ঘটনাটি এরকম, শপিং করতে যেয়ে পরিচয় হলো দুজন সেলসম্যানের সাথে এরা সম্পর্কে ভাইবোন। একজন ভুইত্তা কালো একজন ধপধপে সাদা। কিছুটা অবাক হয়েই ক্রেতা জিজ্ঞেস করে তোমাদের গায়ের রং দুরকম কেনো?? ভাইর দিকে তাকিয়ে বোনটি জবাব দিলো ওর বাবা কালো ছিল তাই ও কালো, আমার বাবা সাদা ছিলো তাই আমি সাদা। - তোমার মায়ের কি তাহলে দুই বিবাহ? - না আমার মা বিয়েই করেনি, এরপরে বলে আমার নানীও বিয়ে করেনি বুঝুন অবস্থা। আমাদের পরিবার প্রথা এখনো টিকে আছে। নিজেদের এদিক থেকে অন্যান্য জাতিগোষ্ঠী থেকে মানবীয় বলতে পারি। হয়তো অনেক কিছু আমাদের নেই কিন্তু পরিবার আছে, যে পরিবারই মানুষকে মানুষ হতে সব চেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে, শেখায় কষ্টসহিষ্ণু হতে, শুধু নেয়া নয় দিতেও শেখায়। এভাবেই গড়ে উঠে আত্নিক বন্ধন ও পারস্পারিক সমমর্মিতা। কে না চায় শেষ বার্ধক্যের ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকা অবসরটুকু নিজের একসময়ের খুব যত্নের লালন করা প্রিয় সন্তানের সাথে কাটাতে? কে না চায় বৃদ্ধ বয়সে সন্তানের কোলে মাথা গুজে স্মৃতিচারণ করতে? কিন্তু হায়…!! সভ্যতার এই ভোগবাদী পণ্য দাসত্বের অসম প্রতিযোগিতার পশ্চিমা বিশ্বের দিকে তাকালে দেখা যায়, সেখানে যেনো পরিবার প্রথা বহুকাল আগেই পোষাকের সাথে সাথে বিলুপ্ত হয়েছে। সাধারণত একটি পরিবারের যাত্রা শুরু হয় বৈবাহিক কার্যের মধ্য দিয়ে। পশ্চিমা বিশ্বে বিয়ের সংখ্যা আশঙ্কাজনক ভাবে হ্রাস পাচ্ছে। এখন তারা লিভ টুগেদার (শেয়াল কুকুরের মত) জীবনযাপনে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। পত্রিকার পাতায় রোজই দেখতে পাবেন অমুকের সাথে তার বান্ধবীর ছাড়াছাড়ি। এখন আর স্ত্রীর সাথে ছাড়াছাড়ি হয়না, স্ত্রী তো নেই। স্ত্রীর সাথে ছাড়াছাড়ি হলে সেটা শুনতেও মানানসই, তাছাড়া এটির ধর্মীয়, পারিবারিক, সামাজিক, বৈজ্ঞানিক ব্যাখা ও স্বীকৃতি রয়েছে। কিন্তু ছাড়াছাড়ি যদি হয় বান্ধবীর সাথে সেটি কেমন? ছাড়াছাড়ি হবেই এটা সেখানে স্বাভাবিক। আর যদি হাজারে বা লাখে একটি টিকে যায় সেটি অস্বাভাবিকতা বা দুর্ঘটনা বলা যায়। বিষয়টি কিছুটা হলেও হাস্যকর। এই বান্ধবীদের গর্ভে উৎপাদিত হচ্ছে সন্তান। সে সন্তানের বাবা কে এটা তার মাও অনেক সময় ঠিকমত মনে করতে পারেনা। ডি এন এ টেস্টই একমাত্র ভরসা। এসব কারনে সেখানে বাবার পরিচয় গুরুত্বপূর্ণ নয়, আর মা তো একাধিক হওয়ার সুযোগ নেই। তাই গুরুত্বপূর্ণ ইনফোতে মাকেই প্রাধান্য দেয়া হয়। এই সকল বিবিধ কারনে সেখানে পরিবারপ্রথা বিলুপ্ত প্রায়। আর ফলাফল হচ্ছে ব্যাঙের ছাতার মত ওল্ড কেয়ার সেন্টার বা বৃদ্ধাশ্রম। আত্মিক আশ্রয়হীন হয়ে একটি মানুষের শেষ যাত্রা হয়। এসব দিকে তাকালে আমাদেরকে হাজারগুন এগিয়ে রাখতে হয়, আমাদের সমাজে মা বাবারা সন্তানের হাতে মাথা রেখে এখনো শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে পারে। এখনো চল্লিশোর্ধ ছেলেকে বৃদ্ধ বাবা মা বকা দিলে অবনত মস্তকে কেটে পরে (যদিও এর সংখ্যা দিন দিন কমছে) এখন পশ্চিমা বিশ্ব বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের এই পরিবার প্রথা ভেঙ্গে দিতে তৎপর হচ্ছে, সমাজপতিদের বৃদ্ধাশ্রম খুলতে উৎসাহ ছাড়াও দিচ্ছে অনেক রকম সহাযোগিতার উপকরণ। আর অনেকে মনে করছি আহা ! কত বড় মানুষ!! বৃদ্ধাদের জন্য আশ্রয় বানাচ্ছে। কিন্তু আমরা কি চাই আমাদের মা বাবা শেষ জীবন অন্যের আশ্রয়ে চলে যাবে? বৃদ্ধাশ্রম অনেক উদ্দেশ্যে হতে পারে– ব্যাবসায়িক, লোক দেখানো (দেখো আমি কত মহান), ভোটের আশায় ও সেবামূলক। কে কি কারনে করবে সেটাই চিন্তার বিষয়। আমরা চাই পরিবার প্রথা অটুট থাকুক আর বৃদ্ধাশ্রম ইয়োরোপ আমেরিকায় থাকুক। এদের শেষ জীবন হয় বৃদ্ধাশ্রম না হয় আদুরে পোষা কুকুরের সাথে , নিজের সন্তানের সাথে হয়না , কি মহান তারা!! #Be_positive #we_are_bangladeshies #we_have_many_things_to_proud [] হাসানুল ফেরদৌস সাদিদ []
Posted on: Sat, 30 Aug 2014 07:58:02 +0000
Recently Viewed Topics
© 2015