শবে বারাআত নিয়ে - TopicsExpress



          

শবে বারাআত নিয়ে বিভ্রান্তি : বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ি ! মুফতী আবু ওয়াফা মানসুর আহমাদ •••••••••••••••••••• লাইলাতুল বারাআত শবে বারাআত বিষয়ে কিছু ভ্রান্তি বেশ পুরনো । সেগুলো বাড়াবাড়ি পর্যায়ের । শরীয়ত অনুমোদন করে না-এমন বহু কাজকে এ রাতের জরুরী অনুষঙ্গ বানিয়ে নেয়া হয়েছে । আর এগুলোতে লিপ্ত হয়ে সাধারণ মুসলমান নিজেদের অজান্তেই এ রাতের ফজীলত ও বরকত থেকে বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে । কিন্ত্ত ইদানীং শবে বারাআত সম্পর্কে ছড়ানো হচ্ছে সম্পূর্ণ বিপরীত ধরনের বিভ্রান্তি । একে ছাড়াছাড়ি পর্যায়ের বলা যেতে পারে । তারা দাবি করছে, শবে বারাআত পালন সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন । শবে বারাআত সম্পর্কে একটাও সহীহ হাদীস নেই । এ সম্পর্কে যতগুলো রিওয়ায়াত পেশ করা হয়, সবগুলো মওজু (জাল) কিংবা সীমাহীন জয়ীফ (দুর্বল) । সুতরাং এগুলোর উপর ভিত্তি করে শবে বারাআত পালন করা যেতে পারে না । এ সম্পর্কে তাদের বুকলেট, লিফলেট ও মৌখিক প্রচার বেশ সরগরম হয়ে উঠেছে । এদের দ্বারা বহু সরলমনা মুসলমান বিভ্রান্ত হচ্ছেন । শবে বারাআত সম্পর্কে কোন সহীহ হাদীস নেই-তাদের এ দাবী ভিত্তিহীন । এ বিষয়ে সহীহ হাদীস অবশ্যই আছে । কিন্ত্ত ভিন্ন উদ্দেশ্যে তারা একে এড়িয়ে যাচ্ছেন । শবে বারাআত সম্পর্কে নিম্নে সহীহ হাদীস পেশ করা হল - হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, “আল্লাহ তাআলা অর্ধ শা’বানের রাতে(শা’বানের চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাতে) সৃষ্টির দিকে (রহমতের) দৃষ্টি দেনএবং মুশরিক ও বিদ্বেষপোষণকারী ব্যতিত সবাইকে ক্ষমা করে দেন।” এ হাদীসটি নিম্নলিখিত হাদীসের কিতাব সমূহে বর্ণিত হয়েছে- ১। সহীহ ইবনেহিব্বান হাদীস : ৫৬৬৫ । ২। মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং ৬৬৪২ । ৩। মু’জামে আওসাত-তাবরানী, হাদীস নং ৬৭৭৬ । ৪। মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা দাদীস নং ৭৯২৩ । উপরোক্ত হাদীসটি সহীহ এবং এ কারণেই এটি ‘সহীহ ইবনে হিব্বান’-এ স্থান লাভ করেছে । সবচে’ মজার কথা হচ্ছে, শবে বারাআতের ফজীলত অস্বীকারকারী আহলে হাদীস ও সালাফী সম্প্রদায় কোন হাদীসের শুদ্ধাশুদ্ধি যাচাইয়ের ক্ষেত্রে শাইখ নাসিরুদ্দীন আলবানীকে বেশ গুরুত্ব দেন । অথচ আলবানী সাহেবও ‘আস-সিলসিলাতুস সহীহা ’ (সহীহ দাদীসের পরম্পরা) নামক কিতাবে এ হাদীসটি দুই জায়গায় উল্লেখ করেছেন হাদীস নং ১১৪৪ ও ১৫৬৩ রূপে এবং উভয় স্থানে হাদীসটিকে সহীহ বলে মন্তব্য করেছেন । তেমনিভাবে সালাফী ও আহলে হাদীস সম্প্রদায় হযরত ইবনে তাইমিয়্যা (রহ.)-এর প্রতিও বেশ দুর্বল । অথচ ইবনে তাইমিয়্যা (রহ.) ও ‘ইকতিযাউস সিরাতিম মুসতাকীম’ নামক কিতাবে শবে বারাআত পালনের পক্ষে মত ব্যক্ত করেছেন । সুতরাং এ রাতের ফজীলতকে অস্বীকার করার কোন উপায় নেই । এ ছাড়াও এ রাতের আমল সম্পর্কে কয়েকটি হাদীস রয়েছে । এ সম্পর্কিত একটি হাদীস নিম্নে উল্লেখ করা হলো - হযরত আ’লা ইবনুল হারিছ রাহ. থেকে বর্ণিত, উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়েশা রা. বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে নামাযে দাঁড়ালেন এবং এত দীর্ঘ সেজদা করলেন যে, আমার আশঙ্কা হল, তাঁর হয়তো ইনতেকাল হয়ে গেছে। আমি তখন উঠে তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিলাম। তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলি নড়ল। যখন তিনি সেজদা থেকে উঠলেন এবং নামায শেষ করলেন তখন আমাকে লক্ষ করে বললেন, হে আয়েশা! অথবা বলেছেন, ও হুমায়রা! তোমার কি এই আশঙ্কা হয়েছে যে, আল্লাহররাসূল তোমার হক নষ্ট করবেন? আমি উত্তরে বললাম,না, ইয়া রাসূলুল্লাহ। আপনার দীর্ঘ সেজদাথেকে আমার আশঙ্কা হয়েছিল, আপনিমৃত্যুবরণ করেছেন কি না। নবীজী জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি জান এটা কোন্ রাত? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। তিনি তখন বললেন, এটা হল অর্ধ শা’বানের রাত। (শা’বানের চৌদ্দ তারিখের দিবাগত রাত)। আল্লাহ তাআলা অর্ধ শা’বানের রাতেতাঁর বান্দাদের প্রতি রহমতের দৃষ্টি প্রদান করেন, ক্ষমা প্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করেন এবং অনুগ্রহ প্রার্থীদের প্রতি অনুগ্রহ করেন। আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের ছেড়ে দেন তাদের অবস্থাতেই । (শুআবুল ঈমান, বায়হাকী ৩/৩৮২,৩৮৩) উপরোক্ত হাদীস থেকে এ রাতের ফযীলত যেমন জানা যায় তদ্রূপ এ রাতের আমল কেমন হওয়া উচিত তাও বোঝা যায়। অর্থাৎ দীর্ঘ নামায পড়া, সেজদা দীর্ঘ হওয়া, দুআ ও ইসে-গফার করা ইত্যাদি। ( মাসিক আদর্শ নারী থেকে সংগৃহীত ) ~ afn
Posted on: Mon, 24 Jun 2013 08:14:32 +0000

Trending Topics



div>

Recently Viewed Topics




© 2015