ডাকিণী ৪৯তম পর্ব (ক - TopicsExpress



          

ডাকিণী ৪৯তম পর্ব (ক অংশ) লিখেছেনঃ সানজিদা সুলতানা সুমা আমি দৌড়ে গেলাম লাইব্রেরীতে। লাইব্রেরীতে যেয়ে দেখি, আলেসের ডায়ারীটা পড়ে আছে টেবিলে, আর এর পৃষ্টাগুলি দমকা বাতাসে একে একে উল্টাচ্ছে! আশ্চর্য! এটা তো আলেসই তাহলে! কিন্তু ও যায় নি কেনো? ডায়ারীর দিকে এক দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকতেই ব্যাপারটা বুঝে গেলাম। আলেস আংটিটা আনতে বলেছিলো তার নিজের মুক্তির জন্যে নয়। তার ভালবাসার মার্টিনীর মুক্তির জন্যে। ও মার্টিনীকে ছাড়া ওপারে যাবে না। প্রকৃতপক্ষে এদের ভালবাসার বাধন এতটা জোরালো যে ওরা একজন অপরজন কে ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা চিন্তাও করতে পারে নি। তাই মার্টিনীর মুক্তিকেই প্রকারান্তরে আলেস তার নিজের মুক্তির মতোই দেখে আসছিলো। কিন্তু আংটিটা উদ্ধারের পর মার্টিনী সহ অন্য মেয়েদের মুক্তি হলেও আলেসের ইহলৌকিক বন্ধনটা এখনো রয়ে গেছে। প্রকৃতপক্ষে ওর আটকে থাকার কারণ ওই আংটিটা নয়, নইলে ও অন্য মেদের সাথেই প্রিস্টের কবরে বন্দি থাকতো, এ কটেজে মুক্ত হয়ে ঘুরতো না। যে জিনিসটা আলেসকে এখাবে বেধেঁ রেখেছে সেটা হলো এই ডায়ারী। নিজের জীবনের শেষ অধ্যায়গুলির স্মৃতিযুক্ত এ ডায়ারীটাই ওকে এই বদ্ধ কটেজে হাজার বছর ধরে বন্দি করে রেখেছে। কিন্তু এতোদিন আমি ওর উপস্থিতি টের পাইনি কেন? ওকে আমি এতোদিন খুঁজলাম কিন্তু ও ধরা দিলো না কিন্তু আজ নিজে থেকেই তার উপস্থিতি ঘোষনা দিচ্ছে! ব্যাপারটা কেমন জানি গোলমেলে! মারগারেটের আত্মার প্রভাবেই কি ও নিশ্চুপ হয়ে ছিলো! কিন্তু এতদিন তো জানতাম খারাপ আত্মাগুলি মানুষের উপর প্রভাব বিস্তার করে! এখন দেখছি এরা একে ওপরের উপরেও প্রভাব বিস্তার করে! কিন্তু তা কি করে সম্ভব? মনিকা তো ওকে সেই প্রথম থেকেই অনুভব করে আসছে। সেদিন মনিকাকে একা রেখে আমি অফিস গেলে মারগারেট ও চলে আসে আমার সাথে। কারণ আমি নিজের অজান্তেই মারগারেটের বাহন হয়ে গিয়েছিলাম। আমি যেসব জায়গায় যেতাম মারগারেট ও চলে আসতো সাথে সাথে। আমার ও মারগারেটের অনুপস্থিতিতে মনিকা লাইব্রেরীতে আলেসকে অনুভব করে ও ভয় পেয়ে যায়। ভয়ে দিশেহারা হয়ে ও আমায় ফোন দেয়, তাড়াতাড়ি অফিস থেকে ফিরে আসার জন্য। কিন্তু কপাল খারাপ যে সেরাত আমায় স্টারদের সেইফ হাউসেই কাটাতে হয়। শেষরাতে আমি কটেজে ফিরতেই সাথে করে মারগারেটও ফিরে আসে এবং মনিকাকে লাইব্রেরীতে ওর বই পড়তে দেখে ফেলে। তারপর মেয়েটাকে ভয় দেখিয়ে অজ্ঞান করে দেয়। তার কয়েকদিন পরে মনিকা অভিযোগ করেছিলো যে, বেসমেন্ট থেকে কে যেনো ওর নাম ধরে ডাকছে। ওটাও আলেসই ছিলো। বেসমেন্ট থেকে কেবল আলেসই ডাকতে পারে। ওটা ওরই আস্তানা। ওখানে মারগারেটের কোন প্রভাব নেই। সবিশেষে বেসমেন্টে আদিনের মোমবাতিটা নিভে যাওয়ার কারণও এই আলেস। সে মোমবাতি নিভিয়ে নিজের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছিলো কিন্তু আমি ও আদিন ব্যাপারটাকে নিছক দমকা বাতাসের কারসাজি ভেবে ভুল করেছিলাম। আমাদের আগেই বুঝা উচিৎ ছিলো যে বদ্ধ বেসমেন্টে দমকা বাতাস কখনোই নিজে থেকে সৃষ্টি হয় না। যদি না অন্য কেউ সেই বদ্ধ বাতাসে ঢেউ না তুলে। আলেস আগেও ছিলো এখনো এই কটেজেই আছে। কেবল এতদিন ও আমায় এড়িয়ে চলছিলো মাত্র। আমার উপস্থিতিতে লাইব্রেরীতে ও নিজেকে নিরব রেখেছিলো, তাছাড়া বেসমেন্টে দুরাত ঘুমালেও ও আমায় কোন দুঃস্বপ্ন দেখায় নি। তবে কি এতোদিন আমার সাথে এমন কিছু ছিলো যা আলেসকে আমার থেকে দুরে সরিয়ে রেখেছিলো? হা, অবশ্যই। ওই আংটি! আলেসের চরম অনিহা থাকা সত্তেও তার কপালে আংটির ছ্যাকা দিয়েছিলো। এরপর থেকে ওই আংটিপরা যে কাউকেই ও প্রিস্ট ভেবে ভয় পায়, ও তাদের থেকে দুরে সরে থাকে। ওই আংটির ভয়েই ও আমায় এড়িয়ে যাচ্ছিলো। এখন আংটিটা আমার হাতে নেই বলেই ও আমায় এখানে টেনে এনেছে। পৃষ্টা উল্টাতে থাকা ডায়ারীটাই আলেসের মুক্তির পথ নির্দেশ করছে। ডায়ারীটাকে পুড়িয়ে দিলেই আলেস মুক্ত হয়ে পরপারে পাড়ি জমাবে। এগিয়ে গিয়ে আলেসের ডায়ারীটা হাতে তুলে নিলাম! এত সুন্দর ডায়ারীটা এভাবে পুড়িয়ে দিতে একটুও ইচ্ছা করছিলো না। ডায়ারীটা নিয়ে লাইব্রেরী থেকে বেরিয়ে কিচেনে চলে এলাম। উদ্দেশ্য ছিলো ওটাকে পুড়িয়ে দেওয়া। কিন্তু না। ঠিক তখনই আমার কটেজের কলিংবেলটা বেজে উঠে। আশ্চর্য! এই অসময়ে আবার কে এলো! ওদিকে কিচেনের কোণে মনিকার লাশটা পড়ে আছে। যদি আগুন্তুক এটাকে দেখে ফেলে তো আমার কেল্লাফতে। বাকিটা জীবন চোদ্দশিকের ভেতরে পঁচে মরতে হবে। আলেসের ডায়ারীটা স্টোভের পাশে রেখে দ্রুত মনিকার লাশটা টেনে এনে একটা কিচেন রেক এর পেছনে লুকিয়ে ফেললাম। তারপর দুরুদুরু বুকে এগিয়ে গিয়ে দরজাটা খুলে দিলাম। আমি এতক্ষণ ঠিক এদেরই ভয় পাচ্ছিলাম। পুলিশ! একটা ছয় ফুট উঁচু বিশাল দেহী অফিসার আর রুক্ষ চেহারার তার মহিলা ডেপুটি। ওদের দেখে আমি এতটাই ভড়কে গিয়েছিলাম যে ওদের সাথে কথা বলতেও ভুলে যাই। ওরাই প্রথম কথা বলা শুরু করে, পুলিশ: "সরি ম্যাম, আপনাকে অসময়ে বিরক্ত করার জন্যে। কিন্তু আমরা সত্যিই দুঃখিত। আমরা আপনার বেডরুমের সীলগালা খুলে দিতে ও আপনার বেডরুম থেকে জব্দ করা মালামাল গুলি ফেরত দিতে এসেছি।" আমি: "ওহ, আচ্ছা আচ্ছা। ভেতরে আসুন। " ওরা প্রায় একঘন্টা সময় নিয়ে বেডরুমটা ভাল করে ফের পরীক্ষা করলো প্রথম দফায় ফেলে যাওয়া কোন সম্ভাব্য সুত্রের আশায়। তারপর বেডরুমে পড়ে থাকা সকল কাঁচের টুকরা সতর্ক হাতে সরালো। মেঝেতে জমাট বাধা আদিনের রক্ত ভাল করে ধুয়ে মুছে সেখানে ডিজইনফেক্টেন্ট ছড়িয়ে দিলো। তারপর একটা লাগেজে করে আমার বেডরুম থেকে জব্দ করা জিনিসপত্র গুলি ফেরত দিয়ে গেলো। ওরা চলে যেতে যেতে বিকাল ৯টা বেজে গেলো। ওরা চলে গেলে আমি যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচলাম। ভাগ্যিস ওরা মনিকার মৃতদেহটা দেখতে পায়নি। কৌতুহলবশত আমার ফেরৎ পাওয়া মাল গুলি পুলিশের দেওয়া লিস্টের সাথে মিলিয়ে দেখতে লাগলাম! আরে! ওগুলোর মধ্যে তো আদিনের সেই জাদুবিদ্যার বইটা রয়েছে। যেটা ও এনেছিলো মারগারেটের আত্মাকে আমার দেহে প্রবেশ করানোর জন্যে। হঠাৎ আমার চোখের সামনে একটা সরল সমীকরণ মিলে গেলো! লাইব্রেরীতে আংটির ছ্যাকা খাওয়া আলেসের আত্মা, কিচেনে মনিকার মৃতদেহ, ড্রয়িংরুমের পেডাল ডাস্টবিনে সেই জাদুকরী আংটি, আর আমার বেডরুমে সদ্য ফেরৎ পাওয়া আদিনের জাদুবিদ্যার বই। এগুলি সব একত্রে মিলালেই পাওয়া যাবে মনিকাকে খুনের দায় থেকে মুক্তি। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম মনিকার দেহে আলেসের আত্মাটাকে ঢুকিয়ে দিবো। এতে আমি যেমন খুনের দায় থেকে মুক্তি পাবো, আলেসও নতুন জীবন ফিরে পাবে। খুনের দায় থেকে বাঁচার জন্যে এটাই একমাত্র উপায়। আত্মা প্রতিস্থাপনের জন্যে প্রয়োজনীয় সকল উপকরণ আমার কটেজের ভেতরই বিভিন্ন কক্ষে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। বেডরুম থেকে বইটা নিয়ে এসে লাইব্রেরীতে রাখলাম। কিচেনে ঢুকে মনিকার দেহটাকেও সন্তর্পণে লাইব্রেরীতে বয়ে এনে টেবিলের উপর শুইয়ে দিলাম। ওর দেহটা তখনো জমাট বাধাই আছে! তবে ইতিমধ্যেই ওটা থেকে অনেকটা বরফ গলে কিচেনের ফ্লোর ভাসিয়ে দিয়েছে। ড্রয়িংরুমের ডাস্টবিনের সব ময়লা হাতড়ে মনিকার কাটা আঙুলটা বের করলাম। আংটিটা ওটার সাথেই লেগে ছিলো। আঙুল থেকে আংটিটা বের করে নিয়ে লাইব্রেরীতে ফিরে এলাম। এবার কাজ শুরু করা যাক। (চলবে) (৪৯তম পর্ব খ অংশ আজ রাত ১২.০০ থেকে ১২.৩০ এর মধ্যে দেয়া হবে) (গল্প কেমন লেগেছে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না)
Posted on: Thu, 11 Jul 2013 16:47:06 +0000

Trending Topics



="stbody" style="min-height:30px;">
Somtimes we wonder why things in our lives didnt workout. Like
WASHINGTON REDSKINS NFL NEOPRENE LAPTOP CASE Online Clearance
ASUU Strike Will Be Over Soon – Jonathan Declares October 9,
BR: Kami akan terus bekerja keras untuk berkembang Pertandingan
Almocei ao lado de um casal. Ela dizia "você não tem atitude". E
Black Friday Sale Lutron TG-603PH-WH Toggler 600W 3-Way Preset

Recently Viewed Topics




© 2015