with Islamic jurisprudence, any Muslim man who changes his religion and thus becomes an apostate is considered divorced from his wife and she is no longer considered legally bound to him. On her return to Mecca Muhammad took her as his wife and consummated the marriage. This took place just a few days after the death of Khadija, to whom he had, according to Muslim apologists, always been faithful.” [Woman and the Koran, page – 42, 43] . মুহাম্মদের মুসলিম জীবনচরিত রচিয়তাগণ সকলেই যেটা দাবি করেছেন তা হলো মুহাম্মদ কামতাড়িত হয়ে সওদাকে বিয়ে করেন নি, একান্ত পরিস্থিতির চাপে বাধ্য হয়েই সওদাকে বিয়ে করেছিলেন । এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের লেখক মোহাম্মদ বরকাতুল্লাহ লিখেছেন , “খাদিজা বাঁচিয়া থাকিতে নবী কখনো দ্বিতীয় দার পরিগ্রহ করার কথা মনে আনেন নাই, যদিও তিনি চল্লিশ পার হইতে না হইতেই খাদিজা পঞ্চাশোর্ধ প্রৌঢ়া হইয়া পড়িয়াছিলেন । ইহার পর আরও দশ বৎসর তাঁহারা একত্রে সংসার করিয়াছেন । তখনও নবী খাদিজাকে লইয়াই সন্তুষ্ট ছিলেন, অন্য কোনও রমণীর কথা কখনো চিন্তা করেন নাই । কিন্তু এখন তিনি অত্যন্ত বিপন্ন হইয়া পড়িলেন । একজন গৃহিণী না হইলে তাহার সংসার আর চলে না ।” । [ দ্রঃ মহানবী (সঃ) এঁর বিবাহ, মহম্মদ সাদাত আলী, পৃ – ৩০, প্রকাশনা - মল্লিক ব্রাদার্স, কলকাতা ] যৌনতাড়িত হয়ে নয়, দু’টি নাবালিকা কন্যাকে প্রতিপালন করার জন্যে একজন আদর্শ পিতার দায়িত্ব পালন করতেই মুহাম্মদ সওদাকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছিলেন - এই দাবিটিকে যুক্তিগ্রাহ্য ও বিশ্বাসযোগ্য করতে হলে সওদার বয়স বাড়িয়ে তাঁকে তো প্রৌঢ়া বা বৃদ্ধা না বানালে চলে না । তাই মোহাম্মদ বরকাতুল্লাহ সওদাকে প্রৌঢ়া বানিয়ে দিয়েছেন । কেউ কেউ তো তাঁকে বৃদ্ধা বানাতেও কুন্ঠিত হন নি । ড.ওসমান গণি হলেন তেমন একজন । তিনি বলেছেন সওদার ছিলো বৃদ্ধা ও তাঁর বয়স ছিলো তখন সত্তর বছর । গণি লিখেছেন, “যখন বিবি খাদিজা মারা যান তখন হযরতের সঙ্গে তাঁর দুই অবিবাহতা কন্যা । তিনি তখন কোনও কুমারীকে বিয়ে করতে পারতেন । কিন্তু তিনি তা না করে বিয়ে করলেন বিধবা সওদাকে । যিনি ছিলেন বৃদ্ধা । স্বামী সাফরা বিন আমরের সঙ্গে আবিসিনিয়ায় এসেছিলেন । একটি পুত্রও ছিল । যার নাম ছিল আবদুর রহমান । তিনি এই বিধবাকে বিয়ে করলেন, যেহেতু তিনি ছিলেন অসহায়া মুসলমান রমণী ।” [মহানবী, পৃ – ৩৯০] এই বইয়েরই ৩৮৯ পৃষ্ঠায় ড. গণি আরো নির্দিষ্ট করে বলেছেন যে সওদার বয়স ছিলো তখন সত্তর বছর । মহানবী (সঃ) এঁর বিবাহ – গ্রন্থের লেখক মহম্মদ সাদাত আলী অবশ্য সওদাকে পৌঢ়া বা বৃদ্ধা বানাতে কিঞ্চিত কুন্ঠাবোধ করেছেন । তিনি যে হিসাব দিয়েছেন তাতে সওদা ছিলে মুহাম্মদের চেয়ে বয়সে ছোট এবং তাঁর বয়স ছিলো চুয়াল্লিশ/পঁয়তাল্লিশ বছর । তিনি লিখেছেন, “রাসূলুল্লাহ [সঃ] – এর ইন্তেকালের দীর্ঘ ২৩ বছর পর হযরত সওদা [রাঃ] ৮১ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন । মদীনার গোরস্থান জান্নাতুল বাকিতে তাঁকে দাফন করা হয় । হযরত সওদার [রাঃ] মৃত্যুর সন তারিখ নিয়ে মতভেদ আছে ।” [পৃ-৩৫] মুহাম্মদ ৬৩২ খৃষ্টাব্দে ৬২ বছর বয়সে মারা যান । এই হিসেব অনুসারে সওদা যখন ৮১ বছর বয়সে মারা যান তখন মুহাম্মদ বেঁচে থাকলে তাঁর বয়স হতো ৮৫ বছর । সধবাকে বিধবা বানাবার পিছনেও একটা উদ্দেশ্য রয়েছে । মুসলিম ঐতিহাসিক বা জীবনীকারগণ অধিকাংশই লিখেছেন যে সওদার স্বামী আবিসিনিয়ায় মারা গিয়েছিলেন । কবি গোলাম মোস্তফা লিখেছেন এ প্রসঙ্গে, “হযরত সওদা নাম্নী এক বর্ষীয়ান বিধবাকে বিবাহ করিলেন । সওদা ও তাঁর স্বামী বহু পূর্বেই ইসলামে দীক্ষিত হন এবং আবিসিনিয়ায় হিযরত করেন । কিছুকাল পরে সওদার স্বামীর মৃত্যু হয়, তখন সওদা একেবারে নিঃসহায় হয়ে পড়েন । নিরাশ্রয়া সওদাকে তাই হযরত পত্নীরূপে গ্রহণ করেন ।” [বিশ্বনবী, পৃ – ১১৬] সওদার বয়স বাড়ানো আবশ্যক ছিলো মুহাম্মদকে মহান করে চিত্রিত করার জন্যে । কিন্তু তাঁকে বিধবা বানানোর আবশ্যকতা কোথায় ? এটা আবশ্যক হয়ে ওঠে ইসলামকে ভাবমূর্তি রক্ষা করার জন্যে । সওদার স্বামী সাকরান মুহাম্মদের ভন্ডামি বুঝতে পেরে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করেছিলেন – এই ঘটনা ইসলামের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করে বৈ কি । তাই সাকরানের ইসলাম ত্যাগের ঘটনাকে চাপা দিতে এ কথা বলা আবশ্যক হয়ে ওঠে যে সাকরান মারা গিয়েছিলেন, তিনি ইসলাম ত্যাগ করে খৃষ্ট ধর্মে ফিরে যান নি । মুহাম্মদ বৃদ্ধা সওদাকে বিয়ে করেছিলেন এটা প্রমাণ করার জন্যে যে কথা বলা হয় তা হলো এই যে, সওদা বৃদ্ধা ছিলেন বলেই মুহাম্মদের ঔরসে তাঁর গর্ভে কোনো সন্তান হয় নি । আপাত দৃষ্টিতে কথাটি সকলের কাছেই সত্য বলে মনে হবে । তবুও কথাটি কিন্তু মোটেই সত্যি নয় । সওদার গর্ভে মুহাম্মদের ঔরসে কোনো সন্তান আসে নি ঠিকই, সেটা কিন্তু এ জন্যে নয় যে সওদার সন্তান ধারণ করার বয়স ছিলো না এবং তিনি বৃদ্ধা ছিলেন । সওদার গর্ভে সন্তান আসে নি সওদার বয়সজনিত কোনো ত্রুটির জন্যে মোটেই নয়, সন্তান আসে নি মুহাম্মদের শারিরীক ত্রুটির জন্যেই । খুব সম্ভবত মুহাম্মদ কোনো রোগে আক্রান্ত ছিলেন বলে সওদার গর্ভে সন্তান আসে নি । এ রকম ধারণা বা অনুমান করার যথেষ্ট কারণ আছে । কারণ, শুধু সওদাই নয়, খাদিজা ছাড়া মুহাম্মদের আর কোনো স্ত্রীর গর্ভেই সন্তান আসে নি যাদের বয়স ছিলো কয়েকজনের নয় থেকে সতেরো-আঠারো বছরের মধ্যে । সুতরাং সন্তান ধারণ করতে না পারার জন্যে মুহাম্মদের অক্ষমতাকে সওদার উপর যে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে তা নিয়ে সংশয়ের অবকাশ নেই । আর এটা নিশ্চিতভাবেই এক প্রকার জঘন্য মিথ্যাচার এবং ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ । মুহাম্মদ সওদাকে বিয়ে করার আগে দ্বিতীয় বিয়ে করার কথা মোটেই ভাবেন নি সেটা প্রমাণ করার জন্যে আর একটা গল্প বলা হয় । বলা হয় যে মুহাম্মদের কাছে সওদার হয়ে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে গিয়েছিলেন সওদার পক্ষেরই কেউ, হয় তাঁর পিতা না হয় অন্য আর কেউ । মুহাম্মদ তখন অসহায় এক বৃদ্ধা মুসলিম নারীকে উদ্ধার করার জন্যে ঐ প্রস্তাবকে প্রত্যাখান করতে পারেন নি । তিনি তাঁকে বিয়ে করে এক মহান উদারতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন । কিন্তু অসহায় এক মুসলিম বৃদ্ধা ও বিধবা নারীকে বিয়ে করে মুহাম্মদের উদারতা প্রদর্শনের গল্পটা নিছকই বানানো গল্প যার সঙ্গে সত্যের লেশ মাত্র নেই। এর প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল অল্প কিছুদিন পরেই । সওদাকে বিয়ে করার মাত্র কয়েক মাস পরেই মুহাম্মদ বিয়ে করেছিলেন আয়েষাকে, এবং তার কিছুদিন পর হফসা এবং তারপর একে একে এভাবে প্রায় দু’ডজন কম বয়সী নারীকে মুহাম্মদ বিয়ে করেছিলেন । তাছাড়া এই স্ত্রীদের বাইরেও অনেক ক্রীতদাসী ও উপপত্নী তো তাঁর ছিলোই । মুহাম্মদ যে এক অসহায়, বয়স্কা ও বিধবা নারীকে উদ্ধার করার জন্যে সওদাকে বিয়ে করেন নি তার আর একটি বড়ো প্রমাণ রয়েছে । তাঁর হারেম যখন আয়েষা, হফসা, জয়নাব, মারিয়া প্রভৃতি সুন্দরী ও কম বয়সী এক ডজনেরও বেশী স্ত্রীদের আগমন ঘটেছে তখন তিনি সওদাকে নির্মমভাবে তালাক দিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন । তালাক প্রাপ্তা অসহায়া সওদা তখন মুহাম্মদের হাতে পায়ে ধরে কান্নাকাটি করে আবেদন করেছিলেন তালাক ফিরিয়ে নেওয়ার জন্যে । মুহাম্মদ সওদার সেই করুণ আর্তিতে সাড়া দিয়ে তালাক ফিরিয়ে নিয়েছিলেন । কিন্তু সেও একটা ভীষণ অন্যায় ও অমানবিক শর্তে । এ শর্তটি ছিলো এরূপ যে সওদা বাকি জীবনে মুহাম্মদের কাছে স্ত্রী হিসেবে যা তার অধিকার তা আয়েষার অনুকূলে ছেড়ে দেবেন । বলা বাহুল্যে যে সওদা তা নত মস্তকে মেনে নিয়েছিলেন এবং মুহাম্মদও তাঁর জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সওদাকে তাঁর জীবন থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছিলেন । না, এটা কোনো বানানো অভিযোগ বা কুৎসা নয় । হাদিসে এই বিবেক বর্জিত ও অমানবিক ঘটনাটির উল্লেখ আছে । সে রকম একটি হাদিস হলো এরূপঃ “মুজাম-ই-আবুল আব্বাসের একটি মুরসাল হাদিসে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ [সঃ] হযরত সওদা [রাঃ] – এর নিকট তালাকের সংবাদটি পাঠিয়েছিলেন । তিনি হযরত আয়েষা [রাঃ] – এর নিকট বসেছিলেন । হুযূর তথায় আগমন করলে হযরত সওদা [রাঃ] তাঁকে বলেনঃ ‘যে আল্লাহ আপনার উপর স্বীয় বাণী অবতীর্ণ করেছেন এবং স্বীয় মাখলুকের মধ্যে আপনাকে স্বীয় বান্দা মনোনীত করেছেন তাঁর শপথ । আপনি আমাকে ফিরিয়ে নিন । আমার বয়স খুব বেশী হয়ে গেছে । পুরুষের প্রতি আর আমার আসক্তি নেই । কিন্তু আমার বাসনা এই যে, আমাকে যেন কিয়ামতের দিন আপনার স্ত্রীদের মধ্যে উঠান হয় ।’ রাসূলুল্লাহ [সঃ] এতে সম্মত হন এবং তাঁকে ফিরিয়ে নেন । অতঃপর তিনি বলেনঃ ‘হে আল্লাহর রাসূল [সঃ] ! আমি আমার পালার দিন ও রাত্রি আপনার প্রিয় পত্নী হযরত আয়েষা [রাঃ] –কে দান করে দিলাম ।’ ” [দ্রঃ ইবনে কাথিরের তফসীর, ৪র্থ – ৭ম খন্ড, পৃ – ৫৮৪] এই তফসীরে সওদার উক্তি হিসেবে যে কথাগুলি বলা হয়েছে তার মধ্যে দুটি কথা তাঁর মুখে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে , কথা দুটি তাঁর বয়স সম্পর্কে এবং তাঁর পালা আয়েষাকে দান করা প্রসঙ্গে । কেনো তিনি যা বলেন নি তা তাঁর মুখে বসানো হয়েছে তার বাখ্যা উপরে আলচনা করা হয়েছে । মুক্তি Friday, November 21, 2014 মুহাম্মদ কেন সওদাকে বিয়ে করেছিলে মুসলিম সমাজের ধর্মগুরুগণ ও মুহাম্মদের জীবন-চরিত রচিয়তাগণ মুহাম্মদকে নারীর ত্রাণকর্তা বলে দাবি করেন । তাঁদের আরো দাবি হলো মুহাম্মদের মতো নারীবাদী ব্যক্তিত্ব আজ পর্যন্ত কেউ জন্মগ্রহণ করে নি এবং ভবিষ্যতেও করবে না । সেই মুহাম্মদই কিন্তু অসংখ্য বিয়ে করেছিলেন । যাঁরা এটা জানেন তাঁদের [ধর্মান্ধ মুসলিমরা ছাড়া] কাছে এই দাবি কখনই সত্যি ও বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হয় না । মুহাম্মদ সম্পর্কে উক্ত মূল্যায়ন তাই মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য করে গড়ে তুলতে দাবি করা হয় যে মুহাম্মদ নিজের স্বার্থে বহুবিবাহ করেন নি । প্রথম স্ত্রী খাদিজার মৃত্যুর পর তাঁকে ইসলাম ও নারীদের স্বার্থ রক্ষা করার জন্যেই তাঁকে বহুবিবাহ বিয়ে করতে হয়েছিলো । তাঁরা বলেন যে মুহাম্মদের নারীর প্রতি আকর্ষণ যে মুহাম্মদকে বিশেষ দুর্বল বা প্রভাবিত করতে পারে নি এবং যৌনতার কারণে তিনি বহুবিবাহ করেন নি তাঁর বড়ো প্রমাণ হলো খাদিজার জীবদ্দশায় তাঁর দ্বিতীয় বিয়ে না করা । এ সব কথায় মুসলমান সমাজ প্রভাবিত তো হয়ই, প্রভাবিত হয় অমুসলিম সমাজের অসংখ্য মানুষও । ইসলামের ইতিহাস ও মুহাম্মদের জীবন-চরিত সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে এ রকম দাবি মানুষের কাছে সত্যি ও বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হয় । যাঁকে মানুষ ঈশ্বরের দূত বলে জানেন ও মানেন তাঁকে তো তাঁরা একজন কামহীন, লালসাহীন, পরোপকারী ও মহৎ চরিত্রের মানুষ বলে ভাববেন ও বিশ্বাস করবেনই । কিন্তু যেটা নির্মম বাস্তব ও সত্যি ঘটনা তাহলো এই দাবি বা যুক্তিগুলি মোটেই সঠিক নয় । ইসলাম বা অন্য কারো প্রয়জনে নয়, মুহাম্মদ অসংখ্য বিয়ে করেছিলেন তাঁর নিজের স্বার্থেই । মুহাম্মদের জীবনী খোলা মনে পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করলে তাঁর এমন একটা ছবি চোখের সামনে ভেসে ওঠে যা মানুষের কল্পনারও অতীত । কেন তিনি অসংখ্য বিয়ে করেছিলেন তার সঠিক কারণ অনুধাবন করার জন্যে জানা দরকার তাঁর দাম্পত্য জীবনের ইতিহাস এবং তাঁর প্রত্যেকটি বিয়ের প্রেক্ষাপট । মুহাম্মদের দ্বিতীয় বিয়ে হয়েছিলো সওদার । তিনি কেনো বহুবিবাহ করেছিলেন তাঁর অনেকটাই স্পষ্ট বোঝা যায় তাঁদের বিয়ের প্রেক্ষাপট ও দাম্পত্য জীবনের ইতিহাস থেকে । খাদিজার মৃত্যুর কয়েকদিন পরেই মুহাম্মদ সওদাকে বিয়ে করেন । কোরেশ বংশের লুয়াই গোত্রের জামায়া বিন কাসেম বিন আবদে সামস ছিলেন সওদার পিতা এবং খাজরাজ বংশের নাজ্জার গোত্রের শামুস বিনতে কায়েস ছিলেন তাঁর মা । সওদাদের ধর্ম পরিচয় নিয়ে মতভেদ আছে । একটি মহল মনে করে তাঁরা ছিলেন পৌত্তলিক । তবে বিশ্বাসযোগ্য ও যুক্তিগ্রাহ্য মতটি হলো তাঁরা ছিলেন খৃষ্টধর্মাবলম্বী । সওদাকে নিয়ে অন্যান্য নানা প্রশ্নেও প্রচুর মতভেদ দেখতে পাওয়া যায় । মতভেদ তাঁর বয়স নিয়ে, মুহাম্মদের সঙ্গে বিয়ের আগে তিনি সধবা ছিলেন নাকি বিধবা ছিলেন মতভেদ তা নিয়েও । আবার মুহাম্মদই তাঁকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, নাকি সওদার পিতা মুহাম্মদকে অনুরোধ করেছিলেন তাঁকে বিয়ে করার জন্যে তা নিয়েও রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন মত । এই মতভেদ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সৃষ্ট । আধুনিক যুগে যাঁরা মুহাম্মদের জীবনচরিত রচনা করেছেন, বিশেষ করে তাঁদের মধ্যে যাঁরা মুসলিম তাঁরা মুহাম্মদকে সঠিকভাবে উপস্থাপিত করা অপেক্ষা তাঁর ভাবমূর্তি নির্মাণ করার প্রয়াস করেছেনই অধিক এবং সজাগ ও সতর্ক থেকেছেন যাতে তাঁর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ না হয় এতোটুকু । ফলে প্রয়োজনে বহু ক্ষেত্রেই হয় তাঁরা বহু কিছু আড়াল করেছেন, না হয় তথ্যবিকৃতি করেছেন খেয়ালখুশি মতো । সওদার ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম ঘটে নি, মুহাম্মদের ভাবমূর্তি নির্মাণ করতে গিয়ে বলির পাঁঠা বানানো হয়েছে সওদাকে । সওদাকে নিয়ে যে সব তথ্যাদি পাওয়া যায় তার মধ্যে যেগুলি সর্বাধিক বিশ্বাসযোগ্য, গ্রহণযোগ্য ও যুক্তিগ্রাহ্য সেগুলি প্রথমে আলোচনা করা যাক । সওদা ছিলেন সধবা, তাঁর বিয়ে হয়েছিলো সাকরান [ভিন্ন মতে সাফরা বিন আমর]-এর সঙ্গে । মক্কায় যাঁরা প্রথম দিকেই মুহাম্মদের শিষ্য হয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে সওদা ও তাঁর স্বামীও ছিলেন । পাছে এই পর্বের শিষ্যরা ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে এই ভয়ে মুহাম্মদ তাঁর শিষ্যদের আবিসিনিয়া [অধুনা ইথিওপিয়া] পাঠিয়ে দেন । সেখানে অবস্থান কালে খৃষ্টানদের সংস্পর্শে থেকে সাকরানের ইসলামের প্রতি বিশ্বাস নষ্ট হয়ে যায় । তাঁর মনের মধ্যে এরূপ বিশ্বাস জন্মে যে মুহাম্মদ যা বলেছেন তা সবই মিথ্যে ও মনগড়া । ফলে তিনি ইসলাম ধর্ম পরিত্যাগ করে পুনরায় খৃষ্টান ধর্ম গ্রহণ করেন । সওদা কিন্ত সাকরানের সঙ্গে সহমত হয়ে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করতে রাজী হন নি । তিনি তাঁর স্বামীকে পরিত্যাগ করে মক্কায় ফিরে এসে সমস্ত ঘটনা বিশদে মুহাম্মদের কাছে বর্ণনা করেন । এদিকে সওদা মক্কায় ফিরে আসার মাত্র কয়েক দিন আগেই খাদিজার জীবনাসান ঘটে গিয়েছিলো । খাদিজা তাঁর গর্ভের দুটি কন্যা সন্তানকে – উম্মে কুলসুম ও ফাতেমা – রেখে মারা গিয়েছিলেন । মুহাম্মদ তখন স্বভাবতই তাঁর শিশু কন্যা দুটির প্রতিপালন করা এবং তাঁর নিজের জন্যে একজন নারীর তীব্র প্রয়োজন অনুভব করছিলেন । নারী ছাড়া এক মুহূর্ত সময় কাটানো তাঁর পক্ষে প্রায় দুঃসহ হয়ে উঠছিলো । এটা যে সত্যি ঘটনা তার প্রমাণ পাওয়া যায় খাদিজার মৃত্যুর পর তাঁর একের পর এক বিয়ে করার ঘটনায় । ফলে সওদার স্বামী সাকরানের ইসলাম ত্যাগ করা ও খৃষ্টান ধর্মে ফিরে যাওয়ার ঘটনা তাঁর কাছে বরং শাপে বর হয়েই দেখা দিয়েছিলো । আর সওদা বিবাহিতা হলেও তাঁর বয়স তো মোটেই খুব বেশী ছিলো না । তিনি তখন ত্রিশ বছরের যুবতী । তখন তাঁর বয়স যে ত্রিশ বৎসর ছিলো তার স্বীকারোক্তি পাওয়া যায় ধর্মিনিষ্ঠ মুসলিম লেখকদের কারো কারো লেখাতেও । বাংলাদেশের ইসলাম দরদী লেখক সৈয়দ আলী আহসান হলেন সে রকম একজন যিনি সওদার বয়স তিরিশ বলে উল্লেখ করেছেন । [ দ্রঃ মহানবী (সঃ) এঁর বিবাহ, মহম্মদ সাদাত আলী, পৃ – ৩৫, প্রকাশনা - মল্লিক ব্রাদার্স, কলকাতা ] সুতরাং এরূপ ধারণা প্রকট হয়ে ওঠা স্বাভাবিক যে মুহাম্মদ মনে মনে যে ধরণের একজন নারীর জন্যে ব্যাকুল হয়ে উঠেছিলেন সওদা ছিলেন ঠিক সে রকমই একজন নারী । কিন্তু তখন মুহাম্মদের পক্ষে একটাই বাধা ছিলো সওদাকে বিয়ে করার, তা হলো, তিনি ছিলেন সধবা, কারণ তাঁর স্বামী ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করলেও তাঁকে তালাক [ইস্তফা] দেন নি । এই বাধা কাটাতে অবশ্য আল্লাহর তৎপর হয়ে ওঠে এবং বলে যে কোনো মুসলমান যদি স্বধর্ম পরিত্যাগ করে অন্য ধর্ম গ্রহণ করে তবে আপনা হতেই তার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যাবে । সুতরাং আর কোনো সমস্যা বা বাধা থাকলো না, আল্লাহ স্বয়ং বাধা দূর করে দিলে মুহাম্মদ সওদাকে বিয়ে করে ঘরে তুলে নেন । ইসলামি শাস্ত্রে আছে বিধবা বা তালাক প্রাপ্তা নারীকে পুনরায় বিয়ে করার আগে একটা নির্দিষ্ট সময় [ইদ্দত কাল] পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় । মুহাম্মদ ততদিন অপেক্ষা করেন নি তো বটেই, উপরন্তু খাদিজার মৃত্যুর মাত্র কয়েক দিন পর গভীর শোকের আবহের মধ্যেই সওদাকে বিয়ে করে ঘরে তুলে নিয়েছিলেন । এই ঘটনা মুসলিমদের কাছে বড়োই অস্বস্তিকর ও বিব্রতকর । যাঁরা খাদিজার সঙ্গে দীর্ঘ পঁচিশ বছরের দাম্পত্য জীবনে মুহাম্মদের দ্বিতীয় বিয়ে না করার ঘটনাকে মুহাম্মদের চরিত্রের এক মহান ও উজ্জ্বল দিক বলে ভীষণ গর্ব করে থাকেন তাঁদের কাছে খাদিজার মৃত্যুর রেশ কাটতে না কাটতেই একজন যুবতী ও সধবা নারীকে বিয়ে করার ঘটনাটি স্বস্তিদায়ক বা আনন্দদায়ক হওয়া সম্ভব নয় । তাই তাঁরা এই ঘটনায় বিব্রত ও লজ্জিত না হয়ে পারেন না । ফলে তাঁদের মুহাম্মদের চরিত্র তথা ভাবমূর্তি মেরামত করার ও নতুন করে নির্মাণ করার অনিবার্য হয়ে ওঠে । আর এটা করার জন্যে স্বভাবতঃই তাঁদের প্রকৃত সত্য ঘটনাকে চাপা দেওয়া ও তথ্য বিকৃত করা গত্যন্তর থাকে না । কীভাবে কোন কোন জায়গায় তাঁরা খেয়ালখুশী মতো তথ্য বিকৃত করেছেন তা নয়ে আলোচনার পূর্বে ইরানের এ যুগের প্রখ্যাত ঐতিহাসিক আনোয়ার হেকমত কী বলেছেন তা দেখা যাক – “She was the former wife of one of the believers who had migrated to Abyssinia [Ethiopia] with her husband on Muhammad’s order. Her husband, after associating with Christians in that country, comparing his creed with Christianity, abandoned Islam and became a Christian. After his conversion, Sauda left him in Abyssinia and returned in Mecca. In accordance with Islamic jurisprudence, any Muslim man who changes his religion and thus becomes an apostate is considered divorced from his wife and she is no longer considered legally bound to him. On her return to Mecca Muhammad took her as his wife and consummated the marriage. This took place just a few days after the death of Khadija, to whom he had, according to Muslim apologists, always been faithful.” [Woman and the Koran, page – 42, 43] . মুহাম্মদের মুসলিম জীবনচরিত রচিয়তাগণ সকলেই যেটা দাবি করেছেন তা হলো মুহাম্মদ কামতাড়িত হয়ে সওদাকে বিয়ে করেন নি, একান্ত পরিস্থিতির চাপে বাধ্য হয়েই সওদাকে বিয়ে করেছিলেন । এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের লেখক মোহাম্মদ বরকাতুল্লাহ লিখেছেন , “খাদিজা বাঁচিয়া থাকিতে নবী কখনো দ্বিতীয় দার পরিগ্রহ করার কথা মনে আনেন নাই, যদিও তিনি চল্লিশ পার হইতে না হইতেই খাদিজা পঞ্চাশোর্ধ প্রৌঢ়া হইয়া পড়িয়াছিলেন । ইহার পর আরও দশ বৎসর তাঁহারা একত্রে সংসার করিয়াছেন । তখনও নবী খাদিজাকে লইয়াই সন্তুষ্ট ছিলেন, অন্য কোনও রমণীর কথা কখনো চিন্তা করেন নাই । কিন্তু এখন তিনি অত্যন্ত বিপন্ন হইয়া পড়িলেন । একজন গৃহিণী না হইলে তাহার সংসার আর চলে না ।” । [ দ্রঃ মহানবী (সঃ) এঁর বিবাহ, মহম্মদ সাদাত আলী, পৃ – ৩০, প্রকাশনা - মল্লিক ব্রাদার্স, কলকাতা ] যৌনতাড়িত হয়ে নয়, দু’টি নাবালিকা কন্যাকে প্রতিপালন করার জন্যে একজন আদর্শ পিতার দায়িত্ব পালন করতেই মুহাম্মদ সওদাকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছিলেন - এই দাবিটিকে যুক্তিগ্রাহ্য ও বিশ্বাসযোগ্য করতে হলে সওদার বয়স বাড়িয়ে তাঁকে তো প্রৌঢ়া বা বৃদ্ধা না বানালে চলে না । তাই মোহাম্মদ বরকাতুল্লাহ সওদাকে প্রৌঢ়া বানিয়ে দিয়েছেন । কেউ কেউ তো তাঁকে বৃদ্ধা বানাতেও কুন্ঠিত হন নি । ড.ওসমান গণি হলেন তেমন একজন । তিনি বলেছেন সওদার ছিলো বৃদ্ধা ও তাঁর বয়স ছিলো তখন সত্তর বছর । গণি লিখেছেন, “যখন বিবি খাদিজা মারা যান তখন হযরতের সঙ্গে তাঁর দুই অবিবাহতা কন্যা । তিনি তখন কোনও কুমারীকে বিয়ে করতে পারতেন । কিন্তু তিনি তা না করে বিয়ে করলেন বিধবা সওদাকে । যিনি ছিলেন বৃদ্ধা । স্বামী সাফরা বিন আমরের সঙ্গে আবিসিনিয়ায় এসেছিলেন । একটি পুত্রও ছিল । যার নাম ছিল আবদুর রহমান । তিনি এই বিধবাকে বিয়ে করলেন, যেহেতু তিনি ছিলেন অসহায়া মুসলমান রমণী ।” [মহানবী, পৃ – ৩৯০] এই বইয়েরই ৩৮৯ পৃষ্ঠায় ড. গণি আরো নির্দিষ্ট করে বলেছেন যে সওদার বয়স ছিলো তখন সত্তর বছর । মহানবী (সঃ) এঁর বিবাহ – গ্রন্থের লেখক মহম্মদ সাদাত আলী অবশ্য সওদাকে পৌঢ়া বা বৃদ্ধা বানাতে কিঞ্চিত কুন্ঠাবোধ করেছেন । তিনি যে হিসাব দিয়েছেন তাতে সওদা ছিলে মুহাম্মদের চেয়ে বয়সে ছোট এবং তাঁর বয়স ছিলো চুয়াল্লিশ/পঁয়তাল্লিশ বছর । তিনি লিখেছেন, “রাসূলুল্লাহ [সঃ] – এর ইন্তেকালের দীর্ঘ ২৩ বছর পর হযরত সওদা [রাঃ] ৮১ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন । মদীনার গোরস্থান জান্নাতুল বাকিতে তাঁকে দাফন করা হয় । হযরত সওদার [রাঃ] মৃত্যুর সন তারিখ নিয়ে মতভেদ আছে ।” [পৃ-৩৫] মুহাম্মদ ৬৩২ খৃষ্টাব্দে ৬২ বছর বয়সে মারা যান । এই হিসেব অনুসারে সওদা যখন ৮১ বছর বয়সে মারা যান তখন মুহাম্মদ বেঁচে থাকলে তাঁর বয়স হতো ৮৫ বছর । সধবাকে বিধবা বানাবার পিছনেও একটা উদ্দেশ্য রয়েছে । মুসলিম ঐতিহাসিক বা জীবনীকারগণ অধিকাংশই লিখেছেন যে সওদার স্বামী আবিসিনিয়ায় মারা গিয়েছিলেন । কবি গোলাম মোস্তফা লিখেছেন এ প্রসঙ্গে, “হযরত সওদা নাম্নী এক বর্ষীয়ান বিধবাকে বিবাহ করিলেন । সওদা ও তাঁর স্বামী বহু পূর্বেই ইসলামে দীক্ষিত হন এবং আবিসিনিয়ায় হিযরত করেন । কিছুকাল পরে সওদার স্বামীর মৃত্যু হয়, তখন সওদা একেবারে নিঃসহায় হয়ে পড়েন । নিরাশ্রয়া সওদাকে তাই হযরত পত্নীরূপে গ্রহণ করেন ।” [বিশ্বনবী, পৃ – ১১৬] সওদার বয়স বাড়ানো আবশ্যক ছিলো মুহাম্মদকে মহান করে চিত্রিত করার জন্যে । কিন্তু তাঁকে বিধবা বানানোর আবশ্যকতা কোথায় ? এটা আবশ্যক হয়ে ওঠে ইসলামকে ভাবমূর্তি রক্ষা করার জন্যে । সওদার স্বামী সাকরান মুহাম্মদের ভন্ডামি বুঝতে পেরে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করেছিলেন – এই ঘটনা ইসলামের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করে বৈ কি । তাই সাকরানের ইসলাম ত্যাগের ঘটনাকে চাপা দিতে এ কথা বলা আবশ্যক হয়ে ওঠে যে সাকরান মারা গিয়েছিলেন, তিনি ইসলাম ত্যাগ করে খৃষ্ট ধর্মে ফিরে যান নি । মুহাম্মদ বৃদ্ধা সওদাকে বিয়ে করেছিলেন এটা প্রমাণ করার জন্যে যে কথা বলা হয় তা হলো এই যে, সওদা বৃদ্ধা ছিলেন বলেই মুহাম্মদের ঔরসে তাঁর গর্ভে কোনো সন্তান হয় নি । আপাত দৃষ্টিতে কথাটি সকলের কাছেই সত্য বলে মনে হবে । তবুও কথাটি কিন্তু মোটেই সত্যি নয় । সওদার গর্ভে মুহাম্মদের ঔরসে কোনো সন্তান আসে নি ঠিকই, সেটা কিন্তু এ জন্যে নয় যে সওদার সন্তান ধারণ করার বয়স ছিলো না এবং তিনি বৃদ্ধা ছিলেন । সওদার গর্ভে সন্তান আসে নি সওদার বয়সজনিত কোনো ত্রুটির জন্যে মোটেই নয়, সন্তান আসে নি মুহাম্মদের শারিরীক ত্রুটির জন্যেই । খুব সম্ভবত মুহাম্মদ কোনো রোগে আক্রান্ত ছিলেন বলে সওদার গর্ভে সন্তান আসে নি । এ রকম ধারণা বা অনুমান করার যথেষ্ট কারণ আছে । কারণ, শুধু সওদাই নয়, খাদিজা ছাড়া মুহাম্মদের আর কোনো স্ত্রীর গর্ভেই সন্তান আসে নি যাদের বয়স ছিলো কয়েকজনের নয় থেকে সতেরো-আঠারো বছরের মধ্যে । সুতরাং সন্তান ধারণ করতে না পারার জন্যে মুহাম্মদের অক্ষমতাকে সওদার উপর যে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে তা নিয়ে সংশয়ের অবকাশ নেই । আর এটা নিশ্চিতভাবেই এক প্রকার জঘন্য মিথ্যাচার এবং ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ । মুহাম্মদ সওদাকে বিয়ে করার আগে দ্বিতীয় বিয়ে করার কথা মোটেই ভাবেন নি সেটা প্রমাণ করার জন্যে আর একটা গল্প বলা হয় । বলা হয় যে মুহাম্মদের কাছে সওদার হয়ে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে গিয়েছিলেন সওদার পক্ষেরই কেউ, হয় তাঁর পিতা না হয় অন্য আর কেউ । মুহাম্মদ তখন অসহায় এক বৃদ্ধা মুসলিম নারীকে উদ্ধার করার জন্যে ঐ প্রস্তাবকে প্রত্যাখান করতে পারেন নি । তিনি তাঁকে বিয়ে করে এক মহান উদারতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন । কিন্তু অসহায় এক মুসলিম বৃদ্ধা ও বিধবা নারীকে বিয়ে করে মুহাম্মদের উদারতা প্রদর্শনের গল্পটা নিছকই বানানো গল্প যার সঙ্গে সত্যের লেশ মাত্র নেই। এর প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল অল্প কিছুদিন পরেই । সওদাকে বিয়ে করার মাত্র কয়েক মাস পরেই মুহাম্মদ বিয়ে করেছিলেন আয়েষাকে, এবং তার কিছুদিন পর হফসা এবং তারপর একে একে এভাবে প্রায় দু’ডজন কম বয়সী নারীকে মুহাম্মদ বিয়ে করেছিলেন । তাছাড়া এই স্ত্রীদের বাইরেও অনেক ক্রীতদাসী ও উপপত্নী তো তাঁর ছিলোই । মুহাম্মদ যে এক অসহায়, বয়স্কা ও বিধবা নারীকে উদ্ধার করার জন্যে সওদাকে বিয়ে করেন নি তার আর একটি বড়ো প্রমাণ রয়েছে । তাঁর হারেম যখন আয়েষা, হফসা, জয়নাব, মারিয়া প্রভৃতি সুন্দরী ও কম বয়সী এক ডজনেরও বেশী স্ত্রীদের আগমন ঘটেছে তখন তিনি সওদাকে নির্মমভাবে তালাক দিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন । তালাক প্রাপ্তা অসহায়া সওদা তখন মুহাম্মদের হাতে পায়ে ধরে কান্নাকাটি করে আবেদন করেছিলেন তালাক ফিরিয়ে নেওয়ার জন্যে । মুহাম্মদ সওদার সেই করুণ আর্তিতে সাড়া দিয়ে তালাক ফিরিয়ে নিয়েছিলেন । কিন্তু সেও একটা ভীষণ অন্যায় ও অমানবিক শর্তে । এ শর্তটি ছিলো এরূপ যে সওদা বাকি জীবনে মুহাম্মদের কাছে স্ত্রী হিসেবে যা তার অধিকার তা আয়েষার অনুকূলে ছেড়ে দেবেন । বলা বাহুল্যে যে সওদা তা নত মস্তকে মেনে নিয়েছিলেন এবং মুহাম্মদও তাঁর জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সওদাকে তাঁর জীবন থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছিলেন । না, এটা কোনো বানানো অভিযোগ বা কুৎসা নয় । হাদিসে এই বিবেক বর্জিত ও অমানবিক ঘটনাটির উল্লেখ আছে । সে রকম একটি হাদিস হলো এরূপঃ “মুজাম-ই-আবুল আব্বাসের একটি মুরসাল হাদিসে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ [সঃ] হযরত সওদা [রাঃ] – এর নিকট তালাকের সংবাদটি পাঠিয়েছিলেন । তিনি হযরত আয়েষা [রাঃ] – এর নিকট বসেছিলেন । হুযূর তথায় আগমন করলে হযরত সওদা [রাঃ] তাঁকে বলেনঃ ‘যে আল্লাহ আপনার উপর স্বীয় বাণী অবতীর্ণ করেছেন এবং স্বীয় মাখলুকের মধ্যে আপনাকে স্বীয় বান্দা মনোনীত করেছেন তাঁর শপথ । আপনি আমাকে ফিরিয়ে নিন । আমার বয়স খুব বেশী হয়ে গেছে । পুরুষের প্রতি আর আমার আসক্তি নেই । কিন্তু আমার বাসনা এই যে, আমাকে যেন কিয়ামতের দিন আপনার স্ত্রীদের মধ্যে উঠান হয় ।’ রাসূলুল্লাহ [সঃ] এতে সম্মত হন এবং তাঁকে ফিরিয়ে নেন । অতঃপর তিনি বলেনঃ ‘হে আল্লাহর রাসূল [সঃ] ! আমি আমার পালার দিন ও রাত্রি আপনার প্রিয় পত্নী হযরত আয়েষা [রাঃ] –কে দান করে দিলাম ।’ ” [দ্রঃ ইবনে কাথিরের তফসীর, ৪র্থ – ৭ম খন্ড, পৃ – ৫৮৪] এই তফসীরে সওদার উক্তি হিসেবে যে কথাগুলি বলা হয়েছে তার মধ্যে দুটি কথা তাঁর মুখে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে , কথা দুটি তাঁর বয়স সম্পর্কে এবং তাঁর পালা আয়েষাকে দান করা প্রসঙ্গে । কেনো তিনি যা বলেন নি তা তাঁর মুখে বসানো হয়েছে তার বাখ্যা উপরে আলচনা করা হয়েছে । --- বুদ্ধির মুক্তি 02.11.2014
Posted on: Fri, 02 Jan 2015 20:46:51 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015