বলছি ফুটবলের এক নিভে - TopicsExpress



          

বলছি ফুটবলের এক নিভে যাওয়া প্রদীপের গল্প কিংবা এক মুকুটবিহীন রাজপুত্রের গল্প... গল্পটা শুরু হয়েছিল ৫ বছর বয়স থেকেই পারিবারিক সহযোগিতায় ও সকলের অনুপ্রেরণায় শুরু ফুটবলের সাথে তার সংসার। ক্যারিয়ারের শুরুতে ছিলেন গোলরক্ষক, ৭ বছর বয়স থেকে নিজের জাত চিনিয়ে জায়গা করে নিলেন স্টাইকার পজিশনে, ১০ বছর বয়সে Rayo 13 এর হয়ে এক ক্যালেন্ডার ইয়ারে ৫৫ গোল করে এতলেটিকোতে ট্রায়ালের সুযোগ পেলেন । ১৯৯৫ সালে ১১ বছর বয়সে যোগ দিলেন youth system ক্লাবে। শুরু হলো ইতিহাসের পথে হাটা ... Fernando José Torres Sanz ফুটবল আকাশের ঝরে যাওয়া নক্ষত্র যে কি না বিদ্যুৎসমান দ্যুতি নিয়ে রাঙিয়েছিল আকাশ বলছি তার কথা। ২০ শে মার্চ ১৯৮৪ ফুটবল বিশ্বের জন্য অবশ্যই একটি সৌভাগ্যের দিন... সেদিন স্পেনের মাটিতে জন্ম হয়েছিল এই রাজপুত্রের... ছোটবেলার স্বপ্ন পুঁজি করে ছুটেছেন - খেলেছেন - ভালবেসেছেন ফুটবল কে। যার ফলাফল আজ চোখের সামনে... অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের যুব দলের হয়ে ১৯৯৮ সালে জয় লাভ করেন জীবনের প্রথম টাইটেল যার বদৌলতে সুযোগ পান মেইন একাদশে... ২০০১ সালে শুরু হয় তার আন্তর্জাতিক ক্লাব ক্যারিয়ার। যদিও সে সিজনে নিজের স্বকীয়তা প্রমানে ব্যর্থ হন টরেস। ২০০২-০৩ সিজনে জ্বলে ওঠেন পূর্ণাঙ্গ রুপে ২৯ ম্যাচ খেলে করেন ১৩ গোল এবং সে সিজনে অ্যাটলেটিকো ১১তম হয়ে সিজন শেষ করে। ২০০৩ এর জুলাই চেলসির টাকার কুমির রোমান আব্রামভিচের আগমন £28 million বিড করে বসে টরেসের জন্য যা নাকচ করে দেয় মাদ্রিদ। তার পরের সিজনে ৩৫ ম্যাচ খেলে করেন ১৯ গোল। চলছে গোল মেশিন , চলছে টরেসের স্বপ্নযাত্রা। মাত্র ১৯ বছর বয়সে হয়ে যান অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের ক্যাপ্টেন। এর মাঝে ট্র্যান্সফার মার্কেটে গুঞ্জন চলছেই... চেলসি - নিউক্যাসেলের যুদ্ধ সঙ্গে ইপিএলের দলগুলোর প্রবল আগ্রহের মাঝে ভিলারিয়াল থেকে উড়ে এসে জায়গা করে নেয় ডিয়াগো ফোরলান যার ফলে টরেসের ট্র্যান্সফার এক রকম নিশ্চিত হয়ে যায়। লা লীগা ক্যারিয়ারে ১৭৫ ম্যাচে ৭৪ গোল করা ঘরের ছেলে টরেস কে বিদায় জানায় অ্যাটলেটিকো। ২০০৭ সালে ক্লাব রেকর্ড £20 million বিনিময়ে টরেস পাড়ি জমায় এনফিল্ডে... শুরু হলো নতুন ইতিহাস রচনা। লিভারপুলের হয়ে প্রথম সিজনেই চমক। ৯৬-৯৭ সিজনে করা রবি ফওলারের এক সিজনে করা ক্লাব্র হয়ে সর্বাধিক ২০+ গোলের রেকর্ড ব্রেক করেন টরেস। গোলমেশিন চলতেই থাকে। তিনি লিভারপুলের হয়ে সবচেয়ে দ্রুত ৫০ গোল করার গৌরব অর্জন করেন। ০৮ ও ০৯ ফিফা ওয়ার্ল্ড একদশে জায়গা করে নেন যোগ্যতা দিয়ে। রেকর্ড £50 million ট্র্যান্সফার ফি দিয়ে ২০১১ সালে যোগ দেন চেলসিতে যা তাকে সবচেয়ে দামী স্প্যানিশ ফুটবলারের স্বীকৃতি এনে দেয়। চেলসিতে টরেস প্রথম সিজনেই জিতে নেয় এফএ কাপ এবং উএফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ যদিও ক্যারিয়ারে প্রথম বারের মতো সমালোচনার স্বীকার হন তিনি। ২০১২-১৩ সিজনে ইয়োরোপা লীগের ফাইনালে টরেসের গোলই চেলসি প্রথম বারের মতো ঐ শিরোপার স্বাদ পায়। এর পর থেকে শুধু ভাঙ্গন... মাঠ উত্তাল করা টরেস হঠাৎ যেন তলিয়ে যেতে শুরু করে। ইঞ্জুরি আর বেঞ্চ হয়ে দাড়ায় তার ফুটবল ক্যারিয়ারের জন্য অভিশাপ সঙ্গে নিন্দুকের তিরস্কার যেন ধিরে ধিরে ম্রিয়মাণ করে দেয় টরেস কে। ৩১ শে আগস্ট ২০১৪ , ২ বছরের লোণে অনেকটা অভিশপ্ত বিধ্বস্ত ক্যারিয়ার নিয়ে টরেস পাড়ি জমায় সিরিআ লীগের এসি মিলানে। ২৭ শে ডিসেম্বর মিলান নিশ্চিত করে তারা টরেস কে ব্যক্তিগত সম্পদ করে নেয়ার সব বন্দোবস্ত করে ফেলেছে। এখানেই শেষ নয় নাটকের, নাটক এখনও চলছে হচ্ছে জল ঘোলা ২৯ শে ডিসেম্বর ২০১৪ অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ঘোষণা দেয় তারা ফিরিয়ে নিচ্ছে ঘড়ের ছেলেকে। লোণের জন্য তাদের এগ্রিমেন্ট না কি শেষ যার বদৌলতে ২০১৬ পর্যন্ত অ্যাটলেটিকোর জার্সি গায়ে দেখা যাবে চির চেনা সেই টরেস কিংবা এল নাইনো কে! টরেসের ইন্টারন্যাশনাল ক্যারিয়ার টা এতোটা বর্ণিল যা লিখতে গেলে রাত পেড়িয়ে যাবে। জাতীয় দলের হয়ে কাটিয়েছেন স্বর্ণযুগ বধ করেছেন সকল শক্তিকে তাচ্ছিল্য করে। স্পেনের উত্থান ও পতনের সবটুকু জুড়েই ছিলেন তিনি। ২০০৩ সালে পর্তুগালের বিপক্ষে তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের সূচনা। তিনি স্পেনের সর্বকালের সর্বচ্চ গোলদাতাদের মধ্যে তৃতীয়। স্পেনের হয়ে অংশগ্রহন করেছেন ৬ টি মেজর টুর্নামেন্টে। ইয়োরো ০৪, ০৮, ১২ এবং বিশ্বকাপ ০৬, ১০, এবং ১৪। ২০০৮ থেকে ২০১২ অব্দি স্পেন তিন টি মেজর টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতেছে যার মধ্যে দুইটির (ইউরো ০৮, ১২) ফাইনালে টরেসের গোলে শিরোপার স্বাদ পায় স্পেন। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের হয়ে ৭৪ , লিভারপুলের হয়ে ৮১ এবং চেলসির হয়ে ৪৫ টি গোল সহ মিলানের হয়ে করেছেন ১ টি গোল। স্পেনের জার্সি গায়ে টরেসের গোল সংখ্যা ৩৮ টি। তাছাড়া ২০০৮ ব্যালন ডি;অরে তৃতীয় এবং ২০০৮ এর ইউরো ফাইনালে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ হয়েছিলেন টরেস। ২০১২ তে জিতেছেন মার্কা ল্যাএন্ডা এ্যাওয়ার্ড... ২০১২ তেই জিতেছেন উয়েফা ইউরো গোল্ডেন বুট , ২০১৩ তে জিতেছেন ফিফা কনফেডারেশন কাপ গোল্ডেন সু । আজ ২০১৪ এর শেষে এসে অনেককেই দেখি টরেস কে নিয়ে ফাজলামো করতে , বিভিন্ন আজেবাজে ট্যাগ দিয়ে টরেসের মজা উড়াতে! দেখে একজন টরেস ফ্যান কিংবা একজন ফুটবল ম্যানিয়াক হিসেবে ভীষণ খারাপ লাগে! আমি বুকে হাত রেখে বলতে পাড়ি টরেস আমার সময়ের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় যদি আপনি বিশ্বাস না করেন তাহলে তার কৃতিত্ব নিশ্চয়ই আপনার দিকে তাকিয়ে কখনও না কখনও মুচকি হাসবেই...
Posted on: Fri, 02 Jan 2015 06:22:49 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015