কী একটা যুগে জন্ম নিলাম! অশান্তির কারণে কলেজ লাইফে ঠিক মত কলেজেই যাওয়া হল না। পরীক্ষা দিব, এখনো অশান্তির কারণে রুটিনের চেহারা ক্ষণে ক্ষণে বদলায়। আমার মত হাজারও ছাত্র-ছাত্রী ঠেলে ঠেলে সিলেবাসটা কোনভাবে গিলে টেস্ট দিচ্ছে - যত বিরক্তিই লাগুক এই পরীক্ষাটার সাথে HSC এর সরাসরি সম্পর্ক। কয়দিন পরই এই পরীক্ষার উপর ভিত্তি করে আমাদের মধ্যে কিছু মানুষ উত্তীর্ণ হবে, কিছু জীবনের একটা শিক্ষাবর্ষ পিছিয়ে যাবে। হ্যাঁ, কথাটা শিক্ষাবর্ষ-ই হওয়া উচিত। কিন্তু এই যুগ... এই কুফা যুগটা এমনই এক যুগ যেখানে আমাদের মত শিক্ষার্থীদের কোন একটা প্রোমোশন টেস্ট এ ফেইল করার অর্থ জীবনের একটা বছর আমরা অপচয় করেছি। নষ্ট হয়ে যায় মনের সব স্বপ্ন, সব শক্তি। দোষটা আমাদের হোক বা পরিস্থিতির, এই যুগে কাওকে ক্ষমা করার সময়টাও কারও নেই। এবং এই যুগটা এমনি এক যুগ, যেখানে পিতা-মাতার পরেই সর্বোচ্চ সম্মানের অধিকারী শিক্ষকরা আমাদের ভবিষ্যত নিয়ে তামশা করে! কোথাও ছাত্রদের ফেইল করিয়ে টাকা নেওয়া, কোথাও মানসিক ভাবে ছাত্রকে এমন বিশ্রীভাবে দুর্বল করে দেওয়া যে সে নিজের স্বপ্ন তো দূরের কথা, প্রাণটার মায়াই ছেড়ে দেয়! জানি না আগেও এরকম হত কিনা। তবে এই যে যুগের নাম কম্পিটিসনের যুগ রাখা হয়েছে - এখানে কম্পিটিশনের কিছু নিয়ম-কানুন কেন ঠিক করা হয় নি? আরও জয়-রা প্রাণ হারাবে, আরও মেধার অপচয় হবে, আরও অনেক পরিবারে হাহাকার নেমে আসবে। তাও বোধহয় আমরা এই প্রতিযোগিতা চালিয়ে যাব। যার না কোন সুবিচার আছে, না জেতার কোন শর্ত। তোমার ওপর অন্যায়-অবিচার চলতেই থাকবে, তার মধ্যে টিকে থাকতে পারলেও তুমি ঠিক জয়ী নও। তোমাকে আরও অনেক কিছু সইতে হবে। কিছু অনর্থক সুযোগ-সুবিধার দোহাই দিয়ে তোমার কাছ থেকে অনেক প্রত্যাশা করা হবে - সেগুলো পূরণ করতে পারলে তুমি হয়ত জয়ী হবে। আরও একটা জেনারেশন আগে জন্ম নেওয়া উচিত ছিল। নিজের কাছ থেকে এত বেশি আশা করা লাগত না। এত প্রতিযোগিতা করে ১৮ বছর বয়সে জীবনটাকে একটা যুদ্ধক্ষেত্র ভাবা লাগত না...... আর ভালো লাগে না!
Posted on: Wed, 20 Nov 2013 04:50:43 +0000