৭১‘র মুক্তিযুদ্ধে - TopicsExpress



          

৭১‘র মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সৈন্যদের লুণ্ঠন! ~~~~~~~~~~~~~~~~~ মিত্রবাহিনীর ছদ্মাবরণে ভারতীয় সৈন্যরা সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে অবস্থানকালে অবাধে লুণ্ঠন চালায়। পাকিস্তানি সৈন্যদের সমর্পিত সকল সমরাস্ত্র তারা সীমান্তের বাইরে পাচার করে। সর্বাত্মক যুদ্ধকালে বাংলাদেশের সীমান্ত নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। এ সুযোগে টয়লেট সামগ্রী থেকে শুরু করে সবই লুণ্ঠন করে তারা নিজ দেশে নিয়ে যায়। ভারতে বিদেশী সামগ্রী আমদানির সুযোগ সীমিত থাকায় ভারতীয় সৈন্যরা বাংলাদেশ থেকে বিদেশী সামগ্রী নিজ দেশে নিয়ে যেতে প্রলুদ্ধ হয়। কী পরিমাণ সম্পদ তারা লুণ্ঠন করেছিল তার সঠিক পরিসংখ্যান বের করা কঠিন। অটল জীপ ও শক্তিমান ট্রাকে করে লুণ্ঠিত মালামাল ভারতে পাচার করা হয়। ৯ নম্বর সেক্টর কমান্ডার মেজর জলিল বাধা দেয়ায় তাকে গ্রেফতার করে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়। বাংলাদেশে ভারতীয় সৈন্যদের লুণ্ঠনের ব্যাপারে ‘বাংলাদেশ পাস্ট এন্ড প্রেজেন্ট’ পুস্তকে সালাহউদ্দিন আহমদ লিখেছেন, After the war was over, India was criticised for overstaying in the Chittagong Hill Tracts. It was also alleged that the Indian army removed by convey of trucks large amounts of arms, ammunitions and machinery from Bangladesh. As a result, tension and suspicion grew up against India’s policy towards Bangladesh, apprehending that India wanted to turn Bangladesh into a client state and not a self-respecting independent state.’ অর্থাৎ ‘যুদ্ধ শেষ হয়ে যাবার পর ভারতীয় সৈন্যরা পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিক সময় অবস্থান করতে থাকায় ভারত সমালোচিত হতে থাকে। অভিযোগ করা হয় যে, ভারতীয় সেনাবাহিনী ট্রাক বহরে করে বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র ও সাজসরঞ্জাম সরিয়ে নিয়ে যায়। ফলে ভারত বাংলাদেশকে আত্মমর্যাদাশালী রাষ্ট্রের পরিবর্তে একটি তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায় এমন একটি আশংকা থেকে বাংলাদেশের প্রতি ভারতীয় নীতির বিরুদ্ধে উত্তেজনা ও সংশয় সৃষ্টি হয়।’ মুক্তিযোদ্ধা ও লেখক জনাব জয়নাল আবেদীনের ‘র’ এন্ড বাংলাদেশ’ শিরোনামে লেখা একটি বইয়েও বাংলাদেশে ভারতীয় সৈন্যদের লুন্ঠনের বর্ণনা দেয়া হয়েছে। বইটিতে তিনি লিখেছেন, ÔThe real Indian face lay bare after the surrender of Pakistani forces, when I saw the large scale loot and plunder by the Indian Army personnel. The soldiers swooped on everything they found and carried them away to India. Curfew was imposed on our towns, industrial bases, ports, cantonments, commercial centres and even residential areas to make the looting easier.They lifted everything from ceiling fans to military equipment, utensils to water taps. Thousands of Army vehicles were used to carry looted goods to India.’ অর্থাৎ ‘পাকিস্তানি সৈন্যদের আত্মসমর্পণের পর ভারতীয় সৈন্যদের ব্যাপক লুটতরাজ দেখতে পেয়ে ভারতের প্রকৃত চেহারা আমার কাছে নগ্নভাবে ফুটে উঠে। ভারতীয় সৈন্যরা যা কিছু দেখতে পেতো তার উপর হুমড়ি খেয়ে পড়তো এবং সেগুলো ভারতে বহন করে নিয়ে যেতো। লুটতরাজ সহজতর করার জন্য তারা আমাদের শহর, শিল্প স্থাপনা, বন্দর, সেনানিবাস, বাণিজ্যিক কেন্দ্র এমনকি আবাসিক এলাকায় কারফিউ জারি করে। তারা সিলিং ফ্যান থেকে শুরু করে সামরিক সাজসরঞ্জাম, তৈজষপত্র ও পানির টেপ পর্যন্ত উঠিয়ে নিয়ে যায়। লুণ্ঠিত মালামাল ভারতে পরিবহনের জন্য হাজার হাজার সামরিক যান ব্যবহার করা হয়।’ বইটির আরেকটি অংশে তিনি লিখেছেন, Through the independence war of Bangladesh India was immensely benefited economically, militarily, strategically and internationally. So India involved in our war of liberation for its own interest, not for us.’ অর্থাৎ ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ভারত অর্থনৈতিক, সামরিক, কৌশলগত ও আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক লাভবান হয়েছে। এ কারণে দেশটি তার নিজের স্বার্থে আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সম্পৃক্ত হয়, আমাদের স্বার্থে নয়।’ বাংলাদেশে ভারতীয় সৈন্যদের লুন্ঠনের ব্যাপারে কানাডা প্রবাসী আজিজুল করিম ‘হোয়াই সাচ এন্টি-ইন্ডিয়ান ফিলিংস এমং বাংলাদেশী?’ শিরোনামে এক নিবন্ধে ১৯৭৪ সালের ডিসেম্বরে প্রকাশিত ভারতীয় মাসিক ‘অনিক’-এর রিপোর্টের উদ্ধৃতি দিয়ে লিখেছেন, ‘ভারতীয় সৈন্যদের লুণ্ঠিত মালামালের মূল্য ছিল প্রায় ১ শ’ কোটি মার্কিন ডলার।’ বিএনপি সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব হিসাবে দায়িত্ব পালনকারী ড. কামাল সিদ্দিকী ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭২ সালে তিনি খুলনার ডিসি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। সে সময় তিনি বাংলাদেশ ও ভারত উভয় সরকারের কাছে লিখিত পত্রে বলেন, ভারতীয় সৈন্যরা তার জেলা থেকে কোটি কোটি টাকা মূল্যের যন্ত্রপাতি, যানবাহন ও সাজসরঞ্জাম স্থানান্তর করে ফেলেছে। মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী অভিযোগ করেছিলেন যে, ভারতীয় সৈন্য ও চোরাচালানীরা বাংলাদেশ থেকে ৬ হাজার কোটি রুপি মূল্যের সামগ্রী ভারতে পাচার করেছে। আর বর্তমানে সীমান্তে ফেলানীর মতো নিরীহ মেয়েদেরকে হত্যা করে তারকাঁটায় ঝুলিয়ে রাখছে! সকল আন্তর্জাতিক নদীর পানি অন্যায়ভাবে বাঁধ দিয়ে বন্ধ করছে!! এদেশের যুব সমাজকে ধ্বংস করার জন্য সীমান্ত জুড়ে মদ আর ফেন্সিডিলের কারখানা তৈরি করে, দেশ জুড়ে মাদকের বন্যা বইয়ে দেয়ার পরও যারা লুন্ঠনকারী ভারতকে বন্ধুপ্রতীম মনে করে! তাদের কেবল আমার একটি কথাই বলতে ইচ্ছে হয়। আপনাদের চেতনা এত বলদ কেন, এত অন্ধ কেন??
Posted on: Fri, 05 Dec 2014 13:18:24 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015