**লাল ভালবাসা** টিএসসি - TopicsExpress



          

**লাল ভালবাসা** টিএসসি জনতা ব্যাংকের সামনে৷আবিরের জন্য একঘন্টা হল ঠায় দাড়িয়ে সিথি ৷মনে মনে দুনিয়ার সব গালি দিচ্ছে বান্দরটাকে৷ আবির আসছে এখানে এমবিএ এডমিশনের ফরম জমা দিতে ৷ওকে বললো পনেরো মিনিটেই ফিরতেছে৷কিন্তু এতক্ষনেও না ফেরায় এত গালি খাচ্ছে বেচারা আবির ৷যদিও হন্তদন্ত হয়ে এখন আসার পথে ও৷না শুনলেও বুঝতে পারছে যে ওর চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করছে দাড়িয়ে দাড়িয়ে সিথি৷ আবির আর সিথি সেই স্কুলের বন্ধু৷অনেক ভাল বন্ধু দুজন৷আবির গ্রাজুয়েশন শেষ করে এমবিএ করার জন্য চেষ্টা করছে আর এজন্যই টিএসসিতে আসছে আর সিথি আবিরকে এ ব্যাপারে হেল্প করার জন্য আসছিল এখানে৷কিন্তু ওকে কষ্ট না দেয়ার জন্য আবির একাই সব করে ফিরছে এখন তবে ও বুঝতে পারেনি কারো জন্য অপেক্ষা করাও বিশাল কষ্টের ব্যাপার৷ ঢাবিতে পড়ায় হল থেকে সোজা চলে আসছিলো সিথি৷আবিরের সাথে আরেকটা বিষয় শেয়ার করার ছিল ওর৷ দৌড়াতে দৌড়াত্ অবশেষে ফিরলো আবির৷ -এতক্ষনে তোর আসার সময় হল বান্দর? -সরি সরি, কি করবো বল,ওএমআর ফরম ফিলাপ করতে করতেই আমি শেষ,তাও আবার তিনজনের ৷ -ও তুমি এখানে বন্ধুসেবা করছিলা আমাকে দাড়া করাই রেখে,গালটা সামনে আনতো সোনা, একটু লাল করে দেই পাজিটা ,মেজাজ তিরিক্ষি রেখেই বললো সিথি৷ -এই নে কর,তাও যদি তোর লাল মেজাজের তিরিক্ষি ভাবটা কমে৷ -যা,আজ থাক ,আমার ক্যাম্পাসে আসছিস,মানুষজন কি বলবে!,চল ক্যাফেটেরিয়ায়,কথা আছে অনেক -হুম চল,ওহ আজ তোকে তো সেই লাগছে রে! -এখন কিন্ত সত্যিই মাইর খাবি হারামি - আচ্ছা বাপু, আর কমু না, অক্কে চল৷ ক্যাফেটেরিয়ায় এসে এক কোনে বসলো দুজন৷ কিন্তু এক কোনে বসলে কি হবে! দুজনের খুনসুটি লেগেই রইলো৷ কথায় কথায় আবির জিজ্ঞেস করলো, তারপর বল তোর নতুন প্রেমের খবর কি? শিথি প্রেমের প্রসংগ উঠতেই পুরা লাল হয়ে গেলো৷থাক থাক আর লাল হতে হবে না, জল কতদূর গড়াইছে সেটা বল -ও দেখা করবে বলছে -কসকি! কবে? কখন? কোথায়? আমারে কিন্তু নিবি লগে! -শুক্রবার,পরশু এহহ,ওনারে নিবে লগে,করমু ডেটিং ,তোরে নিমু কা? -আচ্ছা ঠিক আছে, নিতে হবে না,তোদের প্রাইভেসিতে আমি হাত দিমু না৷ শিথি ভাবছিলো আবির জোর করে বলবে হয়তো যে ও আসবেই কিন্তু ওর এমন রিপ্লাই আশা করেনি৷তবে এ বিষয়ে আর কিছু বললো না দুজন৷ একটা ছেলে মেয়ের ক্লোজ বন্ধুত্বে তৃতীয় পক্ষ আসায় যা হয়, তাই হচ্ছে ওদের কিছুদিন ধরে৷আগে অনেক চ্যাট হত ফেবুতে দুজনার৷তবে কমা শুরু করলো যেদিন থেকে শিথির সাথে রিফাতের কথা শুরু হয়েছে ৷রিফাতের সাথে সিথির ফোনে পরিচয়৷কোন এক বড় ভাইর কাছে দিয়ে নাকি রিফাত নম্বর পেয়েছে৷ কোন বড় ভাই দিছে এ ব্যাপারে শিথি কয়েকদিন জোরাজুরি করলেও রিফাত ঘুরিয়ে নিত বলে পরে আর শিথি জানতে চায়নি ৷কারন ও শুধু অবাক হত যে রিফাত ওর সম্পর্কে এত কিছু জানে কেমনে! মাঝেমাঝে মনে হয় ও নিজেও নিজেরে জানে না যতটা রিফাত জানে৷এগিয়ে চলে ওদের বন্ধুত্ব৷কথার ফুলঝুড়ি মেলে বসতো সারারাত৷ এর মাঝে কখন যে ওদের বন্ধুত্বের গাঢ়তা কোনদিকে চলে গেছে তা ওরা নিজেরাই জানতো না৷মাঝে মাঝে এ ব্যাপারে আবিরের সাথে কথা হত,আবির ওকে উৎসাহ দিত বেশ ৷আবিরের সাথে মোবাইলে কথা হত না, যা কথা সব ফেসবুকে হত ৷ পরদিন শুক্রবার৷দেখা হবে প্রথম শিথি আর রিফাতের ৷শিথি ঠিক করে রেখেছে ওই দিনই ওর মনের কথা বলে ওদের ভালবাসার সূচনা করবে৷সারারাত ঘুম হল না সিথির৷রাতে চ্যাটে বললো আবিরকে রিফাতের সাথে প্রথম দেখা হবার কথা৷বললো ও আশা করছে রিফাতও মনে মনে হয়তো ওর মতই মনের কথা বলার জন্য এ দিনটি বেছে নিবে ৷ইস ও যদি সাদা গোলাপ নিয়ে আসতো ! মনের গোপন কথাটা আবিরকে বলে দিল৷৷আবির বললো যে,দেখ আসবে হয়তো,এত যখন মনের টান,টেলিপেথি না হয়ে যায়ই না৷ধ্যাৎ ! বললেও মনে মনে খুশি হয়ে গেলো সিথি৷ ভদ্রতা করে আবিরকে একবার আসতেও বললো সকালে৷আবির জানালো সকালে এমবিএ এডমিশন টেস্ট আছে৷ যদিও সিথি বললো যে ওদের দেখা হবার সময় বিকেলে ,বিকেলে আয় না হলে,তবু এড়িয়ে গেলো আবির৷ পরদিন বিকেল তিনটা৷ কলা ভবনের সামনে বটতলা৷ আধাঘন্টা আগেই এসে বসে আছে সিথি৷শুক্রবার দুপুরবেলা,আশেপাশে তরুন তরুনী তেমন নেই৷অপেক্ষা প্রহর যেনো কাটছে না৷ হঠাৎ পিঠে টোকা পড়তেই চমকে ফিরে তাকালো সিথি৷যতটা আশা নিয়ে তাকালো ততটাই নিরাশ হল সিথি৷ সেই বান্দরটা৷ আবির৷ -কিরে তুই ?আসবি না বললি? -না ভাবলাম কোন গুন্ডাপান্ডার খপ্পরে পড়িস একটা দায়িত্ব আছে না! বন্ধুই তো বন্ধুরে দেখবে, না? -হৈছে আর দেখন লাগবো না,তুই একটু দূরে যা না, প্লিজ৷তোর সাথে দেখলে তো আমার ভালবাসা তীরে এসে তরী ডুববার মত অবস্থা হবেরে! সিথির কাঁদো কাঁদো অবস্থা দেখে আবির বললো -ঠিক আছে ঠিক আছে,আমি দূরেই যাচ্ছি,একদম দৃষ্টিসীমার বাইরে৷ -থ্যাংকু দোস্ত৷ আবির চলে গেলো ৷ রিফাতের আসার সময় পনেরো মিনিট পেড়িয়ে গেলো৷ফোন দিবে কিনা ভাবতেছে৷ আরো পনেরো মিনিট পর দিবে ভাবলো৷কিছুক্ষন পর ফোনটা হাতে নিয়ে রিফাতের নম্বরে ডায়াল করলো৷ রিং বাজছে৷সিথির মনে হল কাছেই কোথাও কল বাজতেছে,পিছনে ফিরে তাকাতেই শুনলো কবিতার সেই লাইনগুলো যা মাঝে মাঝে রিফাত বলতো হবে কি আমার তুমি ? নিবে কি হাতদুটি আমার? পারবে কি সইতে ঝড় কালবৈশাখী যা প্রেমের পথে আসে বারবার হবে কি তুমি আমার ? ভালবাসি বড় ভালবাসি তবে বলবে কি এবার? কবিতা শেষ হলেও সামনে দেখলো আবার সেই আবির বান্দরটা৷ সিথির মুখ ফসকে বেড়ুলো,তুই আবার আইছস বান্দর? তুই তো আমার তরী… ……বলতে বলতে সিথির মনে পড়লো এইমাত্র আবিরের আওড়ানো কবিতা খানা আর যখন দেখলো আবিরের হাতে কতগুলো সাদাগোলাপ৷ বিস্ময়ে হা হয়ে গেলো ৷ কি বলবে বুঝতে পারছে না সিথি! তাই আবির আবার বললো, কি ভালবাসিস কিনা বলবি না? সিথি বিষ্ময়ে তবু কিছু বললো না৷ এবার আবির বিরক্ত ভাবে বললো কিছু তো বল,রিফুজ না হলে একসেপ্ট!! এভাবে কতক্ষন দাড়াই থাকুম৷ এবার সিথি মুখ খুললো,বললো দাড়া বলমুনে ভালবাসি কিনা তার আগে তোর কান দুইটারে ভালবাসা শিখাই নেই! !!!! এভাবেই কানের মত আচানক ভালবাসা হয়ে গেলো লাল!! লিখা :- Tariq Islam #কাঠপেন্সিল
Posted on: Mon, 27 Oct 2014 13:50:30 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015