১৯৯০ সালে নাসার - TopicsExpress



          

১৯৯০ সালে নাসার মহাকাশযান ভয়েজার -১ আমাদের সৌরজগতের সীমানা অতিক্রম করে। তখন বিখ্যাত মহাকাশবিজ্ঞানী কিংবদন্তী কার্ল সেগান নাসাকে অনুরোধ করেছিলেন যে সৌরজগতের বাইরে থেকে পৃথিবীকে কেমন দেখায় তার একটা ছবি প্রকাশ করতে। ছবিতে সেই ক্ষুদ্র বিন্দুকে সেগান নাম দিয়েছিলেন the pale blue dot.এরপর এই ছবিতে তিনি তার কিছু দর্শন জুড়ে দেন। ইংরেজীতে লেখা সেই অসাধারণ কথাগুলোর অনুবাদ পেলাম আজকে, এটা করেছেন অনুবাদকদের আড্ডা নামের একটি সংস্থা।আমার মনেহয় সবারই এটা পড়ে দেখা উচিৎ। এই সুবিশাল দূরত্ব থেকে, পৃথিবীকে তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু মনে হওয়ার কথা না। কিন্তু আমাদের জন্য ব্যাপারটা একটু ভিন্ন। বিন্দুটির দিকে আরেকবার তাকান - এটাই পৃথিবী, আমাদের বসত, আমরা এটাই। এখানেই ওরা সবাই, যাদের আমরা ভালোবেসেছি, যতজনকে আমরা চিনি। যাদের যাদের কথা আমরা শুনেছি, তাদের সবাই এখানেই তাদের জীবন কাটিয়েছে। আমাদের সারা জীবনের যত দুঃখ কষ্ট, হাজার হাজার ধর্ম, আদর্শ আর অর্থনৈতিক মতবাদ, যত শিকারী আর লুন্ঠনকারী, যত সাহসী-ভীরু, সভ্যতার নির্মাতা- ধ্বংসকারী,যত রাজা আর প্রজা, যত প্রেমিক-প্রেমিকা, যত বাবা মা, স্বপ্নে বিভোর শিশু, আবিষ্কারক, পরিব্রাজক, যত নীতিবান শিক্ষক, দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ, যত সুপারস্টার, যত জাঁহাবাজ নেতা, মানব ইতিহাসের সকল সাধু আর পাপী, সবাই তাদের জীবন কাটিয়েছে আলোয় ভেসে থাকা ধূলোর ঐ ছোট্টো কণাটিতে। অসীম এই মহাবিশ্বে...... খুব ছোট একটা মঞ্চ...... আমাদের এই পৃথিবীটা। ভাবুন তো, সেনাপতি আর দিগ্বিজয়ী বীরের দল কত রক্ত ঝরিয়েছে - ক্ষুদ্র এই বিন্দুর...... ক্ষুদ্র একটা অংশ জয় করে, মহান হবার আশায়। ভাবুন তো, সেই সীমাহীন হিংস্রতার কথা; ছোট্টো এই বিন্দুর আরো ছোটো এক প্রান্তের মানুষ যা ঘটিয়েছে, অন্য প্রান্ত জয় করবে বলে। কি দ্বন্দ্ব তাদের নিজেদের মাঝে! রক্তের জন্য তাদের কী পিপাসা! কি প্রকট তাদের জিঘাংসা! আমাদের নাক-উঁচু ভাব, আমাদের কাল্পনিক অহমিকা, ব্রহ্মাণ্ডের মধ্যে আমরাই সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে আছি, সেই বিভ্রম...... প্রশ্নবিদ্ধ হয় এই ঝাপসা নীল আলো দিয়ে। আমাদের এই গ্রহ... মহাজাগতিক অন্ধকারের মধ্যে নিতান্তই ক্ষুদ্র একটা বিন্দু। আমাদের অজ্ঞানতায়, এই বিশালতায়, এমন কোনো ইঙ্গিত নেই যে কেউ আসবে...... আমাদেরকে নিজেদের হাত থেকে রক্ষা করতে। আমাদের জানামতে পৃথিবীই একমাত্র বাসযোগ্য গ্রহ। অন্য কোথাও, অন্তত নিকট ভবিষ্যতে, আমাদের প্রজাতি আস্তানা গাড়তে পারবেনা। ভ্রমণ? সম্ভব। বসতি, এখনো নয়। ভাল লাগুক আর নাই লাগুক, এই মুহূর্তে পৃথিবীই আমাদের একমাত্র আশ্রয়। বলা হয়ে থাকে জ্যোতির্বিজ্ঞান আমাদের বিনয়ী করে তোলে, চরিত্র গঠনে সাহায্য করে। মানুষের অহংকারকে ধূলিস্যাৎ করার জন্য দূর থেকে তোলা ছোট্টো পৃথিবীর এই ছবিটার চেয়ে ভালো উদাহরণ আর হয় না। আমার মতে, এটা মনে করিয়ে দেয়, কতটা জরুরী পরস্পরের প্রতি আরেকটু সহানুভুতিশীল হওয়া; এই ছোট্টো নীল বিন্দুটাকে সংরক্ষণ করা, উপভোগ করা। আমাদের জানামতে, এটাই তো একমাত্র বাড়ি, তাইনা? ফ্রম -অনুবাদকদের আড্ডা। #রবিনহুড
Posted on: Sun, 02 Nov 2014 12:56:55 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015