সাভারে মাদ্রাসায় - TopicsExpress



          

সাভারে মাদ্রাসায় পুলিশের তাণ্ডবে আহত ১০, শিক্ষকসহ গ্রেফতার ৯ ঢাকার সাভারে একটি মাদ্রাসায় পুলিশ তাণ্ডব চালিয়ে ভাংচুর ও তছনছ করেছে। গ্রেফতার করেছে এক শিক্ষকসহ ৯ জনকে। পুলিশের হামলায় আহত হয়েছে অন্তত ১০ এতিম শিক্ষার্থী। পুলিশের হামলায় পরীক্ষা দিতে পারেনি কয়েকজন শিক্ষার্থী। এদিকে আটক এক শিক্ষার্থীর পরিবার থানা হাজতে তার স্বজনকে নির্যাতনের অভিযোগ করেছে।সোমবার দিবাগত গভীর রাতে সাভারের সিন্দুরিয়া এলাকার ‘দারুল ইসলাম ফাজিল মাদ্রাসায়’ এ হামলা চালায় পুলিশ। তবে পুলিশ মাদ্রাসায় হামলা ভাংচুরের কথা অস্বীকার করলেও সেখান থেকে গ্রেফতারের কথা স্বীকার করেন। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে দারুল ইসলাম ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষক গোলাম কিবরিয়া, আলীম পরীক্ষার্থী বিল্লাল হোসেন, নাজমূল হোসেন, জাহান উদ্দিন, মো. মাসুদ, মুজাহিদুল ইসলাম তুষার, ফাজিল পরীক্ষার্থী দুলাল হোসেন, মো. বায়োজিত ও মো. রাসেল। এদের মধ্যে আলীম পরীক্ষার্থী মো. মুজাহিদ ওই মাদ্রাসার শিক্ষক মো. মাইন উদ্দিনের পুত্র।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গভীর রাতে চার গাড়ী পুলিশ আচমা সিন্দুরিয়া এলাকার দারুল ইসলাম ফাজিল মাদ্রাসাটি ঘিরে ফেলে। পরে পুলিশ সন্ত্রাসী কায়দায় মাদ্রাসার তিনটি হোস্টেলে ঘুমন্ত শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালিয়ে ব্যাপক নির্যাতন করে। পরে দ্বিতীয় তলায় মাদ্রাসার অফিস কক্ষের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে। অফিসের আলমারীর তালা ভেঙ্গে মূল্যবান কাগজপত্র তছনছ করে। সেলফে থাকা কোরআন শরীফ ও হাদিসের বই নিচে ফেলে দেয়। আলমারিতে থাকা আলিম ও দাখিলের মূল সার্টিফিকেট ও মূল্যমান কাগজপত্র ছিঁড়ে ফেলে। আবার অনেকের সার্টিফিকেট ও কাগজপত্র পুলিশ নিয়ে যায়। এছাড়া পুলিশ ছাত্রাবাসেও হামলা চালিয়ে ছাত্রদের ট্রাংক ভাংচুর ও তছনছ করেছে। মারধর করেছে মাদ্রাসার এতিম শিশুদের। পুলিশের হামলায় তখন ১০ এতিম শিশু আহত হয়। এদের মধ্যে গুরুতর আহত ফাজিল শ্রেণীর ছাত্র মতিউর রহমানকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশের নির্যাতনে তার হাত ভেঙ্গে গেছে। প্রায় দুই ঘণ্টা ব্যাপী পুলিশ পুরো মাদ্রাসায় তাণ্ডবলীলা চালায়। দারুল ইসলাম ফাজিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা নুরুল হক বলেন, পুলিশ সন্ত্রাসী কায়দায় মাদ্রাসার হোস্টেলে ঘুমন্ত শিক্ষার্থীদের উপর নির্যাতন করেছে। মারধর করেছে এতিম শিক্ষার্থীদের। মাদ্রাসার অফিস কক্ষ, টিচার্স কমন রুমের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে তছনছ করেছে পুলিশ। অনেকের মূল সার্টিফিকেট ও মূল্যবান কাগজপত্র ছিঁড়ে ফেলেছে। শিক্ষার্থীদের ট্রাংক থেকে মোবাইল ফোন, নগদ টাকা পুলিশ হাতিয়ে নিয়েছে বলেও তিনি জানান। আলিম টেস্ট পরীক্ষার ৫ জন ছাত্রের বই-খাতা কেড়ে নিয়েছে পুলিশ। ফলে ওই ৫ ছাত্র আজকের (মঙ্গলবার) পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। তাছাড়া পুলিশের নারকীয় এ তাণ্ডবের কারণে আতঙ্কে হোস্টেল থেকে শিক্ষার্থীরা চলে গেছে বলেও তিনি জানান। এক শিক্ষক ও ৮ শিক্ষার্থীকে পুলিশ কোন অভিযোগ ছাড়াই গ্রেফতার করেছে বলে তিনি দাবী করেন। এদিকে অভিযানে নেতৃত্বদানকারী ঢাকা জেলার সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) রাসেল শেখ বলেন, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপরই রাতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে সাভার বাজার বাস স্ট্যান্ডে ঝটিকা মিছিল থেকে হাতবোমা বিস্ফোরণ ঘটে। তখন ওই মাদ্রাসার ছাত্র মুজাহিদকে শিমূলতলা বাসস্ট্যান্ডের নিকট গ্রেফতার করা হয়। পরে রাতেই তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সিন্দুরিয়া এলাকায় দারুল ইসলাম ফাজিল মাদ্রাসায় অভিযান চালিয়ের একটি কক্ষ থেকে এক শিক্ষকসহ আরও ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তবে মাদ্রাসায় হামলা, ভাংচুর ও কাগজপত্র ছিঁড়ে ফেলা কিংবা তছনছ করার কথা অস্বীকার করেন এ পুলিশ কর্মকর্তা।এদিকে শিমূলতলা এলাকা থেকে গ্রেফতারকৃত মাদ্রাসার ছাত্র মুজাহিদের বড় ভাই আব্দুল্লাহ আল মামু অভিযোগ করে বলেন, মুজাহিদ সাভারের একটি কোচিং সেন্টার থেকে কোচিং শেষ করে বাসায় ফেরার পথে শিমূলতলা এলাকায় গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিল তখনই পুলিশ তাকে আটক করে নিয়ে যায়। তিনি বলেন, সাভার মডেল থানায় তাকে দেখতে গিয়েছিলাম পুলিশ দেখতে দেয়নি। পুলিশ রাতে মুজাহিদকে নির্যাতন করেছে। সে ঠিকমতো দাড়াতে পারছে না। সূত্র: ইনকিলাব
Posted on: Tue, 26 Nov 2013 10:42:29 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015