#৩৮ সামি ভাইয়ের - TopicsExpress



          

#৩৮ সামি ভাইয়ের ডায়েরী ১২/০৪/২০১৭ রাত ১১টা ৪৭ কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম তার ঠিক নেই। ঘুমটা এই মাত্র ভেঙ্গে গেল। এখন যা দেখলাম তাতে ভয় পেলাম। সবাই ঘুম অথচ আমাদের রুমের দরজা খোলা! উঠলাম দরজা বন্ধ করতে। দেখলাম মিদুলের মোবাইলটার স্ক্রিন একবার জ্বলছে আরেকবার নিভছে। সেটা বন্ধ করতে গিয়ে দেখি মিদুলের মোবাইলে একটা মেসেজ। আরেকজনের মেসেজ পড়া উচিৎ না তবুও পড়ে ফেললাম। মেসেজটা ছিল এরকম- “ইরফান তোমাকে খুব দেখতে চাচ্ছে! আমরা সাগরপাড়েই আছি। চলে এস এখনি............“ আমার টনক নড়লো। দেখলাম মিদুল রুমে নেই! মেসেজটা পড়ে আমার বুকটা শূন্য হয়ে গেল আতংকে। এতরাতে মিদুল সাগর পাড়ে চলে গেছে! ওর যদি কোন বিপদ হয়? আর রুমে থাকলাম না। আমিও বের হয়ে গেলাম মিদুলকে খুজতে। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে কিছুক্ষন পর পর। সেটার আলোই আমার পথ চলার একমাত্র সম্বল। চারপাশ অনেক অন্ধকার। মিদুলের ওপর অনেক রাগ লাগছে আমার। এতরাতে তার বের হওয়াটা কি উচিৎ হয়েছে? কিছুক্ষন খোজার পর আশানুরুপ ফল পেলাম। একটু দুরেই মনে হচ্ছে কে যেন দাঁড়িয়ে আছে। মিদুল বলে চেচাতে চেচাতে তার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। অথচ কোন সাড়া পাচ্ছিনা। আরেকটু কাছে গিয়ে থমকে গেলাম। বুঝতে পারলাম এটা মিদুল না! একটা নারীমুর্তি! আমি থমকে গেছি বলে সেই নারীমুর্তি আমার দিকে এগিয়ে আসছে। সে যখন একেবারে আমার মুখোমুখি এসে দাড়ালো তখন একবার বিদ্যুৎ চমকালো। আর সেই আলোতে যার মুখ দেখলাম তাকে এই মুহুর্তে দেখার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। এটা সিমি। যার সাথে আমার এই সেন্টমার্টিনে পরিচয়। ইংরেজিতেই তার সাথে কথা বলতে লাগলাম। অনুবাদ ঠিক এইরকমঃ আমিঃ সিমি! এই অদ্ভুত পরিবেশে কি করছো এত রাতে? সিমিঃ আমার প্রশ্নের উত্তর খুজতে! আমিঃ আজব তো! কিসের প্রশ্ন! সিমিঃ code is 777706660660444 আর I warn u 2nd time. ওরা দুজন কোথায়? সিমির কথার মাথামুন্ডু কিছু না বুঝে হাসলাম উচ্চস্বরে। আমিঃ এগুলো কি বলছো! আমি তো কিছুই বুঝতে পারছিনা। এমন সময় কারো মুখ চাপা আর্তনাদ শুনলাম! সিমির পেছনে ঝোপের আড়ালে কিছু একটা দেখলাম। সেখানে ছুটে গিয়ে দেখলাম একটা ছোট বাচ্চা পড়ে আছে! তার সাথেই হাত-মুখ বাধা দুজন ছটফট করছে! তাদের একজনকে চিনতে পেরে আমার সারা শরীর ভয়ে শিউরে উঠলো। এটা আমাদের মিদুল! হতবাকের মত পেছন ঘুরে সিমির দিকে তাকাবো বলে উঠে দাড়াচ্ছি। সে সুযোগটা পেলাম না। মাটিতে লুটিয়ে পড়লাম! সিমি আমাকে ভারী কিছু দ্বারা মাথায় আঘাত করেছে! অনেক কষ্টে মোবাইলে ইমরানের মোবাইল নম্বরটা বের করি। তারপর ডায়াল বাটনে চাপ দেওয়া মাত্রই সিমি মোবাইলে লাথি হাকালো! মোবাইলটা কই হারালো বুঝলাম না! তারপর সব শক্তি দিয়ে উঠে দাড়ানোর চেষ্টা করলাম। কিন্তু আবারো পড়ে গেলাম সিমির আঘাতে! সিমির হাতে ছুরির মত কিছু একটা দেখতে পেলাম। মনে হল এটাই আমাকে সিমির করা শেষ আঘাত। তারপর সে আমাকে যতই আঘাত করুক সেটা আর অনুভব করবোনা। কারন তখন আমি মৃত! সিমির ছুরিটা আমার দিকে এগিয়ে আসছে- সিমিঃ আমার সেই ছবি গুলো তোলার জন্য ধন্যবাদ। এই নাও এর বখশিস। কথাটা শেষ হতেই সিমির পেছনে কে যেন ডাক দিল- -Hey Black Angel! “code is 777706660660444“ is behind you! And I warn you last time leave my brother. গলার স্বরটা চেনা মনে হলেও চিনলাম না। সিমির হাতের টর্চ লাইট তার ওপর পড়তেই দেখতে পেলাম ধুসর রংয়ের একটা জ্যাকেট পরা কেউ দাঁড়িয়ে আছে। মুখটা দেখা যাচ্ছে না জ্যাকেটের হুড দিয়ে মুখ ঢেকে রাখার কারনে। সিমি আর আমার দিকে এগোলোনা। সেই অদ্ভুত নামের মানুষটার দিকে গেল। আমার মাথায় প্রচন্ড চিনচিনে ব্যাথা শুরু হল। নাহ! অজ্ঞান হওয়া যাবেনা। যে করেই হোক নিজেকে ঠিক রাখতে হবে। এদিকে সিমি আর সেই মানুষটা কোথায় হারিয়ে গেল বুঝলাম না। মিদুলরা তখনো ছটফট করছে। এখনো বুঝতে পারছিনা এখানে কি হতে চলছে! অনেক কষ্টে মিদুলের দিকে হামাগুড়ি দিয়ে এগিয়ে গেলাম। ওর কাছাকাছি গিয়েই পড়ে গেলাম। আর নড়তে পারছিনা। আমার সব শক্তি ফুরিয়ে এসেছে! এমন সময় শুনতে পেলাম কারো ছুটে আসার শব্দ। কেউ এসে আমাকে জড়িয়ে ধরেছে! মাথাটা কিছুটা উচু করে তাকালাম তার দিকে। দেখতে পেলাম ইমরানকে। মুখ ফুটে বের হল একটা স্বস্তির হাসি। তারপর কি হল আর সেটা আমার খেয়াল নেই। মনে হল আমি সংজ্ঞা হারিয়েছি। #৩৯ ১৩/০৪/২০১৭ রাত ১২টা ২৬ রুমের মধ্যে হঠাৎ চেচামেচিতে ঘুমটা ভেঙ্গে গেল! সবাই ছোটা ছুটি করছে! আতঙ্কে আমার শরীর ঠান্ডা হয়ে গেছে। কি হল হঠাৎ? সবাই এমন কেন করছে? করিডোরে বের হয়ে ঐশীকে দেখলাম! সে কাপছে! ঐশীর কাছ থেকে জানতে চাইলাম কি হয়েছে! সে আমতা আমতা করে বলতে গিয়েও পারছেনা। অনেক কষ্টে সে যা বললো তাতে আমার গলা শুকিয়ে গেল- মিদুল ভাই আর সামি ভাই রুম থেকে লাপাত্তা হয়ে গেছে! একটু আগে ইমরান ভাইয়ের মোবাইলে সামি ভাইয়ের কল আসে! কিন্তু কোন কথা শোনা যায়নি। এর থেকে অনুমান করা যায় যে সামি ভাইরা নিশ্চয় কোন বিপদে পড়েছে! এখন ইমরান ভাইরা বের হয়েছে সামি ভাইদের খুজতে। আমিও দাঁড়ালাম না। বেরিয়ে পড়লাম। এবার যা শুনলাম তা আরো ভয়ানক! সামি ভাইকে আহত অবস্থায় পাওয়া গেছে! তার সাথে হাত-মুখ বাধা অবস্থায় পাওয়া গেছে মিদুল ভাইকে! তার সাথে তিন্নি আর ইরফান! মিদুল ভাইয়ের কাছে যা শুনলাম সেটা অকল্পনীয়- মিদুল ভাই রুম থেকে বের হয় তিন্নি আপুর মেসেজ পেয়ে। তিন্নি আপু যেখানে মিদুল ভাইকে আসতে বলে সেখানে গিয়ে তিন্নি আপু আর ইরফানকে হাত পা বাধা অবস্থায় পায়! তাদেরকে উদ্ধার করতে গিয়ে মিদুল ভাই শিকার হন সিমির আকস্মিক হামলার। অথচ সিমি কেন এমন করছে কেউ বুঝতে পারেনা। তারপর ঠিকই একই জায়গায় হামলার শিকার হয় সামি ভাই! তারপর কে যেন এসে সিমিকে পাকড়াও করে। এতটুকুই। সামি ভাই অজ্ঞান হয়ে আছে! তাদেরকে নিয়ে আমরা দ্রুত হোটেলে ফিরে আসছি। আশরাফ ভাইরা পুলিশের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে। এই অল্প সময়ে কি হয়ে গেল কিছুই বুঝছিনা। আমাদের আজ ফিরে যাওয়ার দিন। আর এসব কি হয়ে গেল? এখনো মাথা কাজ করছেনা! বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। বৃষ্টি হচ্ছে গুড়ি গুড়ি।
Posted on: Sun, 31 Aug 2014 19:22:06 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015