সৌর বিদ্যুৎ - পর্ব- - TopicsExpress



          

সৌর বিদ্যুৎ - পর্ব- ৫: ব্যাটারীঃ --------------------------- যে কোন সোলার সিস্টেমের গোপন রহস্য এর ব্যাটারী। সৌর শক্তির মত নবায়নযোগ্য শক্তি (Renewable Energy) মূলত সংগ্রহ করে জমা রাখতে হয়, পরে ব্যবহার করা হয়। জমা রাখার একমাত্র মাধ্যম হল ব্যাটারী। অনেক ধরনের ব্যাটারী রয়েছে এর মধ্যে এক ধরনের ব্যাটারী রয়েছে, যেগুলো খুব দ্রুত রিচার্জ হতে পারে আবার খুব দ্রুত একসাথে বেশী পরিমানে চার্জ সরবরাহ করতে পারে। এদের ব্যবহার করা হয় যানবাহন/মেশিনারি স্টার্ট দেয়ার কাজে। বিভিন্ন যানবাহনে বা মেশিনারীতে স্টার্ট দেয়ার জন্য একসাথে অনেক চার্জ দরকার হয়, পরে আবার দ্রুত ব্যাটারী চার্জ করার ব্যবস্থা থাকে। সৌর শক্তির সিস্টেমে সোলার প্যানেল থেকে তুলনামুলক ধীরে ব্যাটারী রিচার্জ হয় এবং এই চার্জ অল্প অল্প করে দীর্ঘ সময় ধরে খরচ করা হয়, এই জন্য দরকার হয় ডীপ সাইকেল ব্যাটারী। নবায়নযোগ্য শক্তি সঞ্চয়ে তাই ডীপ সাইকেল ব্যাটারী ব্যবহার করা হয়। চার্জ-ডিসচার্জ এর দিক থেকে দুই ধরনের ব্যাটারী- ১) ফাস্ট চার্জিং ব্যাটারী (Fast Charging Battery = FCB) ২) ডীপ-সাইকেল ব্যাটারী (Deep Cycle Battery = DCB) সাধারন গাড়ির ব্যাটারী খুব দ্রুত চার্জ-ডিসচার্জ হয় তাই এগুলো নবায়নযোগ্য শক্তিতে ব্যবহার করলে ধীর গতিতে এই ব্যাটারীর চার্জ রিকভার হয় না, ফলে অল্প দিনে ব্যাটারী কার্য ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে , তখন পুরাতন ব্যাটারী পাল্টে নতুন ব্যাটারী লাগাতে হয়। অন্যদিকে, ডীপ সাইকেল ব্যাটারী ধীর গতিতে ক্রমশ চার্জ-ডিসচার্জ হয়। এই ব্যাটারী ক্রমশ ডিসচার্জ (Gradually discharged) হয়ে সঞ্চয় ক্ষমতার ৫০% পর্যন্ত ডিসচার্জ হতে পারে এবং ধীর গতিতে ক্রমশ রিচার্জ (Gradual recharge) হয়। ঠিকমত যত্ন নিলে একটি ডীপ-সাইকেল ব্যাটারী ১০ বছর পর্যন্ত টিকে থাকে। নবায়নযোগ্য শক্তি সঞ্চয়ে যে ডীপ-সাইকেল ব্যাটারী ব্যবহার করা হয় তাকে ২ভাগে ভাগ করা যায় ১) ফ্লাডেড লেড-এসিড ব্যাটারী (Flooded Lead-Acid = FLA Battery) এবং ২) সীল্ড মেইন্টেন্যান্স ফ্রী ব্যাটারী (Sealed Maintenance Free = SMF Battery) । FLA ব্যাটারীতে ফ্লুইড ইলেক্ট্রোলাইট (তরল এসিড) ব্যবহার করা হয়। ব্যবহারে এসিডের তরলের পরিমান কমে যায় তখন আবার ডিস্টিল্ড ওয়াটার দিতে হয়। এর রক্ষনাবেক্ষন এর দরকার হয়। তরলের পরিমান পরিমাপ ও রক্ষনাবেক্ষনের জন্য এসিডের প্রকোষ্ঠ গুলিতে ঢাকনা বিশিষ্ট ছিদ্র থাকে। ইত্যাদি। ভাল কোয়ালিটির ব্যাটারি হলে ১২ বছর পর্যন্ত নিশ্চিন্তে ব্যাবহার করা যায়। সীল্ড ব্যাটারীতে নন-ফ্লুইড ইলেক্ট্রোলাইট ব্যবহার করা হয়। বিষ্ফোরন জনিত দুর্ঘটনা এড়াতে এদের প্রকোষ্ঠ গুলিতে সেফটি ভাল্ব (ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা) দিয়ে সীল করে দেয়া হয়। এই ব্যাটারীর ইলেক্ট্রোলাইট পরিমাপ ও রক্ষনাবেক্ষন এর প্রয়োজন হয় না। ডিস্টিল্ড ওয়াটার দিতে হয় না। সীল্ড ব্যাটারী আবার দুই ধরনের – ১) Absorbent Glass Mat (AGM) ব্যাটারী এবং ২) Gel Cell ব্যাটারী । AGM ব্যাটারীতে হাই পারফরমেন্স প্লেট ও ইলেক্ট্রোলাইট সহ AGM টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়। Gel cell ব্যাটারীতে হাই পারফরমেন্স প্লেট সহ অতি বিশুদ্ধ ফিউমড সিলিকা ও সালফিউরিক এসিড থিক্সোট্রপিক পেস্ট(Gel) ব্যবহার করা হয়। জেল ব্যাটারী AGM ব্যাটারী অপেক্ষা অনেক বেশী বাড়তি দক্ষতা প্রদান করে। তাই সীল্ড ব্যাটারীর মধ্যে জেল ব্যাটারী বেশী ভাল। SMF ব্যাটারীর মধ্যে বিভিন্ন কোয়ালিটি অনুযায়ী আয়ুষ্কাল বিভিন্ন। কোয়ালিটি অনুযায়ী এদের লাইফ সাইকেল ও টেকসই মেয়াদ ভিন্ন ভিন্ন হয়। যেমনঃ ১, ২, ৩, ৫, ১০ বছর ইত্যাদি। ভাল কোয়ালিটির ব্যাটারি হলে ১০ বছর পর্যন্ত নিশ্চিন্তে ব্যাবহার করা যায়। সাধারনত গাড়িতে, আই.পি.এস. এ এসিড ব্যাটারী বহুল ব্যবহৃত হয়। বাজারে রহিম-আফরোজ, ভলভো, হ্যামকো প্রভৃতি কোম্পানীর ব্যাটারী পাওয়া যায়। লীড-এসিড ব্যাটারী 2V, 4V, 6V, 8V, 12V এর হয়। বহুল ব্যবহারের কারনে এটি 6V, 12V এই বেশী পাওয়া যায়। 20Ah, 40Ah, 65Ah, 80Ah, 100Ah, 120Ah, 150Ah, 200Ah আরো বিভিন্ন এম্পিয়ারে পাওয়া যায়। এই ব্যাটারীগুলো সাধারনত প্লেট এর হিসাবে বেশী পরিচিত। যেমনঃ 9Ps, 11Ps, 17Ps, 21Ps, 25Ps, 27Ps ইত্যাদি। প্লেট এর হিসাবের কিছু গুরুত্ব রয়েছে। তবে কাজের জন্য মুলত এম্পিয়ার এর হিসাব করা হয়। বাজারে বিভিন্ন কোম্পানীর বিভিন্ন নামে SMF ব্যাটারী পাওয়া যায়। সাধারনত 2V, 6V, 12V এর বেশী পাওয়া যায়। এছাড়াও 2V থেকে শুরু করে 12V পর্যন্ত বিভিন্ন ভোল্টের পাওয়া যায়। 1Ah, 1.5Ah, 4.2Ah, 7.2Ah, 9Ah, 12Ah, 18Ah, 24Ah 30Ah, 40Ah, 50Ah, 65Ah, 70Ah, 80Ah, 90Ah, 100Ah, 120Ah, 150Ah, 200Ah, 250Ah, 300Ah, 400Ah, 600Ah, 800Ah, 1000Ah, 1500Ah, 2000Ah, 2500A আরো বিভিন্ন এম্পিয়ারে পাওয়া যায়। এছাড়া, লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারীও ব্যবহার করা হয়। তবে এই ব্যাটারীগুলো সাধারনত 3.7V হয়, যা পোর্টেবল সোলার ডিভাইসে ব্যবহার হয়। এইগুলো সাধারনত 0.1A থেকে 4.4A পর্যন্ত বেশী সহজলভ্য। বর্তমানে মোবাইল, আইপড, ট্যাব, ল্যাপটপ এইসবের ব্যাটারী হল লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারী। এই ব্যাটারীর সবচেয়ে উল্ল্যেখযোগ্য দিক হল, চার্জ ধারন করার তুলনায় এর সাইজ অনেক ছোট, আর খুব কম সময়ে ফুল চার্জ হয়। ভাল চার্জার হলে মাত্র এক থেকে দুই ঘন্টায় চার্জ হয়ে যায়। এই ব্যাটারি দিয়ে সোলার আইটেম তৈরী করে দেখানো হবে। সোলার পাওয়ার সিস্টেমে সোলার প্যানেলের ওয়াট ও ব্যাটারী সমন্ময় খুবি গুরুত্বপুর্ন। সোলার সিস্টেম যত ভোল্টের করা হবে তত ভোল্টের ব্যাটারী ব্যাবহার করতে হবে। সোলার প্যানেলের ওয়াট বা এম্পিয়ার যত বেশি হবে, ব্যাটারী চার্জের জন্য তত বেশী এম্পিয়ার কারেন্ট সরবরাহ দিতে পারবে। আর ব্যাটারীর এম্পিয়ার যত বেশী হবে, তত বেশী এম্পিয়ার কারেন্ট সঞ্চয় করে রাখতে পারবে এবং সাপ্লাই দিতে পারবে। ব্যাটারীর তুলনায় সোলার এর চার্জিং এম্পিয়ার অনেক কম হলে আর লোড বেশী হলে ব্যাটারী ফুল চার্জই হতে পারবে না। ফলে একসময় ব্যাটারী ড্যামেজ হয়ে যাবে। আবার, সোলার এর এম্পিয়ার বেশি হলে তা ব্যবহার না হলে যেমন শক্তির অপচয় হবে তেমনি অহেতুক বড় প্যানেলের জন্য সিস্টেমের খরচ বেশী হবে। তাই যে কোন সোলার সিস্টেমের গোপন রহস্য হল – সোলার প্যানেল এর চার্জিং এম্পিয়ার, ব্যাটারীর সঞ্চয় এম্পিয়ার, লোড এম্পিয়ার এই তিনটি ক্ষেত্রে সমন্ময়। নোটঃ কোন ব্যাটারী ৫০% এর বেশী ডিসচার্জ করা ঠিক নয়। এর বেশী ডিসচার্জ হলে সোলার প্যানেল দিয়ে চার্জ রিকভার হয় না। অন্যান্য পর্বঃ এইখানে https://facebook/groups/552698051454905/
Posted on: Fri, 04 Oct 2013 19:00:12 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015