রক্তাক্ত ভালোবাসা লেখক: - TopicsExpress



          

রক্তাক্ত ভালোবাসা লেখক: Mohammod Nayon -প্রথম পরিচয় ফেসবুক থেকেই। গত বছর আগস্ট থেকে পরিচয় রাফির।মেয়েটার নাম রজনী। (অতঃপর দীর্ঘ ১০ মাস চ্যাটিং করে একে অপরের নাম্বার বিনিময়, ছবির আদান প্রদান। প্রতিদিন বিভিন্ন বেপার নিয়ে খুনসুটি লেগেই থাকে) -চুল কাটোনা কেন? আয়নায় দেখছ কেমন বাদরের মত দেখা যায়। -আর তুমি নিজেরে দেখছ। না খাইয়া চেংড়া হইয়া গেছ আবার কথা বল। -দেখ আমারে চ্যাংড়া বলবা না একদম -একশবার বলব। active 2 minitues ago এই হল প্রথম স্বরনীয় মূহূর্ত গুলো। আরও সম্পর্ক improve হওয়ার পরে... -এই ফোন দাও, আপু ঘুমাইছে। -আচ্ছা দাড়াও দিচ্ছি, তোমার যেই মোবাইল তাতে ক বললে ছাগল শুনি -একদম আবার মোবাইল নিয়ে কথা বলবা না। -আচ্ছা সরি আমার ভুল হয়ে গেছে মহারানী! সম্পর্ক আরও ডিপ হতে লাগল। ফোনে দিন রাত কথা চলে অবিরত। ঘুমানোর নাম নাই। আনলিমিটেড। কেউ কারোর চেয়ে কম যায়না। না ঘুমাইয়া দুজনের ই অবস্থা খারাপ। রাফি সদ্য অনার্স ২য় বর্ষে পড়ার কথা। ছেড়ে দিল পড়াশুনা।সে তার আপন কাজিন কে খুব ভালো বাসত। দুর্ভাগ্য হল বয়স অল্প আর ভুল হওয়ায় কাজিন কে হারালো। এবার সে চায়না রজনীকে হারাক। প্রথম ভালোবাসায় সে যে কস্ট টা পেয়েছিল, সে চেয়েছিল রজনী তাকে ভালোবেসে তার দুঃখ দুর করে দিক। রজনীকে, রাফি তার জিবনে নিয়ে তার অতীতকে ভুলতে চায়। একটা কথা আছে, Friendship make love. ওদের ও ব্যাতিক্রম হলনা।এদিকে প্রব্লেম হল রাফি ঢাকা থাকে, আর রজনী সিলেট এ। তবে রাফি অত্যন্ত কনফিডেন্ট একটা ছেলে। সে যেভাবেই হোক দূরত্ব কে জয় করে ভালোবাসা অর্জন করতে চায়। এদিকে রজনী সবকিছু বোঝা সত্ত্বেও তার ভালোবাসা প্রকাশ করে না । মেয়েদের মন বোঝা বড় দায়,রাফি ভাবল যে করেই হোক দেখা করা উচিত। নিজের ভালোবাসা, আর এর অস্তিত্ব প্রমানে এর চেয়ে ভালো উপায় নেই। ছোট একটা অফিসে চাকরি করত। বাবার বন্ধুর একটা সমবায় অফিস! আর রজনী সবেমাত্র ইন্টার দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। আস্তে আস্তে জানতে পারল রাফি শুধু একা নয়, ওকে ফেসবুকে জানামতে আরও তিনটা, ছেলের সাথে একই রিলেশন ছিল। সবাই মেয়েটির সাথে ফোনে, ফেসবুকে যোগাযোগ করত। এটা জানার পর তার মনে একটু বেশি কস্টই হয়, কারন মনেহয় সে সত্যিকারেই ভালোবেসে ফেলেছিল। তবুও মেয়েটা কেন জানি তাকে বুঝতে চায় না।বাকি সব ছেলেদের মতই ভাবে। রাফি যতই বুঝাতে চেস্টা করে সে অন্যদের মত না, সে সত্যিই তাকে ভালোবাসে তখন মেয়েটা উল্টাপাল্টা হয়ে যায়। রাফি বাকি ছেলেগুলোর নাম্বার যোগাড় করে কন্টাক্ট করে। একসময় এসব করতে করতে ধৈর্য বাধ ভেঙে যায়। তবুও ভাবে যতই হোক মন থেকে ভালোবাসি যখন, সারাজীবন ওর পাশেই কাটিয়ে দিবো। -হ্যালো কি কর জান? -এইত বসে আছি, তুমি কি কর? -অফিসে। ব্লা ব্লা ব্লা.................. রাতে ১০-১১ টা থেকে শুরু। সকাল হয়ে যায় কথার যেনো শেষ নাই, এত প্রব্লেম তবুও কেমন যেন মনে হয় মেয়েটাও বুঝি তাকে ভালোবেসে ফেলছে যেহেতু এত রাত পর্যন্ত কথা বলে। সব কিছু শেয়ার করে। মেয়েটার বাবা সৌদি আরব থাকে। মেয়েটা মাওলানা পরিবারের মেয়ে। ঘর থেকে পর্দা করে বের হয়। কিন্তু রাফির কনফিউশন ওখানেই যে কিভাবে সে অন্য ছেলেদের সাথেও এভাবে সম্পর্ক রাখে। তবুও রাফি যেমন ঠান্ডা মাথার ছেলে, তেমনি অত্যন্ত রাগী টাইপের ও। অবস্থার শুধু পরিবর্তন আর কি! হঠাৎ রাফি আজব একটা জিনিস চিন্তা করে ফেলে! সে ডিসিশন নেয় সিলেট যাবে। কিন্তু রজনীকে কিছু বলবে না। সারপ্রাইজ দিবে। যাওয়ার সময় অত্যন্ত ক্লোজ ছোট ভাইকে সাথে নিয়ে ঢাকা থেকে সিলেটের উদ্দেশ্য রওনা দেয়। বাসে আগেই টিকিট কেটে রাখে সেই ছোট ভাই। বাসে কথা হয়, -কি করো? -এইত পড়ছি, কাল টেস্ট এক্সাম তোহ।তুমি কি কর? -এইত ভাবছি তোমার সাথে যদি দেখা হত কতটাই না ভালো হত। -ও তাই নাকি? আচ্ছা পরে কথা হবে আল্লাহ হাফেজ। সকালে পৌছল সিলেট। খুজে বের করতে বেশ কস্ট হল তবে অতটা নয়।তবে তাকে ফেইস করতে কতটা কস্ট হল তা ভাষায় প্রকাশ ইম্পসিবল, নাই বা বল্লাম। কথা হল একে অপরের সাথে। সাথে আনা গিফট টা দিতে ভুল হলোনা। তবে সেটা ছোট ভাই দিয়ে আসল ওদের বাসায় যেয়ে! ওদিন রাতেই ঢাকা ফিরল ট্রেনে। রাফি অত্যন্ত খুশি ট্রেনেও কথা হলো। তারপর বাসায় ফিরল। এরপর থেকে কাহিনি আরও বাড়তে লাগল। মেয়েটা অন্য ছেলেদের সাথে স্টিল নাউ কথা কন্টিনিউ করেই চলেছে। সে বিস্ময়াভিভূত হয়ে ভাবল এসব কিভাবে সম্ভব। তাদের মধ্যোও কথা চলে । একসময় মেয়েটা আর কথা বলতে চায়না সব সিম বন্ধ করে ফেলে, ভাই আর বোনের সিমও অফ। এদিকে রাফি দুশ্চিন্তায় শেষ। অনেক খুজার পর রাফি রজনীর মায়ের নাম্বার পায়,কল দিলে তার মা কে অনেক কথা বলে ফেলে। এতে আরো ক্ষুদ্ধ হয় রজনী। তবে রাফির ততদিনে ধৈর্য অনেক হয়েছে। আর পারছিল না তাই বলতে হয়েছে। শত বুঝানোর পরও রজনী বুঝতে চায়না। রাফিও তাকে ছাড়তে নারাজ। এমতাবস্থায় রজনী একপ্রকার দুর্ব্যবহার শুরু করে রাফির সাথে। বলে আমার ফ্যামিলি তো যেনেই গেছে তুমি আমার কিছু করতে পারবে না। রাফির কথা আমি শুধু তোমাকে ভালোবাসি, তুমি অন্য কারো হতে পারবানা। যে তোমার জীবনে আসবে তাকে প্রয়োজনে মার্ডার করে ফেলব। এরকম খুব মারাত্বক টেনশনে রাফির দিন পার হচ্ছিল। আসলে রাফি যতটা ঠান্ডা মাথার ছেলে তেমনি রাগও প্রচুর। ওদিকে মেয়েটা অন্যদের সাথে আবার কথা বলে। এতে প্রচন্ড ক্ষুদ্ধ হয়ে রাফি বুঝতে পারে আসলে ওই ছেলেগুলার কি দোষ? আসল দোষী তো মেয়েটাই,সেই ত সবার সাথে কন্টাক্ট করে তাই এরকম হচ্ছে। মাথায় আগুন ধরে যায় রাফির। চিন্তায় চিন্তায় না খাওয়া রাফি উন্মাদের মতো ছুটাছুটি শুরু করে। সেদিন বিকেলে চলে যায় বড় ভাইয়ের বাসায়। এলাকার প্রখ্যাত বড় ভাই, তার থেকে একটা মেশিন কিনে নেয় ৩০ হাজার তাকার বিনিময়ে।সেটাকে প্যান্টের কোচে ভরে রাখে। সেদিন রাতেই কাউকে না বলেই রওনা দেয় সিলেটের উদ্দ্যশে। দুদিন পর সে রজনীকে খুজে পায়। ততদিনে রজনীরা বাসাও চেঞ্জ করে ফেলেছিল। তাকে খুজে পেতে অনেক কস্ট হয়। বাসায় যেয়ে বুঝতে পারে তার বাবা দেশে এসেছে। যাই হোক সে পরিবারের সবার সামনে গিয়ে দাড়াও। প্রচন্ড সিরিয়াস মূহূর্ত , সবার সামনে সে একে একে তার মনের কথা গুলো প্রকাশ করল। সামনে দন্ডায়মান রজনী সবকিছু অস্বীকার করে রাফিকে আসামীর কাঠগড়ায় দাড় করালো। রাফি আর শান্ত থাকতে পারল না। পিস্তলটা বের করল তারপর অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ট্রিগারে চাপ দিল....... তারপর শুধু রজনীর একটা আর্তনাদ শোনা গেলো। তার পরিবারের সবাই যেন পাথর হয়ে গেলো । রাফি কোন প্রকার পালানোর চেস্টা করলো না। পিস্তল টা নিজের মাথায় ঠেকিয়ে শুধু মনে মনে বলল রজনী,তোমাকে অনেক ভালোবাসি। তারপর আরো একটা বিকট সাউন্ড...তারপর সব শেষ লুটিয়ে পড়ল রজনীর উপর।ঘুমিয়ে রইল ওরা চিরতরে। টাকার পরিমান যতই হোক না কেন তার পিছনে যেমন অনলি থাকে, তেমনি দিন শেষে আমরা প্রত্যকেই খুব লোনলি গল্পটা অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত কে নিয়ে বাস্তব একটি গল্প। মনে রাখার বিষয়, অতীত আমাদের সোনালী সময়,বর্তমান নিশ্চিত,কিন্তু ভবিষ্যত অনিশ্চিত । এই বাস্তব কাহিনির মোরাল এটাই যে, সত্যি কাউকে ভালোবাসলে তার জন্য সব করা যায়। নাথিং টু ইম্পসিবল। _____________সমাপ্ত______________
Posted on: Thu, 04 Dec 2014 05:59:01 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015