ঐশীর নির্দেশে বাবা-মাকে - TopicsExpress



          

ঐশীর নির্দেশে বাবা-মাকে খুন করে বন্ধুরাঃ মেয়ে ঐশী রহমানের (১৭) বন্ধুদের হাতেই খুন হয়েছেন পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) ইন্সপেক্টর মাহফুজুর রহমান (৪৫) ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান (৪২)। আর হত্যার নির্দেশ দেন ঐশী নিজেই। হত্যাকাণ্ডে চার থেকে পাঁচজন বন্ধু অংশ নেয় বলেও পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে ঐশী। ঘটনার সময় সে পাশেই ছিল বলেও জানায়।মা-বাবা খুন হওয়ার পর রহস্যজনক ভাবে পালিয়েছিল ঐশী। শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে পল্টন থানায় এসে সে নিজের পরিচয় দিয়ে স্বেচ্ছায় ধরা দেয়। পরে পুলিশকে সে এ তথ্য জানায়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, ঐশী মাদকাসক্ত। সে নিয়মিত ইয়াবা সেবন করে।বন্ধুদের সঙ্গে রাত কাটায়। এমনকি অনেকরাতে বন্ধুদের নিয়ে বাসায় ফিরতো ঐশী। বেশ কয়েকজনের সঙ্গেই তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে সে স্বীকার করেছে। আর এ কারণে তার বাবা বিভিন্ন সময় তাকে মারধোর করতেন, তার বখাটেপনায় বাধা দিতেন। বেশ কয়েকদিন ধরে তাকে বাসা থেকেও বের হতে দেয়া হয়নি। তিনি আরো জানান, এসব কারণে বন্ধুদের নিয়ে ঐশী তার বাবা-মাকে খুন করে। হত্যাকাণ্ডে তার চার থেকে পাঁচ বন্ধু অংশ নেয়। ছুরিকাঘাতে মাহফুজুর রহমান ওস্ত্রী স্বপ্না রহমানকে হত্যা করা হয়।এ সময় সে পাশেই অবস্থান করছিল। এদিকে শনিবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সোহেল মাহমুদ জানান, মাহফুজুর রহমানেরগলায় এবং পেটে ছুরিকাঘাতের দু’টি চিহ্ন পাওয়া গেছে। তার শ্বাসনালী এবং পাকস্থলী কেটে গেছে। এছাড়া স্বপ্নার শরীরে ছুরির ১১টি চিহ্ন পাওয়া গেছে। ছুরিকাঘাতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই তারমৃত্যু হয়। উল্লেখ্য, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর চামেলীবাগের (বাসা নম্বর ২, বিল্ডিং-চামেলী, ৬ তলা, ফ্ল্যাট বি-৫) নিজ বাসা থেকে মাহফুজুর রহমান ও স্ত্রী স্বপ্না রহমানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওইদিন এসবি ডিআইজি (পলিটিক্যাল বিট) মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘বুধবার রাত ১১টা পর্যন্ত মাহফুজুর রহমান অফিসকরেন। বৃহস্পতিবার ছুটি থাকায় তিনি আর অফিস আসেননি।’ তিনি জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে মেয়ে ঐশী তার ভাই ওহী (৭) ও কাজেরমেয়েকে নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। তখন ঐশী তার ভাইকে বলে, ‘বাবা-মা বাসায় নেই চলো আমরা খালুর বাসায় যাই।’ মোশাররফ আরো জানান, বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে ঐশী তার মায়ের মোবাইল থেকে তার খালুকে ফোন করে বলে, ‘আমরা বাসা থেকে বের হয়ে এসেছি। কিছুক্ষণ পর আপনার বাসায় আসছি।’ কিন্তু এরপর তাদের আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। ঐশীর খালু আত্মীয়স্বজনদের ফোন দেন। পরের দিন তিনি তার ভাইকে নিয়ে তাদের বাসায় চলে আসেন। এসে দেখেন ওহী বাসার নিচে ঘোরাফেরা করছে। কিন্তু বাসা তালাবদ্ধ। এ সময় ওহী তাদের জানায়, তার বোন তাকে একটি সিএনজিতে করে বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছে আর বলেছে, ‘তুমি বাসায় যাও, বাসার নিচে মামা আছে। আমরা পরে আসছি।’ বাসার কেয়ারটেকার শাহীনুল ইসলাম বলেন, ‘ঐশীকে বাসা থেকে বের হতে দেয়া হতো না। কোথাও গেলে তার বাবা-মায়ের সঙ্গেই যেতো।’ এমনকি বাসায় তেমন কোনো আত্মীয়স্বজনেরও আসা-যাওয়া ছিল না বলে জানান তিনি। তবে বাসার ম্যানেজার আমজাদ জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে ঐশী, তার ছোটভাই ওহী ও কাজের মেয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। কোথায় যাচ্ছে জানতে চাইলে ঐশী ম্যানেজারকে খালুর বাসায় যাওয়ার কথা বলে। তিনি আরও জানান, মা-বাবার অনুমতি ছাড়া ঐশীর বাইরে যাওয়া নিষেধ ছিল। চলতি মাসের ৪ তারিখে ভাড়া পরিশোধ করতে এসে ম্যানেজারকে এমন নির্দেশ দেন ঐশীর বাবা মাহফুজুর রহমান। বৃহস্পতিবার ঐশী বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় ম্যানেজার বাধা দিলে সে তার মায়ের দোহাই দিয়ে বেরিয়ে পড়ে। এসব প্রসঙ্গে ডিসি মাসুদুর রহমান বলেন, ‘ঐশীকে নিয়ে অভিযানে বের হয়েছে পুলিশ। পরে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে।’ ঐশী ধানমণ্ডির অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে ‘ও’ লেভেলের ছাত্রী।
Posted on: Sat, 17 Aug 2013 17:22:31 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015