জেনে নিন পৃথিবীর সবচাইতে - TopicsExpress



          

জেনে নিন পৃথিবীর সবচাইতে বড় আকাশ দৈত্য Antonov 225 সম্পর্কে *********************************************** সবচেয়ে বড় বিমান (যাত্রীবাহী বা মালবাহী) কোনটি জিজ্ঞেস করলে সবাই নির্দ্ধিধায় এয়ারবাস এ-৩৮০র কথাই বলবেন। অথচ Antonov 225 সম্পর্কে অনেকেই জীবনে আজ প্রথম শুনবেন। এ এমন এক বিমান যা পৃথিবীতে 01 পিস মাত্র তৈরী হয়েছে এবং সেই থেকে এর প্রতিটি যাত্রা খবরের শিরোনাম হয়েছে। কয়েক ডজন ট্যাংক, আর্মি পার্সোনাল কেরিয়ার, বেশ কয়েকটি আস্ত রেলগাড়ীর ইঞ্জিন, বিশাল বিশাল সামরিক হেলিকপ্টার কি না সে পরিবহন করতে পারে? আসুন এই উড়ন্ত আকাশ দৈত্যের ইতিহাস সম্পর্কে একটু জানি। আন্তনভ’ এন ২২৫ মিরাইয়া Мрія (উক্রাইনান ভাষা- যার অর্থ স্বপ্ন বা অনুপ্রেরনা) পৃথিবীর সর্বকালের সর্ববৃহৎ বিমান। এই দানব বিমানের ডানার এপাশ থেকে ওপাশের মাপ ২৯১ ফিট আর চাকার সংখ্যা ৩২। এটা প্রথম নকশা করা হয় ১৯৮৮ সালে যা মুলত এনারর্গিয়া(এনার্জি) নামে বুরানের রকেটের বুস্টার পরিবহনের জন্য।যার দুইলক্ষ পঞ্চাশ হাজার কেজি ওজন নিয়ে উড্ডয়নের ক্ষমতা আছে। উচ্চতা ৬০ ফুট।আন্তনভ মিরাইয়া তার ১৪০ ফিট লম্বা পিঠে করে রাশিয়ার প্রথম স্পেস শাটেল ‘বুরান’কে সর্বপ্রথম সোভিয়েতের বাইরে নিয়ে গিয়েছিল ১৯৮৯ সালে প্যারিস এয়ার শো’তে। শুধু এই দৈত্য বিমানের-ই গিনেজ বুকে দুইশত চল্লিশ খানা রেকর্ড অন্তভুক্ত আছে! এর একটা রেকর্ড সর্ব্বোচ্চ পরিবহন ব্যয়ের -ডেনমার্ক থেকে কাজাকস্থানে পন্য পরিবহনের জন্য ২০০৮ সালে ‌এক দফায় খরচ হয়েছিল দুই লক্ষ ছেষট্টি হাজার ইউরো। যদিও এই বিমানের মালিক এখন উক্রাইন। রাশিয়া তাদের স্বত্ব হারিয়েছে সোভিয়েতের পতনের সাথে সাথেই। ১০৬টা বিশ্ব রেকর্ড ভেঙ্গে এই বিমান সর্ব প্রথম উড্ডয়ন করে ১৯৮৮ সালে। একসাথে এতগুলো বিশ্ব রেকর্ড ভাঙ্গা-ও ছিল একটা রেকর্ড! উইকেপিডিয়া অনুসারে এই আকাশ দানবের পরিচিতি নিম্নরূপ: Role : Strategic airlifter National origin : Soviet Union / Ukraine Manufacturer : Antonov First flight : 21 December 1988 Status : In service Primary user : Antonov Airlines Produced : 1988 Number built : 1 (এক পিস মাত্র!!!) Developed from : Antonov An-124 General characteristics....... Crew: 6 Length: 84 m (275 ft 7 in) Wingspan: 88.4 m (290 ft 0 in) Height: 18.1 m (59 ft 5 in) Wing area: 905 m2 (9,740 sq ft) Aspect ratio: 8.6 Empty weight: 285,000 kg (628,317 lb) Max takeoff weight: 640,000 kg (1,410,958 lb) Fuel capacity: 300000 kg Cargo hold – volume 1,300m3, length 43.35m, width 6.4m, height 4.4m Powerplant: 6 × ZMKB Progress D-18 turbofans, 229.5 kN (51,600 lbf) thrust each Performance.......... Maximum speed: 850 km/h (528 mph; 459 kn) Cruising speed: 800 km/h (497 mph; 432 kn) Range: 15,400 km (9,569 mi; 8,315 nmi) with maximum fuel; range with maximum Payload: 4,000 km (2,500 mi) Service ceiling: 11,000 m (36,089 ft) Wing loading: 662.9 kg/m² (135.8 lb/sq ft) Thrust/weight: 0.234 আন্তনভ সিরিজের এন-২২ (১৯৬৫) ছিল বিশ্বের প্রথম টার্বোপ্রোপ চালিত সর্ব বৃহৎ বিমান। আন্তনভ এন-৭০(১৯৯৪) বিশ্বের সর্বপ্রথম প্রোপফ্যান চালিত সর্ব বৃহৎ পরিবহন বিমান। আন্তনভ-২২৫ এর নিকট আত্মীয় আন্তনভ-১২৪ ব্যাবহৃত হয়েছিল জেমস বন্ড চলচ্চিত্রের বিখ্যাত সিরিজ ‘ডাই এনাদার ডে’ ছবিতে। এইতো সেদিন ২৬শে ফেব্রুয়ারি ২০০৯ এ দিল্লি এয়ারপোর্টে অবতরন করেছিল আন্তনভ ১২৪। কারনটা কি জানেন? এই দানব এয়ারক্রাফটটা জার্মানী থেকে দিল্লির প্রথম মেট্রো কোচ বহন করে এনেছিল ! (ছবি সংযুক্ত) আন্তনভ ২২৫ মিরাইয়া ১৯৮৯ সালে প্যারিস এয়ারশো’তে সেই বুরানকে পিঠে করে নিয়ে গিয়েছিল যেটা ঠিক আট মাস আগে সেই সোভিয়েত যুগে একটা ইতিহাস সৃষ্টি করেছিল। নামহীন একটা মিশনে সেটা সফল উড্ডয়ন করে পৃথিবীর চারপাশে দু চক্কর ঘুরে ফের নিরাপদে ভুপৃষ্ঠে অবতরন করেছিল। কিন্তু সেই সফলতাও বুরান প্রজেক্টকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে পারেনি। বুরানের সাথে সাথে বিশ্বের সবচেয়ে বৃহত্তম এয়ার ক্রাফট এন-২২৫ মিরাইয়াও প্রায় তার অন্তিম দশায় পৌছে গিয়েছিল। এই বিশালকায় বিমান কিয়েভের পোতাশ্রয়ে হ্যাঙ্গারের বাইরে চরম অবহেলিত অবস্থায় দীর্ঘদিন পড়েছিল।১৯৯৪ সালে এর ইঞ্জিন খুলে নিয়ে ব্যাবহৃত হয় আন্তনভ ১২৪ এস এ। আরো কিছু বছর আন্তনভ ২২৫ এইভাবে অবহেলায় অযত্নে বহু বছর পড়ে থাকার পর একবিংশ শতাব্দির শুরুর দিকে এর উইক্রাইনান মালিক ‘আন্তনভ গ্রুপ’ ভাবনাচিন্তা শুরু করল মিরাইয়াকে নিয়ে। কি করে একে বানিজ্যিক ভিত্তিতে লাভজনক করা যায় সেইটে রইল তাদের মুল চেষ্টা। মিরাইয়ার ওজন ধারন ক্ষমতা ছিল সাড়ে পাঁচ লক্ষ পাউন্ডের থেকেও বেশী (৫৫১,১৫০ পাউন্ড)। কোন কিছু এর পেটের মধ্যে ঢোকাতে চাইলে সম্মুখভাগ দিয়ে চালান দিতে হবে। এর সম্মুখভাগের ১৪ ফিট উচু আর বিশ ফিট চওড়া কার্গোর দরজা যখন খুলে যায় তখন এর বিশাল মুখ গহ্বর দিয়ে দৈত্যাকার মালবাহি ট্রাকও ঢুকে যায় অনায়াসে। কোন কিছু পেটে করে নিতে না নিতে পারলে সমস্যা নেই। আন্তনভ তার একশ চল্লিশ ফিট লম্বা পিঠে করে বহনযোগ্য যেকোন কিছু নিয়ে ঘন্টায় পাঁচশ মাইল গতিতে একটানা আড়াই হাজার মাইল উড়ে যেতে পারে (কোন কিছু বহন না করে মিরাইয়া মাটি থেকে প্রায় সাত মাইল উচু দিয়ে একটানা সাড়ে নয় হাজার মাইল উড়ে যেতে পারে)। এমন একটা সোনার ডিম পাড়া রাজহাসকে এভাবে অবহেলায় ফেলে রাখাটা যে বোকামী এই অবশেষে সেই কর্তা ব্যাক্তিরা বুঝতে পারলেন।অবশেষ তারা বিশ মিলিয়ন ডলার খরচ করে আরো অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি লাগিয়ে আন্তনভ-২২৫ মিরাইয়াকে নবজীবন দিলেন। অবশেষে জানুয়ারি ২, ২০০২ সালে মিরাইয়া জার্মানীর স্টুটগার্ড থেকে প্রথমবার বানিজ্যিক বিমান হিসেবে উড়াল দিল।পারস্য উপসাগরে যুদ্ধরত আমেরিকান যোদ্ধাদের জন্য দুইলক্ষ ষোল হাজার রান্না করা খাবার প্যাকেট নিয়ে সে উড়ে গিয়েছিল সেদিন। ভাবতে অবাক লাগে আন্তনভ মিরাইয়া এখন রংচং মেখে তার ভোল পাল্টে কানাডিয়ান আর সোভিয়েতদের এককালের চরম শত্রু ইউ এস আর্মির খাবার আর যুদ্ধ সরঞ্জাম বহন করে নিয়ে যায় মধ্যপ্রাচ্যে। রাইট ভাইয়েরা তাদের আবিস্কৃত বিমান কিটিহককে প্রথমবার উড়িয়েছিল ১৯০৩ সালে, যার দুরুত্ব ছিল একশ বিশ ফিট। ভাবুন একবার, সেই উড়নটা ছিল আন্তনভ মিরাইয়ার বিস্তৃত দু ডানার দুরত্বের অর্ধেকেরও কম! তবুও বিশ্বের সব’চে বৃহৎ এই কেরিয়ার এয়ার জেট এর কোম্পানি ইউক্রাইন ভিত্তিক ‘আন্তনভ এয়ার লাইন’স কিন্তু সবসময়ই এই বিমান চালিয়ে লোকসান করেছে। আজ পর্যন্ত পৃথিবীর অন্য কোন দেশ এইরকম দৈত্যাকৃতির আরেকটা বিমান বানানোর অনুরোধ করেনি তাদের। তবুও আজ অব্দি তারা এটা চালিয়ে যাচ্ছে এই কোম্পানীর প্রযুক্তিগত শৌর্যের প্রতীক হিসেবে, কেননা এখনো এই বিমানের প্রতিটি বিচরন তথা প্রতিটি যাত্রা বিশ্ব গনমাধ্যমের খবরের মুখ্য বিষয় হয়। (এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ নই আমি, তবে এসবে প্রচন্ড আগ্রহের কারনে এ নিয়ে লেখালেখি করি...ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন। পোষ্ট কৃতজ্ঞতা : বর্ণএলিগেন্টব্লগ, আন্তোনভ এবং উইকেপিডিয়া)
Posted on: Mon, 05 Aug 2013 18:41:57 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015