সবার কাছে একটাই অনুরোধ - TopicsExpress



          

সবার কাছে একটাই অনুরোধ প্লিস সবাই গল্প টি পড়ুন। কারণ অবস্যই আপনার মাঝে কিছু একটা কাজ করবে যখন গল্প টি পড়বেন।- ঘুমাচ্ছিলাম বিকেলে । এমন সময় রুদ্রের ফোন ।মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেলো আমার ।তবু যেহেতু আমার প্রাণপ্রিয় বন্ধুর ফোনটা রিসিভ করতেই হলো । ~হ্যালো হাবিব ,কই তুই ? ~বাসায় ঘুমাচ্ছি ।ফোন দিয়েছিস কেনো সেটা বল ~দোস্ত একটু আলম মামার দোকানে আসবি ??? রুদ্রর কন্ঠটা কেমন ভারী মনে হচ্ছে । ভাবছি আমি কি হলো রুদ্রর ।তবু ভাবতেছি আমাকে ফাদে ফেলার ফন্দি না তো আবার ?? ~কি ব্যাপার দোস্ত চুপ কেন ? আমি মজা করতেছি না খুব সিরিয়াস দরকার আছে । ~আমি বললাম কি দরকার বল । ~ফোনে বলা যাবে না ।তুই বাসায় বলে আয় যে বাসায় ফিরতে লেট হবে । বলবি সোনিয়ার বার্থডে ,আন্টি যেতে বলেছে । ~ওকে !কিন্তু কেনো ? ~যা বলছি তা কর প্লিজ । তাড়াতাড়ি আয় ~আচ্ছা ৫মিনিটের মধ্যে আসতেছি । তবে শর্ত হচ্ছে আমার সব খরচ তোর ।মানি ব্যাগের ইবোলা হয়ছে । শুকনা ,চ্যাপ্টা হয়ে আছে ~আচ্ছা আয় তুই । . . ১০মিনিটের মধ্যে বের হলাম । গিয়ে দেখি রুদ্র বসে আছে ।চোখ দেখেই দূর থেকেই বুঝতে পারলাম আসলেই সিরিয়াস কিছু হয়েছে । ~জি জনাব ।আপনি কি সেক খেয়েছেন নাকি ? ~তোর নানীরে খাইছি ।একজায়গায় নিয়ে যাবো তোকে ।কোথায় নিয়ে যাচ্ছি ,কেনো নিয়ে যাচ্ছি তা জিঙ্গেস করবি না তুই ।গেলেই বুঝতে পারবি । সব বলবো তোকে আজ । ~যে সারাদিন মানুষকে হাসায় আজ তার মন খারাপ ।দেখতেই বিদঘুটে লাগছিলো তাকে ।তাই তাকে আর ঘাটালাম না ।তার কথামতোই রইলাম ।বাসে উঠলাম । কিছুক্ষণ পর আমরা একটি গ্রামে এসে পৌছালাম । রাত বাজে ৭টা ।রাত বললাম কারণ গ্রামাঞ্চলে শীতের সময় সাতটা বাজতেই অনেকটা নিরব হয়ে যায় ।দুজন মিলে একটা বাউন্ডারির সামনে দাড়ালাম ~এটা একটা কবরখানা ।চল ভিতরে যাই ।আমি তার কথায় পুরোপুরি শকড হয়ে দাড়িয়ে আছি । সে আমার হাত ধরে কবরখানাটার ভিতরে নিয়ে গেলো । ~আমি গেলাম অনিচ্ছাসত্তেও । ~রুদ্র তার চোখদিয়ে ইশারা করে বললো ,ঐযে দেখছিস ওখানটাতে আমার আম্মু ঘুমিয়ে আছে । ~আমি তো পুরা অবাক ।মাল টাল খাইছোস নাকি ???তোর মাকে তো কালকেও দেখলাম ~হুম দেখেছিস ,তবে এখানে যিনি উনি আমার জন্মদাত্রী ।আমি যখন ৩মাস ১৭দিনের তখন আমার আম্মু আমাকে ছেড়ে চলে আসছে এখানে । ~আমি তার কথাগুলো বিশ্বাস করতাম না ।তবে বিশ্বাস করলাম যখন দেখলাম রুদ্র কাদছে ।৩মাস ধরে চিনি আমি রুদ্রকে ।কোনোদিন তাকে এই অবস্থায় দেখি নাই । ~রুদ্র বললো ,বর্তমান আম্মুকে আব্বু বিয়ে করেছে যখন আমার বয়স ৫বছর । বিয়ে করতো না আব্বু শুধুমাত্র আমাকে মানুষ করার জন্যই বিয়ে করেছে ।সৎ মা রা সাধারণত যেমন হয় তেমনটা আমার বর্তমান আম্মুটা না ।আমার এই আম্মুও অনেক ভালো ।তবে এই আম্মুর সবকিছু সাজানো ।মন থেকে না । আদর করে ঠিকই তবে মায়ের আদর কি তা আমি পাই নি কোনোদিন ,সত্যি বলতে কোনদিন আশাও করি নি ।যতটুকু করে ততটুকু কোন সৎ মা করে না ।তবে কষ্ট কি জানোস বন্ধু ?? ~হুম কি ?[এর চেয়ে কিছু বলার ভাষা আমার নেই] ~তোদের যেমন আন্টি শাসন করে ,আমি তেমনটা পাই না ।তোর যেমন অসুস্থ হলে আন্টি সারারাত জেগে থাকে আমার মা কষ্ট করে ,তবে মন থেকে না ।তোদের যেমন আন্টি ভালো মন্দ বলে আমার মা তেমনটা করে না ।আমি ভুল করলেও আমি ঠিক ।ঠিক করলেও ঠিক । আমার মনের কষ্টগুলো বলার মতো কেউ নেই ।পৃথিবীতে সবচেয়ে আপন মা । আমি আমার মনের কষ্টগুলোর কথা বলতে পারতাম আমার ফ্যামিলির কাছে তবে বলি না কারণ আমি চাই না তারা আমার কথা কষ্ট পাক । আমি আমার মা হারানোর বেদনার কথা কাউকে বলি না দেখে আমার ফ্যামিলির মানুষ জন এমনকি আমার বাবাও বলে আমি নাকি পাষাণ । কিন্তু দেখ ,আমি যদি আমার চোখের জলগুলোকে তাদের সামনে হাসি দিয়ে আটকিয়ে না রাখতাম তবে তো আমার বাবা আরো কষ্ট পেতো ,আমার এভাবে ভেঙ্গে পড়া দেখে ।তবে বল কেনো আমার আমাকে তারা পাষাণ বলে ?আমাকে কেনো ফুর্তিবাজ বলে ? ~আমি কিছু বলতে পারলাম না । একসময় দেখলাম রুদ্র আমাকে জড়িয়ে ধরে কাদছে । আমিও নিজেই কেদেই দিতাম তবু আমি কাদলাম না ।দাত দিয়ে ঠোট কামড়ে নিজের চোখের জল সংবরণ করলাম ।কারণ রুদ্রর কাছ থেকে মাত্রই আমি শিখলাম ,অপরের কষ্টের মাঝখানে নিজের ভেঙ্গে পড়তে নেই ।নিজেকে তখন পাষাণ হতে হয় ।তবু পারলাম না পুরোপুরি অজান্তে চোখ থেকে কিছু একটা পড়ল আমার ~কিছুক্ষণ সব চুপ ,আমি চুপ ,রুদ্র চুপ ,ঝি ঝি পোকারাও চুপ ।একসময় রুদ্র উঠে দাড়ালো ।দুজন মিলে কবর জিয়ারত করলাম । >ফেরার সময় আবার রুদ্রকে আগের রূপে ফিরে পেলাম ।কিন্তু আমি স্বাভাবিক হতে পারছিলাম না । আমি যে রুদ্রর মত অভিনেতা নই.... . . . বাইরেই খেলাম আমি আর রুদ্র । যখন বাসায় আসলাম দেখলাম রাত বারোটা বাজে ।সবাই ঘুমিয়ে গেলেও দেখি আমার মা জননী ঠিকই জেগে আছেন । আমাকে শুইয়ে দিয়ে তারপর ঘুমাতে গেলেন । নিজেকে খুব সৌভাগ্যবান মনে হচ্ছে ।কারণ আমার মা আছে ,যার কাছে আমি সাত খুন করেও মাফ পেয়ে যেতে পারি ।যার কাছে ভাতের চামচের বাড়ি খেয়ে কাদতে পারি ,তার কাছেই তার হাতে ভাত খেতে পাড়ি । যার কাছে কিছু চাওয়ার আগেই সব পেয়ে যাই আমি..... পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষ আছে যাদের হাসির আড়ালে লুকিয়ে আছে একরাশ হতাশা ।কিসের অস্কার পাওয়া অভিনেতা !তারাই যে সবচেয়ে বড় অভিনেতা . . . . . . এই জগতে যাদের মা নেই তাদের মত দুর্ভাগা আর নেই ।তারা চির দুঃখী । বাবা ছাড়া হয়তো আর্থিক অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয় তবে মা মারা গেলে সন্তান এই শত শত কোটি মানুষের মধ্যে একাকী হয়ে পড়ে ।তার এই একাকীত্ব দূর করতে পারে না কেউ ,কোনোদিন. . . . . . . একটি মুল বিহীন গাছ যেমন তেমনি মা ছাড়া সন্তান তেমন । পৃথিবীর সকল মাকে জানাই হাজার সালাম. . . . .
Posted on: Wed, 24 Dec 2014 18:24:52 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015