** না বলা ভালবাসা** -এই মেয়ে - TopicsExpress



          

** না বলা ভালবাসা** -এই মেয়ে দাড়াও। - জি ভাইয়া কিছু বলবেন? - তোমার নাম কি? -সুপ্তি। - তুমি কোন department এ পড়? -CSE -ও। - আচ্ছা ভাইয়া আমি যাই, আমার ক্লাসের দেরি হয়ে যাচ্ছে। এই বলে সে যেতে চাইল। কিন্তু ছেলেটা ওকে যেতে দিলনা। - কোথায় যাচ্ছি সুপ্তিরানি? - ভাইয়া আমার ক্লাস আছে এখন। প্লিজ আমাকে যেতে দিন। - এখন তোতুমি যেতে পারবেনা। আচ্ছা তুমি যদি একটা গান গাইতে পার তাহলে তোমাকে যেতে দিব। - ভাইয়া আমি গান পারিনা। - কিন্তু তোমাকে যে গান না গাইলে ছাড়তে পারবনা। লক্ষি মেয়ের মত একটা গান গাও। - আমি পারিনা। প্লিজ। - না। তোমাকে গান গাইতে হবে। কি করবে বুঝতে পারছেনা। ও ভয় পেতে লাগল। কপালের ঘাম দরদর করে ঝরছে। সে rag খেতে চলেছে। - আমার সোনার বাংলা আমি তোমায়........... - চুপ। আমিকি জাতিও সংগিত গাইতে বলেছি? - না মানে! - অন্য গান গাও। - ধনধান্য পুস্প ভরা আমাদের এই ব...... - এই তুমিকি অন্য গান পারনা? - না ভাইয়া। আমি গান খুব কম শুনি। - ঠিক আছে তোমাকে গান গাইতে হবেনা। নাচতে হবে। - ভাইয়া আমাকে প্লিজ ছেড়ে দিন। সুপ্তি ভয়ে কাঁদতে শুরু করল। নাকের পানি চোখের পানি এক সাথে ঝরতে লাগল। - বাচ্চা মেয়ের মত কাঁদছ কেন? চিৎকার করে কাঁদ যেন সবাই শুনতে পায়। ভলিউম বাড়াও। ছেলেটা ওর চশমাটা খুলে নিল। - এবার চোখ মুছ। সুপ্তি চোখ মুছল। কিন্তু ওর কান্না থামলনা। - আচ্ছা নাচতেও হবেনা। হাত উপরে তুল। তারপর ১০০ বার বল আমি পাগল, আমি ভিতু - না। - বল বলছি। ধমক খেয় সুপ্তি বলা শুরু করল। - আ.আমিইই পা.আগল, আ.আমিইই ভিভি ভিতু.... গুনে গুনে ১০০ বার বলল। - এবার তুমি কথাটা বলতে বলতে যাও।। যদি না বল তাহলে তোমার খবর আছে। অগত্যা সে বলতে বলতে ক্লাসে ঢুকল। আর সবাই শব্দ করে হাসতে শুরু করল। - তোমরা হাসছ কেন? চিৎকার করে সে বলে উঠল। সবাই আর জোরে হাসতে লাগল আর এক সাথে বলতে লাগল ** আমি ভিতু আমি পাগল** রাগে দুখে সে কাঁদতে লাগল। কোথায় বসবে সেটা বুজগে উঠতে পারছেনা। পরে একটা মেয়ে ওকে ডাক দিল। - ওই ভিতু এখানে আয়। - কি? - rag খাইসস? - হুম। - এটা seriously নিস না। প্রথম দিন এমন হয়। আমি লিজা। - আমি সুপ্তি। - ও হচ্ছে রাখি। তার পাশের জন হচ্ছে লুবনা। ক্লাস শেষ হওয়ার পর ওরা কয়েকজন মিলে আড্ডা দিল। ওনেক মজা হল, খাওয়া হল, কেম্পাস ঘুরে দেখল। আর কয়েকজনের সাথে পরিচয় হল। ম্যাথ department এর কিশোর, রিয়াদ ওদের সাথেও বন্ধুত্ব হল। দিনের শেষ হল। প্রথম দিকে খুব কষ্ট হলেও দিন টা খুব ভালই কাটল সুপ্তির। খুব ক্লান্ত হওয়ার কারনে সে বাসায় গিয়েই ঘুমিয়ে পরল। সকালে ঘুম ভাংল ফোনের রিং এর শব্দে। - হ্যালো। - কিরে ক্লাস করবিনা? - এত সকালে? - কটা বাজে জানিস? তারাতারি আয়। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে অবাক হল সুপ্তি। ৮:৪৭ বেজে গেল! তারাতারি রেডি হল সে। কেম্পাস খুব কাছে হওয়াতে পৌছানো হল। কিন্তু ৫ মিনিট পর। স্যার বকলেন কিন্তু সেটাতে কান দেওয়ার টাইম ওর নাই। - এই এখানে আয়। সুপ্তি লুবনার পাশে বসল। - কেমন আসস? - ভাল, তুই? -ভাল। কিন্তু আমার bf এর সাথে একটা ছোট ঝগড়া হইসে। আজকে দেখা করতে হবে। যাবি আমার সাথে? অনিচ্ছা সত্তেও যেতে রাজি হল। কেন যে মানুষ প্রেম করে এটা সে ভেবে পায়না। ওর কাছে এটা অর্থহীন মনে হয়। সব ফালতু কাজ। - আমার bf 2nd year এ পড়ে। -ও। ওমা একি!!!! এটাতো সেই ছেলেটা যে ওকে rag দিয়েছে। খুব সাবধানে কথা বলল যেনা লুবনা বুঝতে না পারে। ওরা আলাদা হয়ে অনেক্ষন কথা বলল। ওদের কথা বলা দেখে ওর ও খুব ইচ্ছা হচ্ছিল কাউকে এভাবে কাছে পেতে, কিছুক্ষন একসাথে হাটতে, দুইটা মিষ্টি কথা বলতে............ -কিরে? কি ভাবতেসস? - কই? কিছুনাতো। তর কথা বলা শেষ? - হুম। আচ্ছা, তোর কি মন খারাপ? -আরে নাহ। চল যাই। - চল। ক্লাস শেষে আড্ডা দেওয়ার সময় একটা নতুন মুখ দেখল সুপ্তি। ছেলেটার চোখে মুখে হাসি লেগে থাকে সবমসময়। - হাই, আমি তাহসিন। - আমি সুপ্তি। সবার সাথে পরিচিত হল সে। আড্ডা শেষে সবাই যখন চলে যাচ্ছিল তখন তাহসিন ওর কাছে নাম্বার চাইল। সুপ্তি কাউকে নাম্বার দেয়না। কিন্তু ওকে না করতে পারলনা। কেন পারলনা সেতা সে নিজেও জানেনা।। ঘুমানোর জন্য বিছানা ঠিক করছিল সুপ্তি। কেন জানি তাহসিনের কথা মনে পড়ল। খুব সুন্দর ভাবে কথা বলতে পারে ছেলেটা। হাসিটা অনেক সুন্দর। হঠাৎ ফোন টা বেজে উঠল। অচেনা নাম্বার। - হ্যাল। - হাই, আমি তাহসিন। কেমন আছ? তাহসিন নামটা শুনেই মন টা কেমন করে উঠল। - ভাল। তুমি? - আমিও ভাল। কি করছ? - বিছানা ঠিক করছি। তুমি? - আমি বসে আছি। তোমার কথা খুব মনে পরছিল।তাই কল দিলাম। disturb করলাম নাতো? - না। আমিও তোমার কথাই ভাবছিলাম। - ও। রিয়েলি? - ইয়েস স্যার। - ডিনার করেছ? -হুম। তুমি? - নাহ। আমি আরো পরে খাই। আচ্ছা রাখি। ফোন রাখতে ইচ্ছা করছিলনা সুপ্তির। কিন্তু তারপর ও রেখে দিল। -ওকে। বাই। গুড নাইট। -গুড নাইট। বিকেলে মাঝে মাঝেই আসত তাহসিন। আর রাতে সুপ্তি কে কল দিত। অনেক কথাই হত। তাহসিন ওকে যেতাই জিজ্ঞেস করত সে সবগুলর ই উত্তর দিত। মিথ্যা বলতে পারতনা। কেন পারতনা সেটা সে জানেনা। প্রতিদিন কিছু কিছু কথা হয় তাদের মাঝে। এভাবে সুপ্তি তাহসিনের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েছে। সে যেটা পছন্দ করেনা সেটাই তার সাথে হচ্ছে। সে বুঝতে পারেনা কেন হচ্ছে এসব। কয়েক দিন ধরে সুপ্তির মন টাখারাপ। না পারছে কাউকে বলতে, না পারছে চেপে রাখতে। - কিরে তোর কি হইসে? - কিছুনাত। - কিছুত একটা হইসে। আমাকে বল। - লিযা, আমি মনে হয় কাউকে ভালবেসে ফেলেছি। - কি বলস? - আমি কিছুতেই বুঝতে পারছিনা, আমার কেন এমন হচ্ছে। - তা, ছেলেটা কে? - বলা যাবেনা।- ও। বুঝতে পেরেছি। তাহসিন নয়তো? -হুম। - সুপ্তি তুই তো শেষ। ওকে বলেছিস? - না। - তাহলে বলে ফেল। - পারবনা। - তাহলে ঘাস কাট। - ধুর! একটু বুদ্ধি দে। - আমি বাবা কিছু জানিনা। তুই যা ইচ্ছা কর। - ওকে। -রিলেসন হলে খাওয়াতে হবে কিন্তু। - যা, ভাগ! লিযা মুখে না বললেও সে বেপারটা কিশোর কে জানায়। - হ্যাল, কিশোর? - কি? - সুপ্তিতো তাহসিনের প্রেমে পড়েছে। - কি কস? সত্তি? - হুম। - ওকে আমি দেখি কি করা যায়। - ওকে। বাই। -বাই। সুপ্তি ঠিক করল সে সব কিছু তাহসিন কে সব বলবে। তাই সে কল দিল তাহসিন কে। - হাই। - কেমন আছ সুপ্তি।? - ভাল। তোমার সাথে একটু দেখা করা যাবে? - হুম। কখন কোথায়? - ভার্সিটির সামনে আয়। একটু ঘুরতে যাব। যাবে তাহসিন? - অবিশ্যই। তুমি আস। আমিও আসছি। - ওকে। বাই। - বাই। - হাই। - এত দেরি করলে কেন? - জ্যাম। তাই। স্যরি। - ওকে। কোথায় যাব? - তুমিই বল। - চল।রিক্সায় ঘুরি। - ওকে। বাসায় আসার পর সুপ্তির মনটা আরও খারাপ হয়ে গেল। এত কথা বল্ল, এত ঘুরল কিন্তু আসল কথাটাই বলার সাহস পেলনা। রুমের দরজা বন্ধ করে অনেক্ষন কাঁদল সে। ওর এই কান্না তার প্রিয় মানুষ কি কখনো জানতে পারবেনা?? সে আবার ঠিক করল কালকে বলবেই।।তাই আবার দেখা করল। - হাই। তুমি আজকে ও লেট। - স্যরি। - চল আজকে হাটি। - তোমার ইচ্ছা। কিছুক্ষন হাটার পরে দুজন বসল। কেউ কিছু বলতে পারছেনা। দুজনেই চুপ।। - কিছু বল তাহসিন। - তুমি বল। দুজিনেই আবার চুপ। দুজন দুজনের চোখের দিকে তাকিয়ে রইল অনেক্ষন। হয়ত এটাই ভালবাসার নিয়ম। কেউ কাউকে বলেনা অথচ দুজনেই দুজনকে ভালবাসে। -চল সন্ধা হয়ে গেছে। - আর কিছুক্ষন থাক তাহসিন। সুর্যাস্ত দেখে যাই। - ওকে। - তাহসিন। - হুম। বল। - কালকে তোমাকে একটা কথা বলব। ওকে? - ওকে। - বিকেলে এখানে থাকবে। -ওকে। আর কিছুক্ষন হাটল দুজনে। নিজের অজান্তেই তাহসিনের হাত ধরল সুপ্তি। সুপ্তির হাতটা শক্ত করে ধরল তাহসিন। আর নিজের ভালবাসাটা তাহসিনের হাতে তুলে দিল সুপ্তি। যদিও মুখে কেউ কিছু বললনা। কিন্তু বুঝে নিল। খুসিমনে বাসায় ফিরল সুপ্তি। সে তার তার প্রিয় মানুষ টাকে তার ভালবাসার কথা বলতে যাচ্ছে। অনেক্ষন সময় নিয়ে সাজল সুপ্তি। তারাতারি করে ভার্সিটির সামনে চলে এল সে। এতক্ষন হল এখনো সে আসছেনা কেন? আজকে ওকে কতগুলো বকা দিবে। কিল, ঘুষি মেরে ওর নাক ফাটাবে। হঠাৎ রাস্তার ওপাশে তাহসিন কে দেখল সে। দুজনেই মুচকি হাসি দিল। অনেক ভাল লাগছে তাহসিনকে। ইশারা দিয়ে এই পাশে আসতে বলল সুপ্তি। তাহসিন রাস্তা পার হয়ে আসছে। সুপ্তির গা কাঁপছে। ভাবছে কিভাবে বলবে ভালবাসার কথা। লজ্জায় চোখ বন্ধ করে ফেলল সে। কিছুক্ষন পরেও তাহসিন কিছু বলছেনা। এবার সে চোখ খুলল কিন্তু.......................... অপারেশন থিয়েটারএ ঢুকান হচ্ছে তাহসিন কে। একটা হাত সুপ্তির হাতে। সে কিছু বলতে চাচ্ছে। মুখটা নিচু করল সুপ্তি, আর শুনিতে পেল...... আমি তোমাকে....... বাকিটা বলতে পারলনা তাহসিন। অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গেল ডাক্তাররা। ডাক্তার বলেছে তাহসিনের বাঁচার সম্ভাবনা খুব কম। সুপ্তি আজও তার ভালবাসার কথা বলতে পারলনা। সে কি বলতে পারবে তার* না বলা ভালবাসা* Dedicated to my sister -তাসুফিয়া সুপ্তি।
Posted on: Tue, 04 Nov 2014 13:11:36 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015