আমাকে একজন ভিণধর্মি বললেন, “হিন্দু ধর্মের সবই ভাল, এরা মানব জাতি তথা সমস্ত প্রাণীকুলের জন্য কল্যাণ কামনা করে, এদের ভিণধর্মিদের প্রতি সহনশীলতা আছে, বিশাল ঐতিহ্য ও সংস্কৃ্তির ভান্ডারের অধিকারি এরা, ইত্যাদি ইত্যাদি । কিন্তু হিন্দুরা যা’কে তা’কে ঈশ্বর ভেবে বসেন, এটা আপত্তিকর । বেশিরভাগ হিন্দুদের ঈশ্বর সম্পর্কে ধারণা অস্পষ্ট । তাই তারা একজন সাধক মহাপুরুষকেও ঈশ্বর ভেবে পুজা করেন বা সমান আসনে অধিষ্ঠিত করেন” । ওই ব্যাক্তির কথাগুলো কতটা যৌক্তিক বা অযৌক্তিক তা আপনারাও জানেন । আমি দেখেছি, প্রকৃতই বেশিরভাগ হিন্দুদের মধ্যে ঈশ্বর সম্বন্ধে ধারণা ও প্রশ্ন খুবই সীমিত । আমি বহু শিক্ষিত কিংবা ধার্মিক ব্যাক্তিকেও এ বিষয়ে প্রশ্ন করেছি, তারা আমাকে আশানুরুপ উত্তর বা ব্যাখ্যা দিতে পারননি । হিন্দুদের মধ্যে প্রায়ই দেখা যায়, তারা বাবা লোকনাথ, অনুকুল চন্দ্র, গণেশ পাগল ইত্যাদি মনিষীকেই ঈশ্বর জ্ঞানে পুজা করেন । এদের প্রত্যেকেই এক একজন সাধক পুরুষ, এরা জীবদ্দশাতেই মোক্ষ লাভ করেছেন মাত্র । মোক্ষ লাভই প্রতিটি মনুষ্য জীবনের মূল লক্ষ, তাই বলে মোক্ষলাভকারী ব্যাক্তি ঈশ্বর হয়ে যান না । বা তাকে ঈশ্বর জ্ঞানে পুজাও করা যায় না । সে পুজায় বরং অজ্ঞতা ও জ্ঞানহীনতাই প্রকাশ পায় । আমি বাবা লোকনাথ কিংবা হরিচাঁদ ঠাকুরকে শ্রদ্ধা করি, এবং হিন্দুধর্মে তাদের অবদানকেও সন্মান করি, কিন্তু তাই বলে তাদের কোনরুপেই স্বয়ং ঈশ্বর মনে করি না । আমি মনে করি, তারা যে পথে ঈশ্বরের সান্নিধ্য লাভ করেছেন সেই পথটুকু আমাদের অনুসরণ করা উচিৎ কিন্তু তাদেরকে ঈশ্বরের আসনে বসিয়ে বা ঈশ্বর বিবেচনা করে স্বয়ং ঈশ্বরকে অবমাননা করা উচিৎ নয় ।
Posted on: Sun, 29 Sep 2013 16:28:49 +0000