সমৃদ্ধ আগামীর সমন্বিত - TopicsExpress



          

সমৃদ্ধ আগামীর সমন্বিত আবাহন শামসুল আলম ................................................................. পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা নদী অববাহিকার প্লাবনভূমি ‘বাংলাদেশ’ পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ। খাদ্যনিরাপত্তা ঝুঁকি, অত্যধিক জনসংখ্যার চাপ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রকোপ (যেমন বন্যা, সাইক্লোন, খরা ইত্যাদি) মোকাবেলা করে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। নদীমাতৃক এ দেশের ভূমিরূপ, ভৌগোলিক অবস্থান, পানিসম্পদ ও ভূপ্রতিবেশ এক অনন্যবৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। নদ-নদীগুলো দেশের মানুষের জীবন, জীবিকা ও অর্থনীতির চালিকাশক্তি। পানিসম্পদের যথাযথ ব্যবস্থাপনা আমাদের এক বিশাল চ্যালেঞ্জ। একদিকে বর্ষাকালে প্রচুর পানি ও পলি দেশের নদ-নদীগুলোর মধ্য দিয়ে বঙ্গোপসাগরে বাহিত হয়, অন্যদিকে শুষ্ক মৌসুমে পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যায় না। বিভিন্ন নির্মাণ ও উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ করায়, অর্থাৎ পানিসম্পদের প্রাকৃতিক ব্যবস্থায় মানুষের হস্তক্ষেপ ঘটায় প্রাকৃতিক পানিচক্র ভীষণভাবে ব্যাহত হয়েছে। এ কারণে পানির গুণগত মান কমে যাওয়ার পাশাপাশি লবণাক্ততা বেড়ে যাচ্ছে। মিঠা পানির প্রাপ্যতা ক্রমেই কমছে। জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে লবণাক্ত ও দূষিত পানি। দিনে দিনে দূষণ বেড়ে পানি ব্যবস্থাপনা এরই মধ্যে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। ভূমিস্বল্পতা ও পানিসম্পদের অপর্যাপ্ততা সংকটকে প্রকট করেছে। সর্বোপরি জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি তো রয়েছেই। প্রতি বছর দেশের জনসংখ্যায় প্রায় ২০ লাখ নতুন মুখ যুক্ত হচ্ছে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জনসংখ্যার আধিক্য ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ভবিষ্যতে এসব সমস্যা তীব্রতর হবে। জনগণের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে পানিসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও এর সুশাসন নিশ্চিতকরণ এক অপরিহার্য শর্ত। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ চাহিদা যথাযথভাবে পূরণের জন্য সমন্বিত ও বৃহৎ পরিসরে নতুন উন্নয়ন রূপকল্প প্রয়োজন। এজন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি দৃশ্যকল্প প্রণয়ন, বিশ্লেষণ ও দক্ষতা তৈরি করতে হবে, যাকে বদ্বীপ মহাপরিকল্পনা নামে আখ্যায়িত করা যায়। এ বদ্বীপ মহাপরিকল্পনা প্রণয়নে উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট সব খাতকে সমন্বিত করে একটি কৌশলী ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করা জরুরি হয়ে পড়েছে। এমনিতেই ভূপ্রাকৃতিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ অতিশয় দুর্যোগপ্রবণ দেশ। আগামী দশকগুলোয় বৈশ্বিক উষ্ণতা ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড়ের ঝুঁকি আরো বেড়ে যাবে। বিশাল জনগোষ্ঠীর এ প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে অর্থাৎ বার্ষিক ৭-৮ শতাংশ হারে টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনে শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশ অত্যাবশ্যক। এজন্য প্রযুক্তির উন্নয়ন ও নতুন নতুন আবিষ্কার, কম খরচে অবকাঠামো নির্মাণ এবং কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির সহায়ক উদ্যোগ নিতে হবে। একই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় পরিকল্পিত ও সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। পানিসহ প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনাকে স্থানিক পরিকল্পনা হিসেবে গ্রহণ করলে টেকসই উন্নয়ন সহজ হবে। এসব বিষয়কে উপজীব্য করে বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। নেদারল্যান্ডস সরকারের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ এ উদ্যোগ নিয়েছে। ২০১৬ সালের মধ্যে বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ প্রণয়নের কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০-এর উদ্দেশ্য: বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ একটি কৌশলগত পরিকল্পনা। নদী ব্যবস্থাপনা, কৃষি, মত্স্য, শিল্প, বনায়ন, পানি ব্যবস্থাপনা, জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ প্রভৃতি খাতকে গুরুত্ব দিয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে এ পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে। প্রয়োজনীয় পানিসম্পদ ও খাদ্যনিরাপত্তা এবং টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে একটি সমন্বিত, দিকনির্দেশনামূলক ও দীর্ঘমেয়াদি (৫০ থেকে ১০০ বছর) মহাকর্মপরিকল্পনার কাঠামো প্রণয়ন এবং তা বাস্তবায়নের কর্মকৌশল নির্ধারণ করাই বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০-এর মূল উদ্দেশ্য। সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্যগুলো হলো ক. টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে পানি, ভূমি ও অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদকে গুরুত্ব দিয়ে স্থানিক পরিকল্পনার (Spatial Planning) আলোকে একটি সর্বজনীন ও উন্মুক্ত জ্ঞানভাণ্ডার গড়ে তোলা বদ্বীপ পরিকল্পনার উদ্দেশ্য। পানি, ভূমি, কৃষি, জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, খাদ্যনিরাপত্তা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, স্থানীয় ও ভূপ্রতিবেশ উন্নয়ন ইত্যাদি বিষয় পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত থাকবে এবং এর ভিত্তিতে প্রধান উপকারভোগীদের সঙ্গে সমন্বিত বিশ্লেষণ ও বিজ্ঞানভিত্তিক দৃশ্যকল্প (Scenario) প্রক্ষেপণ করা হবে। খ. বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০-এর সমন্বিত ও সুষ্ঠু বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিদ্যমান বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার প্রয়োজনীয় সংস্কার ও পুনর্বিন্যাসের জন্য প্রয়োজনে খসড়া বদ্বীপ আইন প্রণয়ন করার প্রয়োজন হবে। গ. সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে স্বচ্ছভাবে বদ্বীপ পরিকল্পনার রূপকল্প, লক্ষ্য ও কার্যাবলি শনাক্ত ও বিশ্লেষণ করা। ঘ. সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ (Linkage) স্থাপনের মাধ্যমে দেশী-বিদেশী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের (বহুজাতিক কোম্পানি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান ও এনজিওসহ) নতুন প্রায়োগিক ধ্যান-ধারণা, উদ্ভাবনের পাশাপাশি দেশজ অভিজ্ঞতা অন্তর্ভুক্ত করে বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০কে সমৃদ্ধ করার প্রচেষ্টা। ঙ. আঞ্চলিক ও জাতীয় উন্নয়নের লক্ষ্যে পানি, ভূমি ও সংশ্লিষ্ট প্রাকৃতিক সম্পদের স্থানিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্বল্পমেয়াদে ভবিষ্যৎ ব্যবস্থাপনা ও পরিচালন পদ্ধতির ধরন (Management and Governance Mechanism) নির্ধারণ করা। চ. বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ বাস্তবায়নে প্রকল্পভিত্তিক বেসরকারি খাতকে আকর্ষণ ও আগ্রহী করা এবং উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও বহুজাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সমর্থন ও প্রতিশ্রুতি আদায়ের প্রচেষ্টা চালানো। ছ. বিষয়ভিত্তিক সমীক্ষার আলোকে ২০২৫, ২০৫০ ও ২১০০ সালের দৃশ্যচিত্র প্রণয়ন বা প্রক্ষেপণ এবং এর আলোকে কার্যক্রম গ্রহণ। তাছাড়া বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ বাস্তবায়নে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের জন্য একটি পথচিত্র প্রণয়ন (Road Map) ও একটি খসড়া আইন প্রস্তুত করার প্রয়োজন হবে। টেকসই উন্নয়নের পথে বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ যে সুযোগ সৃষ্টি করবে ১. এতে একই কাঠামোর আওতায় সমন্বিতভাবে সব সেক্টরের সুনির্দিষ্ট নীতি ও পরিকল্পনা এবং স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি প্রক্ষেপণ থাকবে, যা পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ইত্যাদিতে প্রতিফলিত হবে। ২. সীমিত সম্পদের মধ্যে কার্যকরভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় গৃহীত ও গৃহীতব্য কর্মসূচিগুলো প্রাপ্ত তথ্য ও গবেষণা-ফলাফলের ভিত্তিতে আরো যৌক্তিকভাবে বাস্তবায়নের ব্যবস্থা থাকবে। ৩. সমন্বিত এ মহাপরিকল্পনায় প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত করার ব্যবস্থা থাকবে। ৪. সংশ্লিষ্ট সব খাতের বাস্তবায়ন প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আন্তঃসংযোগ তৈরি করে তাদের দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠার পরামর্শ থাকবে। ৫. এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সব সরকারি, ব্যক্তিখাত ও এনজিও প্রভৃতির অর্থায়নের সুযোগ থাকবে। ৬. কৃষি, পরিবেশ ইস্যু, নগরায়ণ, পর্যটন প্রভৃতিসংক্রান্ত আঞ্চলিক ও জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনাগুলো সমন্বয় করা সম্ভব হবে। ৭. আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার, বিশেষত প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে যৌথভাবে প্রাকৃতিক সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবহারের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হবে। ৮. পানিসম্পদ খাতের কার্যকর ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেয়া হবে। যেমন, উপকূলের বিদ্যমান পোল্ডারের ভেতর পানিনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নত করা ও জোয়ার বা জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষার সমন্বিত উদ্যোগ নেয়া হবে। ৯. বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সহযোগিতা বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মূল শক্তি। এছাড়া এ পরিকল্পনা নেদারল্যান্ডস ও বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করতে এবং অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগী দেশের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে ও কার্যকর সহযোগিতা লাভে ভূমিকা রাখবে। বদ্বীপ পরিকল্পনার বাস্তবায়ন কৌশল যা হবে যেহেতু এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ, তাই এ পরিকল্পনাকে সময়োপযোগী ও বাস্তবায়নানুগ করতে একটি স্থায়ী সংস্থা যেমন ‘বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন কমিশন’ গঠন করার প্রয়োজন হতে পারে। সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এ কমিশনের রূপরেখা নির্ধারণ করা হবে। বদ্বীপ কমিশন একটি উদ্ভাবনী পদ্ধতি। এর মাধ্যমে পরিকল্পনা মূল্যায়ন ও বাস্তবায়নের কার্যক্রম গ্রহণ করা যেতে পারে, যাতে বাস্তব ফলপ্রাপ্তি সম্ভব হয়। পানি খাতের প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অতীত অভিজ্ঞতাগুলো বিবেচনায় নেয়া হবে। দীর্ঘ কয়েক দশকে সাগর উপকূলে গড়ে ওঠা পোল্ডারগুলোর ব্যবস্থাপনা ও পুনর্বাসনের দিকনির্দেশনা বদ্বীপ পরিকল্পনায় থাকতে হবে। জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, সমুদ্র উপকূলে ভূমি উদ্ধারে কারিগরি পরামর্শ উপস্থাপন ইত্যাদি এ পরিকল্পনার গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হবে। বদ্বীপ পরিকল্পনা প্রণয়নে চ্যালেঞ্জগুলো ১. তথ্য সংগ্রহে ২০টি গবেষণাপত্র তৈরি হবে। তার পরও ভৌত পরিবর্তনের ফলে বদ্বীপ পরিকল্পনায় গৃহীত পদক্ষেপ দীর্ঘমেয়াদে কী ধরনের পরিবর্তন বা প্রভাব বয়ে আনবে, তা সমীক্ষা করে দেখার প্রয়োজনীয় সময় নেয়া ও গবেষণা চালিয়ে যাওয়া এ পরিকল্পনার অন্যতম চ্যালেঞ্জ হবে। ২. বদ্বীপের ভৌত কাঠামো বা ভৌত অবস্থান হলো অগ্রগতির মূল প্রতিপাদ্য। কার্যত সব পরিবর্তনের প্রভাব ধীরে ধীরে পরিলক্ষিত হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় তা হয়তো বোঝা যাবে না। ৩. যথাযথ কারিগরি তথ্যাদি সংগ্রহ ও তথ্যের অপ্রতুলতাও বড় চ্যালেঞ্জ। একটি মহাপরিকল্পনার জন্ম বাংলাদেশ সরকার গত কয়েক দশকে পানিসম্পদ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, কৃষি, ভূমি ব্যবহার, মত্স্য, বন প্রভৃতি বিষয়ে নানা পরিকল্পনা, নীতি, কর্মসূচি, প্রকল্প গ্রহণ করেছে; যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো— Climate Change Strategy, Country Investment Plan for Agriculture and Food security (2011), BCCSAP (2009), Krugg Mission Report, Flood Action Plan (FAP), Water related policies (e.g. the National Water Act 2013, National Disaster Management Act 2012, National Water Management Plan, Integrated Coastal Zone Management Plan, Hoar Master Plan, the Master Plan for Agricultural Development in the Southern Region of Bangladesh, and the Master Plan for Inland Water Transport, North-Eastern Region Development Plan, Southern Region Development Plan. এছাড়া জাতীয় পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা প্রণীত হয়েছে। তবে সার্বিকভাবে সমন্বিত পরিকল্পনা না হওয়ায় এসব উদ্যোগ কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে পারছে না। একক বিষয়ের আলোকে প্রণীত পৃথক পৃথক উদ্যোগ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দ্বৈততার সৃষ্টি হয়ে সম্পদের অপচয়ও ঘটছে। এ পরিকল্পনাগুলো সাধারণত সমন্বয়বিহীন। আবার বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে অসহযোগিতাও রয়েছে। এ কারণে কৃষি, খাদ্যনিরাপত্তা, মত্স্য, শিল্প, বনায়ন, পানি ব্যবস্থাপনাসহ জনজীবিকার সব খাতকে সার্বিকভাবে একীভূত করে সমন্বিত ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা (holistic approach) প্রয়োজন। কিছুটা ভিন্নতর এ পরিকল্পনা প্রণীত হবে ৫০ থেকে ১০০ বছর মেয়াদে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে। বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ কেবল একটি প্রচলিত দলিল হবে না, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ও পরবর্তী পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাগুলোও এ পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ হবে একটি সমন্বিত মহাপরিকল্পনা, যা ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন হবে। শেষ কথা সম্প্রতি Intergovernmental Panel for Climate Change (IPCC)-এর পঞ্চম মূল্যায়ন প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে, যাতে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রচেষ্টা ব্যাপক ঝুঁকির মুখে রয়েছে মর্মে আশঙ্কা করা হয়েছে। সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশের অর্জিত অগ্রগতিকে আরো ত্বরান্বিত ও টেকসই করতে এ পরিকল্পনা প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগের ঝুঁকি মোকাবেলায় ও টেকসই উন্নয়নের জন্য এ পরিকল্পনা একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাংলাদেশকে অদূর ভবিষ্যতে উন্নত দেশে রূপান্তরে এ মহাপরিকল্পনা অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
Posted on: Sun, 04 Jan 2015 04:28:31 +0000

Trending Topics



Recently Viewed Topics




© 2015