দোস্ত একটা টিউশনি - TopicsExpress



          

দোস্ত একটা টিউশনি ম্যানেজ করে দিতে পারবি? -না রে দোস্ত্ বছরের মাঝে কোনো টিউশনি পাওয়া যায়না। কোনো জব থাকলে ম্যানেজ করে দে। -একটা আছে রেস্টুরেন্টে ধানমন্ডিতে করবি? -সেলারি কতো দিবে? ফুল টাইম নাকি? না হাল্ফ টাইম এই ধর ১ টা থেকে সন্ধা ৭ টা অবধি। কিন্তু এসব রেস্টুরেন্টে কাজ করতে পারবি? - আরে ব্যাটা এইটা নিজের শহর না এইটা মফস্বল না। এইটা ঢাকা সিটি । এখানে কেও দেখে না। -ওকে আমি কথা বলি। হুম্ম্ জানাইস কিন্তু। সজিব মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে সে একটা বেসরকারীর ভার্সিটির Student । তার বাবা তাকে ভার্সিটির টাকা দিতেই হিমশিম খায়। অথচ সে হাত খরচের জন্যে টাকা পায়না। এমনি তেও সে একটা সম্পর্কে আছে। তার প্রেমিকার সাথে প্রায় দেখা করা লাগে। গার্ল ফ্রেন্ড নিয়ে কোথাও বসা যায়না। আসলে প্রেমের জন্যে কিছু টাকা লাগে। ফোনের খরচ/ বাসার খরচ/ ইত্যাদি খরচ লাগে। হ্যাঁলো সজিব কোথায় তুমি? -আমি তো বাইরে ক্যাম্পাসে আসো তো একটু -না আমার কাজ আছে..... উপমা সজীবের প্রেমিকা দুইজন একি ডিপার্টমেন্টে পড়ে। উপমা- এই জনি সজিব কোথায় জানো? -না এভাবে কেটে গেলো। একদিন উপমা আর তার বান্ধবীই কয়জন মিলে গেলো রেস্টুরেন্টে খেতে। সজিব যে রেস্টুরেন্টে আছে ওই রেস্টুরেন্টে। কিন্তু সজিব আগেই সতর্ক হয়ে গেছে। সে চায়না উপমা এটা জানুক। তাই সজিব আরেকজন বেয়ারা কে পাঠালো খাবার সার্ব করার জন্যে। এভাবে খাওয়ার পর চলে গেলো উপমারা। সন্ধার পর সজিব কে ফোন দিলো উপমা । দেখা হলো সজিবের সাথে সজিবের সাথে কথা হলো । প্রতিদিন সজিবের সাথে রাতে উপমার ফোনালাপ হতো। একদিন রাতে বৃষ্টি হচ্ছে। উপমা সজিব কে বলছে- এই বৃষ্টির শব্দ শুনেছ? সজিব- হা তিনের চালে বৃষ্টির শব্দ। উপমা- এহে না বাজে কেমন কানে ধরে। কেনো তোমাদের বাসা কি টিনের চালের? -সজিব একটু অবাক হলোও এমন প্রশ্ন করে বসেছে উপমা সজিব- হা আমাদের টিনের চালের বাসা উপমা- আমি তো তিনের চালে থাকি নিই কোনো দিন। সজিব- আমার বাবা এক জন সরকারী কর্মচারী ছিলেন। তার আয় দিয়ে যতো খানি পেরেছেন আমাদের জন্যে করেছেন। উপমা প্রসঙ্গটা কে এড়িয়ে গিয়ে বললো ঠিক আছে রাখি, বাই. গুড নাইট। উপমার বাবা সজিবের বাবার চেয়ে ধনী। উপমার বড় লোকের মেয়ে। মাঝে মাঝে উপমা তার কাজিন আর বান্ধবীদের নিয়ে পার্টি করে আড্ডা দেয়। এগুলো সজিব পারেনা। উপমার কাজিন গুলো সবাই হাই ফ্যামিলির ছেলে মেয়ে। এভাবে প্রায় ভালোই চলছিলো সজিবের সাথে উপমার সম্পর্ক। সজিব বাসা থেকে পড়া শোনার খরচ বাবদ আর কোনো টাকা নাইনে। একদিন উপমার একটা বান্ধবী উপমার Phone হাতে নিয়ে ফোনের ফটো গ্যালারিতে গেলো। গিয়ে দেখে সজিবের ছবি !!! বান্ধবীই- কিরে উপমা এটা কে? উপমা- আমার বি এফ!! বান্ধবীই- তুই সিউর!! উপমা- মানে কি? সিউর মানে? কি বলতে চাস্। বান্ধবী- এই ছেলে টাকে ওইদিন ধানমন্ডিতে দেখলাম। উপমা- হা ওই খানে যায় মাঝে মাঝে বান্ধবী- আমি ওকে **** রেস্টুরেন্টে দেখলাম। উপমা- হয়তো কোনো কাজ ছিলো বান্ধবী- আরে না ওকে আমি ওয়েটারের গেট আপে দেখলাম। :o উপমা একটু লজ্জা পেলো তার বয়ফ্রেন্ড রেস্টুরেন্টে জব করে এগুলো তার বান্ধবীরা দেখে এসে বলে। উপমার বান্ধবী একদিন তার বয়ফ্রেন্ড নিয়ে ওই রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলো। সেদিন দেখেছিল সজিব খাবার সার্ভ করছে। উপমার বান্ধবীর খাবার ও সজিব সার্ভ করেছিলো। উপমার সজিব কে রাতে ফোন দিলো। উপমা- সজিব তুমি কি আমার কাছে কিছু লুকিয়েছ? সজিব- না কই কিছু না উপমা- আমি সব জানি। তুমি ধানমন্ডিতে রেস্টুরেন্টে জব করছো? -সজিব হা কেনো? - দেখো আমার ফ্যামিলি বা আমার ফ্রেন্ড কাজিন কেও এটা ভালো চোখে দেখবে না। সজিব- রেস্টুরেন্টে জব করে তারা কি অমানুষ? -উপমা- দেখো এসব নিয়ে তর্ক করতে ভালো লাগছে না। তুমি একটা পড়া শোনা শেষ করে ভালো একটা জব খুঁজে তার পর আমার বাসায় প্রোপোজাল নিয়ে আসবা। সজিব- সেটা না হয় করলাম। কিন্তু তোমার বাবা আমার ফ্যামিলির অবস্থা মানবেন? উপমা- সেটা আমি জানিনা তুমি একটা ভালো জব খুঁজে বের করো। এভাবে দিন যায় রাত যায়। উপমার সাথে সজিবের কোনো কারণ ছাড়াই কথা কাটাকাটি হয়। ঝগড়া বাধে। আসলে কি থেকে কি হয়ে গেলো। কি করবে। সম্পর্ক টা দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। উপমা ইচ্ছা করে ফোন দেয়না। ধরেনা। সজিব ফোন দিয়ে কিছু বললে উপমা রাগ দেখায়। একপর্যায়ে সজিব মারা যায় কারণ হঠাৎ করে উপমা বলে আমি তোমাকে ভালো বাসিনা। ৭ বছর পর- এই সজিব সজিব!! সজিব!! আজব সারা রাত কি গাজা খাও নাকি? এতো ঘুম তোমার!! অর্ণা কে স্কুলে নিয়ে যেতে হবে উঠো। এই উঠো তো বাচ্চাকে স্কুলে দিয়ে আসলো সজিব। বাসায় এসে নাস্তা করে শ্যুটিং এ যাবে। সে একজন নাট্যকার। বাসায় আস তে আস তে গত্ রাতের স্বপ্নটা ভেবেছে। বাসায় এসে তার বউ অহনা কে বলছে। অহনা জানো একটা অদ্ভুত স্বপ্ন দেখলাম। আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে, নিজের খরচ চালানোর জননে একটা রেস্টুরেন্টে জব করতাম। আমার সাথে উপমা নামের একটা মেয়ের রিলেশন ছিলো। কিন্তু আমার অবস্থা জানার পর মেয়েটা আমাকে ছেঁড়ে চলে গেলো। মেয়েটা বড় লোকের মেয়ে। আমি রেস্টুরেন্টে জব করি এটাই আমার দোষ আমার ফ্যামিলির অবস্থা ভালো না মানে মেয়ের চেয়ে নিচু বলে। তাঁরপর আমি মারা যাই। উপমা আমাকে ছেড়ে চলে যাই বলে। অহনা- তোমার মাথা নষ্ট হয়ে গেছে। নাটক বানাতে বানাতে। সজিব- আরে না আমি এটাই দেখলাম। সজিব- অহনা তুমি আমাকে ছেঁড়ে চলে যাবে নাতো? আমার কাছে যদি কখনও টাকা না থাকে। অহনা- দ্যাখো এসব তোমার নাটকের কথা বলবা না। একটা বাচ্চা পয়দা করিয়ে এখন এসব বলছো? আমার খাবার না থাক। বাচ্চা টার খাবার আর পোশাক আর স্কুলের টাকা আর বাসা ভাঁড়া টা ম্যানেজ করে এনে দিও। সজিব- ওরে বাবা!! সব ই তো বলে দিলা। আমি বললাম টাকা না থাকলে তুমি সব খরচ এর কথাই বলে দিলা :D অহনা- আপনার এসব ভাবতে হয় কেনো জনাব? সজিব- ভাবতে হয় মানুষের জীবনের কঠিন বাস্তব গুলি নাটকে ফুটিয়ে তোলায় আমার কাজ। মধ্যবিত্ত সমাজের ছেলে গুলো অনেক কঠিন অবস্থার মধ্য দিয়ে সময় পার করে। অহনা- বুঝেছি আমার বাবা আমার জন্যে একটা যোগ্য পাগল ঠিক করেছে যে উল্টা পাল্টা স্বপ্ন দেখে।!! সজিব- হাসো তো দেখি পাগলের বউ টাকে ক্যামেরায় কেমন লাগে। স্মাইল প্লিজ। ভাল্লাগে হাঁটতে তোর হাত ধরে ভাল্লাগে চাইলে তুই আড় চোখে এলো মেলো মনটাকে বেঁধে যে রেখেছি তোর ঘরে।
Posted on: Wed, 16 Jul 2014 18:01:24 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015