রিমির ছোটবোন ইমি আজকে প্রথম রোজা রেখেছে। সেহেরির সময় কেও তাকে ডাকেনি। ইমি বুদ্ধি করে আপুর মোবাইলে এলার্ম সেট করে রেখেছিল। তার প্রিয় এংরি বার্ডস এর টোন। ভোররাতে রিমি এংরি বার্ডসের টোন শুনে অবাক হয়েছে। আরো অবাক হল যখন ছোটবোন ইমি চোখ কচলাতে কচলাতে বললো- "আমিও রোজা রাখবো" ইমি ভেবেছিল রোজা রাখা খুব সহজ। তাছাড়া আম্মু তার পিছনে ভাত নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করবেনা। ভাত খেতে তার একটুও ভাল লাগেনা। তবে সমস্যা হল আজকে বাসায় আইসক্রিম আছে। রোজার কারণে ইমি আইসক্রিম খেতে পারছেনা। ফ্রিজের আশেপাশে ঘুরঘুর করছে। ইমি! -হ্যাঁ আপু? তুই না রোজা? -হ্যাঁ। ফ্রিজের সামনে কী? -আপু আমি খেলতেছি। মিথ্যা বলবিনা। তুই চুরি করে আইসক্রিম খাইছিস। -না আপু আমি খাইনি। যদি মিথ্যা বলিস তাহলে তোর জিভ খসে যাবে। তুই জিভ ছাড়া কথা বলতে পারবিনা। ক্লাসের পড়া পারবিনা। টিচার কান ধরে দাঁড়া করিয়ে রাখবে। রিমি আপুর কথায় ইমি ভয় পেল। সে লুকিয়ে এক স্কুপ আইসক্রিম খেয়ে ফেলেছে। ভেবেছিল কেও দেখেনি তাই রোজা ভাঙেনি। এখন মনে হচ্ছে মিথ্যা বলার কারণে জিভ খসে যাবে। ইমি আয়নার সামনে নিজের জিভ দেখে এল। জিভ সত্যি সত্যি ছোট হয়ে গেছে। ইমি ভয় পায়। আপুকে স্যরি বলতে হবে। আপু আই এম স্যরি। -তুই আইসক্রিম খাইছিস? হ্যাঁ আপু। একটু খাইছি। -তোর রোজা ভেঙ্গে গেছে। কেন আপু? -বাতাস ছাড়া কিছু খেলে রোজা ভেঙ্গে যায়। তবে তুই ভুল করে খাইছিস দেখে বেঁচে গেলি। থ্যাংক ইউ। -তোকে এমন দেখাচ্ছে কেন? ক্ষুদা লাগছে? হ্যাঁ আপু। -ক্ষুদার কথা ভাবলেও রোজা ভেঙ্গে যায়। আপু আমি স্যরি। -আমার কাছে স্যরি বলে লাভ নেই। আমি বাতাস খাওয়া সাধারণ রোজাদার। তোর রোজা ভেঙ্গে গেছে। যা ভাগ এখন। রিমি আপু মিথ্যা বলেছে। সে মোটেও বাতাস খাওয়া সাধারণ রোজাদার না। বাইরে এখন বৃষ্টি হচ্ছে। রিমি আপু বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে। মুখ হাঁ করে বৃষ্টি খাচ্ছে। ইমি জানে বৃষ্টি খেলে রিমি আপুর রোজা ভাংবেনা। রিমি আপু বৃষ্টিতে ভেজার সময় কাঁদে। কেন কাঁদে জানতে চাইলে বলে- বৃষ্টির পানি শরীরে ঢুকে গেলে বিপদ তাই চোখ দিয়ে বের করে দিতে হয়। রোজা না ভাঙার পিছনে নিশ্চয় এমন কোন কারণ আছে। বড়দের কাছে সবসময় অন্যরকম কারণ থাকে। এসব কারণে তারা অনেক সুবিধা পায়, অনেক কষ্টও পায়। ইমি বুঝতে পারে।।
Posted on: Sat, 13 Jul 2013 07:08:35 +0000